নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মা জানো,\nসিন্ধুর গভীরে ছোট বিন্দু আমি,\nআজই আমার মাঝে,\nপ্রাণের সঞ্চার অনুভব করছি.....\nহৃদপিন্ডটা স্পন্দিত হচ্ছে,\nআমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।

সনজিত

এই ব্লগের সব লেখার সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যাতিত কোন লেখার সম্পুর্ণ অথবা অংশ বিশেষ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন অথবা সম্পাদনা করে কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

সনজিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশু ও গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি চাহিদা

২৩ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৩১

গর্ভকালীন সময় ২৮০ দিন। এ সময় ক্যালরির মোট প্রয়োজন ৮০ হাজার কিলো ক্যালরি। সাধারণত ৬-১৪ সপ্তাহের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মা বমিতে আক্রান্ত হন। এ অবস্থায় তাদের আহার গ্রহণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় খানিকটা বিরতি দিয়ে বারবার খাবার খেলে ভালো হয়। তবে খাবার যাই হোক না কেন, খাদ্যের সবক'টি উপাদান থেকে খাদ্য গ্রহণ করলে সেটিই হবে সুষম খাবার।

সাধারণ মহিলাদের চেয়ে গর্ভবতী নারীদের আমিষ জাতীয় খাদ্য বেশি গ্রহণ করা উচিত ভ্রণের বৃদ্ধির জন্য। এর পরিমাণ হবে দৈনিক ৯০-১০০ গ্রাম। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, শিমের বিচি, বাদাম আমিষের ভালো উৎস। চর্বি জাতীয় খাদ্য একটু সতর্কতার সঙ্গে খেতে হবে। এ সময় অনেকের রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। চর্বি জাতীয় খাদ্য খাবারের ভিটামিন এ, ডি, ই-কে রক্তে প্রবাহিত হতে সাহায্য করে এবং য়ুতন্ত্র গঠন করে। এ জন্য চর্বি একেবারে নিষিদ্ধ নয়।

নবজাত শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনের জন্য গর্ভাবস্থার শেষ ৩ মাসে খাবারে ক্যালসিয়াম বাড়াতে হয়। এ ছাড়া ভ্রণের বৃদ্ধি, প্রসবের পর সন্তানকে দুধ পান করানো, গর্ভাবস্থায় মাংসপেশির সংকোচন কমানোর জন্যও ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়। দুধ, দই, পনির, ঘোল, লাচ্ছি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। যদি এ্রকান্তই দুধ খাওয়া না যায় তাহলে কাটাসহ ছোট মাছ, শুঁটকি, ডাল, সবুজ শাক-সবজি বিশেষ করে সরষে শাক ও পালংশাক খেয়ে ক্যালসিয়ামের অভাব মেটানো যায়। স্তন্যদায়ী মায়েদের প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম নির্গত হয়। এ জন্য তাদের দৈনিক অতিরিক্ত ৬০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতে হয়। এ সময় দৈনিক আধলিটার দুধ খেতে পারলে ভালো হয়। গর্ভাবস্থায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা যায়। এ কারণে প্রতিদিন লৌহ জাতীয় খাবারের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এ জাতীয় খাবারের মধ্যে আছে কলিজা, শুকনা ফল, সবুজ সবজি, কালো কচুর শাক, লালশাক, টেংরা মাছ, ডিম ইত্যাদি। ফলিক এসিডের অভাবেও গর্ভবতী মায়েদের রক্তস্বল্পতা হতে দেখা যায়। এ জন্য খেতে হবে পালংশাক, লেটুস পাতা, কলিজা, শুকনা শিমের বিচি ও ডাল। এ সময় দেহে পানি জমে এবং রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে বলে খাবারে সোডিয়াম ক্লোরাইড (লবণ) নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

গর্ভকালীন সব ধরনের ভিটামিনের চাহিদা বেড়ে যায়। ভিটামিন 'এ' প্রয়োজন হয় ৫ হাজার আইইউ। এটা পাওয়া যাবে কলিজা, ডিমের কুসুম, মাখন, গাঢ় সবুজ ও হলুদ সবজি, ফল ও দুগ্ধজাত খাদ্য থেকে। মায়ের দেহে ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন 'ডি' প্রয়োজন। ডিমের কুসুম, কলিজা, সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল ইত্যাদি থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এর প্রাকৃতীক উৎস হল সূর্যের আলো।

প্রাণিদেহে ভিটামিন 'ই' প্রজনন ক্রিয়ায় সহায়তা করা ছাড়াও গর্ভপাত ও মৃত সন্তান প্রসবের হার কমায়। এর উৎস হল উদ্ভিদজাত তেল, দুধ, মাংস, ডিম, বাদাম, পাতা ও হলুদ সবজি। রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে বলে গর্ভের শেষের দিকে ভিটামিন 'কে' গ্রহণ করতে হয়। এ জন্য টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডিমের কুসুম, সয়াবিন তেল ও কলিজা খাওয়া উচিত। ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন এ সময়ের একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি মাংসপেশিকে সবল রাখে, য়ুতন্ত্রকে ঠিক রাখে। এ ছাড়া কোনও কোনও ক্ষেত্রে বমিভাব দূর করে। গরুর মাংস, কলিজা, বাদাম, ডাল, ডিম ও মাছ এর ভালো উৎস।

গর্ভবতী মায়ের খাবার এমন হওয়া উচিত যাতে ওজন কমে না যায়। এ সময় প্রথম তিন মাসে ২ কেজি, দ্বিতীয় ৩ মাসে ৪ কেজি এবং শেষ তিন মাসে ৬-৮ কেজি ওজন বাড়া উচিত। যদি ওজনের এই হারটি বজায় থাকে তাহলে বুঝতে হবে ঠিকমতোই পুষ্টকর খাবার গ্রহণ করছেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রথমেই যেন ওজন অস্বাভাবিক হারে বেড়ে না যায়। খাবার হতে হবে সুষম, পুষ্টিসম্মত, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত ও সহজপাচ্য।

০-১ বছর শিশুর পুষ্টি

শিশুর প্রথম ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধই শ্রেষ্ঠ খাবার। নবজাত শিশুর পুষ্টি মূলত নির্ভর করে ৩টি বিষয়ের ওপর। যেমন :

গর্ভাবস্থায় মা ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার খেয়েছেন কিনা;

২। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুকে ঠিকমতো খাবার দেয়া হচ্ছে কিনা;

৩। স্বাস্থ্য রক্ষার অন্য বিধানগুলো যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার, পরিবেশ ইত্যাদি যথোপযুক্ত আছে কিনা।

যদি সব কিছুই ঠিক থাকে তাহলে শিশুর ওজন ও উচ্চতা নির্দিষ্ট নিয়মেই বেড়ে চলবে।

৬ মাস পূর্ণ হলে শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিপূরক খাবার দিতে হবে। প্রথমে তরল খাবার। এরপর আস্তে আস্তে খাবারের পরিমাণ ও ঘনত্ব বাড়াতে হবে। যেমন প্রথমদিন ২-৪ চা চামচ কমলা লেবু/টমেটোর রস, মাল্টার রস পানি মিশিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া আস্তে আস্তে দেয়া যাবে

গাঢ় সবুজ রঙের সবজি+মিষ্টি কুমড়া+গাজর সেদ্ধ করে ছেকে শুধু পানিটুকু দিতে হবে ২-৫ চা চামচ।

ডিমের কুসুম ১-২ চা চামচ। কখনোই ডিমের সাদা অংশ নয়।

শাক-সবজি ও ডালের স্যুপ।

মাছ অথবা মাংসের ক্লিয়ার স্যুপ

দুধ+চালের সুজি পাতলা করে দিতে হবে।

ভাত+মুগডাল+সবজি+তেল একসঙ্গে রান্না করে ব্লেন্ডারে তরল করে দিতে হবে।

এ ছাড়া সেদ্ধ আলু, পাকা পেঁপে, পাকা কলা খুব অল্প পরিমাণে দেয়া যেতে পারে।

তবে মনে রাখতে হবে এসব খাবারের ফাঁকে ফাঁকে অবশ্যই মায়ের দুধ দিতে হবে।

১-৫ বছর

এ সময় শিশুর খাবারের ধরন যেমন ধীরে ধীরে পরিবর্তন হবে, তেমনি খাবারের পরিমাণও বাড়াতে হবে। খাদ্য শক্তি প্রয়োজন হবে দেহের বর্ধন ও ছোটাছুটির জন্য। ক্যালরির ঘাটতি হলে বর্ধন ব্যাহত হবে এবং প্রোটিনেরও অভাব হবে।

এ সময় উন্নতমানের প্রোটিন দেয়া প্রয়োজন এবং প্রোটিন বা আমিষের পরিমাণও বেশি হবে। প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১.৫ থেকে ২ গ্রাম আমিষ দিতে হবে। যদি একান্তই উন্নতমানের প্রোটিন দেয়া না যায় তাহলে ডাল, ছোলা, শিমের বিচি, মোটর, চিনাবাদাম, ছোট মাছ দেয়া যেতে পারে। যেহেতু দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ দেয়া উচিত এবং ধীরে ধীরে যখন মায়ের দুধ বন্ধ হয়ে যায় তখনও শিশুদের খাবারে দুধের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ দুধ ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। হাড়ের বৃদ্ধি ও হাড় মজবুতের জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের খাবারে ঘি মাখন তেল অবশ্যই থাকতে হবে। চর্বিবিহীন খাবার শিশুদের জন্য প্রযোজ্য নয়।

এ বয়সের শিশুদের প্লেটে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিতে হবে। যাতে সে খাবার খেতে শেখে এবং খাবার পছন্দ করে খেতে পারে। খাবার আকর্ষণীয় এবং সুঘ্রাণ যুক্ত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জোরপূর্বক না খাওয়ানোই ভালো। সে যতটুকু খেতে পারে ঠিক ততটুকুই দিতে হবে। এমন কোনও খাবার শিশুদের সামনে রাখা উচিত নয়, যা তারা অপছন্দ করে। প্রতিদিন একই সময় খাবার খেতে দেয়া উচিত। খুব বেশি গুরুপাক এবং ভাজা খাবার এ বয়সে না দেয়াই ভালো। এতে হজমে গোলমাল হতে পারে।

স্কুল বয়সী ছেলেমেয়েদের পুষ্টি : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্টে জানা যায়, স্কুলের ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় দেখা যায়, তাদের হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি থাকে অনেক। কারণ স্কুল গেটে ভিড় বেশি হয় ঝাল মশলাযুক্ত বিভিন্ন ধরনের খাবার ও দূষিত পানির আইসক্রিম ও অন্যান্য বাসি খাবারের বিক্রেতাকে ঘিরে। বাচ্চারা নিজেদের সুস্বাদু টিফিন ফেলে সেদিকেই ছুটছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.