![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াই। ফিকশন ও নন-ফিকশন দুই ধরনের লেখাই লিখি। গল্প লিখি, প্রবন্ধ লিখি, অনুবাদ করি। 'যোগাযোগ' নামের একটি একাডেমিক পত্রিকা সম্পাদনা করি। আপাতত চলচ্চিত্র-অধ্যয়ন এলাকায় উচ্চতর গবেষণা করছি।
আগের পর্ব: Click This Link
বাংলাদেশের জনপ্রিয়ধারার ছবিগুলোর মধ্যে ষাটের দশক ছিল একই সঙ্গে নাগরিক রোমান্স (আবির্ভাব, ১৯৬৮) ও লোকজ ছবির (রূপবান, ১৯৬৫) দশক, সত্তরের দশক ছিল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক (ওরা এগারো জন, ১৯৭২) এবং গ্রামীণ ক্ষমতাকাঠামো সংক্রান্ত ও জনজীবন চিত্রায়ণের (নয়নমনি, ১৯৭৬; মাটির ঘর, ১৯৭৯) দশক, আশির দশক ছিল ফ্যান্টাসি (সওদাগর, ১৯৮২) ও অ্যাকশন ছবির (নসীব, ১৯৮৪) দশক আর নব্বইয়ের দশক ছিল টিনএজ প্রেম (চাঁদনী, ১৯৯১) ও সহিংস (দাঙ্গা, ১৯৯২) ছবির দশক। বর্তমান দশকে নব্বই দশকের ধারাবাহিকতায়ই ছবি নির্মাণ হচ্ছে (মনের মাঝে তুমি, ২০০৪; ইতিহাস, ২০০২), তবে ভায়োলেন্স বেড়েছে মারাত্মকভাবে, যৌনতার বিকৃত উপস্থাপন চূড়ান্ত পর্নোগ্রাফিতে পৌঁছেছে।
যেহেতু জনপ্রিয়ধারার ছবিগুলো অনেকখানিই নায়ক-নায়িকাকে নির্ভর করে নির্মিত হয়, তাই বলা যায়: ষাটের দশক হলো রাজ্জাক-কবরীর, সত্তরের দশক হলো ফারুক-ববিতার, আশির দশক ওয়াসীম-অঞ্জুর, নব্বই দশক সালমান শাহ-শাবনূরের আর বর্তমান দশক হলো প্রয়াত মান্নার। তবে এই দশকের শেষের দিকে শাকিব খান সুপারস্টার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। বর্তমান দশকে নায়িকা গৌন হয়ে পড়েছেন এবং নায়ক মান্না ভায়োলেন্সপূর্ণ ছবির আইকন-অভিনেতায় পরিণত হয়েছে। ভায়োলেন্সনির্ভর এইসব ছবির প্রবণতা শুরু হয় নব্বই দশকে নির্মিত কাজী হায়াতের দাঙ্গা ছবিটির মাধ্যমে। কাজী হায়াৎ নির্মিত দাঙ্গা (১৯৯২), ত্রাস (১৯৯২) কিংবা বর্তমান দশকের ইতিহাস (২০০২) নামের ছবিগুলোর খানিকটা পরিশীলিত রূপ থাকলেও, এই ধারার বাকি প্রায় সব ছবিই তার ছবিরই অপরিশীলিত অনুকরণ। বলাবাহুল্য রোমান্টিক কাহিনীনির্ভর কিছু ছবি পাশাপাশি নির্মিত হয়ে থাকে (মনের মাঝে তুমি, ২০০৩), কিন্তু সন্ত্রাসনির্ভর ছবিগুলোই শেষ পর্যন্ত চলচ্চিত্র-শিল্পের মূল ধারা। রোমান্টিক কাহিনীর ছবিগুলো কখনোই মান্না-অভিনীত ছবিগুলোকে ছাপিয়ে উঠতে পারে নি।
পটভূমি ও পদ্ধতি
আমাদের গবেষণা-টিম ২০০৩-২০০৪ সালে সারাদেশে পরিভ্রমণ করে যে-ছবিগুলো দেখেছে তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল -- ডেঞ্জার মিশন, ওরে বাবা, নয়ন ভরা জল, ঢাকাইয়া মাস্তান, ধ্বংস, বিদ্রোহী সালাউদ্দিন, রঙ্গীন চশমা, কালো হাত, পাপী সন্তান, বাঘের বাচ্চা, ঠেকাও বিচ্ছু, মহিলা হোস্টেল, সাবধান সন্ত্রাসী, জ্যান্ত লাশ, ব্যাচেলর, বাপ বেটার লড়াই, আঘাত পাল্টা আঘাত, ইমানদার মাস্তান, রংবাজ বাদশা, চেয়ারম্যান, গজব ও নয়া কসাই। এর মধ্য থেকে তিনটি ছবিকে বাছাই করে আধেয়-বিশ্লেষণভিত্তিক বর্তমান অধ্যায়টি দাঁড় করানো হয়েছে। ছবি তিনটি হলো এ আর রহমান পরিচালিত রঙ্গীন চশমা (২০০৪), এস এম সরকার পরিচালিত বাঘের বাচ্চা (২০০৪) এবং এফ আই মানিক পরিচালিত বিদ্রোহী সালাউদ্দিন (২০০৪)। ইতোমধ্যে এই তিনটি ছবির কাহিনীসংক্ষেপ ব্লগারদের অবহিত করা হয়েছে। আধেয় বিশ্লেষণে এই তিনটি ছবি ছাড়াও অন্যান্য ছবির অভিজ্ঞতাকেও প্রয়োজনে আলোচনায় সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে। ছবিগুলো দেখা হয় অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে। প্রেক্ষাগৃহে বসে ছবি দেখার পাশাপাশি দর্শকদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। ছবি চলাকালীন ও ছবিশেষে তৎক্ষণাৎ লিখিত আধেয়-বিশ্লেষণ এই আলোচনার ভিত্তি। তার সমর্থনে নির্বাচিত ছবিগুলোর ভিসিডি বাজার থেকে সংগ্রহ করে বার বার প্লেয়ারে চালিয়ে বক্ষ্যমান নিবন্ধটিকে দাঁড় করানো হয়েছে।
প্রথম পাঠ
ছবিগুলো দেখে মনে হয়েছে এগুলোর কাহিনী খুব দুর্বল, পারম্পর্যহীন, অসংলগ্ন, কখনো কখনো একই ধাঁচের। এসব ছবির সম্ভবত কোনো লিখিত চিত্রনাট্য থাকে না, ন্যারেটিভে কোনো সঙ্গতি নেই, পরিচালনায় নেই কোনো দক্ষতার প্রমাণ। কারিগরী দিক থেকে ছবিগুলো সাংঘাতিক দুর্বল: অস্বচ্ছ প্রিন্ট, অস্পষ্ট শব্দ, দুর্বল সম্পাদনার পাশাপাশি নেই চলচ্চিত্রিক ভাষার ন্যূনতম ব্যবহার। ক্যামেরা কেবলই পাত্র-পাত্রীকে অনুসরণ করে, পারিপার্শিক ডিটেল কিংবা প্রতীকের ব্যবহার একেবারে অনুপস্থিত। মেলোড্রামাটিক হৈ-চৈ, চিৎকার-হুংকার, কান্নাকাটি সারা ছবি জুড়ে বিরাজ করে।
ছবিগুলোর প্রধান অবলম্বন যৌনতা ও সহিংসতা। যৌনতার নামে এসব ছবিতে যা দেখানো হয় তা স্রেফ পর্নোগ্রাফি। আর আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ ও প্রতিশোধের নামে যে সহিংসতা দেখানো হয়ে থাকে তা পরিমাণে ও পারঙ্গমতায় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পর্নোগ্রাফির অংশটুকু বাদ দিলে এসব ছবিতে ভায়োলেন্স ছাড়া আর কিছুই থাকে না। পুরুষ ও নারী চরিত্রগুলোর নির্মাণ-কায়দাটি পুরুষ-প্রতীক ও নারী-প্রতিমা উভয়কেই নেতিবাচক পরিচয়ে তুলে ধরে: পুরুষ হলো সহিংস, তেজী, কামুক আর নারী হলো দুর্বল-অধস্তন, পুরুষের প্রেম-প্রত্যাশী ও পতিতা-পর্যায়ের।
চিত্রনাট্য নয়, ফর্মুলা
নির্বাচিত প্রতিটি ছবিতেই চিত্রনাট্যকারের নাম পাওয়া গেলেও, সুসংগঠিত কোনো চিত্রনাট্য এসব ছবিতে থাকে বলে মনে হয় না। কারণ সাত/আটটি গান, ১০/১১টি মারপিটের দৃশ্য, বিশাল ভিলেনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নায়ক -- এরকম একটি ফর্মুলায় ছবিগুলো বাঁধা। গানগুলোতে সেক্স মেশাতে হবে, মারপিটের দৃশ্যগুলোতে ভায়োলেন্সকে চূড়ান্ত কল্পনার স্তরে নিয়ে যেতে হবে, কাহিনীর লক্ষ্যতো এটুকুই। ভিলেনদের সন্ত্রাসী-গডফাদার হিসেবে চিত্রিত করা এবং তার বিরুদ্ধে জনদরদী প্রথম নায়ক কিংবা সৎ পুলিশ-অফিসার দ্বিতীয় নায়ক -- এইতো বাংলা ছবির প্রধান চরিত্র। নায়কের সহিংস হয়ে ওঠার পেছনের কারণ হিসেবে ছোটবেলায় বাবার হত্যাকাণ্ড, মায়ের ধর্ষণ কিংবা পরিণত বয়সে বোনের ধর্ষণকে দেখানো -- ফ্ল্যাশব্যাকে সঙ্গে দু-এক চিমটি মুক্তিযুদ্ধ দেখিয়ে দেয়া -- এই কাহিনীর মধ্যেই প্রায় সব ছবি ঘুরপাক খায়। একসময় ধনীর দুলালী নায়িকা ও নিম্নমধ্যবিত্ত নায়ক, গ্রামীন তরুণ-তরুণীর প্রেম বনাম কুচক্রী-কামুক মোড়ল, রাজকুমার আর বেদেনীর প্রেম ও তদ্উদ্ভূত সঙ্কট ইত্যাদি নানা ধরনের ফর্মুলা প্রচলিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেশপ্রেমিক যুবার সঙ্গে সন্ত্রাসী-গডফাদারদের দ্বন্দ্ব -- এই একটিমাত্র ফর্মুলায় ছবিগুলো চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ভালো চিত্রনাট্য না-থাকায় ও ফর্মুলায় বৈচিত্র্য না-থাকায় পরিচালক-প্রযোজকরা সহিংস দৃশ্যগুলো কীভাবে আরও বীভৎস করা যায়, যৌনতার বিষয়টিকে আরও কীভাবে বাড়িয়ে তোলা যায় -- সেদিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
চলবে ...
চিত্র: 'বাঘের বাচ্চা' ছবিতে মান্নার বিক্রম।
নোট: গীতি আরা নাসরীন ও ফাহমিদুল হকের 'বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প: সঙ্কটে জনসংস্কৃতি' শীর্ষক বইতে (শ্রাবণ, ২০০৮) এই আধেয় বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:১৫
ফাহমিদুল হক বলেছেন: এইটা মনে হয় টিনের তলোয়ার। কিন্তু ছবিতে এটাকে বোঝানো হয়েছে রামদার বড়োভাই জাতীয় কিছু।
বাঘের বাচ্চার জ্যাকেটটা লক্ষণীয়।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:১৪
শান্তির দেবদূত বলেছেন: কি নাম রে বাবা !!
ঢাকাইয়া মাস্তান, ঠেকাও বিচ্ছু, সাবধান সন্ত্রাসী, আঘাত পাল্টা আঘাত, ইমানদার মাস্তান, রংবাজ বাদশা, নয়া কসাই। ... নাম দেইখাই ডরাইছি
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:১৮
ফাহমিদুল হক বলেছেন: নামেই পরিচয়, ছবির ভেতরে কী! এইটা আমাদের একটা স্ট্যান্ড ছিল যে অশ্লীল অশ্লীল ছবি বলে যে চেঁচানো হতো দুবছর আগেও, ছবিগুলো মূলত ছিল ভায়োলেন্ট। ভায়োলেন্সের স্বরূপ পরবর্তী বিশ্লেষণে তুলে ধরা হবে। অশ্লীলতার ঐ চিৎকারটা ছিল নীতিবাগীশ মধ্যবিত্তের।
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:১৪
জনৈক আরাফাত বলেছেন: বাংলা ছায়াছবি দেখার ছেড়েই দিয়েছি যে! তবুও গবেষণামূলক পোস্ট পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২০
ফাহমিদুল হক বলেছেন: এজন্যই তো আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস। যাহা দেখেন না, তাহা কী, তাহা একটু জানাইয়া দিলাম।
৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:১৬
ফারহান দাউদ বলেছেন: হুম,জ্যাকেট টা দেইখা মনে হইতাসে বাঘের বাচ্চা তার বাপ মানে বাঘরে খতম কইরা চামড়া তুইলা জ্যাকেট বানায়া গায়ে দিসে।
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২১
ফাহমিদুল হক বলেছেন: কঠিন কমেন্ট। হাসতেছি।
৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২২
কাঙাল বলেছেন: সাংবাদিকতা বাদ দিয়া শেষ পর্যন্ত সিনেমায় কেন?
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২৪
ফাহমিদুল হক বলেছেন: সিনেমায় মজা বেশি।
সাংবাদিকতায় ফেরা হবে আবার।
৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২৭
ট্র্যানজিস্টার বলেছেন: লেখক কী পর্যন্ত পরিশ্রম করে এতগুলো মুভি দেখেছেন, অবিশ্বাস্য। উনাকে ধৈর্যের জন্যেই প্লাস।
"ছবিগুলো দেখে মনে হয়েছে এগুলোর কাহিনী খুব দুর্বল, পারম্পর্যহীন, অসংলগ্ন, কখনো কখনো একই ধাঁচের। এসব ছবির সম্ভবত কোনো লিখিত চিত্রনাট্য থাকে না, ন্যারেটিভে কোনো সঙ্গতি নেই, পরিচালনায় নেই কোনো দক্ষতার প্রমাণ। কারিগরী দিক থেকে ছবিগুলো সাংঘাতিক দুর্বল: অস্বচ্ছ প্রিন্ট, অস্পষ্ট শব্দ, দুর্বল সম্পাদনার পাশাপাশি নেই চলচ্চিত্রিক ভাষার ন্যূনতম ব্যবহার। ক্যামেরা কেবলই পাত্র-পাত্রীকে অনুসরণ করে, পারিপার্শিক ডিটেল কিংবা প্রতীকের ব্যবহার একেবারে অনুপস্থিত। মেলোড্রামাটিক হৈ-চৈ, চিৎকার-হুংকার, কান্নাকাটি সারা ছবি জুড়ে বিরাজ করে।"
হাহাহাহা প্রফেশনালিজম দেখে হাসছি
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৪৩
ফাহমিদুল হক বলেছেন: আমি অবশ্য এখানে উল্লিখিত সবগুলো ছবি দেখিনি। গবেষকদলের সম্মিলিত দেখার লিস্ট এটা। তবে সবগুলো ছবির নোট নিয়েই আমি কাজ করেছি। আর এসব ছবির পাঁচটা দেখা আর পনেরটা দেখার মধ্যে পার্থক্য সামান্যই।
৭| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২৮
শূন্য আরণ্যক বলেছেন: গুড পোষ্ট ~
এক সময় না এক সময় আমাদের রুচিশীল সমাজে অসাধারন কিছু ছবি নির্মাণ হবে ।
মন্দের পরেই ভালো থাকে ।
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৪৫
ফাহমিদুল হক বলেছেন: সেরকম আশাবাদ থেকেই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে কাজে নামা। দর্শকদের সিনেমাপ্রেমই ভালো সিনেমা তৈরীতে প্রণোদ্না যোগাবে।
৮| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৩০
ট্র্যানজিস্টার বলেছেন: অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যঃ আপনার সহকর্মীরা প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করার ব্যাপারে ঈষৎ উদাসীন বলে বোধ হয়। দুটি প্রশ্ন ছিলো।
১. কীভাবে ইন্টারনেটকে একটি নতুন ফ্রন্টিয়ার হিসেবে বেছে নিলেন?
২. অন্যদের শ্লথতার ব্যাপারে কী ভাবেন?
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৪০
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ১. মুদ্রণ মাধ্যমেই লেখালেখির শুরু। তবে মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট বা বলা যায় যেকোনো বিকল্প মাধ্যম আমার কাছে বরাবরই আগ্রহের বিষয়। তাই এই ফ্রন্টিয়ারে আসা। লেখালেখি মানে যদি হয় নিজের ভাবনাগুলো অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করা, তবে ব্লগ মাধ্যম হিসেবে অনবদ্য, বিশেষ করে এর ইন্টারএ্যাক্টিভ চরিত্রটি।
২. অন্যদের ব্যাপারটা বলতে পারিনা। হয়তো দুটো দিক আছে: প্রযুক্তি-উদাসীনতা এবং ব্লগের মতো গণজমায়েতে উচ্চাসন থেকে নামতে অনাগ্রহ।
৯| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৪১
ট্র্যানজিস্টার বলেছেন: ধন্যবাদ!
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৪৬
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ওয়েলকাম।
১০| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৫১
জিগ স বলেছেন: সুন্দর্পোস্ট +
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৩৫
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ।
১১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৫৪
জনৈক আরাফাত বলেছেন: জানতেই তো আসি। আপনার প্রায় সব লেখাই পড়া হয় আমার। অফলাইনে। এমনকি কমেন্টও। ভালো থাকুন।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৩৬
ফাহমিদুল হক বলেছেন: "আপনার প্রায় সব লেখাই পড়া হয় আমার।"
এটা জানা ছিলনা। অনেক ধন্যবাদ।
১২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:০৪
শিমুল সালাহ্উদ্দিন বলেছেন: ভালো লাগলো। শুভকামনা।
Click This Link
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৪৫
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ। লিঙ্কটা পড়েছি। সামান্য একটা মন্তব্যও করেছি।
১৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:০৯
অদ্রোহ বলেছেন: সহিংসতা ও অশ্লীলতা নির্ভর ছবিগুলোর কথা বাদই দিলাম,তথাকথিত চিত্রসমালোচকেরা যেসব মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ফিরিস্তি গান(উদাহরণস্বরুপ সালাউদ্দিন লাভলুর মোল্লাবাড়ির বউ),সেগুলোই বা কতটা মানসম্মত??
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৫১
ফাহমিদুল হক বলেছেন: মোল্লবাড়ির বউয়ের মতো ছবিগুলো শিল্পমানে উত্তীর্ণ নয়। তবে এন্টারটেইনিং মুভি হিসেবে মোটামুটি সফল। এখন একটা ইন্ডাস্ট্রি থেকে তো সব আর্ট ফিল্ম বানানো সম্ভব নয়, খুব অবাস্তব ভাবনা হবে সেটা। বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের শিল্পমান বৃদ্ধির জন্যই সচেষ্ট হওয়া ও কাজ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ইন্ডাস্ট্রি টিকিয়ে রাখে কোয়ালিটি কমার্শিয়াল ছবি, আর ন্যাশনাল ফিল্ম হিসেবে প্রেস্টিজ বয়ে আনে শিল্পমানের ফেস্টিভাল জেতা ছবি।
আমি শিল্পোত্তীর্ণ ছবির যেমন পক্ষে, তেমনি কোয়ালিটি ইন্ডাস্ট্রি মুভিরু পক্ষে। মুভিগোয়িং একটা সামাজিক প্রপঞ্চ, একটা কালচার, একে কোনোরকমে টিকিয়ে রাখার জন্য মোল্লাবাড়ির বউয়ের অবদান আছে বৈকি। আজ যেমন মনপুরা সেই ভূমিকা পালন করছে।
১৪| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:১০
অগ্নির বলেছেন: বাংলা ছবির এই দূর্দশার কারণ বোধহয় এই যে , এখানে গত এক দশক ধরে নিম্নশ্রেণী থেকে উঠে আসা ব্যবসায়ীদের রাজত্ব, যারা সিনেমার কিছুই বোঝেনা। ব্যবসা করে টাকা ওঠানোটাই এদের মূল লক্ষ্য। শিক্ষাগত যোগ্যতার বালাই তাদের নেই ।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৫২
ফাহমিদুল হক বলেছেন: এটা একটা বড়ো কারণ বটে।
১৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:৩১
ঊন্মাদ বলেছেন: বাঘের বাচ্চা দেখতে তো একদম মানুষের মত। এটা কোন পদ্ধতিতে সম্ভব হয়েছিল সে বেপারে কিছু বলবেন প্লিজ।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৫৪
ফাহমিদুল হক বলেছেন: আমার সহলেখক গীতি আরা নাসরীন তার এক লেখায় ষাটের দশকের নায়ক রাজ্জাককে বলেছিলেন 'ভাবপ্রবণ' আর শূন্য দশকের মান্নাকে বলেছিলেন 'উন্মাদ'। এখন উন্মাদ আপনিই বলেন, বাঘের বাচ্চা দেখতে কেন মানুষের মতো।
১৬| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:১৩
নুশেরা বলেছেন: ভায়োলেন্সের দাপটটা আসলেই অসহনীয়। ২০০০ সালে একটা সিনেমা এসেছিল; ভাংচুর অথবা চুরমার নাম। রামদা দিয়ে একজনের মাথা ধড় থেকে আলগা করে উড়িয়ে দেয়ার একটা দৃশ্য বিশাল করে পোস্টারে দেয়া ছিল; যার ওপর একজন কবি-র স্বাক্ষর (সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন)। এর মতো কুৎসিত দৃশ্য পোস্টারে আর দেখিনি। ফেনী শহরে এক সিনেমাহলের সামনে ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে ছিলাম অনেকক্ষণ, ঐ পোস্টারের পাশে। অসহ্য মাথা ধরে গিয়েছিল; সেই ভীড়ে এক মহিলাকে দেখেছিলাম বমি করে দিয়েছেন ঐ পোস্টার দেখে। ... আরেকটা ছবিতে দেখেছিলাম আবুল হায়াতের জিভ কেটে মাটিতে ফেলে দেয়ার দৃশ্য আছে... আর ডিপজল যে অকল্পনীয় কুৎসিত গালাগালি আমদানী করেছিল তার প্রভাব থেকে হুমায়ূন ফরিদীও মুক্ত ছিলেন না...
বিশ্লেষণ ভাল লেগেছে।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৫৮
ফাহমিদুল হক বলেছেন: পোস্টরটার কথা আমরও মনে আছে। রাজশাহীর উৎসব সিনেমা হলের পাশ দিয়ে রিকশায় যাবার সময় দেখেছিলাম। খুবই কুৎসিৎ দৃশ্য সেটা। আমি যেসময়ের ছবিগুলোর কথা বলছি (২০০০-২০০৬), এই সময়ে ছবিগুলো প্রতিযোগিতা করতো কে কতভাবে বীভৎসতা প্রদর্শন করতে পারে।
পরবর্তী বিশ্লেষণে সেপ্রসঙ্গ আসবে।
১৭| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:৫০
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: এইসব অ্যাকশন ধর্মী সামাজিক ছবি আমাদের জাতীয় সম্পদ!
এদের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে খবর আছে,কইলাম।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৮
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ডরাইছি! মান্নার চাপাতি কি এখন তায়েফ আহমাদের হাতে?
১৮| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১২:১২
অদ্রোহ বলেছেন: পুরোনো বোতলে নতুন মদ ভরার মত একই ফর্মুলা নিয়ে বীভৎসতা আর অশ্লীলতা নির্ভর ছবিগুলোকে একটু কাঁটছাট করে মোটামুটি পরিমার্জিত ও পরিশীলিত ছবিতে(সিনেমাটিক ভাষায় পারিবারিক বা সামাজিক মেলোড্রামা ) রুপান্তরের মানে যদি কোয়ালিটি হয় তবে আমার আর কিছু বলার নেই।তবে একথা মানতেই হবে,এক্ষেত্রে মনপুরা ছবি ছিল উজ্জ্বল ব্যতিক্রম।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০১
ফাহমিদুল হক বলেছেন: দেখেন, আমরা বাংলা সিনেমার যে স্বর্ণযুগের কথা বলি সেই ষাটের দশকের ছবিগুলো, ধরেন রাজ্জাক-কবরী অভিনীত ছবিগুলোই, সেগুলোর মান কি ভালো ছিল? বিশেষ করে সিনেমাটিক টেকনিকের দিক থেকে সেগুলো ছিল সাধারণ মানের। কিন্তু মানুষ সিনেমা হলে গেছে, পর্দায় একটা গল্প শুনতে বা দেখতে। এইটা একটা সংস্কৃতি ছিল যে মানুষ সপরিবারে বা সবান্ধব প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখছে। চলচ্চিত্রের এই সামাজিকীকরণের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। এটা শিল্পোত্তীর্ণ কিনা সেই বিতর্ক এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এখনকার সময়ে মানুষের বিনোদনের অপশন অনেক বেশি বেড়ে গেছে, তাই একটা ছবির পক্ষে দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে টেনে আনা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। একই ছবির ডিভিডি/সিডি পাওয়া যায়, প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরপরই। এখনকার সিনেমাকে হতে হবে সেরকম পাওয়ারফুল যার সিডি ভার্সন দেখার পর দর্শক দৌড়াবে বড়োপর্দায় পুনরায় ছবিটি দেখতে। বিগত এক দশকে হিন্দি সিনেমা সেই কোয়ালিটি অর্জন করেছে। ওদের হল থেকে প্রচুর রেভিনিউ আসে, না কমে তা বেড়েই চলেছে।
মনপুরা ৫০ প্রেক্ষাগৃহে চলছে মানে এর অসাধারণ একটা পাওয়ার রয়েছে। গল্প ভালো নিশ্চয়ই। কিন্তু ভালো গল্প দিয়েও দর্শক সম্ভবত বেশি টানা যাবে না, টেকনিক্যালি একে ভালো হতে হয়েছে। এখন সমালোচকের মতো করে না বুঝলেও, প্রচুর বিদেশী ছবি দেখার মাধ্যমে দর্শক টেকনিকালি ভালো-মন্দের পার্থক্য ঠিকই করতে পারে।
আমি যে ছবিগুলোর কথা আলোচনা করছি, সেই ছবিগুলোর গল্প অবাস্তব, টেকনিকাল দশা আরও করুণ। আমরা দেশপরিভ্রমণে এটা বুঝতে পেরেছি যে যাদের বিনোদনের আর কোনো অপশন নেই তারাই কেবল এইসব দ্রব্য দেখে। এদের ঘরে হয়তো সাদাকালো টিভিও নেই।
আপনি মনপুরা মানছেন, মোল্লাবাড়ির বউ মানছেন না, ঠিকাছে, এটা বিচারের একটা মানদণ্ড হতেই পারে। আমি দুটাকেই মানতে প্রস্তুত আছি।
১৯| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১২:১৭
মুহিব বলেছেন: সিনেমার কমার্শিয়াল প্রয়োজনটা বুঝি। নায়ককে সিনেমার শেষে জিততে হবে তা আমি মেনে নেই। তাই বলে উদ্ভট কিছু মেনে নেয়া যায় না। বাংলা সিনেমার ডায়ালগ আর গল্প খুবই দূর্বল।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৩
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ছবিগুলোর গল্প অবাস্তব, টেকনিকাল দশা আরও করুণ।
২০| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৯
মুহাম্মদ শাহাদত হাসান বলেছেন:
ভাল বিশ্লেষণ। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র কতটা দুর্দশাগ্রস্থ লেখাটি থেকে বোঝা যায় সহজেই।
তবে একই সাথে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়ও খুজে বের করা দরকার। এ ব্যাপারে ফাহমিদ আপনার মতামত কামনা করছি।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৫
ফাহমিদুল হক বলেছেন: এই দুর্দশা থেকে উত্তরণে কী করা যায়, তা আমাদের বইতে আমরা আলোচনা করেছি। আগে সমস্যাগুলো আরো বিশদভাবে চিহ্নিত করে নেই, এরপর উত্তরণের দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
২১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৩
শওকত হোসেন মাসুম বলেছেন: হলে যখন ছবিগুলো দেখেছেন, দর্শক কি রকম ছিল। তাদের প্রতিক্রিয়াগুলো কেমন ছিল?
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৬
ফাহমিদুল হক বলেছেন: দর্শক কমই থাকতো। দর্শকদের মধ্যে বড়ো অংশই থাকতো শিশু-কিশোর আর দর্শকদের শ্রেণী ছিল নিম্নবিত্ত। এরা কেউ ক্ষুদে ব্যবসায়ী, কেউ কৃষক, কেউ ছাত্র। মেয়ে দর্শক থাকতো না বললেই চলে। চলচ্চিত্র শিল্পের যখন রমরমা অবস্থা ছিল তখন দর্শকদের বিরাট বা মেজরিটিই ছিল মহিলা। মহিলা দর্শক কমে প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে যাওয়া ধসের একটা কারণ।
প্রতিক্রিয়ার কথা কী বলবো? ছোট শহর বা থানাশহরের দর্শক ছিল তারাই যাদের আর কোনো বিনোদনের অপশন ছিলনা। এদের অনেকেই আবার গান বা কাটপিসগুলো দেখানো শেষ হলে উঠে যেতো। যারা বসে থাকতো তারাও খুব ক্যাজুয়ালি ছবি দেখতো, কাহিনী তাদের টান টান করে বসিয়ে রাখতে পারতো না। তবে কিছু দর্শক তো ছিলই মান্নার 'অ্যাকশন' দেখতেই তারা আসতো।
বরিশালের গৌরনদীর একটা সিনেমা হলে সিনেমা দেখেছিলাম, ছিলাম বিসিসির গেস্ট হাউস আর ইংরেজির রাকিব স্যারের বাসায় মিলে।
২২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫১
শওকত হোসেন মাসুম বলেছেন: আগের পর্বে পালাবি কোথায় নিয়ে একটু ভুল তথ্য দিয়েছিলাম বলে পরে মনে পড়লো। আসলে এটা জেন ফন্ডার নাইট টু ফাইব ছবির নকল। আর ঐ হিন্দিটার বাংলে সংস্করণেও একই রকম কাস্টিং ছিল প্রায়।
২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৮
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ঠিকাছে।
গৌরনদীর দর্শকদের একটা স্থিরচিত্র আছে আমার কাছে, কিন্তু স্লো নেটের কারণে কয়েকবার চেস্টা করেও ব্যর্থ হলাম পোস্ট করতে।
২৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:০৮
সব্যসাচী প্রসূন বলেছেন: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোন উপায় কি আপনারা খুঁজে বের করেছেন?? এভাবে আর কত দিন??
২৭ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ৭:৫২
ফাহমিদুল হক বলেছেন: উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করা তো বিশাল ব্যাপার। আমরা কিছু দিকনির্দেশনা দেবার চেষ্টা করেছি, আমাদের বইতে। তা নিয়ে এখানেও আলোচনা করা যাবে। আরও কয়েকটা পোস্টের পরে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:০৮
ফারহান দাউদ বলেছেন: মান্নার হাতে এইটা কি জিনিস? করাত মাছের করাত?