নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকাল অনেকে “ শায়খ আলবানী শায়খ আলবানী” বলে নাক-মুখের পানি একাকার করে ফেলছেন। আলবানী রাহিমাহাল্লাহ যা বলছেন, তা-ই ফুল এন্ড ফাইনাল হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। তিনি যে হাদিসকে সহীহ বলেছেন, সেটাই যেন চূড়ান্ত; এরকম ভাব নিচ্ছেন অনেকেই।
কিন্তু আলবানী (রহঃ) হাদিস সম্পর্কে, বিভিন্ন মনীষীর ব্যাপারে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা মুসলিম উম্মাহকে অবাক করে দিয়েছে। নিম্নে তাঁর কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলঃ
●ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত
করাঃ
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) ইমাম
বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করেছেন।
ইমাম বোখারী (রহঃ) বোখারী শরীফের “কিতাবুত
তাফসীর” এ সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতের
যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে সম্পর্কে নাসীরুদ্দিন
আলবানী (রহঃ) লিখেছেন, “এ ধরণের ব্যাখ্যা কোন মুমিন-মুসলমান দিতে পারে না। তিনি বলেন, এ ধরণের ব্যাখ্যা মূলতঃ কুফরী মতবাদ “তা’তীলের” অন্তর্ভূক্ত”।
●শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) সম্পর্কে আলোচনাঃ
শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) লিখেছেন, “আমি শায়খ ইবনে তাইমিয়াকে দেখেছি, তিনি হাদীসের প্রথম অংশকে দুর্বল বলেছেন এবং হাদীসের শেষ অংশকে তিনি মিথ্যা মনে করেছেন। আমার ধারণামতে “হাদীসকে যয়ীফ বলার ক্ষেত্রে এটি ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) এর বাড়াবাড়ি, যা তাঁকে হাদীসটি যয়ীফ বলতে উদ্বুদ্ধ করেছে; অথচ তিনি হাদীস বর্ণনার বিভিন্ন পরম্পরা খতিয়ে দেখেননি। এবং এ ব্যাপারে গভীর দৃষ্টিপাত করেননি।”
[সিলসিলাতুস সহীহা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৩৪৩-৩৪৪, হাদীস
নং ১৭৫০]
●আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) “কালিমুত তাইয়্যিব” নামক বিখ্যাত একটি কিতাব রচনা করেছেন। শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) সে কিতাব সম্পর্কে লিখেছেন, “যারা আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) এর এ কিতাবটি সম্পর্কে অবগত রয়েছে, তাদেরকে নসীহত করব, এ কিতাবে যে সমস্ত হাদীস রয়েছে সেগুলোর প্রতি তারা যেন আমল করতে অগ্রসর না হয়, যতক্ষণ না হাদীসগুলো শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত হয়। আমি এর উপর যে টিকা সংযোজন করেছি, এর মাধ্যমে প্রত্যেকের জন্য বিষয়টি সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং যে সমস্ত হাদীস প্রমাণিত হবে সেগুলোর উপর আমল করা হবে, নতুবা সেটি পরিত্যাগ করা হবে”।
[সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব, পৃষ্ঠা-৪]
▪শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানীর এ কথা উল্লেখ
করে আল্লামা হাবীবুর রহমান আজমী (রহঃ)
লিখেছেন,
“অর্থাৎ নাসীরুদ্দিন আলবানীর একথা বলার দ্বারা মূল উদ্দেশ্য হল, মানুষ যেন আবশ্যকভাবে তাঁকে ইমাম বানায় এবং তাঁর অন্ধ অনুকরণ করে। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আলবানীকে জিজ্ঞেস না করবে এবং তার বিশ্লেষণকে গ্রহণ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লামা ইবনে তাইমিয়াসহ অন্য কোন বিশ্বস্ত ও গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী মুহাদ্দিসের হাদীসের উপরও নির্ভর করবে না।”
●হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনা করাঃ
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনা করে লিখেছেন, “এ থেকে স্পষ্ট যে, হযরত ঈসা (আঃ) আমাদের শরীয়ত অনুযায়ী ফয়সালা দিবেন এবং কিতাব সুন্নাহের মাধ্যমে বিচার করবেন। তিনি ইঞ্জিল, হানাফী ফিকহ কিংবা এজাতীয় অন্য কিছু দ্বারা বিচার করবেন না”।
[আল্লামা মুনযীরি (রহঃ) কৃত “মুখতাসারু সহিহীল
মুসলিম” এর উপর শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) এর টিকা সংযোজন, তৃতীয় সংস্করণ, ১৯৭৭, আল- মাকতাবুল ইসলামি, পৃষ্ঠা-৫৪৮]
▪উল্লেখ্য তাঁর পিতা ছিলেন একজন হানাফি আলেম।
এছাড়া তিনি তার জীবনে দীর্ঘ একটি সময় নিজেও
হানাফী ছিলেন। তাঁর জীবনীতে লেখা হয়েছে,
“প্রথম জীবনে হানাফী, পরবর্তী জীবনে নিজেই
মুজতাহিদ ইমাম”। [সাবাতু মুয়াল্লাফাতিল আলবানী, আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আশ্-শামরানী, পৃষ্ঠা-২, ১৬]
●শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (রহঃ) এর
প্রতি অভিশাপঃ
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ সম্পর্কে শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) লিখেছেন “আল্লাহ তায়ালা তোমার হাত অবশ করে দিক এবং তোমার জিহ্ক্ষাকে কর্তন করুক । [কাশফুন নিকাব, পৃষ্ঠা-৫২]
তিনি আরও বলেন , সে হল উটের প্লেগ রোগের মত একটা মহামারী (গুদ্দাতুল বায়ীর)। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে উপহাস করে বললেন, তোমরা কি জানো, উটের প্লেগ কী?
●ড. ইউসুফ আল-কারযাবী সম্পর্কে শায়েখের
উক্তিঃ
তিনি ড. ইউসুফ আল-কারযাবী সম্পর্কে বলেছেন “তুমি ইউসুফ কারযাবী থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখো এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করো”। তিনি ড. ইউসুফ আল-কারযাবী সম্পর্কে আরও বলেছেন “ইউসুফ আল-কারযাবী শরীয়ত বিরোধী ফতোয়া প্রদান করে, তার কাছে রয়েছে ভয়ঙ্কর সব দর্শন”।
●জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে শায়খ
নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছেন,
“কী আশ্চর্য! জালালুদ্দিন সূয়ূতী তাঁর জামে সগীরে কিভাবে এ হাদীস উল্লেখ করতে একটু লজ্জাবোধ করলেন না!”
তিনি জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে আরও
লিখেছেন- “জালালু্িদ্দন সূয়ূতী (রহঃ) হাঁক-ডাক
ছেড়ে থাকেন।”
[সিল-সিলাতুজ জয়িফা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৮৯]
ইমাম হাকেম, ইমাম
●যাহাবী এবং আল্লামা মুনযিরি (রহঃ)
সম্পর্কে শায়েখের উক্তিঃ
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানীর দৃষ্টিতে একটা হাদিস
সহীহ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিস তাকে সহীহ বলায়
তিনি হাদীসের বিখ্যাত তিন মুহাদ্দিস ইমাম
হাকেম, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনযিরি (রহঃ)
সম্পর্কে বলেছেন,
“হাকেম বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম
যাহাবী তাঁর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন।
ইমাম মুনযিরি (রহঃ) “তারগীব ও তারহীব” নামক
কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর এটি হয়েছে,
তত্ত্ব-বিশ্লেষণের প্রতি উদাসীনতা, তাকলীদের
প্রতি আত্মসমর্পণ (অন্ধানুকরণ), নতুবা একজন
বিশ্লেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে সহীহ
বলতে পারেন”!
●হাফেয তাজুদ্দিন সুবকী (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী মন্তব্য করেছেন- মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামি তাঁকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উপকারিতা নেই। [সিল-সিলাতুজ যয়িফা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৫]
মূলতঃ শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত
অধিকাংশ মুহাদ্দিসের হাদীসের সমালোচনা করেছেন। এবং এ সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি হাদীসশাস্ত্রের কোন মূলনীতিরও তোয়াক্কা করেননি। বড় বড় মুহাদ্দিসগণ যে সমস্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন, সেগুলোকে তিনি যয়ীফ বলেছেন, আবার তারা যেটাকে যয়ীফ বলেছেন, তিনি নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সেগুলোকে সহীহ বলেছেন।
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১০
ফাহিম বদরুল হাসান বলেছেন: তাঁর বিষয়ে কথা বলাটা প্রয়োজন। কেন, সেটা পরের পর্বে দেখতে পারেন।ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৯
আজমান আন্দালিব বলেছেন: খালি প্যাঁচ আর প্যাঁচ। একজন একাত্মতা ঘোষণা করে তো আরেকজন কুৎসা করে।