নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা ও বাবা - আমরা খুব গরীব ছিলাম

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৫

মা মারা গেছে ১৯৮০ সালে, যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। মা ছাড়া কীভাবে বেঁচে থাকা যায়- এটাই ছিল আমার সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয়। মা ছাড়া কি একটা সংসার চলতে পারে?

সব মায়ের প্রকৃতি একই। আমার স্ত্রীকেও দেখি, সন্তানরা কীরকম ভাবে যন্ত্রণা দেয়। কিন্তু আশ্চর্য, সব যন্ত্রণা নীরবে সহ্য করে যাচ্ছে এবং কখন কার জন্য কী খাবার বানাইতে হবে, কে না খেয়ে আছে, কে গোসল করে নাই এখনো- সবকিছু তার নখদর্পণে।

অনেকের মতো আমিও জানতাম না গতকাল মা-দিবস ছিল। অথচ সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পরই হঠাৎ মনে হলো - বাবাকে একটা কল দিই। এমনটা হয় সব সময়ই- মনে হয় না বাবা বেঁচে নেই। কিন্তু মুহূর্ত পরেই ভুল ভাঙে - বাবা এখন সকল কলের উর্ধে, আল্লাহর খাস দরবারে পৌঁছে গেছে অনেক আগেই।

ফেইসবুকে শেষ পর্যন্ত বাবাকে নিয়েই একটা স্টেটাস দিলাম গতকাল।

কী বাবা, কী মা- দুজনই একটা সন্তানের জন্য অসীম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, যাদের অস্তিত্বের সাথে সন্তানদের অস্তিত্ব আবর্তিত ও বিবর্তিত হয়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত, অনেক দুঃখ-কষ্টের মাঝে একজন বাবাও যখন 'ওহ মাগো' বলে আর্তনাদ করে ওঠে - তখন ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায়- আল্লাহ আমাদের জন্য মা-কেই শেষ আশ্রয়স্থল হিসাবে নির্ধারণ করে রেখেছেন।

মাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখেছিলাম অনেক আগে। আমার ছোটো ছেলেকে কয়েক বছর আগে পড়ে শোনাই। সে খুব তন্ময় হয়ে শুনছিল। পড়া শেষ হলে সে বলল- শুনতে শুনতে আমার খুব খারাপ লাগছিল। আমার ছোটো ছেলের এসব কবিতা বোঝার কথা না, কিন্তু মায়ের কথা এমনই কথা, যা এই ছোটো ছেলের ছোটো মনকেও নাড়া দিয়েছিল।

কবিতাটা নীচে শেয়ার করলাম।

**

আমরা খুব গরীব ছিলাম

আমার মায়ের একটা টিনের স্যুটকেস ছিল, যার রং ছিল জংপরা সবুজ
কাঁড়ের এক কোণে ওটা সযত্নে তুলে রাখতো মা, আর মাঝে মাঝে
নামিয়ে তা থেকে বের করতো পাতাবাহারের ছাপাঅলা একটা লাল পলিয়েস্টার শাড়ি;
আমরা ছোটো ছোটো ভাইবোনেরা উৎসুক চোখে দেখতাম স্যুটকেসের ভেতরে
মায়ের মহামূল্য সম্পদগুলো- গোলমতো একটা সিঁদুরের কৌটো ছিল,
আমি এখনো জানি না আমার মুসলমান-জননীর কী প্রয়োজন ছিল ঐ সিঁদুরের।
আর যা যা ছিল, যদ্দূর মনে করতে পারি, কয়েকটা স্বর্ণের বালা, দুল, কিছু চুড়ি;
একটা বহুদিনের পুরোনো তিব্বত স্নো'র কৌটোও ছিল, হয়ত-বা।

আমার মায়ের স্যুটকেসটা জীর্ণ হতে হতে
ওর আংটা-টা হয়ে গিয়েছিল খুব ঢিলে;
একটা তালাও ছিল তাতে, চাবিটা কোথায় যেন লুকিয়ে রাখতো মা,
কেননা, তার আঁচলের গোছায় কয়েকটা চাবি ঝনাৎ শব্দ করতো, স্যুটকেসের চাবিটা
নিশ্চয়ই ওখানে দেখি নি।

মা যখন ভাঙা স্যুটকেসটা নামাতো, ওটা খুব ঝনঝন বা
ঠনঠন শব্দ করতো।

মাঝে মাঝেই মাকে দেখতাম স্যুটকেস নামিয়ে
তা থেকে শাড়িটা বের করতো, আর মলিন মুখে তা পরতো। শাড়ি পরে আমার মা
কোথাও বেড়াতে না গিয়ে রসুইঘরে ঢুকতো রান্না করতে, কিংবা ধান ভানতে,
কিংবা রাস্তার ওপার হতে নাড়ার আঁটি এনে গুছিয়ে রাখতো দুয়ারে। তারপর বাবা যেদিন
মেঘুলা বাজার থেকে একটা নতুন কাপড় কিনে আনতো মায়ের জন্য, মা তার
পরনের শাড়িটি খুলে, বহু যত্নে ভাঁজ করে ভাঙা স্যুটকেসের ভেতর সাজিয়ে রাখতো।
শৈশব হতে শুরু করে আমার ১৩-১৪ বছর বয়সে মায়ের
মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাকে শাড়িটি পরতে দেখেছি।
মা আমাকে প্রায়ই বলতো, ‘আমার এই শাড়িড্যা তর বউরে দিমু।’
মায়ের বালা, চুড়িগুলোও কোনো একদিন আমার বউয়ের হবে, মা বলতো।
আমি পরিবারের বড়ো ছেলে, এজন্য এটাই নিয়ম।

আমরা সে-সময় অতিশয় গরীব ছিলাম। আমার বাবা ছিল
একজন দরিদ্র চাষা, যার নিজের কোনো জমি ছিল না; আমার মা
সেই দরিদ্র চাষার আহ্লাদী ও লক্ষ্মী স্ত্রী ছিল, যাকে
পরনের কাপড়ের অভাবে প্রায়ই তুলে-রাখা
শাড়ি পরতে হতো। আমরা অতিশয় গরীব ছিলাম, আর আমার বাবা ও
মায়ের ছিল দুরবিন চোখ- তার সন্তানেরা ভবিষ্যত পালটে দেবে।

৩০ কি ৩২ বছর পেরিয়ে গেছে। মায়ের ভাঙা স্যুটকেসটা কোথায় যে হারিয়ে গেছে, জানি না।
পাতাবাহারের ছাপাঅলা লাল শাড়িটা আমার চোখে এখনো দিব্যি ভাসে।
ওটার খবরও জানি না।

কাববোর্ডের ভেতর থকে থকে সাজানো স্ত্রীর শাড়িগুলোর দিকে তাকাই-
অকস্মাৎ বেহেশ্‌ত হতে নেমে এসে আমার মা যদি এগুলো দেখতে পেত,
আনন্দে অজ্ঞান না হয়ে সে যেতই না- তার গরীবের ঘরে আজ কী
সুন্দর সুন্দর চাঁদ ফুটেছে, একঝাঁক নাতি-নাতনি, যারা জানে না
তার দাদিমা একদিন কত্ত গরীব ছিল, যাকে পরনের কাপড়ের অভাবে
প্রায়ই তুলে-রাখা শাড়ি পরতে হতো।

১ নভেম্বর ২০১১

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: না আপনারা গরীব ছিলেন না।
আমাদের দেশটা গরীব। খুব বেশি দরিদ্র আমাদের দেশ।

চমৎকার কবিতা লিখেছেন। চোখে পানি এসে গেছে।

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: নিজের লেখায় নিজেই চমকে উঠলাম আজ এই লাইনটাতে -

আমরা অতিশয় গরীব ছিলাম, আর আমার বাবা ও
মায়ের ছিল দুরবিন চোখতার সন্তানেরা ভবিষ্যত পালটে দেবে।


আমার মা সংসারের উন্নতির জন্য অনেক সংগ্রাম ও পরিশ্রম করেছিল। আমাদের ভবিষ্যত যেন অন্যরকম হয়, সুখ শান্তিতে ভরপুর, এটাই ছিল মা-বাবার মাথাভর্তি চিন্তা। আমরা আমাদের অবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে পেরেছি। আমাদের সংসারে সুখের ঘাটতি রাখেন নি আল্লাহ। কিন্তু, আমার মা সেই সুখ দেখে যেতে পারে নি, যদিও বাবাকে সুখে রাখার জন্য আমাদের ত্রুটি ছিল না।

অনেক ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

২| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:২৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: লগিন করিয়েই ছাড়লেন ভায়া!

এমন অনন্য কাব্য কতদিন পাঠ করিনি।
সাজানো স্বপ্ন আর কল্পনার রাজ্য দূরে ঠেলে
স্বর্নালী অতীতের এমন রোমন্থন- সত্যি অসাধারন।

আপনার মনের গহীন কোটরে মায়ের জন্য অন্তহীন ভালবাসা ফুটেছে পরতে পরতে।

+++

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার মনের গহীন কোটরে মায়ের জন্য অন্তহীন ভালবাসা ফুটেছে পরতে পরতে। সুন্দর কথা বলেছেন প্রিয় বিদ্রোহী। আসলে, সবার কাছেই মা হলো এক পরম শান্তির স্থান। শুধু মানুষই না, প্রাণীজগতের সব প্রাণীই সবার আগে মাকেই চিনে। মা-ই নিজ নিজ শাবককে সবার আগে দূর থেকেও চিনে ফেলে। মা-দেরকে আল্লাহ এক অসীম গুণ দিয়ে পাঠিয়েছেন, আর সেই গুণের কারণেই মায়েরা হলেন অদ্বিতীয়া।

অনেক ধন্যবাদ প্রিয় বিদ্রোহী অমূল্য কথা সমৃদ্ধ কমেন্টটির জন্য।

৩| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুখী ছিলেন। মনোমুদ্ধকর লেখা

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি সাহেব। শুভেচ্ছা।

৪| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:০৫

মিরোরডডল বলেছেন: ধুলো

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: :(

৫| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:০৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: কবিতাটি বুকের ভেতর একটি চিকন ব্যাথা ধরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। ভাল থাকবেন। ভালো থাকুক যারা গত হয়ে গেছেন ওপারে। ভালো থাকুক দুনিয়ার সবাই।

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার মায়ের নিত্য নৈমিত্তিক কিছু ব্যাপার ছিল কবিতার কন্টেন্টগুলো। লেখার সময় ভাবি নি, নিজের লেখাই একদিন নিজের কাছে এতটা আবেগের হবে।

অনেক ধন্যবাদ সুজন ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

মায়েরা ভালো থাকুন- এপারে, ওপারে- সর্বত্র।

৬| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:১৪

ডার্ক ম্যান বলেছেন: আপনার মা মারা যান ১৯৮০ সনের ১৬ই এপ্রিল , রোজ বুধবার , সময় আনুমানিক বিকেল ৩ টা

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৪২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুব সম্ভবত দুটো কবিতায় মায়ের মৃত্যুর তারিখটা লেখা আছে। একটা 'অন্বেষা'য়, আরেকটা 'অসম্পর্কের ঋণ' বইয়ের এই কবিতায়। আমি বিস্মিত ও মুগ্ধ হলাম তাৎক্ষণিকভাবে মায়ের মৃত্যুতারিখ উল্লেখ করেছেন দেখে। সত্যিই শ্রদ্ধাজাগানিয়া কাজ করলেন প্রিয় সৈকত ভাই।

শুভেচ্ছা রইল।

৭| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:১৮

মিরোরডডল বলেছেন: আই ডোন্ট নো হোয়াট টু সে । এতো মর্মস্পর্শী একটা লেখা । বুকের গভীরে স্পর্শ করলো ।
সকল মায়ের জন্য শ্রদ্ধা ।

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৪৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এতো মর্মস্পর্শী একটা লেখা । বুকের গভীরে স্পর্শ করলো ।
সকল মায়ের জন্য শ্রদ্ধা ।


কিছু না বলতে যেয়েও অল্প কথায় অনেক কিছু বলে গেলেন।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৮| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৩৬

আসাদবেস্ট বলেছেন: সুন্দর। মায়ের জন্য দোয়া

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আসাদবেস্ট। শুভেচ্ছা রইল।

৯| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আজ থেকে সপ্তাহখানেক আগে আমার মা ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন। সত্যি কথা বলতে কি, মায়ের প্রয়াণে আমার এই ৬৬ বছর বয়সেও দুনিয়ার সব কিছু অন্ধকার হয়ে গেছে। বুকের মধ্যে কান্না চাপা দিয়ে রাখতে পারিনা। কেউ কেউ হয়তো এত বুড়ো মানুষকে কাঁদতে দেখে অবাক হয়। কিন্তু আমি কী করবো? মায়ের কথা মনে পড়া মাত্র আমার দুই চোখ জলে ভরে আসে।

আমার মায়ের জন্য একটু দোয়া করবেন ভাই।

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রিয় আবুহেনা ভাই, প্রথমেই আপনার মায়ের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন। সন্তানের কাছে মা যে কী, এই ৬৬ বছর বয়সে এসেও মায়ের অনুপস্থিতি বা তিরোধানে তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছেন, যখন আপনি নিজেই হয়ত-বা একজন পিতামহ। একজন মায়ের কাছে সন্তানের বয়স বাড়ে না।

আপনার মায়ের জন্য আবারও প্রাণ ভরে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করছি- আল্লাহ খালাম্মাকে বেহেশত নসিব দান করুন।

১০| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:১৪

ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার কবিতা পড়ে চোখে জল এসে গেল।

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যার মা নেই, মায়ের কথা মনে পড়লে, কিংবা তার সামনে কেউ যদি তার মায়ের প্রসঙ্গ তোলে, হয়ত বা হঠাৎ আকাশ থেকে ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি পড়ার মতো তার চোখ বেয়ে আপনা আপনিই গড়গড়িয়ে পানি নেমে আসে। আমার ক্ষেত্রে এমনটা হয় প্রায়ই।

কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ ঢাবিয়ান।

১১| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০০

ওমেরা বলেছেন: আমার আম্মু নেই প্রায় কয়েক বছরই হল কিন্ত এখনো এমন হয় যখনই নতুন কিছু ঘটে ফোনটা হাতে নেই আম্মুকে ফোন দিব পরমূর্তেই মনে পরে আম্মুকে তো ফোন দেয়া যায় না ।
আপনার কবিতা পাঠে চোখের পানি ধরে রাখা দায়।

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার আম্মু নেই প্রায় কয়েক বছরই হল কিন্ত এখনো এমন হয় যখনই নতুন কিছু ঘটে ফোনটা হাতে নেই আম্মুকে ফোন দিব পরমূর্তেই মনে পরে আম্মুকে তো ফোন দেয়া যায় না । এমন একটা কথাই আমি বলতে চেয়েছি আমার বাবার ক্ষেত্রে। আমার বাবা মারা গেলেন এ বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারিতে। হঠাৎ হঠাৎ মনে হয়, এই বাবাকে একটা কল দিই তো, পরক্ষণেই ভুল ভাঙে - বাবা তো আর নেই :(

আপনার আম্মুর জন্য অনেক অনেক দোয়া থাকলো- আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।

১২| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:২২

মেহবুবা বলেছেন: এই কবিতা অনেক আগে আপনি একবার পোষ্ট হিসেবে দিয়েছিলেন এখানে মনে পড়ছে ।
কেমন মূল্যবান সে টিনের স্যুটকেস যে আপনি বুকের ভেতর এখনও লালন করেন ! আরো কত কিছু পেছনে পড়ে যায় ।
তবে মা মাই; সেটা নিজে মা হবার পর থেকে ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারি।

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জি আপু, আপনার স্মৃতিশক্তি প্রখর। এটা আগেও পোস্ট করা হয়েছিল, প্রায় ৯ বছর আগে, যেখানে আপনার একটা মূল্যবান কমেন্ট ছিল।

আমাদের সিন্দুক বলতে ছিল মায়ের ঐ স্যুটকেসটা। মূল্যবান স্বল্পবিস্তর সম্পদ বলতে যা ছিল, তা গচ্ছিত রাখা হতো ওটার ভেতর। মায়ের শাড়িটাও ওটার ভেতরই রাখা হতো। ওটা যতবার নামানো হতো, আমি তো বটেই, আমরা সব ভাইবোনেররা ঝুঁকে পড়ে দেখতাম ওটাতে কী আছে। এজন্য স্যুটকেসটা এত প্রিয় ও পরিচিত ছিল। এখনো চোখে ভাসে, মা ওটা নামানোর পর আমি কীভাবে ওটার পাশে গিয়ে বসতাম। মায়ের স্মৃতিগুলো খুব জ্বলন্ত, তাই ভোলা যায় না।

কিছুক্ষণ আগে একটা ভিডিও দেখলাম- ১০ সেকেন্ডের মতো। একটা পাত্রে চালের গুঁড়া। একটা মোরগ আর একটা মুরগি সেখানে গলা বাড়িয়ে চাল খাচ্ছে। মোরগটা আপনমনে খেয়ে যাচ্ছে। ছোটো বাচ্চাগুলো নাগাল পায় না, ছোটাছুটি করছে। মুরগিটা করছে কী, পাত্র থেকে বার বার ঠোঁটে করে চাল এনে নীচে ছেড়ে দিচ্ছে, বাচ্চাগুলো তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। ঐদিকে মোরগের কিন্তু নিজের খাওয়া ছাড়া আর কোনো খবর নেই। সেজন্য, আপনি যেটা বলছেন - মা মাই- মায়ের সাথে আর কিছুর তুলনা নাই- হোক সে মানুষ বা অন্য যে-কোনো প্রাণী।

কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

১৩| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৪৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
অসাধারণ পোস্ট!
এই পোস্টপড়লে চোখে জল আসে।
খুব কষ্ট আর অসহায় লাগে।
আমরা এতো গরীব দেশের মানুষ।
আমাদের মায়েরা কোন সাধ আহ্লাদই তো পূরণ করতে পারেননি।

১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:

আমরা এতো গরীব দেশের মানুষ।
আমাদের মায়েরা কোন সাধ আহ্লাদই তো পূরণ করতে পারেননি।


ছোটোবেলা থেকেই মনে হতো, মায়েদের কোনো সাধ-আহ্লাদ নাই। ভালো খাবার-দাবার বা পোশাক-আশাকও তাদের জন্য না। এই দেশটা গরীব, আর কিছু মানুষ গরীবদের চাইতেও বেশি অসহায়।

সুন্দর কথাগুলোর জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় সাজ্জাদ ভাই। শুভেচ্ছা।

১৪| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:১০

সাইন বোর্ড বলেছেন: অনুভূতিকে নাড়া দিয়ে গেল ।

১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ সাইন বোর্ড।

১৫| ১১ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের সুন্দর উত্তর দেওয়ার জন্য আনন্দবোধ করছি।

১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনি কমেন্টে একটা সুন্দর কথা বলেছিলেন। আবার এসে ধন্যবাদ জানানোর জন্য ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

১৬| ১৩ ই মে, ২০২০ রাত ২:০৫

সোহানী বলেছেন: জীবনভর আমি মাকে নিয়ে কিছু লেখার চেস্টা করেছি কিন্তু আশ্চর্য্য যে যেকোন বিষয় নিয়ে অবলীলায় লিখতে পারলেও মাকে নিয়ে আমি কিছুতেই লিখতে পারি না। মা ছিল আমার পুরো পৃথিবী, কখনই চিন্তা করিনি মাকে ছাড়া বাচঁবো এক মূহুর্ত। অথচ কি দিব্যি বেচেঁ আছি ........।

১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজেই কখন মা হয়ে গেছেন, আপনার জায়গাটা দখল করে নিল আপনার সন্তানেরা। প্রকৃতির চক্রটি ক্রিয়াশীল বলেই দিব্যি বেঁচে আছেন মাকে ছাড়াই। মা মারা যাবার পর আমারও মনে হতো- মাকে ছাড়া বেঁচে থাকা কি সম্ভব? খাবারের সময় কেউ ডাকে না, গোসলের কথা বলে না, নোংরা জামাটা নোংরাই থেকে যাচ্ছে- কথাগুলো লিখতে লিখতে আমার চোখ ফেটে আসছে

- এই হলো মা, যাকে নিয়ে ভাবতে গেলেই চোখ ফেটে পানি আসে

১৭| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪১

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত!
একজন সংগ্রামী কবির মায়ের স্মরণে কবিতায় নিরন্তর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা!

১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১১:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আজ রাতে শেষ বারের মতো ব্লগে এসে আপনার কমেন্ট পেলাম। প্রাণ জুড়িয়ে গেছে কমেন্টে। আসলে, এই কথাটা আমার কোনো লেখায় কোনোদিন বলেছি বলে মনে পড়ে না, অথচ বার বার, বহুবার ঘুরে ফিরে মাকে নিয়ে এ কথাটা বলা দরকার ছিল- মা, তোর পায়ের তলায় আমার বেহেশত।

একটা গান মনে পড়লো-

মাগো তোর চরণতলে বেহেশত আমার
মাগো তুই খোদা তা'য়ালার সেরা উপহার

অনেক ধন্যবাদ ভ্রমরের ডানা। ভালো থাকবেন, নিরাপদে।

১৮| ১৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৩০

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: I have had the realization for many years that you are one of the finest writers of our time.

১৮ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার প্রশংসায় আপ্লুত হলাম মামুন ভাই। নিজেকে বুঝতে ও খুঁজে পেতে এমন দু-একটা কথা আলোক-বর্তিকার মতো কাজ করে। অন্তত কেউ কেউ আমাকে একজন লেখক হিসাবে ভাবেন, এটাই আমার জন্য অনেক বড়ো প্রাপ্তি।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা আপনার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.