![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফাল্গুন প্রাতের উতলা গো, চৈত্র রাতের উদাসী
“একুশ আমার একুশ তোমার একুশ বাঙ্গালীর।
কামার কুমার কৃষক তাঁতীর একুশ কাঙ্গালীর।”
রঙ্গ ভরা বঙ্গদেশ। উৎসবের নেই শেষ। বিজয় গেল, স্বাধীনতা এল বর দিল সরস্বতী। গুণগুণীয়ে একুশ এল আসবে আরো কত কি? বাংলাদেশ উৎসবের দেশ। এখানে বার মাসে তের পূজা। বছরে দু’ঈদ, আখেরী চাহার শোম্ভা, ঈদে মিলাদুন্নবী, আশুরা বা মহরম, বড়দিন, জন্মাষ্টমী, বৌদ্ধপূর্ণীমা, মাঘিপূর্ণীমা, বৈসাবী, বিজু। আছে পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাগুন, পৌষপার্বন, নবান্ন, চৈত্রসংক্রান্তি। আরো আছে সুন্নতে খৎনা, গায়ে-হলুদ, বৌভাত, মুখেভাত, হাতেখড়ি, কোমরে দড়ি, জামাই ষষ্ঠী ও আরো কত কি!
এত বৈচিত্র্য, এত উৎসব পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তাই হয়ত ডি এল রায় লিখেছে-
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।”
আসলে তাই। শাহ আব্দুল করিম গেয়েছেন-
“আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম.........”
আগের দিনগুলো সুন্দর ছিল। এখন নাকি মাঝে মধ্য কুরবানীর মাংস মন্দিরে যায়। তবে সে সব দুষ্টু কাকেরা সংখ্যায় খুবই কম। তাই আমাদের আগামীদিন গুলো আরো সুন্দর হবে। তাই রবীন্দনাথ লিখে গেছেন-
“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি...”
আসলে আমরা ভালবাসি। তা বাহিরে থাকলে টের পাওয়া যায় বেশী। যারা ভালবাসতে পারেনি তাদের জন্য আব্দুল হাকিম লিখেছেন-
“যে সবে বঙ্গেতে জন্মে হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্নয় ন জানি।”
বাঙ্গালীর এক মাত্র উৎসব যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আছে তা একুশ। আবদুল গাফফার চৌধুরী লিখেছেন-
“আমার ভাইয়ে রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি... ”
না ভুলবো কি করে। মা, মাতৃভাষা আর মাতৃভূমিকে ভুলার উপায় আছে কি? তাই জীবনানন্দ লিখেছেন-
“আবার আসিব ফিরে, ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়।
হয়ত মানুষ নয়তো শঙ্খচিল শালিকের বেসে।”
মাইকেল মধসুদন ফান্সের ভার্সাইতে বসে লিখেছেন-
“হে বঙ্গ ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন,
তা সবে আবোধ আমি অবহেলা করি।”
তিনি ফিরেছেন। লিখেছেন-
“দাঁড়াও পথিক...............
.........মাতা জাহ্নবী দেবী।”
সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনের বিকল্প নেই। ফুটফাট করে দু’চার কথা ইংরেজীতে বলতে পারলে আমরা শিক্ষিত ভাবি। আবার অনেকের বাংলা পড়তে, লিখতে বা বলতে গেলে নবাব সিরাজদ্দৌলা সিনেমা বা নাটকের ডায়ালগ মনে পড়ে যায়। হাঁটু কাঁপে।
হ্যাঁ, ইংরেজী শিখার বিকল্প নেই। ইংরেজী আন্তর্জাতিক ভাষা, জাতিসংঘের ভাষা। কমবেশি বিশ্বের সকল দেশে ইংরেজীর প্রচলন আছে। ডঃ শহীদুল্লাহ প্রায় ১৭টি ভাষা জানতেন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিচরণের জন্য ইংরেজীর বিকল্প নেই।
সাথে সাথে আদিবাসী বা উপজাতিদের ভাষা সংস্কৃতি সংরক্ষণ করতে হবে। সংরক্ষণ করতে হবে বাংলাদেশ বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা। সংরক্ষণ করতে হবে আমাদের ডায়েলেক্ট গুলো। সংরক্ষণ করতে হবে হাওর বাওর অঞ্চলে ভাষা, ময়মনসিংহ গীতিকা।
ডঃ শহীদুল্লাহ বলেছেন-
“বাংলার প্রতিটি পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে সাহিত্য...” সেসব সংগ্রহ করতে হবে।
টিভির নোয়াখালী, বরিশাল বা পুরান ঢাকার ভাষায় নির্মিত নাটক এখনো দর্শকদের অনেক মজা দেয়।
বৈশাখী মেলায় বোমা ফোটে। বই মেলায় রামদা দিয়ে কোপায়। লেখক ও প্রকাশকের কোমরে দড়ি পড়ে। লালন মেলায় হামলা হয়। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর বাড়ী পুড়ে। তবুও বলি একুশ নিয়ে বিভেদ থাকার কথা নয়।
“একুশ আমার একুশ তোমার একুশ শফী হুজুরের।
একুশ গোলাম সাহেব বিবির একুশ মুঠে মুজুরের।”
একুশ আমাদের বন্ধনের সুতা। একুশ আমাদের বৃত্তের কেন্দ্র। একুশ ঘুড়ির লাটাই।
“কহিল গুণ গুণে একুশ এল আট ফাল্গুনে।
একুশেরই মর্ম জ্বালা উথলে ওঠে হৃদয় কোণে।
তপ্ত প্রাণ সিক্ত হয় একুশের জয় গানে।
কহিল গুণ গুণে একুশ এল আট ফাল্গুনে।”
সবাইকে একুশের শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০
জয় মন্ডল বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন