নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় শিক্ষক হলেও নেশায় লেখক ও পর্যটক। \'\'ভালো আদর মন্দ আদর\'\'(২০১৩) তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই

এইযেদুনিয়া

আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত

এইযেদুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি হব সকাল বেলার পাখি

২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:১৩

জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের মধ্যে ইয়ার দোস্তি টাইপ সম্পর্ক ছিল। বর্তমানের ডিজুস ছেলেমেয়ের মত তাঁরাও পরস্পরকে মামা-ভাগিনা বলিয়া সম্বোধন করিতেন। আমার কথা বিশ্বাস না হইলে নিজেই দেখিয়া লউন না নজরুলের লেখা ‘’খোকার সাধ’’ কবিতাখানি। উহাতে তিনি বলিয়াছেন,



‘’ সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে’’



এই সূয্যিমামা যে আমাদেরই রবিদাদা তাহা আর বলিয়া দিতে হইবে না। নজরুলের সকল ব্যাপারেই ছিল বিদ্রোহী মনোভাব। রবিদার সহিত টেক্কা দিয়া তিনি রচনা করিয়াছেন কত শত কবিতা, গান, গজল, কীর্তন, শ্যামা সংগীত! তথাপি নোবেল পুরষ্কারটি তাঁহার কপালে জুটিল না। এহেন ঘটনায় নজরুলের মনে আক্ষেপ সৃষ্টি হয়। আর তা ফুটিয়া উঠে তাঁহার কবিতায়, গানে, বিদ্রোহী ঢঙ্গে...



‘’ সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে’’



ইহা তো ঠিক, রবীন্দ্রনাথ কখনোই বেলা দ্বিপ্রহরের আগে ঘুম হইতে জাগিতে পারিতেন না। নাম রবি হইলে কী হইবে? সেই জন্য সকাল বেলার পাখি হইবার রাস্তাটি খোলা রইল নজরুলের জন্য।







সকল ব্যাপারেই নজরুল রবীন্দ্রনাথের সহিত পাল্লা দিয়া চলিতেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁহার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করিলেও তাড়াহুড়ায় উত্তর দিতে চাহিতেন না নজরুল। পাছে পিছে পড়িয়া যান! বিশ্বাস হইল না তো আমার কথাখানি! তাহা হইলে নিজেই দেখিয়া লউন না, ঐ কবিতাখানি, যাহা লইয়া এত মাতামাতি চলিতেছে। আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি ‘’খোকার সাধ’’ কবিতাখানির কথাই বলিতেছি।তাহাতে কবি লিখিয়াছেন,



‘'সূয্যিমামা বলবে উঠে, ‘খোকন, ছিলে ভাল?’



বলব ‘মামা, কথা কওয়ার নাই ক সময় আর।‘’








এইবার চক্ষু-কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন হইল?







নজরুল বয়সে রবীন্দ্রনাথের চাইতে ছোট হইলে কী হইবে? এক কাঠি সরেস ছিলেন গুরুদেবের চাইতে। গু্রুদেব দাঁড়ি রাখিলে নিজেও ঝাঁকড়া কেশ রাখিয়া দিলেন ভাব লইবার জন্য। ইহা ছাড়াও কবিগুরু ‘’তালগাছ’’ কবিতাখানি রচনা করিবার পরে নজরুল বিদ্রোহ করিয়া উঠেন। তালগাছের সহিত নিজের নাম অক্ষয় করিয়া রাখিবার জন্য তিনি আরেকখানা কবিতা রচনা করিলেন একই শিরোনামে।







‘’ঝাঁকড়া-চুলো তালগাছ, তুই দাঁড়িয়ে কেন ভাই?



আমার মত পড়া কি তোর মুখস্ত হয় নাই?’’







এই দুইটি পংক্তি পড়িবার পরে আর সংশয় থাকে না, নজরুল কী বোঝাইতে চাহিয়াছিলেন। ঝাঁকড়া-চুলো তালগাছটি আর কেহই নয়, আমাদের বিদ্রোহী কবি নিজে। কবিগুরু যেহেতু তথাকথিত স্কুল-কলেজে বিদ্যালাভ করেন নাই, তিনিই বা কেন বিদ্যালয়ের পথ মাড়াইবেন? পড়া মুখস্থ করিবার ভয়ে এবং নিজের মান রক্ষার জন্য তিনি বিদ্যালয় হইতে পলায়ন করিতেন। যেহেতু কবি নজরুল কবিগুরুর ন্যায় ‘’একলা চল রে’’ নীতিতে চলিতেন না, সেহেতু তিনি শ্রেণীর সকলকে লইয়া, দলবল বাঁধিয়া মার্চ পোস্ট করিতে করিতে বিদ্যালয় হইতে পলায়ন করিতেন। জানা যায় ঐ সময়ই তিনি ‘’চল, চল, চল’’ সংগীতটি রচনা করিয়াছিলেন।







গুরুদেবের সহিত বিদ্রোহী কবির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিবার ভুড়ি ভুড়ি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করা সম্ভব। সেই সব দৃষ্টান্তের মধ্যে না গিয়া আমি আমার আলোচনা ‘’খোকার সাধ’’ কবিতাখানিতে সীমাবদ্ধ রাখিতে চাই। এই কবিতাটিতে কবি আবারও বলিয়াছেন,





‘’রবির আগে চলব আমি ঘুম-ভাঙা গান গেয়ে’’।







মূলত কবিগুরুকে পশ্চাতে ফেলিয়া সম্মুখপানে ছুটিয়া চলিবার জন্যই কবি নজরুল বিদ্রোহ করিবার পাশাপাশি ‘’সকাল বেলার পাখি’’ হইতে চাহিয়াছেন। ভাবিয়াছিলেন আর কিছু না হউক, ‘’ ’চল, চল, চল’’ সংগীতটির স্পীডে চলিতে থাকিলে অন্ততঃ কবিগুরুর পূর্বে স্বর্গে পৌঁছাইতে পারিবেন।কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হইল না। কবিগুরু বিদ্রোহী কবিকে কাঁচকলা দেখাইয়া চলিয়া গেলেন স্বর্গে। সেই বেদনা সহিতে না পারিয়া নজরুল একদিন অকস্মাৎ বাকরুদ্ধ হইয়া যান। কবিগুরুর সহিত টেক্কা দিয়া রাখা ঝাঁকড়া কেশ তিনি ক্রোধে ছিঁড়িতে লাগিলেন। দ্রুতই তাঁহার ইন্দ্রলুপ্ত হইয়া গেল। এই সকল নাটকই কবিগুরু স্বর্গে বসিয়া দেখিতে পাইতেন। আর মুচকি মুচকি হাসিতেন। কিন্তু তাঁহার সেই হাসি দীর্ঘ পক্কশুশ্রুর নিচে থাকিত বলিয়া কাহারো গোচরীভূত হইত না। কয়েক বৎসর পরে স্ব্বর্গে যাইয়া কবিগুরুর সহিত বিদ্রোহী কবির পুণরায় সাক্ষাৎ হইল।







১১ এপ্রিল, ২০১১



কবি নজরুল কেন সকাল বেলার পাখি হতে চেয়েছিলেন তা জেনতে চেয়ে রস+আলোতে ছাপানোর জন্য ফেবুতে কমেন্ট চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমার কমেন্ট এত বড় নোট হয়ে গিয়েছিল যে, ওটা আর ছাপানোর যোগ্য হতে পারে নি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:২৮

বড় বিলাই বলেছেন: এত্ত বড় কমেন্ট! তবে এটা ছাপালে ভালোই হত। :#)

২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৩২

এইযেদুনিয়া বলেছেন: :-B এটা ছাপালে বাকি কমেন্টগুলো ছাপানোর জায়গা হতো না। পত্রিকায় ছোট লেখাকে বেশি প্রায়োরিটি দেওয়া হয়। তার উপর বিজ্ঞাপণের জন্যও জায়গা রাখতে হয়।

২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৫২

মুখোশে ঢাকা আমি মুকিত বলেছেন: অনেক মজার লেখাটা

২৩ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:৩৭

এইযেদুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:০৪

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:

অবশেষে জানলাম, এটা একটা মন্তব্য ছিলো :)

৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২৬

এইযেদুনিয়া বলেছেন: B:-) B:-) B:-/ B:-/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.