নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমুদ্র সীমা রায়ঃ এক অজ্ঞ লোকের আলোচনা। আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর।

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:১২

প্রতিক্রিয়াঃ

""ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আকবর উদ্দিন বলেন, 'এই রায়কে আমরা মর্যাদা দিচ্ছি। রায়টি খুঁটিয়ে পড়ার এবং রায়ের তাত্পর্য ঠিক কী, সেটা বোঝার প্রক্রিয়া এখনো চলছে।"

আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞ গণকে রায়ের বিস্তারিত খুঁটিয়ে পড়ার এবং রায়ের তাত্পর্য অনুধাবন করার সময় না দিয়েই, গলাবাজি শুরু হয়ে গেসে। বিজয় মিছিল শুরু হয়ে গেসে দিকে দিকে। ভারত রায়ের কপি তাঁর বিশেষজ্ঞ দের দিয়ে মূল্যায়ন করছে, আমাদের এখানে কাউকে রায়ের কপি হস্তান্তর করা হয়েছে কিনা জানা যায় নি।



ব্যক্তিগত মূল্যায়নঃ

ভারতের সাথে মেরিটাইম সী বর্ডার মামলায় জয়ের সুস্পষ্ট ইন্ডিকেটর ছিল দক্ষিণ তালপট্রি। মানে হোল দক্ষিণ তালপট্রি পেলেই আমাদের জয়। তারপরেও বলব দক্ষিণ তালপট্রি এবং আশে পাশের অঞ্চল হারালেও, মন্দের ভালো এবং মোটামুটি মন্দের ভালো রায় এসেছে বলেই মনে করি। আনক্লস এর মূল নিয়ম মেনে, ২০০ নটিক্যাল মাইল এর বাধ্যতামূলক এলাকা ধর্তব্যে রেখে রায় দিয়েছে আদালত। ২০০ নটিক্যাল মাইল এর বাইরে ক্ষুদ্র অংশই এসেছে আমাদের ভাগে। এটা জয় বা পরাজয় নয়, বরং বৃহৎ রাষ্ট্রের আবদারের কাছে আমাদের যা পাবার কথা তার চেয়ে কম পেয়ে সেটা মেনে নিয়ে কিছুটা সন্তুষ্ট।



বঙ্গোপসাগর ও ভূমির মূলবিন্দু থেকে সমুদ্রের দিকে ১৮০ ডিগ্রি বরাবর রেখা টানতে বাংলাদেশের দাবির বিপরীতে চার বিচারক ১৭৭ দশমিক ৫ ডিগ্রী বরাবর রেখা টানার সিদ্ধান্ত দেন। ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে আদালত বিরোধপূর্ণ (!) ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র এলাকা বাংলাদেশকে প্রদান করেছে। (এখানে বলে রাখা ভালো এই মামলায় ভারত অযৌক্তিক দাবীর কারনে আইনগত দিক দিয়ে ব্যাকফুটে ছিল, কারন তারা ১৯৪৭ সালে রেডক্লিড প্রণীত সীমানা মানচিত্র না মেনে বাংলাদেশের ভিরতে এসে সীমা দাবী করেছে । বাংলাদেশের সীমা দাবী ন্যায় সঙ্গত, বাংলাদেশ কখনই ভারতীয় সীমায় কোন এলাকা দাবী করেনি)।



২০১২ সালের রায়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ১৭টি ব্লকের মধ্যে ১১টি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর ভারতের দাবিকৃত ১০টি ব্লকের সবগুলোই কিছু অংশ হারিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে।



এই রায়ে সমুদ্রসীমানার মহিসোপান ও এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে ভারত তাদের বর্ধিত কর্তৃত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশের মহীসোপান এলাকা অনেক দীর্ঘ হওয়ায় পরেও এই সুবিধাটি বাংলাদেশ খুব ভালোভাবে পায়নি। ৩৫০ নটিক্যাল মাইলের মাথায় এটি সরু প্যাসেজ পেয়েছে। তাছাড়া এর ফলে ১, ৫, ৯, ১৮, ১৯ এবং ২৪ এই ব্লক সমূহের কিছু অংশ বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে গেসে। হ্রাসক্রিত এই সব ব্লক সীমা পুনরায় নির্ধারণ করে, তেল গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে হবে।





পিছনের কথাঃ



"বিগত শতকের শেষার্ধে বহুজাতিক পেট্রোলিয়াম কোম্পানীগুলো সমূদ্রে পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান শুরু করলে মূলত: আন্তর্জাতিক সমূদ্রে অর্থনৈতিক এলাকা নির্ধারণের প্রয়োজন দেখা দেয়। ১৯৮২ সালে জাতিসংঘ সমুদ্র কনভেনশন আইন (আনক্লস) প্রনীত হয়। ১৯৯৫ সালে ভারত এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করে, মিয়ানমার স্বাক্ষর করে ১৯৯৬ সালে এবং বাংলাদেশ ২০০১ সালে।কনভেনশনের নিয়ম অনুসারে স্বাক্ষরের ১০ বছরের মধ্যে একটি দেশকে তার ঘোষিত সমূদ্রসীমার দাবী উত্থাপন করতে হবে। প্রয়োজনে আবেদন করে এই সময় আরো পাঁচ বছর বৃদ্ধি করার বিধানও রয়েছে। ভারত এবং মিয়ানমার ২০০৮ সালে তাদের সমূদ্রসীমা আনক্লসে উপস্থাপন করে। বাংলাদেশ করে অক্টোবর ৮, ২০০৯ এ"



"এই আইন অনুযায়ী একটি দেশ তার বেজলাইন হতে ১২ নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল = ১.৮৫২ কিলোমিটার) রাষ্ট্রীয় সমূদ্রসীমা এবং আরো ১৮৮ নটিক্যাল মাইলসহ মোট ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অর্থনৈতিক সমূদ্রসীমা হিসেবে ঘোষনা করতে পারবে। মহীসোপানের আরো ১৫০ নটিক্যাল মাইল যোগ করে (২০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত মহীসোপান) সম্প্রসারিত অর্থনৈতিক সমূদ্রসীমা সর্বোচ্য ৩৫০ নটিক্যাল মাইল এর বেশি হবে না। বাংলাদেশের মহীসোপান এলাকা অনেক দীর্ঘ হওয়ায় এই সুবিধাটি বাংলাদেশের পাবার কথা।"



আন্তর্জাতিক আদালত সমতা এবং ন্যায্যতা ভিত্তিক সমুদ্র সীমা নির্ধারণে কাজ করে। একটি রাষ্ট্রই শুধু এর বাদী বিবাদী হতে পারেন।





প্রস্তুতিঃ



নিমজ্জিত দক্ষিণ তালপট্রি দ্বীপ এর অস্তিত্ব চাক্ষুষ থাকলে মামলা লড়ার ধরন ভিন্ন হোত বৈকি! হাঁড়িয়া ভাঙ্গা নদীর পানি্র মধ্য প্রবাহে সীমানা নির্ধারণ, নদীর পলি পতন জনিত চর হিসেবে দক্ষিণ তালপট্রি কে দেখানে যেত যা নদীর মধ্য প্রবাহের বামে, সুতরাং বাংলাদেশের দাবীনামার সাথে সামাঞ্জস্য পূর্ণ। রায়মঙ্গল নদীর মধ্য প্রবাহের ডানে (ভারতের দিকে) দেখিয়ে ভারত দক্ষিণ তালপট্রি হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ বাংলাদেশ ভারতের সীমানা রায়মঙ্গল নদী নয়, বরং ১৯৪৭ এর রেডক্লিফ ম্যাপ অনুযায়ী হাড়িয়াভাঙ্গা র মধ্য প্রবাহ। ভারতের মিথ্যা দাবীর (হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর মুখ থেকে আন্দামান-নিকোবর পর্যন্ত সরল রেখা) বিপরীতে যুক্তি উপস্থাপন করার জন্য পর্যাপ্ত সার্ভে উপাত্ত ছিল না, হাড়িয়াভাঙ্গা র নদি প্রবাহ ভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন ছিল না এবং সেই মানের প্রিপারেশন ও নেয়া ছিল না কোন সরকারের এবং সার্ভে বিভাগের। কয়েকজন আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত নদী গবেষক / বিজ্ঞানী কে ল স্যুট এ অন্তর্ভুক্ত দরকার ছিল এবং নিউট্রালিটির জন্য ভারতের বাইরে অন্য দেশের ল ফার্ম কে নিয়োগ দেয়ার উচিত ছিল। একজন রাজনিতিক টিম কে নেতৃত্ব দিয়েছেন, এটা স্ট্র্যাটিজিক্যাল ভুল ছিল।



১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের পর তালপট্রি দ্বীপটি জেগেছিল। ১৯৮৫ সালে উড়িরচরে যে ঝড় হয়, তার পর থেকে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপটি আর নেই। ২০০৯ এ আদালতে যাবার পর ২০১০ এ একটি মানচিত্র করে চরটি দেখানোর চেষ্টা করেছি আমরা যা গ্রহণযোগ্য হয় নি। ১৯৭০ থেকে ২০১০, ৪০ বৎসর লেগেছে আমাদের একটি মান সম্পন্ন সার্ভে করে মানচিত্র আপডেট করতে। কি অসম্ভভ রকম অক্ষম জাতি আমরা!



পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পুরাতন নির্ভর জোগ্য আন্তর্জাতিক সার্ভে সংগ্রহ, স্যাটেলাইট ইমেজ এবং নিজস্ব সার্ভে না থাকা, সব মিলিয়ে চরটির পক্ষে উপাত্ত উপস্থাপন এ প্রস্তুতি কম থাকায় বিষয়টা কঠিন হয়ে পড়েছিল। আবার যেহেতু, ২০১০ সালের আগে বাংলাদেশের নিজস্ব কোন অফিশিয়াল মানচিত্রে তালপট্রি দ্বীপ এর অস্তিত্বকে জানান দেয়া হয়নি, আদালতে বাংলাদেশের মানচিত্র গ্রহণ না করার কারন সঙ্গতই। বরং ভারতের ছিল তালপট্রি দ্বীপ ভিত্তিক সার্ভে সংক্রান্ত তথ্য প্রমান। এই ব্যর্থতা স্বাধীনতার পরের সকল সরকারের। এখানে অন্য সরকার বাদী হলেও একই সমস্যায় পড়তো। মোট কথা তালপট্রি দ্বীপ নিয়ে আমাদের কোন নদি এবং নদি প্রবাহ ভিত্তিক গবেষণা, টেকনলজি বেইজড রিপোর্ট , সার্ভে ব্যাকড উপাত্ত , আন্তর্জাতিক ম্যাপ, স্যাটেলাইট ইমেজ কিংবা সামরিক স্ট্র্যাটেজিক দলিল ছিল না, এটা একটা দেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় তার নিদারুন অবহেলা কে লজ্জা জনক ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।





(এই অংশ আপডেটেড)





সামনের দিন, আমাদের আশাঃ



সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলে তেল বা গ্যাস অনুসন্ধানে বড় কোম্পানি সমূহ রাজি থাকে না। সেক্ষেত্রে এই রায়ের মাধ্যমে বহু পুরোনো একটি দ্বিপক্ষীয় বিরোধের নিষ্পত্তি হলো যা বাণিজ্যিক তত্পরতার পথ প্রশস্ত করবে। সালিশ ট্রাইব্যুনালের রায়ের ফলে গভীর সমুদ্রে ৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় অবাধে মাছ ধরতে পারবে বাংলাদেশিরা। পাশাপাশি হাড়িয়াভাঙ্গা নদী থেকে শুরু করে রায়মঙ্গল নদীতে বাংলাদেশি জাহাজ চলাচল করতে পারবে। ৭০ এর দশকের পর বাংলাদেশী এনফোর্স এসব অঞ্চলে অবরুদ্ধ থাকত এবং জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি পড়ত ভারতীয় নেভীর অন্যায় আচরনে। এখন রায় অনুযায়ী দ্রুত নৌবাহিনীকে কাজ করতে হবে। মৎস্য আহরণ, জাহাজ চলাচল এবং তেল গ্যাস উত্তোলন এর সুফল বাংলাদেশ যথাশীগ্র যথাসম্ভভ দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ নিবে এটাই কামনা।





ভয়ঃ



বাংলাদেশ তেল গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনে নিজের সামর্থ্য বাড়ানোর প্রতি মনোযোগ দেয়নি, কোন কালেই। এক্সপ্লোরেশন কোম্পানির ঘুষ এই অনিচ্ছা কে প্রভাবিত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে, লুটপাটকারি অপ রাজনৈতিক সংস্কৃতি আর বিদেশি গোলামি পনা মানুষিকতা সম্পন্ন দেশে এই অভিযোগ বাস্তবতার কাছাকাছি।



সুতরাং পেট্রো বাংলা / বাপেক্স এর অনুসন্ধান এবং উত্তোলন সক্ষমতা কে পছনে ফেলে ছোট হয়ে যাওয়া এই মীমাংসিত ব্লক সমূহের( ১, ৫, ৯, ১৮, ১৯ এবং ২৪) ইজারা যদি আবারো নিন্ম মানের চুক্তিতে কনোক ফিলিফস কিংবা ভারতের ও এন জি সি কে দিয়ে দেয়া হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় আদতে বাংলাদেশের জন্য লাভের কিছু বয়ে আনবে না।



সম্পদ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আসুক আমাদের, এই কামনায়।



বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৭

উপপাদ্য বলেছেন: সুন্দর অ্যানালাইসিস।
খারাপ লাগছে যে দক্ষিন তালপট্টি নিয়ে প্রধান বিরোধ সেটাই চলে গেলো। অথচ একসময় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিয়মিত উপস্থিতি ছিলো সেখানে।

আপনার সাথে সম্পূর্ন একমত যে, প্রস্তুতি ও সিনসিয়ারিটির অভাবটাই ছিলো আমাদের। মিছিল মিটিংয়ে যে তালিয়া বাজানো হচ্ছে সেটা আমাদের রাজনৈতিক দৈন্যতা।

ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
দক্ষিন তালপট্টি আশা হয়ে এসেছে, আমাদের অবহেলায় অভিমানে চলে গেসে। আমার বিশ্বাস এই নিমিজ্জিত দ্বীপ অদূর ভবিষ্যতে আবার জেগে উঠবে। আফসুস হল, মীমাংসিত ভাবে তখন তা ভারতের হয়ে যাবে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সামনের দিনে এই ব্লক গুলো কে কিভাবে দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে তেল গ্যাস উত্তোলনের জন্য ব্যবহার করা যায়, সে দিকেই সরকার সৎ এবং সচেতন হবে। এই আশা করি। সাম্প্রতিক অতীতের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। কনক ফিলিফস এবং ও এন জি সি র সাথে সেসব চুক্তি হয়েছে, সেসব খুবই লজ্জার। ১৫% এর কম গ্যাস পাবে বাংলাদেশ। তাও অনেক জটিল আর কূটিল শর্ত যুক্ত।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৪০

কলাবাগান১ বলেছেন: বাংলাদেশে একটা গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম (ন্যাচারাল রিসোর্সের) এর উপর একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করা দরকার

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অতি গুরুত্ব পূর্ণ কথা বলে ফেললেন, আপনাকে ধন্যবাদ।

আসলে প্রতিটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি তে ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক সাবজেক্ট থাকা দরকার। আমার জানা মতে বুয়েটে সীমিত সিটের একটি এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট আছে, "পি এম আর ই" পেট্রলিয়াম এন্ড মিনারেল রিসোর্স ইঙ্গিনিয়ারিং। এটা খুবই দামী একটা সাবজেক্ট, আন্তর্জাতিক জব মার্কেটে।

সমস্যা হোল এই ধরনের বিভাগ খোলা খুবই ব্যয় বহুল। আমাদের বিশ্ব বিদ্যালয়য় সমূহে সরকারী বরাদ্দের মাত্র ১৩% একডেমিক খাতে ব্যয় হয়, বাকী টাকা আবাসন খাতে!

কোর সাবজেক্ট এ ইনভেস্ট করলে চুরি করবে কে?

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:০৭

উপপাদ্য বলেছেন: আমরা এই সমুদ্রসীমা নিয়ে এতো বেশী চিন্তিত ছিলাম এই কারনেই যে এখানে যে চরটা জেগে উঠবে সেটা যেন শুধুই আমাদের হয়। কিন্তু এখন সেখানে ভারত ভাগ বসিয়ে ফেললো। তার মানে ভবিষ্যতে হয়তো আরো কোন পাদুয়া, তিন বিঘা টাইপের ঝামেলায় ভারতের সাথে বছরের পর বছর ধরে ঝগড়া চালাতে হবে।

পুরো বিষয়টা জমি দখলের প্রতিযোগীতাি মনে হলো। ন্যায় বিচার গৌন।

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৫১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের পর দ্বীপটি জেগেছিল। ১৯৮৫ সালে উড়িরচরে যে ঝড় হয়, তার পর থেকে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপটি আর নেই।

১৯৭০ থেকে ২০১০, ৪০ বৎসর লেগেছে আমাদের মানচিত্র আপডেট করতে। কি অসম্ভভ রকম অক্ষম জাতি আমরা!

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৫৪

কলাবাগান১ বলেছেন: "আমাদের বিশ্ব বিদ্যালয়য় সমূহে সরকারী বরাদ্দের মাত্র ১৩% একডেমিক খাতে ব্যয় হয়, বাকী টাকা আবাসন খাতে!"

এদেশের উন্নয়ন আর কি ভাবে হবে

৬| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২৬

াহো বলেছেন:
প্রায় অস্তিত্ববিহীন ওই দ্বীপটির অধিকার পেলেও সমুদ্রসীমা বা সাগরে এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন নির্ধারণে তা তাদের খুব একটা সুবিধা করেছে বলে ভারত প্রাথমিকভাবে মনে করছে না
BBC Bangla


=========================================================================================================================
Fazlul Bari
6 hours ago · Edited
সমুদ্র সীমা নিয়ে বিচার হয়েছে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে। সেই আদালতের কোড অব কন্ট্রাক্ট হচ্ছে উভয় পক্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য। এসব জেনেশুনেই বাংলাদেশ সেখানে গিয়েছিল। অনেক টাকা খরচ করে নিয়োগ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বেশ কিছু কোসুলি। এ নিয়ে অন্য কোথাও আপীল করার সুযোগ নেই। ওই বিচারক প্যানেলে আবার ভারতীয় এক বিচারক ছিলেন! কোর্ট বাংলাদেশকে যতটা দিয়েছে ওই বিচারক তাতে সন্তুষ্ট হতে না পেরে রায়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন! যেন আরও বেশি এলাকা দেয়া উচিত ছিল ভারতকে! এখন ওই বিচারক নোট অব ডিসেন্ট দিলেও কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত বদলাবেনা! বাংলাদেশ বা ভারত কোন যদি এখন এই রায় না মানে তাহলে রায়টি শুধু অকার্যকর না, যে পক্ষ মানবেনা সে পক্ষকে বড় জরিমানা সহ নানা ব্যবস্থার সুপারিশ করতে পারে।
এখন বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো হচ্ছে যেন সরকারই ইচ্ছে করে ভারতকে সব দিয়ে এসেছে! সমুদ্র সীমা বিরোধ মীমাংসার পথ আছে দুটি। এক। কোর্টে যাওয়া, দুই। যুদ্ধ করে আদায় করা! যুদ্ধ করবেন না বা পারবেন না বলেইতো কোর্টে যাওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ২০০৭ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা বিএনপি এ নিয়ে যুদ্ধ করলোনা, কিন্তু কোর্টেও গেলোনা কেনো? ভারত বিরোধী রাজনীতির তাসটি বাঁচিয়ে রাখার জন্যে? বাংলাদেশ যখন কোর্টে গেলো তখনও তারা কোর্টটির কোড অব কন্ডাক্ট ভালো করে পড়েনি? না সেটি ইংরেজিতে লিখা থাকায় পড়তে পারেনি? বা এতদিন একবারও কেন বললেন না, এ কোর্টে যাওয়া একদম উচিত হয়নি বাংলাদেশের! দক্ষিন তালপট্টি নিয়ে সমস্যার সূত্রপাতের দিনগুলোতেতো বিএনপি-জাতীয় পার্টি ক্ষমতায়। সারাদিন শুধু শাঁখা-সিঁদুর, উলুধবনি, মসজিদ সব মন্দির হয়ে যাওয়া রাজনীতি করতে পারেন, তালপট্টি নিয়ে তারা কী কোন দিন যুদ্ধ করেছেন? না যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন? না এখন বলবেন আগামিতে ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধ করে উদ্ধার করবেন তালপট্টি! যুদ্ধেও ডর লাগে, কোর্টের রায়েও অনাসক্তি, আবার ভারতীয় মোদীর বিজয়ে কাপড় তুলে লাফান, সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমার সঙ্গে দেখা পেতে ছুটে যান তার হোটেলে, এমন সবদিক গুলাইয়া ফেলার রাজনীতি আর কতো? কবে আমরা একমত একসঙ্গে হতে পারবো জাতীয় ইস্যুতে?


====================================
ভারতের ড. প্রেমারাজু শ্রীনিবাসা রাও ভিন্নমত

হেগ-এর পাঁচ বিচারক সমন্বয়ে গঠিত স্থায়ী সালিশ আদালতের অন্যতম সদস্য ভারতের ড. প্রেমারাজু শ্রীনিবাসা রাও কয়েকটি ক্ষেত্রে অপর চার বিচারকের সঙ্গে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) পোষণ করেন। তবে ড. রাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে একমত হন। একমত হওয়া বিষয়গুলো হচ্ছে সালিশ আদালতের এখতিয়ার, মামলার যুক্তি ও কোন উপায়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হবে। আর তিনি একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলের সীমা নির্ধারণ, মহীসোপানের বিস্তৃতি সুনির্দিষ্টকরণ ও সীমানা নির্ধারণ রেখা টানার পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। বঙ্গোপসাগর ও ভূমির মূলবিন্দু থেকে সমুদ্রের দিকে ১৮০ ডিগ্রি বরাবর রেখা টানতে বাংলাদেশের দাবির বিপরীতে চার বিচারক ১৭৭ দশমিক ৫ ডিগ্রী বরাবর রেখা টানার সিদ্ধান্ত দেন। অন্যদিকে ড. রাও এর বিরোধিতা করেন। আদালতের অন্য বিচারকরা ছিলেন জার্মানির রুডিজার উলফ্রাম (প্রেসিডেন্ট), ফ্রান্সের জঁ পিরেরে কট, ঘানার টমাস এ মেনশা ও অষ্ট্রেলিয়ার আইভান শিয়াবার।
Click This Link

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাই, আপিনি বড় ধরনের সরকার সমর্থক হতে পারেন, আপনাকে বলছি লেখাটি আবার পড়ুন। এখানে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করা হয় নি। বাস্তবাতা কে তুলে ধরা হয়েছে। লেখক পরিষ্কার বলেছেন, এটা মেনে নেয়ার মত একটা রায়। আমাদের সামনে এগিয়ে জেতে হবে। লেখার শেষ অংশে ভয়ের কথা বলা হয়েছে। সেটা জানতে কনক ফিলিফস এবং অএঞ্জিসি র সাথে করা চুক্তি আপনাকে বুঝতে হবে।

বরং ১৯৭০ সালে জেগে উঠা দ্বীপের মাঞ্চিত্রায়ন যে হয় নি সেটাকে আমি জাতীয় দৈন্যতা বলেই মনে করছি। এর ব্যর্থতা সবার। এটাই তাল্পট্রি হারানোর বড় বাধা ছিল। নির্ভর জোগ্য সার্ভে না থাকলে আইনজীবী দিয়ে কাজ হয় না। সার্ভে না থাকা সকল বলদ সরকারের ব্যর্থতা। লেখাতে আওয়ামীলিগ কে এর জন্য দোষ দেয়া হয় নি। শুধু বলে হয়েছে, রায় বিশেষজ্ঞ দের কাছে না পাঠিয়েই গলাবাজি করা শুরু হয়ে গেসে।

জাতিসংঘ সমুদ্র কনভেনশন আইন (আনক্লস) ১৯৯৫ সালে ভারত স্বাক্ষর করে, মিয়ানমার স্বাক্ষর করে ১৯৯৬ সালে এবং বাংলাদেশ ২০০১ সালে।কনভেনশনের নিয়ম অনুসারে স্বাক্ষরের ১০ বছরের মধ্যে একটি দেশকে তার ঘোষিত সমূদ্রসীমার দাবী উত্থাপন করতে হবে। প্রয়োজনে আবেদন করে এই সময় আরো পাঁচ বছর বৃদ্ধি করার বিধানও রয়েছে। ভারত এবং মিয়ানমার ২০০৮ সালে তাদের সমূদ্রসীমা আনক্লসে উপস্থাপন করে। বাংলাদেশ করে অক্টোবর ৮, ২০০৯ এ"

বাপেক্স এবং নৌ বাহিনীর পক্ষে চাপ ছিল আরো আগেই কোর্টে এ যাবার।

এখানে প্রস্তুতি গাফেলতির ব্যাপারে সেটা বলছি, সেটা হোল সার্ভে বিষয়ক। ২০০৯ এ অ্যাওয়ার্ড রিজুলুশন করতে গিয়েছি, তাঁর পর একটা মানচিত্র করেছি ২০১০ এ, চর জেগে উঠার ৪০ বছর পর। এটাকে সমালোচনা করা হয়েছে।

জাতীয় দৈন্যতার সমালোচনা কে ব্যক্তিগত ভাবে নিচ্ছেন কেন? সরকার আর সরকারি দলের সমর্থক হলে সামান্য সমালোচনাও সহ্য হয় না কারো, এটা কিন্তু আরেক জাতীয় দৈন্যতা। এটা বর্তমান আর সাবেক সবার জন্যই প্রযোজ্য।

৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

রাহুল বলেছেন: আমাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আসুক, এই কামনায়।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

সহমত।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:১৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

৮| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:০২

রাজিব বলেছেন: আমরা হেরেছি কি জিতেছি তার থেকেও বড় কথা হল আহরণযোগ্য মাছ, গ্যাস ও সামুদ্রিক সম্পদ অনেক বেড়ে গেছে। এই সম্পদ যত দ্রুত সম্ভব আহরন করে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। এজন্য চাই সঠিক পরিকল্পনা, মানবসম্পদ তৈরি এবং পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। কিন্তু দুই দল বাংলাদেশ হেরেছে কি জিতেছে এই বিতর্কে লিপ্ত এবং ব্লগে দু দলের সমর্থকরাও একই বিতর্কের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ এখন কাজ একটাই- সামুদ্রিক সম্পদ আহরন করে কাজে লাগানো।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, আপনার সাথে সহমত। প্রাপ্ত সম্পদ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আনার কাজই করতে হবে সততার সাথে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.