![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেখানে গভীর শূন্যতা , যেখানে অন্তহীন কোন পথের শুরু সেখানেই আমার অস্তিত্ব। আমি আঁধারের ব্যাক্তিগত অহংকার ।আমি বৈরাগ্যের ভ্রান্তি। অসম্পূর্ণ ছায়ামাত্র! আমি ব্যাথিত , ব্যর্থ নই। আমি রৌদ্রের মতো অভিকর্ষহীন ,অনুভূতিহীন নই।
বেঁচে থাকা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার হলে মরে যাওয়া বা আত্মহত্যা করাও মানুষের মৌলিক অধিকার হবে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল ভারতের গুজারিশ সিনেমাটিতে। বাস্তবে কিন্তু এমন ঘটনা রয়েছে যা আদালতেও মিমাংসা করা যায় নি।
আমার মতে অবস্থার পরিপেক্ষিতে কারো মঙ্গলের জন্য আদালত মৃত্যু কার্যকর করার অনুমতি দিতে পারে।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত নিচে দেয়া হলো:
বেঁচে থাকা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার হলে মরে যাওয়া বা আত্মহত্যা করাও মানুষের মৌলিক অধিকার হবে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল ভারতের গুজারিশ সিনেমাটিতে। বাস্তবে কিন্তু এমন ঘটনা রয়েছে যা আদালতেও মিমাংসা করা যায় নি।
ভারতে একজন নারীর যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর জন্য করা আবেদন সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল। ওই নারীর নাম অরুণা শ্যানবাগ। ১৯৭৩ সালের পর থেকে প্রায় ৩৭ বছর তিনি হাসপাতালের শয্যায় অচেতন অবস্থায় ছিল।
পিনকি বিরানি নামে একজন সাংবাদিক অরুণার যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর জন্য আবেদন করেন। তিনি অরুণাকে নিয়ে একটি বইও লিখেছেন।
আদালত জানান, চিকিৎসার তথ্য-প্রমাণ অনুসারে অরুণার বেঁচে থাকা উচিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা আবেদন করলে যন্ত্রণাহীন মৃত্যু অনুমোদন করা হয়।
১৯৭৩ সালে অরুণা পাশবিক ধর্ষণের শিকার হন।
সুত্র- বিবিসি।
আমার মতে অবস্থার পরিপেক্ষিতে কারো মঙ্গলের জন্য আদালত মৃত্যু কার্যকর করার অনুমতি দিতে পারে।
গত ২০ জুলাই ২০০৯ তারিখে ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালত ‘এসিসটেড সুইসাইড’কে বৈধ ঘোষণা করে। ডেবি পারডি নামের এক মহিলা আদালতের রায়ে স্বেচ্ছা-মৃত্যুর বৈধতা পান। ব্যাপক আলোচিত সেই ঐতিহাসিক রায় নিয়ে আইনবিদদের মাঝে আলোচনার ঝড় ওঠে। ব্রিটেনের বিদ্যমান আইনের সাথে সেটি সাংঘর্ষিক কিনা সেব্যাপারেও বিশ্লেষণ শুরু হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত নিচে দেয়া হলো:
মামলার ফ্যাক্ট:
ডেবি পারডি এবং ওমর পুয়েনটি বেশ আন্তরিক দম্পতি। ১৪ বছর আগে তাদের সম্পর্ক শুরু হবার পর থেকেই ডেবি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ‘মালটিপল এসক্লেরোসিস’ নামের দূরারোগ্য ব্যধি ক্রমেই ডেবিকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। পেশায় ওমর একজন ভায়োলিনবিদ। অন্যদিকে ডেবি পারডি ইউনিভার্সিটি ইন বার্মিংহামে মানবিক অধ্যয়নে পড়াশোনা শেষ করে একটি বিপণন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন কিছুদিন। এরপর ভ্রমণপিপাসু ডারবি পৃথিবীর নানা স্থানে ভ্রমণ শুরু করেন। জীবিকা নির্বাহের খাতিরে তিনি নানা পেশা বেছে নেন। কখনোবা মিউজিক জার্নালিস্ট কখনো নর্তকী আবার কখনোবা স্বর্ণালংকার বিক্রেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন তিনি।
ডারবি তার রোগের নানাপ্রকার উপসর্গ লক্ষ্য করেন যখন সিঙ্গাপুরে একটি ব্যান্ড পার্টিতে ওমরের সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে। এরপর লন্ডনে এমআরআই স্ক্যান করে ডারবি তার রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হন। তখন ছিল ১৯৯৫ সাল। এরপর দুই বছর এই জোড়া তাদের ব্যান্ড নিয়ে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। ১৯৯৬ সালে সৈকতে স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় ওমর লক্ষ্য করেন যে, ডারবি তার চলার পথে রক্তাক্ত পদচিহ্ন ফেলছে। সমুদ্রসৈকতের নুড়ির আঘাতে কখন যে ডারবি তার পা কেটে ফেলেছে তা সে টেরই পায় নি। ১৯৯৭ সালে ডারবির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে তারা ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন এবং বিয়ে করে ব্রাডফোর্ডে বসবাস শুরু করেন।
২০০১ সালে ডারবি দূরারোগ্য ব্যধি থেকে মুক্তি পেতে ‘ইউথানেজিয়া’ বা ‘যন্ত্রণাহীন মৃত্যু’র প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ২০০৭ সালে এ ব্যাপারে আইনি লড়াই শুরু করেন। এক্ষেত্রে তাকে ২০০২ সালের অপর একটি মামলা উৎসাহ যোগায়। ‘প্রিটি কেইস’ নামে পরিচিত সেই মামলায় বাদী প্রিটি হেরে যান। তিনি চাইছিলেন, তার যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর ব্যাপারে তার স্বামী যদি তাকে সহায়তা করেন, তবে তাকে যেন বিচারের কাঠগড়ায় না দাঁড়াতে হয়।
একই ইস্যুতে ডারবির এই মামলা প্রথমত হাইকোর্ট প্রত্যাখ্যান করে। ডারবি তবুও হাল ছাড়েন নি। আপিল বিভাগে তার এই মামলাটি গৃহীত হবার পর তিনি আশার আলো দেখতে শুরু করেন। অবশেষে আপিল বিভাগ এই মামলায় ডারবির পক্ষে এই মর্মে রায় প্রদান করেন যে, তার স্বামী তাকে মৃত্যুর ব্যাপারে সহায়তা করলেও এ কারণে তাকে প্রসিকিউশনের মুখোমুখি হতে হবে না।
মামলার রায় সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ডারবি বলছিলেন, “এই রায়ে আমি যেন আমার জীবন ফিরে পেয়েছি। আমি আশা করব যে লোকজন এটিকে ‘মৃত্যুর অধিকার’ নয় বরং ‘বাঁচবার অধিকার’ হিসেবেই বিবেচনা করবে। কেননা, এটি মূলত মর্যাদা ও পছন্দের সাথে বাঁচার অধিকার।”
উল্লেখ্য, এই রায়ের ফলে ডারবির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ওমর তাকে সুইজারল্যান্ডের একটি বিশেষ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবেন, যেখানে ডারবি ইচ্ছে করলে নিজ থেকে মৃত্যুবরণ করতে পারবেন। আর এ কারণে ওমরকে কোনো প্রকার জেল-জরিমানার শিকার হতে হবে না।
এসিসটেট সুইসাইড : ব্রিটিশ আইন কী বলে?
বৃটেনের ‘দ্য সুইসাইড এ্যক্ট ১৯৬১’ অনুসারে আত্মহত্যায় সহায়তা, প্ররোচনা কিংবা আত্মহত্যায় উদ্বুদ্ধকরণ একটি অপরাধ। যার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ বছর পর্যন্ত হাজতবাস। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের সেই হাসপাতালে ডজনখানেক লন্ডনের অধিবাসী ‘এসিসটেড সুইসাইড’ করলেও এ কারণে তাদের আত্মীয় কিংবা বন্ধুবান্ধবদের আদালতের মুখোমুখি করা হয় নি এখন পর্যন্ত।
ডেবি পারডির এই মামলার যুক্তি থেকে বিচারকরা বলছেন, এ ব্যাপারে আইনের অবস্থান সুস্পষ্ট নয় এবং পূর্বে ‘এসিসটেড সুইসাইডে’ সহায়তাকারীগণ এটি জানবার অধিকার রাখেন যে, কোন কোন পরিস্থিতিতে তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে।
বৃটেনের ‘দ্য ডিরেক্টর অব পাবলিক প্রসিকিউশনস’ (ডিপিপি) তাদের একটি শীর্ষস্থানীয় পাবলিক প্রসিকিউশন কমিটিকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই একটি ‘অভ্যন্তরীণ নীতিমালা’ তৈরি করার নির্দেশ প্রদান করেছে। ২০১০ সালের মধ্যেই এ ব্যাপারে একটি চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
ডারবির মামলার ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে হয়তো আসন্ন নীতিমালায় ‘এসিসটেড সুইসাইডে’ সহায়তার কারণে শাস্তির বিধানকে রহিত করা হবে।
এদিকে বিচারকরা এটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এসিসটেড সুইসাইডকে বৈধতা দান করা তাদের কাজ নয়। এ ব্যাপারে ডিপিপি’র প্রণীত নীতিমালা কেবল পার্লামেন্টের অনুপস্থিতিতেই বিবেচিত হবে। অবশ্য মাত্র কয়েক হপ্তা আগে বৃটেনের হাউস অব লর্ডস-এ ‘এসিসটেড সুইসাইডকে বৈধতা দানের একটি একটি প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এ সংক্রান্ত আইনটি সংশোধনে নতুন করে সংস্কার প্রস্তাব আনা হতে পারে পার্লামেন্টে।
আমাদের দেশে এখন পযর্ন্ত্য এমন কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় নি। যার কারণে আইনবিদ দের ভাবতে হয় নি এখনো। তবে হতে কতক্ষণ!
সর্বশেষ, ১৩ মার্চ,২০১২ এ এই বিষয়টি আবার চোখের সামনে-
ব্রিটিশ এক নাগরিক স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণে সহায়তা করার জন্য চিকিৎসকদের অনুমতি কামনা করে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। টনি নিকলিনসন (৫৮) নামের সেই ব্যক্তি পক্ষাঘাতে ভুগছেন।
উইন্টশায়ারের মেকলশামের বাসিন্দা মি. নিকলিনসন স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণে সাহায্যকারী চিকিৎসককে হত্যার অপরাধ থেকে রেহাই দেয়ার জন্য আদালতের রায় চাইছেন। ২০০৫ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর সম্পূর্ণ ‘লক ইন সিনড্রমে’ আক্রান্ত হন টনি।
এ রোগে আক্রান্তের গোটা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলেও মনন সক্রিয় থাকে। কেবল পার্লামেন্টই হত্যা সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করতে পারে জানিয়ে মামলাটি খারিজ করে দিতে চাইছে ব্রিটেনের বিচার মন্ত্রণালয়। মামলাটি নিয়ে গত মাসে হাইকোর্টে শুনানি হলেও কোন রায় হয়নি।
নিকলিনসন বলেন, ‘তার জীবন নিস্তেজ, শোচনীয়, হীন, অসম্মানজনক এবং অসহনীয় হয়ে গেছে।’ বৈদ্যুতিক বোর্ড বা বিশেষ কম্পিউটারের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি এ জীবনের অবসান চান এবং আইনিভাবে একজন চিকিৎসক তার স্বেচ্ছামৃত্যুর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করুক এমনটিই কামনা করেন।
সংবিধান প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করে যার কারণে কেউ চাইলেও মরতে পারবে না। তবে আত্বহত্যা ভিন্ন বিষয়। আর ফৌজদারী আইন আত্বহত্যার চেষ্টা করাকেও আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে চিন্হিত করেছে।
প্রয়োজনে এই বিষয়ে সরকার নতুন আইন করতে পারে। কোন কোন অবস্থায় এক জন মানুষ কে সেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করার অনুমতি দেয়া যায় তার জন্য।
কোন এক সময় হইতো আসবে যখন আত্মহত্যা একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতেও পারে।
©somewhere in net ltd.