নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

""রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর"\' বেঁচে থাকলে কি ব্লগিং করতেন ?

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩১



খুলনা-যশোর এলাকায় জগন্নাথ কুশারি নামে এক ব্রাক্ষ্মণ ছিলেন । তিনি মুসলমানদের সঙ্গে আত্মীয়তা করার কারনে কুলীন ব্রাক্ষ্মণ থেকে পীরালি ব্রাক্ষ্মন হয়ে যান । যে ব্রাক্ষ্মণরা মুসলামানদের সাথে সম্পর্ক করত তাদের সাথে সব রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করে সমাজের অন্য ব্রাক্ষ্মণরা ,এক ঘরে করে দেওয়ার মত আরকি । তার পুত্র ছিল পঞ্চানন কুশারি । পঞ্চানন কুশারি এর পুত্র ছিল নিলমনী কুশারি যিনি যশোরে তাদের পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গের গোবিন্দপুরের সুতানীতি গ্রামে(মেছোঘাট এলাকায়) জায়গা কেনেন । এইখানে মেছোঘাট এলাকায় মাছের ব্যবসা শুরু করেন ,চেহারা এবং চাল-চালনে তার ভিতর ব্রাক্ষ্মণ এর ছাপ পাওয়ায় এলাক্র লোকজন ,জেলেরা তাকে ঠাকুর বলে ডাকত । এই এলাকাতেই ব্রিটিশরাও এসে ব্যবসার কাজ শুরু করেন । ফলে নীলমণির ব্যবসা বাড়তে থাকে ।
নীলমনি ঠাকুরের পুত্র ছিল রামমনি ঠাকুর এবং রামলোচন । রামলোচনও একজন ধনী বানিয়া ও বাণিজ্যপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তিনি অপুত্রক ছিলেন বলে ভ্রাতা রামমণি ঠাকুরের পুত্র দ্বারকানাথকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন।

দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন অভিজাত শ্রেণীর মানুষ । উত্তিরাধিকার সূত্রে পাওয়া প্রাপ্ত ধন-সম্পদ এবং জমিদারি তিনি আর বৃদ্ধি করেন । দ্বারকানাথের জীবনে সৌভাগ্যের অগ্রযাত্রা শুরু হয় ১৮২৮ সালে তাঁর সেরেস্তাদারের চাকরি লাভের মধ্য দিয়ে। পরবর্তী সময়ে লবণ ও আফিমের আবগারি বোর্ডে দীউয়ানের পদ লাভ করে তাঁর আরও উন্নতি হয়। দীউয়ান হিসেবে তিনি বারো বছর চাকরি করেন। চাকরির পাশাপাশি লবণ প্রস্তুতকারক ও অন্যান্যদের মধ্যে অর্থ লগ্নি করে তিনি মহাজনি ব্যবসায় যোগ দেন ।তিনি জাহাজ ব্যবসা, রপ্তানি বাণিজ্য, বীমা, ব্যাংকিং, কয়লা খনি, নীলচাষ, শহরের গৃহায়ণ প্রকল্প এবং জমিদারি তালুকে অর্থ বিনিয়োগ করেন। তাঁর ব্যবসার তদারকি করার জন্য তিনি কয়েকজন ইউরোপীয় ম্যানেজার নিযুক্ত করেন।

১৮২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়ন ব্যাংক-এরও তিনি অংশীদার ছিলেন। তিনি প্রথম বাঙালি হিসেবে বেসরকারি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন । তার চলচলন এবং জীবন পদ্ধতি ব্রিটিশদের মত ছিল,ব্রিটিশদের সাথে তার মাধ্যমেই প্রথম ঠাকুর পরিবারের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তখন তিনি একমাত্র বাঙালি যাকে ব্রিটিশদের সমকক্ষ ভাবা হত । ব্রিটিশদের কাছ থেকে তিনি এইকারনে প্রিন্স উপাধি পেয়েছেন । ঠাকুর পরিবারের উত্থানের পিছনে তার অবদান অপরিসীম , এত কিছুর পরেও কলকাতার কুলীন ব্রাক্ষণদের সাথে ঠাকুর পরিবার বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াতে পারেনি একমাত্র তাদের পূর্বপুরূষ পীরালি ব্রাক্ষ্মণ ছিল বলে , বিয়ের জন্য ঠাকুর পরিবারের পূর্ববঙ্গে আসতে হয়েছে । কিন্তু তৎকালীন কলকাতার ব্রাক্ষ্মণ সমাজ তাদের পরিবারে আসা যাওয়া করত ,ব্যবসা বাণিজ্য করত ।এর পিছনে কারন হল ঠাকুর পরিবারের সাথে ব্রিটিশ সরকারের ভাল সম্পর্ক ।


দ্বারকানাথ ঠাকুরের যোগ্য পুত্র ছিল দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর । দেবেন্দ্রনাথ তার পিতার ব্যবসা বাণিজ্য সামলাতে থাকেন , বিয়ে করেন সারদা দেবীকে । তিনি ধর্মবিষয়ে আগ্রহী হয়ে মহাভারত, উপনিষদ ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দর্শনসহ বিভিন্ন বিষয় অধ্যয়ন শুরু করেন। এর ফলে পার্থিব বিষয়ের প্রতি তাঁর বীতস্কৃহা জন্মে এবং তাঁর মধ্যে ঈশ্বরলাভের আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়। তিনি এক-ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন । তিনি ব্রাক্ষ্মবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন । দেবেন্দ্রনাথ পূজা-পার্বণাদি বন্ধ করে ‘মাঘ উৎসব’, ‘নববর্ষ’, ‘দীক্ষা দিন’ ইত্যাদি উৎসব প্রবর্তন করেন।তিনি আলখোল্লা পরতেন এবং সাধক ছিলেন ।

দেবেন্দ্রনাথের চৌদ্দতম সন্তান/৮ম পুত্র ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি মন ছিলনা । ঠাকুর বাড়িতে তখন যাত্রাগান হত । সেইসব দিকে তার বেশ ঝোঁক ছিল । কিন্তু ছোটবলে তাকে ঢুকতে দেয়া হতনা । কবিতা ,ছবি আঁকার ,গল্পশোনার প্রতি ছিল ভীষন আগ্রহ ।ছেলেবেলায় জোড়াসাঁকোর বাড়িতে অথবা বোলপুর ও পানিহাটির বাগানবাড়িতে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করতেন রবীন্দ্রনাথ ।

আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলেন ।রবীন্দ্রনাথ তার বাবার মত আললখোল্লা পড়তে শুরু করলেন । কবিতা লেখাও শুরু করলেন । তার বাবা এসব সকল খবর জানলেন । রবীন্দ্রনাথকে তিনি একটু অন্য চোখে দেখতেন , মনে হয় তার মত পোষাক পরার জন্য । তিনি চাইলেন তার ছেলেকে বিলেত পাঠিয়ে ব্যারিষ্টারি পড়াবেন ।

পড়াশোনায় মনযোগী না হওয়ায় তাকে তার পিতা বিলেত পাঠালেন । বিলতে গিয়েও পড়াশোনা শেষ হলনা তার । ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে যান রবীন্দ্রনাথ। প্রথমে তিনি ব্রাইটনের একটি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন ১৮৭৯ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে আইনবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। কিন্তু সাহিত্যচর্চার আকর্ষণে সেই পড়াশোনা তিনি সমাপ্ত করতে পারেননি। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন শেকসপিয়র ও অন্যান্য ইংরেজ সাহিত্যিকদের রচনার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে। এই সময় তিনি বিশেষ মনোযোগ সহকারে পাঠ করেন রিলিজিও মেদিচি, কোরিওলেনাস এবং অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা।এই সময় তাঁর ইংল্যান্ডবাসের অভিজ্ঞতার কথা ভারতী পত্রিকায় পত্রাকারে পাঠাতেন রবীন্দ্রনাথ।

১৮৮০ সালে বিলেত থেকে ফিরে এসে লিখলেন কাব্যগ্রন্থ "কবিকাহিনী " ।বিলেত থেকেই ফিরে মূলত রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক জীবন শুরু হয়। ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের এই সাহিত্য চর্চা কেউ ভাল চোখে দেখত না । মোটামুটি পাগলামি বলেই ভাবা হত । কিন্তু রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম মনযোগ দিয়ে শুনতেন তার বউঠাকুরান 'কাদম্বরী দেবী '।কাদম্বরী যখন বঊ হয়ে ঠাকুর পরিবারে আসেন তখন তার বয়স ছিল ৯ এবং রবীন্দ্রনাথের ছিল ৭ । তখন থেকেই তাদের মধ্যে একটা বন্ধূত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে ওঠে । কাদম্বরী দেবীকে দেবেন্দ্রনাথ ছাড়া কেউ ভাল চোখে দেখত না । রবীন্দ্রনাথ এবং কাদম্বরী দেবী মাঝে তাই একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে ।
রবীন্দ্রনাথ নিজেই লিখে গেছেন " ‘‘আপন মনে পড়ার চেয়ে আমার পড়া শুনতে বউঠাকরুণ ভালবাসতেন। তখন বিজলিপাখা ছিল না। পড়তে পড়তে বউঠাকরুনের হাতপাখার একটা ভাগ আমি আদায় করে নিতুম।’’


১৯৪০ সালে যখন রবীন্দ্রনাথ ‘ছেলেবেলা’ লিখলেন, তখন উন্মোচিত হল কাদম্বরীর সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গ সম্পর্কের নানা দিক। জানা গেল, কীভাবে ‘‘যা-তা তর্ক নিয়ে কথা-কাটাকাটি’’ চলত দু’জনের, কীভাবে ঠাকুরপোর কবিত্বশক্তিকে একেবারে নস্যাৎ করে দিয়ে কাদম্বরী ‘‘কেবলই খোঁটা দিয়ে বলতেন, কোনোকালে বিহারী চক্রবর্তীর মতো’’ লিখতে পারবেন না তিনি। বলা বাহুল্য, ‘তর্ক’ ও ‘খোঁটা’র বাহ্যিক ও ছদ্ম অম্লতার অন্তরালে নিহিত ছিল পারস্পরিক স্নেহ ও শ্রদ্ধার মাধুর্য। জানা গেল, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ যখন কাছারিতে যেতেন তখন তেতলার ঘরের দ্বিপ্রাহরিক নির্জনতায় বউদি ও দেওরের সময় কাটত পারস্পরিক সান্নিধ্যে ।

রবীন্দ্রনাথ ভবতারিণীকে বিয়ে করেন ৯ই ডিসেম্বর ১৮৮৩ সাল । ভবতারিনীকে ঠাকুর পরিবার থেকে নাম দেয়া হয় । এর কয়েক মাস পরেই কাদম্বেরী দেবী ১৯৮৪ সালের এপ্রিল মাসে আত্মহত্যা করেন । কাদম্বরীর মৃত্যুর পরে ঠাকুরবাড়িতে পুলিশ এলেও মৃতদেহ পাঠানো হয়নি মর্গে। বরং করোনার কোর্ট বসানো হয় বাড়িতেই। আত্মহত্যার খবর যাতে কোনও সংবাদপত্রে প্রকাশিত না হয়, তা সুনিশ্চিৎ করতে ঠাকুরবাড়ির তরফে বিভিন্ন মহলে ঘুষ দেওয়ারও হিসেব পাওয়া যায়।

৫১ বছর বয়সে ‘জীবনস্মৃতি’(১৯১২) লিখতে বসে রবীন্দ্রনাথ জানালেন, তাঁর ‘‘চব্বিশ বছর বয়সের সময় মৃত্যুর সঙ্গে যে পরিচয় হইল তাহা স্থায়ী পরিচয়।’’ যদিও রবীন্দ্রনাথের ২৪ বছর বয়সের সময়ে ঠাকুরবাড়িতে মোট তিনটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে— রবীন্দ্রনাথের ভগ্নীপতি সারদাপ্রসাদ, বউঠাকুরানি কাদম্বরী, ও মেজদাদা হেমেন্দ্রনাথের; তবু মৃত্যুর সঙ্গে কবির স্থায়ী পরিচিতি যে মূলত কাদম্বরী-প্রয়াণের সূত্র ধরে— একথা কালে কালে সর্বব্যাপকভাবেই অনুমিত হয়।


এরপর রবীন্দ্রনাথের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে ।তিনি সাহিত্য কর্মে আরো বেশি মগ্ন হয়ে পড়েন । ১৮৮৪-১৯০০) পল্লীগীতি ও কীর্তনের অনুসরণে রবীন্দ্রনাথ নিজস্ব সুরে গান রচনা শুরু করেন।১৮৯০ সালে জমিদারি দেখার জন্য তিনি পূর্ববঙ্গে আসেন । ১৯০১ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ববঙ্গে ছিলেন ।

রবীন্দ্রনাথ একাধারে ছিলেন কবি ,সাহিত্যিক ,প্রাবন্ধিক , শিক্ষক , সংগঠক , দার্শনিক ,অভিনেতা , পর্যটক । তিনি মোট বারো বার বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন । তিনি দূরদর্শীসম্পন্ন মানুষ ছিলেন । তিনি জীবনে ২৫২ টি চিঠি লিখছিলেন এবং চিঠি লেখার পর তার এক কপি আবার লিখে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলন সেগুলো ভবিষ্যৎ এ সাহিত্যকর্মরুপে বিবেচ্য হবে বলে । তার চিঠি পত্রের সংকলন নিয়ে হায়াত মামুদ সম্পাদিত ''ছিন্নপত্র" গ্রন্থ বেড়িয়েছে । তিনি পূর্ববংগ এসে যশোরে প্রথম ফুল চাষ শুরু করেন ,যশোর থেকে এখন সারা বাংলাদেশে ফুল সরবারহ করা হয় । তার নিজের প্রতিষ্ঠা করা শিল্প ও সংস্কৃতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় " বিশ্বভারতী" এর স্বনামধন্য প্রাক্তনীদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অস্কারবিজয়ী চিত্র-পরিচালক সত্যজিৎ রায়, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ।

তিনি তার জীবদ্দশায় ৬৩ বছর সৃষ্টিশীল জীবনে-

কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন - ৫৬ টি ।
নাটক লিখেছেন- ৫০ টি ।
প্রবন্ধ লিখেছেন -৩৯ টি (৮০০ বিষয়ের ওপর )।
গল্প লিখেছেন-১৫০ টি ।
ভ্রমনকাহিনী - ৩ টি , আত্মজীবনী - ২ টি ।
গান - ২৫০০ টি ।
উপন্যাস -১২/১৩/১৪ টি (মতভেদ রয়েছে) ।
চিঠিপত্র-২৫২ টি ।
চিত্রকল্প - ২৫০০+ ।

তার লেখালেখির পরিধি আশ্চর্যজনক । বর্তমানযুগে কোন মানুষের পক্ষে রীতিমত অসম্ভব ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার লেখা ২৫২ টি চিঠি এর মধ্যে ২৪২ টি চিঠি লিখেছিলেন ইন্দিরা দেবীর কাছে । ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী রবীন্দ্রানাথের অগ্রজ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর মেয়ে ছিল । ইন্দিরা দেবী ছিল সঙ্গীতশিল্পী, লেখক ও অনুবাদক। ঠাকুরবাড়ির মেয়েদের মধ্যে তিনিই প্রথম বি.এ পাশ করেন ।

১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে তিনি পাঁচটি মহাদেশের ত্রিশটিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন। প্রথম জীবনে দুই বার (১৮৭৮ ও ১৮৯০ সালে) তিনি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। ১৯১২ সালে ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য তৃতীয়বার ইংল্যান্ডে গিয়ে ইয়েটস প্রমুখ কয়েকজন ইংরেজ কবি ও বুদ্ধিজীবীদের কাছে সদ্যরচিত গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ পাঠ করে শোনান। কবিতাগুলি শুনে তাঁরাও মুগ্ধ হয়েছিলেন।
ইয়েটস স্বয়ং উক্ত কাব্যের ইংরেজি অনুবাদের ভূমিকাটি লিখে দিয়েছিলেন।এই ভ্রমণের সময়েই "দীনবন্ধু" চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে। ১৯১৩ সালে সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাঁকে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করে। ১৯১৬-১৭ সালে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ সাম্রাজ্যবাদ ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে কতকগুলি বক্তৃতা দেন।
এই বক্তৃতাগুলি সংকলিত হয় তাঁর ন্যাশনালিজম (১৯১৭) গ্রন্থে। তবে জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের বিরূপ মতামত উক্ত দুই দেশে সেই সফরকালে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। ১৯২০-২১ সাল নাগাদ আবার ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান কবি।

এই সফরের সময় পাশ্চাত্য দেশগুলিতে তিনি সংবর্ধিত হয়েছিলেন।১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ যান চীন সফরে।এরপর চীন থেকে জাপানে গিয়ে সেখানেও জাতীয়তাবাদবিরোধী বক্তৃতা দেন কবি। ১৯২৪ সালের শেষের দিকে পেরু সরকারের আমন্ত্রণে সেদেশে যাওয়ার পথে আর্জেন্টিনায় অসুস্থ হয়ে কবি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর আতিথ্যে তিন মাস কাটান।স্বাস্থ্যের কারণে পেরু ভ্রমণ তিনি স্থগিত করে দেন। পরে পেরু ও মেক্সিকো উভয় দেশের সরকারই বিশ্বভারতীকে ১,০০,০০০ মার্কিন ডলার অর্থসাহায্য প্রদান করেছিল।১৯২৬ সালে বেনিতো মুসোলিনির আমন্ত্রণে ইতালি সফরে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রথমে মুসোলিনির আতিথেয়তায় মুগ্ধ হলেও, পরে লোকমুখে তাঁর স্বৈরাচারের কথা জানতে পেরে, মুসোলিনির কাজকর্মের সমালোচনা করেন কবি। এর ফলে উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ছেদ পড়ে। এরপর রবীন্দ্রনাথ গ্রিস, তুরস্ক ও মিশর ভ্রমণ করে ভারতে ফিরে আসেন ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শেষ প্রবন্ধ " সভ্যতার সংকট" এ বহুল জনপ্রিয় এবং আলোচিত একটি কথা বলে যান -
"মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ " ।


আশিংক তথ্যসূত্র ; উইকিপিডিয়া ।
ছবিসূত্র ; গুগুল ।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: করতেন কিনা জানি না কিন্তু তাঁর নামে সত্যি একজন পুরানা ব্লগার ছিলেন।

ব্লগার নাফিস ইফতেখার এর ব্লগ এ সম্পর্কে পোস্ট পেতে পারেন :)

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৮

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: আমার মনে হয় করতেন ।

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৩

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: করতেন। তবে সামুতে না। নিজেই একটা ব্লগ সাইট খুলে তারপর সেখানে করতেন। তার বাবার টাকার অভাব ছিল না। আজ থাকলে তাকে বাংলা একাডেমিতে পাওয়া যেতো। তিনিও সবার সাথে সেলফি তুলতেন। আইফোন দিয়ে

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এখন তো আর জমিদারি প্রথা নেই

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ব্লগিং করতেন না।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৬

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: কেন ?

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

টারজান০০০০৭ বলেছেন: শোনা যায় , চার্লি চ্যাপলিনের নামে একখানা প্রতিযোগিতা হইয়াছিল কে কত ভালোভাবে চার্লিকে অনুকরণ করিতে পারে তাহার উপর। ইহাতে চার্লিও নাম দিয়েছিলেন , অংশগ্রহণও করিয়াছিলেন ! ফলাফল , উনি প্রতিযোগিতায় চতুর্থ হইয়াছিলেন !!

আমার মনে হয় রবীন্দ্রনাথ এখন ব্লগে আসিলেও ব্লগের বোদ্ধা (!) কবিদের কাছে পাত্তা পাইতেন না !

ম্যাংগোপিপল তাহার কবিতাও পড়িত না , কারণ কবিতা পড়ার চল চলিয়া গিয়াছে !!

কবিতা পোস্ট করিলে ব্লগের মডু কপি-পেস্ট করার অপরাধে জেনারেল বানাইয়া রাখিত ! ন্যাশনাল আইডি দেখাইয়া তবে সেফ হইতেন !

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সেরা উত্তর এটা ।

৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬

বিজন রয় বলেছেন: কেমন আছেন?

নতুন পোস্ট দিন।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৪

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এইত আছি দাদা ,আপনি কেমন আছেন?

৬| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৮

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: বহুদিন পরে দেখলাম....
আমার ব্লগে দাওয়াত রইলো :)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৬

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: অবশ্যই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.