নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্তচিন্তার বিকাশ চাই

আমাকে ফেবুতে খুজতে https://www.facebook.com/eislamul

বি, এম, ইমন

বি, এম, ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঁশি

১৭ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

চারুকলা ডিপার্টমেন্টের পাশের ফুটপাতে লাবু মিয়া নামে একজন মানুষ হ্যান্ডিক্র্যাফট বিক্রি করেন। আমি আসলে তার সাথে যখন ফোনে কথা বলেছিলাম এবং তার যে নামডাক শুনেছিলাম তাতে মনে করিনি আমি যার কাছে যাচ্ছি সে আসলে ফুটপাতে পেপার বিছিয়ে বসে থাকা একজন মানুষ হবেন। তার দেখা পাওয়াই যে দায়। কারন তিনি লাবু মিয়া, বাঁশির বিস্ময়!



দীর্ঘদিন বাঁশি শেখার শখ লালল করছি মনে মনে। কোথায় শিখবো কোথায় শিখবো করতে করতে লাবু ওস্তাদজীর খোজ পেলাম। তিনি ওই ফুটপাতে বসেই বাঁশি শেখান। বেতন নামমাত্র, কেউ দিলে নেন না দিলে নাই। বেতন উনি নেন ওনার গুলশান-ধানমন্ডির ক্লাসে। তাও আকাশ ছোঁয়া!



আমার দীক্ষা শুরু হয়েছে আজ দুইদিন। বাঁশিতে ফু দিতে দিতে যখন মরা কান্নার মতন একপ্রকার শব্দ বের হয় তখনও ওস্তাদজীর কন্ঠে কোন রাগ দেখি না। আমারই নিজের উপর রাগ ধরে যায়। উনি কি দেখাচ্ছেন আর আমি বাজাচ্ছি! কিন্তু তার কন্ঠে থাকে শুধুই অনুপ্রেরনা। বাঁশি শেখানোড় ফাকে ফাকে উনি আবার ওনার ফুটপাত দোকানের বেচাকেনাও সামাল দেন। কখনো দিতে হয় ওনার ছাত্র হিসেবে আমাদেরও। মানুষ সবাই রাস্তা দিয়ে হেটে যায় আর আমাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কারন আমি আনাড়ি হলেও ওখানে ওনার কিছু ছাত্র আসলেই মারাত্মক বাঁশি বাজায়। অন্যেরা আসলে মেলাতে পারে না যে ফুটপাতে এরা কি করছে! এতো সুন্দর বাঁশি বাজানো একদন তরুন (সাথে একজন আনাড়ি) এখানে কি করে?



মাঝে মাঝে ফু দিতে দিতে আমার বাঁশিতেও কেমন একটা কান্নার মতন সুর বেজে ওঠে! তখন ওস্তাদজীর কন্ঠের আনন্দ দেখে কে! আমি বাঁশিতে সুর তুলেছি! বড় ভাইয়ারা সবাই অনুপ্রেরনা দেয়। মাঝে মাঝে মাথার মধ্যে এক ধরনের ঘোর তৈরী হয়। রাস্তার ফুটপাতে পুরানো পেপারের উপর বসে মানুষের অবাক চোখের দিকে তাকিয়ে নিজেকে কেমন যেন ক্ষুদ্র মনে হয়। মহাকালের অতল গর্ভে হারিয়ে যেতে বসা এক ক্ষুদ্র মানব। বারবার মনে হয়, আমি আসলে ক্ষুদ্র হতেই এসেছিলাম, বড় হতে নয়.........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.