নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবিক পৃথিবীর জন্যই মানুষ, নষ্ট রাজনীতি আর ধর্মান্ধতার জন্য নহে

বোবাকান্না

মানবতার জন্যই মানুষ, নষ্ট রাজনীতি আর ধর্মান্ধতার জন্য নহে

বোবাকান্না › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুর আড্ডাস্থলে রাজাকারের পদধ্বনি!

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৩৫



‘দৈনিক ইত্তেফাক’ মানে ৭১ পূর্ববর্তী স্বাধীনতাকামী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। পাকিস্তানি ও তাদের দোসরদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তৎকালীন ৫৬ শতাংশ জনতার দর্পন। যে কারনে তিনবার বন্ধ হয়েছে শীর্ষ এই দৈনিকটি। আগুনে পুড়িয়েছে রাজকারেরা। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার আর্দশ, মওলানা ভাষানীর ঘাম ঝরানো স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি নাম ''ইত্তেফাক''। ইত্তেফাক মানেই প্রত্যুষে ঘুম জাগানিয়া নিউজপ্রিন্টের টাটকা খবর ও চায়ের কাপের সম্মিলন। রামকৃষ্ণ মিশন রোডের একটি ভবন। সাদাসিদে যে ভবন থেকে বেরুবে একটি দৈনিক। এতে থাকবে দেশ-বিদেশের তাজা সব খবর। পৃষ্ঠা উল্টাবে চাকরি প্রত্যাশি কী ভার্সিটিতে ভর্তিচ্ছুকরা। ইত্তেফাক নামক এই ভবনটি থেকে বেরিয়েছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত প্রায় সব সাংবাদিক-সম্পাদক। চায়ের কাপে ঝড় তুলতেন রাজনৈতিকরা। সময় পেলেই আড্ডা জমাতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও। কথিত আছে, বঙ্গবন্ধু ইত্তেফাকে ভবনে গিয়ে চায়ে চুমুক দিয়ে পিয়নদের হাতে বকশিশ দিতেন। ওই বকশিশে পিয়নরা ঢাকায় কয়েকটি বাড়ি করেছেন। তার মানে বঙ্গবন্ধু কতবার গিয়েছেন?
তাই বলতে গেলে ইত্তেফাক আর ইত্তেফাক ভবন দু'টোই বাংলাদেশী মানুষের কাছে হৃদয়ের স্পন্দন। একাত্তরে মানিক মিয়ার দ্ব্যর্থহীন কর্মের গুণে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর প্রথম ক্যাবিনেটে সংসদ ভবনের সামনের সড়কটিকে ''মানিক মিয়া এভিনিউ'' নামকরন করেন


কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রিয় আড্ডাস্থল কী স্বাধীনতার স্বপক্ষে থেকে রাজাকারদের বারংবার হামলায় আহত, ব্যথিত ও কালের সাক্ষী ইত্তেফাক আজ রাজাকারের দখলে। যারা ইত্তেফাক পুড়িয়ে আজকের বাংলাদেশ নামক মানচিত্রের স্বপ্ন অঙগার করে দিতে চেয়েছিল। একাত্তরের সেই ছাত্রসংঘের (ইসলামী ছাত্রশিবির) নেতা মীর কাসেম আলীর গড়ে তোলা ''দৈনিক নয়া দিগন্ত' আজ ইত্তেফাক ভবনে। যুদ্ধাপরাধ/মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মীর কাসেম আলী ফাঁসি হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রেত্মাতাদের পদধ্বনি পড়েছে মুজিবের ইতিহাসে। বাহ! এরই নাম স্বাধীনচেতা মানিক মিয়ার পরিবার।


মীর কাসেম আলীকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলানোর পর আরামবাগের ইডেন কমপ্লেক্স থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় নয়া দিগন্তকে। কারণ হিসেবে বলা হয়, ওই ভবনের সঙ্গে মীর কাসেম আলী ভাড়ার চুক্তি করে গেছেন। তিনি যেহেতু নেই, তাই চুক্তিও বাতিল করা যায়। এর সঙ্গে বলা হয়, ইডেন কমপ্লেক্সে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। এরপর নতুন ঠিকানা হিসেবে রামকৃষ্ণ মিশন সড়কের ইত্তেফাক ভবনে ওঠে জামায়াতের মালিকানাধীন নয়া দিগন্ত পত্রিকা। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়া থেকে ফাঁসি কার্যকর পর্যন্ত যারা কৌশলে চুলকানি মার্কা সংবাদ পরিবেশন করে আসছিল। ইত্তেফাক ভবনে রাজাকারের দৈনিক পা রাখার পর সর্বমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার মহলে কটতা তা জানা নেই। যদিও বেসরকারি মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান চুক্তি করতেই পারে। কিন্তু তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার অনবদ্য সৃষ্টিতে।


দৈনিক ইত্তেফাক বাংলাদেশের প্রাচীনতম দৈনিকগুলোর একটি। ২৪ ডিসেম্বর ১৯৫৩ সালে দৈনিক ইত্তেফাক সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়, তখন এটি ছিলো সাপ্তাহিক। এটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়ে থাকে। ইত্তেফাক এর প্রতিষ্ঠাতা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। যদিও এর শুরুটা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও ইয়ার মোহাম্মাদ খান এর হাত ধরে। ইয়ার মোহাম্মাদ খান হলেন এর প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক। তবে তাঁরা দুজনেই সক্রিয় রাজনীতি ও পাকিস্তান বিরোধি আন্দোলনে ব্যাস্ত থাকায়, তাঁরা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিঞাকে সম্পাদক নিয়োগ করেন। ১৯৫৪ এর সাধারণ নির্বাচন ও যুক্তফ্রন্টের জয়ে ইত্তেফাক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে এবং আইয়ুব খান হতে ইয়াহিয়া খান পর্যন্ত সকল সামরিক শাসনের বিরোধিতা করে। ফলে, আইয়ুব খান ১৯৬৬ সনের ১৭ জুন হতে ১১ জুলাই এবং এরপর ১৯৬৬ সনের ১৭ জুলাই হতে ১৯৬৯ সনের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এর প্রচারনা বন্ধ রাখেন। মানিক মিঞাকেও কয়েকবার জেলে যেতে হয়।

মানিক মিঞা ১৯৬৯ সনের ১ জুন মারা যান এবং তাঁর দুই ছেলে মইনুল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হাতে নেন। পাকিস্তান আর্মি ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ ইত্তেফাকের অফিস পুড়িয়ে ফেলে এবং পুনরায় এর প্রকাশনা (পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের প্রত্য তত্বাবধানে) শুরু হতে ওই বছরের ২১ মে পর্যন্ত অপো করতে হয়। বাংলাদেশের স্বাধিনতার পর ১৯৭৫ সনের ১৭ জুন ইত্তেফাকের জাতীয়করণ হয়, নুরুল ইসলাম পাটোয়ারি প্রধান সম্পাদক হন এবং ঢাকার ১ রামকৃষ্ণ মিশনস্থ নিউ নেশন প্রেস হতে প্রকাশিত হতে থাকে।

মানিক মিঞার ছেলেদেরকে ১৯৭৫ সনের ২৪ অগাস্ট মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া হয়। অবশ্য মানিক মিঞার দুই মেয়ে ১২ শতাংশ মালিকানা পান যদিও ২ ছেলেই তা ব্যবস্থাপনা করে আসছিলেন। দুই ভাই দীর্ঘস্থায়ী বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং তাঁরা দুজনে পালাক্রমে এই প্রভাবশালী পত্রিকা পরিচালনা করেন। দুই পরে মধ্যে সংঘর্ষের কারণে কয়েক দফা বন্ধও হয়েছিল ইত্তেফাক। ২০০৭-২০০৮ সনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থা চলাকালে পুরো নিয়ন্ত্রণ নেন ওই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা মইনুল হোসেন। ২০১০ সনের ২ মে বিকেলে ঢাকার শেরাটন হোটেলে দুই পরে মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এ চুক্তি সই হয় এবং ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও দুই মেয়ে (ও তাঁদের সন্তানেরা) মালিকানা গ্রহণ করেন। বিনিময়ে বড় ছেলে মইনুল হোসেন ১০ কোটি টাকা ও ইত্তেফাক ভবনের পুরা মালিকানা পান। বর্তমানে মইনুল হোসেন ইত্তেফাক ভবনের মালিক। আর কারওয়ান বাজারের জেনিথ টাওয়ারে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মালিকানায় প্রকাশ হচ্ছে 'দৈনিক ইত্তেফাক'।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:১৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: তে এখন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.