নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
মেয়েটার বয়স আর কতই বা হবে— ১৩ বা ১৪, বড়োজোর ১৫ বছর। বেশিও হতে পারে— ১৭, ১৮, ১৯। গাঁয়ের কোন মেয়ে কখন জন্ম নিল, কীভাবে বড়ো হয়ে গেলো, তারপর একদিন বিয়ে— এখন কি আর এসবের খোঁজ রাখা সাজে! সেই যে একটা সময় ছিল— তরুণ কালে, বাড়ন্ত যৌবনে। ভাবতে ভাবতে মহব্বত মিয়া পড়ন্ত সূর্যের দিকে তাকায়, ডান হাত উঠিয়ে চোখে ছায়া দেয়। দিন পড়ে যাচ্ছে।
‘ও চাচা, কী করো?’
মহব্বত মিয়া সম্বিৎ ফিরে পায়। ‘পেয়ারা খাইবা?’ বলেই হনুফা সদ্য গাছ থেকে পাড়া একটা টসটসে পেয়ারা মহব্বত মিয়ার হাতে তুলে দেয়। মহব্বত মিয়া পেয়ারা হাতে নিয়ে ফুঁ দিয়ে পরিষ্কার করে, তারপর দাঁত বসিয়ে ঘচসঘচ করে পেয়ারা খেতে থাকে।
‘খুব মিডা না?’ বলে হনুফা খুব মিষ্টি করে হাসে।
‘হ। জব্বর মিডা রে!’
‘তয় নেও, আরো একটা খাও।’ বলেই আরেকটা পেয়ারা মহব্বত মিয়ার হাতে গুঁজে দেয় সে। মহব্বত মিয়া পেয়ারা নেয়ার সময় হনুফার বুকের দিকে তাকায়। তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার চোখে নেশা ধরে যায়, দৃষ্টি সরাতে পারে না।
‘ছিঃ। ঐবাবে তাকাই আছাও ক্যা?’ একটা ঝামটা দিয়ে হনুফা চলে যেতে থাকে। মহব্বত মিয়ার ধ্যান ভঙ্গ হয়। যেতে যেতে হনুফার কোমর দুলছিল। কোমরের দু পাশে মাংসল চামড়ার দিকে লোলুপ চোখে তাকিয়ে থাকে মহব্বত মিয়া। যতবার হনুফাকে দেখেছে, ততবারই সরু কোমরের ধবল অংশটুকু মাখনের মতো লোভনীয় হয়ে উঠেছে। তার শুধু চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করে, হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে।
....
‘হনুফা। ও হনুফা।’ রাত গভীর হলে হনুফার খুপরির দরজায় আস্তে ঠেলা দিয়ে ফিসফিস করে ডাকতে থাকে মহব্বত মিয়া।
‘কে?’ হনুফা জবাব দেয়। হনুফা কি রাতে ঘুমায় না? নাকি অল্প শব্দেই ওর ঘুম ভেঙে যায়?
‘আমি। আমি মহব্বত মিয়া। জাপটা একটু খুল।’ মহব্বত মিয়া নীচু স্বরে বলে।
হনুফা ঝাঁপ খুলে দেয়। ‘এত রাইত্রে আবার কী অইল তোমার?’
‘তোরে একটু দ্যাকপার মন চাইল। ভিত্রে আহি?’
হনুফা খিলখিল করে হেসে ওঠে।
ঘরে ঢুকে মহব্বত মিয়া হনুফার কাছ ঘেঁষে শোয়। সে অস্থির ভাবে ওর শরীরে হাত রাখে। হঠাৎ মহব্বত মিয়ার মনে হতে থাকে, সে তার মায়ের পাশে শুয়ে আছে; তার মনে হতে থাকে সে একটা শিশু। সে অন্ধকারে ক্ষুধার্ত শিশুর মতো মায়ের বুক হাতড়াতে থাকে। এর একটু পরই অলৌকিক ঘটনাটা ঘটে গেলো। ‘ওয়াআ ওয়াআ’ স্নিগ্ধ কান্নায় হনুফার ঘর ভরে যেতে থাকে।
......
পরদিন সকালবেলা গাঁয়ের মানুষ দেখলো, মা-হারা আধা-পাগলা হনুফা একটা সদ্যোজাত শিশু কোলে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লোকজন অবাক হয়ে বলছে, ‘ও হনু, তর তো বিয়া অয় নাই, বাচ্চা পাইলি কই?’ হনুফা সুন্দর করে হাসে আর বলে, ‘আল্লায় দিছে।’
ঐ রাতের পর গ্রামবাসীরা আর কোনোদিনই মহব্বত মিয়াকে দেখতে পায় নি।
২৪ জুলাই ২০১৪
১৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:০০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
হ্যাঁ, অদ্ভুত ও আজগুবি গল্পই। গল্পের প্লটটা মাথায় এসেছিল টিভিতে একটা অ্যাড দেখে অ্যাডে একটা মেয়ে গ্রামের এক পুকুর পাড় ধরে নাচতে নাচতে হেলেদুলে যাচ্ছিল। তার কোমরের দু পাশে লোভনীয় মাংসল অংশ দেখে মনে হলো, বাস্তব জীবনে কেউ যদি এমন একটা মেয়েকে এভাবে চোখের সামনে হেঁটে যেতে দেখে, তার মানসিক অবস্থা কেমন হবে। খুন, ধর্ষণের ঘটনাগুলোও তখন খুব অহরহ ঘটছিল। খুনি বা ধর্ষকের শাস্তির ব্যাপারে আমরা কত কিছুই না বলি বা ভাবি। আমি খুব নিম্ন স্তরের এক লোলুপ ধর্ষককে শাস্তির দেয়ার কথাটা এভাবেই ভেবে বসি।
গল্পটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় শেরজা তপন ভাই।
২| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: হনুফা আর মহব্বত মিয়াঁ- এদের ঢাকা শহরে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
৩| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৩৬
ফেনা বলেছেন: গল্পের শেষে আমি নিজেই থতমত খাইলাম।
অনেক অনেক ভাল লেগেছে। চমৎকার উপস্থাপন।
শুভকামনা আপনার জন্য।
১৫ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:২৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কমেন্টে অনেক অনুপ্রাণিত হলাম প্রিয় ব্লগার। ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য। শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:০৪
শেরজা তপন বলেছেন: কি আজগুবি অদ্ভুত গল্প সোনাবীজ ভাই!!!
এইরকম প্লট মাথায় ক্যামনে আসিল??