নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

just simple

ফাহিম বদরুল হাসান

just simple

ফাহিম বদরুল হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমানুষদের কবলে আজ আ-মরি বাঙলা ভাষা!

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৮

ফ্রান্সে আসার পরও বাচ্চাদের সাথে আড্ডা দেয়ার নেশাটা কাটে নি। এজন্য শত ব্যস্ততার মাঝেও কাজের ফাঁকে ছুটির দিনে বাচ্চাদের আরবি শেখানোর জন্য কিছু বাঙালি বংশোদ্ভূত শিশু-কিশোর বের করলাম। আমার ভাল লাগল, তাদেরও শেখা হল। আরবি শেখানোর পাশাপাশি বাঙলা ভাষাটাও শেখানোর চেষ্টা করতাম। টার্গেট, এদেরকে নাড়ির সাথে জুড়ে দেয়া। আরবি শিখার মাধ্যমে যাতে “মুসলিম” জাত ধারণ করতে পারে, এবং বাঙলা শিখার মাধ্যমে তাদের পূর্বপুরুষের দেশ, ভাষা সম্পর্কে ধারণা থাকে। বাচ্চারাও দারুণ এনজয় করে শেখে। অনেক সময় বাঙলা ভাষাকে এতোই গুরুত্ব দিত যে, তাদের বই-খাতায় বাঙলায় তাদের নাম দেখা যায়।

কাওসার। আমার 12 বছর বয়সী ছাত্র। কোর’আন কারীম বিশুদ্ধভাবে দেখে পড়তে পারে, এবং বেশ কয়েকটি সুরাও মুখস্থ করেছে। তাই তাকে বাঙলা শেখাতে একটু বেশি সময় দিচ্ছিলাম। হঠাৎ একদিন এসে বলল, সে আর বাঙলা শিখবে না। তার বাবা নিষেধ করেছেন।
আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম। ছেলেকে আরবি পড়াতে এসে ফ্রি’তে অন্য একটি বিষয় শেখাচ্ছি, খুশি হওয়ার কথা, উল্টো নিষেধ করলেন! প্রথমে তো খুশিই হয়েছিলেন। নিশ্চয়ই স্কুলের পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাঙলা নিয়ে সময় কাটাচ্ছে, তাই নিষেধ করেছেন।

পরে কাওসারের বাবার মুখ থেকে “নিষিদ্ধের কারণ” শুনে লজ্জা এবং ঘৃণায় চোখ নামিয়ে নিলাম। তার কথাটি ছিল এরকম- “দরকার নাই ভাষা শেখার। ভাষা শিখতে গিয়ে ছেলের কারেক্টার নষ্ট করে লাভ নাই। সে বাঙলা শেখার জন্য Google’এ সার্চ দেয়। যেই “অ” লিখতে যায়, related search আসে অশ্লীল ছবি, “ক” লিখতে যায়, নিচে আসে কাকিমা রেপ, “খ” দিতেই related search দেখায় “খারাপ ছবি। একবার “মা” লিখে সার্চ দিয়েছিল, যেসব বাক্য চোখে পড়ল, আস্তাগফিরুল্লাহ! ছেলেটি পড়তে পারে নি, আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। কখনো বিশ্রী গল্প, কখনো বিশ্রী ছবি! কেন এরকম আসে? অন্য ভাষায় “মা’’ কিংবা “চাচি” লিখলে তো এসব আসে না!”

বিদেশে এলে দেশাত্মবোধ বেড়ে যায়। আপন মাটি,ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদির প্রতি একটা অসম্ভব টান তৈরি হয়। এটা শুনতাম। যখন বিদেশে এলাম, অনুধাবন করলাম। অন্য সভ্যতা, সংস্কৃতির সাথে নিজের সভ্যতা, সংস্কৃতির তুলনা করি। বিদেশী (বন্ধুটাইপ) অনেকের সাথে দেশ, ভাষা ইত্যাদি নিয়ে প্রায়ই বিতর্ক হয়। বিভিন্ন ভাবে আমার দেশ, ভাষা, সংস্কৃতিকে সভার উপরে রাখতে চেষ্টা করি। কিন্তু রক্তের দামে কেনা ভাষা আজ কিছু চরিত্রহীন, লম্পট এবং অমানুষের কারণে কলুষিত হচ্ছে।

বর্তমানে অনলাইনে কোনো মানুষ বাঙলা ভাষা বিষয়ে ধারণা নিতে সার্চ করলে মোটামুটি একটা “রাবিশ জাতি” হিসেবে আবিষ্কার করতে পারে। মা,খালা, বোন জাতীয় অতি পবিত্র শব্দগুলোও কিছু বাঙালি মানুষ(?) দূষিত ফেলেছে।

নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করি, ভার্চুয়াল জগতে কি কখনো মানুষ বাঙালির সংখ্যার আধিক্য হবে না, কিংবা অনলাইনের (সেই) বাঙালি এক্টিভিস্টরা কি কখনো মানুষ হবে না?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪১

পথে-ঘাটে বলেছেন: 'রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি'।



আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.