নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।
৪২ বছর বয়সী একটি দেশের আদালত তার এই দীর্ঘ লাইফ টাইমে "সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ" বিষয়ে মাত্র একটি রায় দিতে পরেছে!!!! (সম্ভভত দেশে গড়ে প্রতিদিন ১১ টির বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে)। তাও সেই রায়টি দিতে ২৪ বছর লাগিয়েছে!!! অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন দেশে ব্যাপারটি গভীর তাৎপর্য বাহী।
এই ধরনের নিদারুণ ভাবে অযোগ্য এবং অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিতে সয়লাব হয়ে পড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে কিভাবে আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ঘুষ, দুর্নীতিহীন রাষ্ট্রীয় সেবা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক বান্ধব জনপ্রশাসন গড়ার চাপ তৈরি করতে পারি লূটেরা রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর?
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কে শক্তিশালী করার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর অব্যহত চাপ তৈরির দায় নাগরিকের।
কিন্তু শুধুই কি নাগরিকের? রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, তাদের সাংবিধানিক স্বায়ত্তশাসন , অভ্যন্তরীণ কাঠামো এবং ইন্টেলেকচুয়ালিটি ( মেধা বলে যদি কিছু থেকে থাকে!) কি কখনই রাজনৈতিক দুরবিত্তায়ন কে রুখে দাঁড়াবে না? হাঁ, এক্সেপশনাল কেইস কিংবা র্যান্ডোম সারপ্রাইজ হিসেবেও কিছু সততা ভিত্তিক রেজিস্ট্যান্স আসার কথা, কারন জন প্রশাসনের সবাই তো অসৎ নন। এখনও উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক সৎ কর্মকর্তা কর্মচারী জনপ্রশাসনে রয়েছেন।
তাহলে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্রীয় অর্থের অবাধ লুটপাট এবং ঘুশ-তদবির এর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করছেন না কেন? নূন্যতম রেজিস্ট্যান্স আসছে না কেন?
কারন, একটি চরম দুর্নীতি গ্রস্ত আদালত, আইন মন্ত্রণালয় এবং এই দুয়ের অবৈধ আঁতাত। এখানে ব্যক্তি নাগরিকের স্বার্থ রক্ষায় আদালতের সময় ব্যবস্থাপনা নেই। দশকের পর দশক একটা সামান্য মামলার সুরাহা হচ্ছে না। কারণ, এখানে রাষ্ট্রীয় অধিকার নিয়ে গেলে অন্য আরেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক সুরক্ষা পাবার নিশ্চয়তা নাই। প্রজাতন্ত্রের ব্যক্তি কর্মচারি এবং কর্মকর্তা যারা সৎ তাদের নিয়মতান্ত্রিক কাজের বৈধতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে কোন অবস্থানকে এই অযোগ্য আদালত সুরক্ষা দিতে পারছে না। পারছে না বলেই, প্রজাতন্ত্রের সৎ অংশের কাছ থেকে লুটপাট, দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে রেজিস্টেন্স আসছে না।
উদাহরন স্বরূপ বলি, এজন্যই স্বায়ত্তশাসিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজের উপাচার্য নিজে নিয়োগ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে, রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতার (নিয়োগ, দলীয় করন,টেন্ডার, অর্থ ব্যয়) বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে না। একটি আদর্শ সিস্টেমে এটা এমন হবার কথা ছিল যে, স্বায়ত্তশাসিত একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান (যেমন পুলিশ বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি) তার যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিজস্ব আইনগত কাঠামো এবং অরগানাইজেশনাল ফ্রেইম ওয়ার্ক এর মধ্যে থেকে করবে। সরকার কোন অন্যায় করতে বললে সেই প্রতিষ্ঠান তা তার নিজস্ব ক্ষমতা বলে ইগ্নর করবে, উল্টো সরকারকে অনধিকার চর্চার বিষয়ে সাবধান করবে। তারপরও যদি সরকার (মন্ত্রী পরিষদ) বাধা দেয় , বা অসহযোগিতা করে কিংবা দুরনিতি-লূটপাট করে তাহলে প্রতিষ্ঠানটি আদালতের শরণাপন্ন হয়ে তার রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা নিবে।
আমাদের দেশের এই ধারার প্রতিষ্ঠান এর আগমন, এক কল্পনা বিলাস, আদালত হচ্ছে এর অন্যতম প্রধান অন্তরায়। দুর্নীতি বাজ সরকার গুলো আদালতের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজেদের সকল অবৈধ অসৎ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে নাগরিক স্বার্থ বলে কিছু প্রতিষ্ঠিত হয়নি এখনও।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ১৮০ ডিগ্রী উল্টো, এখানে কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালতে যাইতে চাইলে, তাকে পদচ্যুত কিংবা চাকরি চ্যুত করা হবে, তার উপর হামলা মামলা হবে, তার পরিবার এর সদস্য দের উপর অত্যাচার এর খড়গ নামবে, এমনকি উনাকে খুনও করে ফেলা হতে পারে। আমাদের আদালত চেয়ে চেয়ে দেখবে।
আমাদের রাষ্ট্রের নিয়ম তান্ত্রিকতার উপর দাড়াতে সবার আগে দরকার আদালতের নিয়ম তান্ত্রিকতার উপর দাঁড়ানো , আদালত যখন থেকে সততার পক্ষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, একজন সৎ কর্মচারী, একজন সৎ কর্ম কর্তা এবং একজন নাগরিক কে তাঁর প্রাপ্ত সুরক্ষা দিতে শুরু করবে, ঠিক তখন থেকেই বাংলাদেশ সুশাসনের দিকে ইউ টার্ন নিবে। তখন আমরা দেখবো তর তর করে জন প্রশাসনের বিভিন্ন অংশ দুর্নীতি অব্যবস্থাপনা আর লুটপাটের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, শত শত ব্যক্তি কর্ম কর্তা তাঁর প্রতিষ্ঠানকে সততার পথে আনতে আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছেন, নিজেই দুর্নীতি আর অনিয়মকে ব্যক্তির সকল শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করছেন, প্রতিহত করছে।
একি অদ্ভুত কথা যে, আদালতের নিয়মতান্ত্রিকতা নিয়েই কথা বলতে হচ্ছে আমাদের, কি নৈরাজ্যে ভরা এক শাসন কাঠামো আমাদের! আদালতের নিয়মতান্ত্রিকতা না আসার মানে হচ্ছে সার্বিক বিপর্যয়, বিপ্লবই যখন শেষ কথা হয়ে যাবে। নাগরিক প্রতিরোধই চুড়ান্ত সমাধান হয়ে দাঁড়াবে। হতেও পারে আমরা সেই প্রান্তিক বিন্দুর খুব কাছাকাছি পৌছে গেছি!
বাংলাদেশের বিবেক হিসেবে আদালত জেগে উঠুক।
বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার শুভ সূচনা শুরু হোক।
৪২ টি বছর চলে গেসে, তারপরেও আশায় আছি আমরা।
আমরা হাল ছাড়বো "না",
যত দিন আছে প্রানে এই মাটির ঘ্রাণ।
২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:০৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আশায় আছি, এটা বলাও আসলে লজ্জার। আমাদের সমাজ বিপ্লবের সামর্থ্য ও আসলে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে, ঠিক যেমনটা হয়েছে আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের।
এই অযোগ্যতা আর এই গ্লানির কোন ব্যাখ্যা নেই।
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭
হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: কারণ জনপ্রশাসন চুরি ডাকাতি করতে ব্যস্ত
২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:১৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনি এক কথায় জনপ্রশাসনের সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশের সত্যিকার অবস্থা প্রকাশ করলেন।
সেই সাথে আমাদেরকে জনপ্রশাসনের সংখ্যা লঘিষ্ঠ অংশের সুরক্ষা নিয়েও ভাবতে হবে, যাতে তাঁরা নাগরিক স্বার্থ কে সামনে রেখে কাজ করতে পারেন। যত ছোটই হোক না কেন সেই সৎ অংশ, আদালত কে তাঁদের চাকুরি জীবন এবং সামাজিক জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করতেই হবে। অন্যথায় জনস্বার্থে এই আদালতের কোন ফাংশন দেখছি না, না দেখছি প্রয়োজনীয়তা।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮
ঢাকাবাসী বলেছেন: এখনও আশায়! হা হা হা ।