নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারল্য, খেলাপি ঋণ, মুদ্রানীতি এবং তিনটি প্রশ্ন

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:০৬

১। উদ্বৃত্ত তারল্য



ব্যাংকিং খাতে এখন অলস এবং অকার্যকর টাকার পাহাড় রয়েছে (প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা)। এর পরও অনেক ব্যাংকের নগদ টাকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নগদ টাকার সঙ্কট হওয়ার কারণ কি?



ক। ব্যাংকিং খাতে যে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে তার বেশির ভাগই সরকারের ঋণ আকারে রয়েছে। বিনিয়োগ স্থবিরতার মধ্যে ব্যাংকগুলো সরকারের বাধ্যতামূলকভাবে ঋণের জোগান দিয়েছে। সরকার তার ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে বন্ড ও বিল নামক কাগুজে মুদ্রা ধরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে নেয়া ঋণের বেশির ভাগই দীর্ঘ মেয়াদে নিয়েছে। সরকারের দেয়া দীর্ঘ মেয়াদের বন্ড নগদায়ন করার মতো তেমন কোনো কার্যকর পদ্ধতি নেই। সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেট নামে আছে। এর ফলে নগদ অর্থের সঙ্কটে পড়া বেশির ভাগ ব্যাংকই সরকারের ঋণের জোগান দিতে গিয়ে বিপদে পড়েছে।



উল্লেখ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিসংখ্যান মতে, গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সরকারের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১৩ গুণ। গত ১১ মাসে সঞ্চয়পত্রে সুদ ব্যয় বাদে নিট বিনিয়োগ হয়েছে ১০ হাজার ১৮ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৭৩৫ কোটি টাকা। ব্যাংকের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সঞ্চয়পত্রে মুনাফা বেশি হওয়ায় আমানতকারীরা ছুটছে এখন সঞ্চয়পত্রের দিকে। আমানতের সুদ কমে যাওয়ায় আমানতকারীরা তাদের অর্থ তুলে নিচ্ছে। বেশি লাভের আশায় সরকারের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছে। ফলে ব্যাংকে কমে যাচ্ছে আমানতের পরিমাণ।



মুদ্রা নীতিতে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের নেয়া ঋণের উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণের কথা বলেছে। বার্ষিক হিসাবে বেসরকারি খাতে ঋণ জোগানের কর্মসূচি রয়েছে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আর শুধু ডিসেম্বর পর্যন্ত ই ছয় মাসে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ শতাংশ। কিন্তু বিদেশ থেকে বেসরকারি খাত যে ঋণ আনছে, সেটি ধরলে ঋণ কর্মসূচিতে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।



খ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্যাংকগুলোর বাধ্যতামূলক বিধিবদ্ধ নগদ জমা (সিআরআর) সংরক্ষণ করতে হয় প্রতিদিন। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের কাছ থেকে ১০০ টাকার আমানত সংগ্রহ করলে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে প্রতি দিন ৬ টাকা এবং ১৫ দিন অন্তর সাড়ে ৬ টাকা সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো দিন সিআরআর সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে জরিমানা গুনতে হয়। আর এ জরিমানা এড়ানোর জন্যই কোনো কোনো ব্যাংকের নগদ টাকার সঙ্কটে পড়তে দেখা যায়।



গ। চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কারণে ব্যাংকিং খাতে সামগ্রিক আমানত কমে গেছে। কিন্তু ব্যাংকের সামগ্রিক ব্যয় কমেনি। বরং ক্ষেত্রবিশেষ বেড়ে গেছে। ব্যাংকিং খাতের এ পরিস্থিতির জন্য ব্যাংকাররা চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের বেশি মাত্রায় ব্যাংক ঋণ নেয়াকে দায়ী করছেন।



উল্লেখ্য, পুঁজি বাজারের উপর্যপুরি লুটপাটের কারনে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়েছেন। সেই সাথে কয়েকটি ব্যাপক বড় ঋণ জালিয়াতির প্রেক্ষাপটে চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আমানতকারিদের পুরোপুরি অনাস্থায়, যার কারনে বিনিয়োগকারিরা নিরাপদ আমানতকারি হিসেবে আবির্ভূত হয়ে, আন প্রোডাক্টিভ খাত যেমন সঞ্চয় পত্রের দিকে ঝুকছেন, সঞ্চয়পত্র এবং সরকারি বন্ডের অতি চাহিদা (১৩ গুন প্রায়) বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ এবং বেসরকারি খাতের বিকাশ কে চরম ভাবে চ্যেলেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। সেই সাথে ব্যাংক আমানতের সুদ কমিয়ে সঞ্চয় পত্র এবং বন্ডের সুদ বাড়ানো হয়েছে।



ঘ। এক দিকে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণের চাহিদা (দীর্ঘ মেয়াদি) বেড়ে গেছে। কিন্তু সুদ এবং মূল্যস্ফীতির কারণে আমানত বাড়ছে না। কেননা, বিনিয়োগ স্থবিরতার মাঝে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদের হার কমিয়ে দিয়েছে।





ঙ। সরকারের সাথে চুক্তির মারপ্যাঁচে সরকারকে বাধ্যতামূলক ঋণের জোগান দিতে হয়, কিন্তু বিনিময়ে সরকার ব্যাংকগুলোকে বন্ড নামক কাগুজে মুদ্রা ধরিয়ে দিচ্ছে। এসব বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে তারল্য বলে গণ্য হচ্ছে।



সাধারণত, ট্রেজাারি বিল ও বন্ড দিয়ে আমানতের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে বাধ্যতামূলক বিধিবদ্ধ তহবিল (এসএলআর) সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু মোট আমানতের বিপরীতে যে পরিমাণ এসএলআর সংরক্ষণ করার কথা ছিল, ব্যাংকগুলোর হাতে তার চেয়েও বেশি পরিমাণ ট্রেজারি বিল ও বন্ড রয়েছে।



এসব বিল ও বন্ড নগদায়ন করতে না পারায় তারা নগদ টাকার সঙ্কটে পড়েছেন।



গত মে মাস শেষে ব্যাংকগুলোর হাতে এ রকম বন্ড রয়েছে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে উদ্বৃত্ত তারল্য হিসেবে দেখাতে হচ্ছে। এসব কাগুজে তারল্য ব্যাংকগুলোর কোনো কাজে আসছে না, বরং বিনিয়োগকে সঙ্কুচিত করে ফেলছে।



ফলে কথিত উদ্বৃত্ত তারল্য প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্যিক ব্যাংক হতে নেয়া ঋণ, সঞ্চয় পত্র এবং সরকারি বন্ডের সর্ব সাকুল্য হিসেব। উদ্বৃত্ত তারল্যের (প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা) প্রায় এক লাখ কোটি টাকাই রয়েছে বিল ও বন্ড আকারে। সত্যিকারে তারল্য ৪০ হাজার কোটি টাকা।



চ। সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণের জন্য বিশেষ করে মাসের শেষ ও মাঝে তার ব্যাংক গ্রাহকদের বড় অঙ্কের কোনো চাহিদা মেটাতে পারছেন না। কারণ হিসেবে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর জন্য যে পরিমাণ নগদ টাকা হাতে থাকার কথা তা থাকছে না।



বাধ্য হয়ে অনেক ব্যাংক কলমানি মার্কেটের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে মাত্র তিন দিনের জন্য ধার দিচ্ছে। এতে ৭.৫ শতাংশ থেকে ১০.২৫ শতাংশ সুদ গুনতে হচ্ছে।



ছ। গত কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগ মন্দা চলছে। ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। ব্যাংকগুলো লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নানা পন্থা অবলম্বন করছেন। কেউ বা খেলাপি ঋণ কমাতে ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে খেলাপি ঋণ পরিশোধ করছেন। আবার ডাউন পেমেন্ট ছাড়াই ঋণ নবায়ন করা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকতো রীতিমতো এ ধরনের নীতিমালাই শিথিল করেছিল, যা গত ৩০ জুনে শেষ হয়েছে। অনেক ব্যাংকই এখন কাগজ নির্ভর হয়ে পড়ছে। কাগজে কলমে ঋণ আদায় হচ্ছে। বাস্তবে ভিন্ন চিত্র। এর ওপর সরকারি ব্যাংক থেকে জালজালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়াতো অব্যাহত রয়েছেই। হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ কেলেঙ্কারির পর হালে বেসিক ব্যাংক থেকে চার হাজার কোটি টাকার ওপরে ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ধরা পড়েছে।



এই সব কারনে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। শক্ত ভিতের ওপর গড়ে উঠা দেশের ব্যাংকিং খাতের এসব ধকল সহ্য করার সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে।





২। আওয়ামীলীগ নেতা ব্যবসায়ীদের কাছে আটকে পড়া এগনেষ্ট টার্ম লোন বা বিশ্বাসী ঋণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এর নজরদারি সক্ষমতা



চট্টগ্রামের কিছু ব্যবসায়ীর কাছে ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকার এলটিআর লোন (এগনেষ্ট টার্ম লোন বা বিশ্বাসী ঋণ) আটকে পড়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কী করছে—জানতে চাইলে সুর চৌধুরী বলেন, এলটিআর মেয়াদি ঋণ হয়, নিয়মের মধ্যেই। চট্টগ্রামে বেশ কিছু টাকা আটকে পড়েছে। ব্যাংকগুলো তার বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করছে।



যদি কোনো ব্যাংক তা করতে ব্যর্থ হয় তবে দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে।



গভর্নর বলেছেন ‘আমাদের নজরদারি বাড়াতে হবে যাতে গুণগতমানের হয় ঋণগুলো। সে জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া (ম্যাকানিজম) তৈরি করতে হবে। যাতে দুর্নীতি না হয়, মানি লন্ডারিং না হয়।’



(ঊল্লেখ্য, এখানে পরবর্তী অর্থ কেলেঙ্কারির প্লট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ এর নিশ্চয়তা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রমান দিতে পারে নি, বরং এখনও আইন, নজরদারির এবং সজাগ থাকার কথা বলা হচ্ছে এত গুলো রেকর্ড অর্থ কেলেঙ্কারি হয়ে যাবার পরেও )



সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বেলেছেন, আমি বেশি গুরুত্ব দিতে চাই ব্যাংকিং খাতে গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া বড় বড় বিপর্যয়কে। এসব ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংককে অনেকটা অসহায় মনে হয়েছে। এত বৃহৎ বিপর্যয় ব্যাংক খাতে আগে কখনো হয়নি। এই ভঙ্গুর ব্যাংক ব্যবস্থা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের আরেকটি অন্তরায় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে আমি মনে করি। যার কারণে ঋণের সুদ কমছে না। কিন্তু সে বিষয়ে হালকাভাবে কিছু বলা হলেও নতুন কোনো উপলব্ধি ও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।





৩। গতানুগতিক ও সতর্ক মুদ্রানীতি ঘোষণা




গভর্নর ড. আতিউর রহমান মুদ্রানীতির ঘোষণাপত্রে বলেন, এবারের মুদ্রানীতিতে বড় ধরনের সারপ্রাইজ থাকছে না। মুদ্রানীতির ভঙ্গিটিও হবে বিগত ষান্মাষিকের মুদ্রানীতির মতোই সতর্ক ও বিনিয়োগ-বান্ধব। (?)



তিনি বলেন, “যেসব ব্যাংক ২৫ শতাংশের বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে তাদের নমনীয়ভাবে দেখা হচ্ছে। যেসব ব্যাংকের ২৫ শতাংশের কম বিনিয়োগ রয়েছে তাদের বিনিয়োগে উৎসাহী করা হবে। আর এবারের মুদ্রানীতি বিগত মুদ্রানীতির মতোই বিনিয়োগবান্ধব।”



ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বলেন, এবারের মুদ্রানীতিতে এমন কোন নীতি গ্রহণ করা হয়নি যার মাধ্যমে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া শেয়ারবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। বাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯০০ কোটি টাকার পুন:অর্থায়ন তহবিলের সময়মতই ছাড় করাসহ অন্যান্য সহায়ক নীতি নেয়া হচ্ছে।



আগের মুদ্রানীতির প্রক্ষেপণ মতই খাদ্য বহির্ভূত ও খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল। মূলত খাদ্য বহির্ভূত ভোক্তা মূল্যস্ফীতির নিম্নগামীতাই গড় ভোক্তা মূল্যস্ফীতি কমিয়ে রাখতে সহায়তা করছে। তাই খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিম্নগামী রাখতে সরবরাহ চ্যানেলগুলো মসৃণ ও কৃষি ঋণের সরবরাহ বৃদ্ধির কৌশল গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।



মুদ্রানীতির ঘোষণায় আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয়েছে সাড়ে ১৫ শতাংশ। আর এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সীমা ধরা হয়েছে ১৪ শতাংশ। অবশ্য বিদেশি বিনিয়োগসহ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ হার ধরা হয়েছে সাড়ে ১৬ শতাংশ। নতুন মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের ঊর্ধ্বসীমা ১২ দশমিক ৯ শতাংশ আর আগামী বছরের জুন পর্যন্ত ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হয়েছে। এবার রিজার্ভ মুদ্রার প্রবৃদ্ধি হার ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ব্যাপক মুদ্রার প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ১৬ শতাংশ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২ দশমিক ৫ শতাংশ আসবে বিদেশি ঋণ থেকে। অর্থাৎ নতুন মুদ্রানীতিতে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হবে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ।



কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি ছয় মাস অন্তর (??) আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করে থাকে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে তার একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।



অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত বলেন, “বিদেশি ঋণ ডলারে পরিশোধ করতে হয়। যখন সুদ-আসলসহ এই ২.৫% ঋণ শোধ করতে হবে তখন সমস্যা হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ পড়বে। প্রচুর খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলো ঋণের সুদের হার কমাতে পারছে না (???) জানিয়ে জায়েদ বখত বলেন, “স্থানীয় ঋণের সুদের হার কম হলে আমাদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি ঋণ নেবে না। কম সুদ হওয়ার কারণেই প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি ঋণের দিকে ঝুঁকছে। স্থানীয় কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে সুদের হার ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ পর‌্যন্ত পড়ে যায়। সেখানে বিদেশি কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে সুদের হার (লাইবর রেটের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট হার যোগ করে) সর্বোচ্চ ৮ শতাংশের মত পড়ে। ”



কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ২৬ লাখ ডলার। ২০১০ সালে ৩০ কোটি ২৭ লাখ; ২০১১ সালে ৯৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। ২০১২ সালে তা বেড়ে ১৫৮ কোটি ডলারে গিয়ে ঠেকে। ২০১৩ সালে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫৫ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।



সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, "দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি না করে বিদেশি উৎস থেকে ঋণগ্রহণ মোটেই ভালো বিষয় নয়। দেশে বিনিয়োগ নেই বলেই চলে। ব্যাংকগুলোর আমানত নেয়া কমে গেসে। এর মধ্যে বিদেশি উৎস থেকে ঋণগ্রহণ খুব একটা ভাল বিষয় নয়। আমাদের ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অলস অর্থ (বিনিয়োগ হয় না এমন অর্থ) পড়ে আছে। অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি করে এই অর্থ বিনিয়োগে নিয়ে আসাই হবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে উত্তম পথ।”







তিনটি প্রশ্নঃ





১। অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি না করে সঞ্চয় পত্র এবং সরকারী বন্ড ইনভেস্টমেন্ট এর মত আন প্রডাক্টিভ মাধ্যম কে উৎসাহিত করে সরকার কেন বেসরকারি খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে?



২। স্বাধীনতার ৪২ বছর পর এখনও ছয় মাসের মুদ্রা নীতি কেন? আমরা কি আমাদের অর্থনীতি এবং ইন ফ্লো এবং আউট ফ্লো, ফ্লো গুলোর ট্রেন্ড জানি না নাকি বের করতে অক্ষম?



৩। পুঁজি বাজার এর আস্থা ফিরাতে এবং খেলাপি ঋণ আদায় করে ব্যাংকগুলো ঋণের সুদের হার কমাতে সরকার কাজ করছে না কেন?









তথ্যসুত্র

মূলত সংকলিত, সাম্প্রতিক ঘোষিত মুদ্রানীতি বিষয়ক অনেকগুলো প্রতিবেদন থেকে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:২৮

নিঃশব্দ শিশির! বলেছেন: অনেক লম্বা একটা লেখা। অনেক গুলো লেখা জোড়া দেওয়া হয়েছে। যাই হোক শেষের প্রশ্নের উত্তর,,
১।বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই, এটা অনেক পুরোনো একটা মত। সব সময় কিছু ব্যাক্তি বলে আসছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এমন কথা বলে আসছে। বিনিয়োগ বিন্তু হচ্ছে। আরও হবে। দেশের অর্থনীতির একটা বড় শক্তি এই বিনিয়োগ ব্যবস্থা বা বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকার পরও বিনিয়োগ হওয়া।
সরকারি বন্ড বিক্রি করলে বেসরকারী বিনিয়োগ কমে যাবে, এটা পুরোপুরি ঠিক নয়। বন্ড সরকার দেশ গঠনের পর থেকেই বিক্রি করছে ভবিষ্যতেও করবে। সরকারের টাকা প্রয়োজর হলেই বন্ড বিক্রি করবে। তাতে বেসরকারি বিনিয়োগ খুব বেশি বাধা পায় না। যদিও কিছুটা কম হয় বলেই অনেক্ই বলেন। তারও সঠিক কোন তথ্য প্রমাণ নেই।

২। ৬ মাসের মুদ্রানীকি কেন? উত্তর হচ্ছে, মুদ্রানীতি কত দিনের হবে, তার কি স্ট্যান্ডার্ট কোন নিয়ম আছে??

৩।পুজিবাজারের আস্থা ফেরাতে সরকার ২০১২ থেকেই কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তা হয়ত আপনার জানা নেই। কর মওকুফ করা হয়েছে। ফোর্স লোন বন্ধ এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কম্পানির পরিচালকদের শেয়ার ধারন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমন অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আসলে আস্থাটা ব্যাক্তি পর্যায়ে ফিরবে, সেখানে সরকার ভুমিকা খুব বেশি নয়।
আর খেলাপি ঋণ আদায় সেটা তো ব্যাংকের কাজ। তার জন্য নির্দিষ্ট আইন আছে। সরকার কি সেই আইন ভেঙ্গে অন্য কিছু করবে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া ,,,,।।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৩৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন:
পারটিসিপেশনের জন্য অনেক ধন্যবাদ শিশির ভাই।
প্রশ্ন গুলোর উত্তর আমি পলিসি গত প্রেক্ষাপটে আশা করি, গতানুগতিক রাজনৈতিক ভঙ্গিতে নয়। এভাবে উত্তর আসলে মনে হবে সব কিছু তো ঠিক ঠাকই চলছে, ব্যাংকিং সেক্টরের সংকটকে এতে পাশ কাটিয়ে পলিসি স্ট্যাডি কে নিরুতসাহিত করা হয়।

১। নং প্রশ্নে সঞ্চয় পত্রের মুনাফা বৃদ্ধির কারনের দিকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। একই সময়ে আমানতের সুদের হার কমেছে। ফলে ট্রেন্ড ব্যংকিং আমানত থেকে সঞ্চয় পত্র এবং সরকারী বন্ড এর দিকে ঝুকেছে (১ বছরে সঞ্চয় পত্রের বৃদ্ধি ১৩ গুন), পলিসি গত দিক থেকে এটা মেনে নেয়া যায় না। এটা একদিকে বেদনা দায়ক অন্যদিকে হাস্যকরও বটে।

চাহিবা মাত্র বন্ড নগদায়ন করা গেলে এর একটা জাস্টিফিকেশন ছিল, প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা তারল্যের মধ্যে প্রায় এক লাখ হাজার কোটি টাকা ই বন্ড।

বিনিয়োগের ব্যাপারে যা বলছেন, তা একেবারেই গতানুগতিক। মানুষকে বাঁচতে হবে, ব্যবসায়িক পরিসর তা বাড়বে, প্রশ্ন হোল কত বাড়া উচিত? অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ কতটা আস্থায় আছে সেটা পুঁজি বাজার দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। লেন দেন এর ভলিউম এই বেহাল দশা কে আমলে নিতে হবে।

২। ইঙ্গিত দিতে চাই, ছোট সময়ের মুদ্রানীতি হলে সমস্যা কোথায়। সমস্যা হোল দুরব্রিত্তায়িত রাজনৈতিক ইচ্ছা প্রাধান্য পায়। নির্বাচন কালীন সময়ে, নিরবাচনের অব্যহতি পরে, সরকারের রাজনৈতিক সংকটে মুদ্রানীতি প্রভাবিত হয়। সরকারগুলো এর সরবচ্চ সুবিধা নেয়।
সেই সাথে ছয় মাসের মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা কে ইঙ্গিত করে। আপনি যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভিতরের কাজের ধরন এবং মানের সাথে পরিচিত থাকেন ব্যাপারটি ভালো বুঝতে পারবেন।

৩। দুটি বিষয়ঃ

পুজিবাজারে আস্থাঃ ফোর্স লোন বন্ধ এর উদ্যোগ এবং কম্পানির পরিচালকদের শেয়ার ধারন বাধ্যতামূলক করার পরই -
সম্প্রতি শেয়ারবাজারে অর্থ লুটের কেলেঙ্কারির আরেকটি খবর পাওয়া গেছে। এল আর গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তা গর্হিত অপরাধ। কারণ, এটির সঙ্গে সরাসরি নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্টতার বিষয়টি জড়িত। অথচ ব্যাংকিং আইনেও বলা আছে, ব্যাংকের কোনো পরিচালক তাঁর নিজের পরিচালনাধীন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন না।
অর্থাৎ আইন আসলে কাজ করছে না।

খেলাফি ঋনঃ রাজনৈতিক প্রতিকুলতায় থাকা খেলাফিদের চাপ দেয়া হচ্ছে, সেটা ঠিক আছে। সেই সাথে দলীয় খেলাফিদের ও চাপ দিতে হবে। এর বিকল্প নাই। খেলাপি ঋণ যত কমবে স্বাভাবিক হারে সুদের হার কমবে, কিন্তু অন্ত্যথায় একই খেলাপিরা বেনামে আরও বেশি ঋণ নিবে (এই সংকট এখন শুরু হয়েছে)।

তাই কম সুদে বিদেশী ঋণ কাঙ্ক্ষিত থেকেই যাচ্ছে।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:০৮

নিঃশব্দ শিশির! বলেছেন: ধন্যবাদ...অনেক গুলো বিষয় বলেছেন, সব গুলোর উত্তর বা পক্ষে বিপক্ষে বলা সম্ভব। কিন্তু ভাই সময় যে অতি অল্প। তাই দুই এটা বিষয় নিয়ে একটু বলছি।

অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ কতটা আস্থায় আছে সেটা পুঁজি বাজার দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। লেন দেন এর ভলিউম এই বেহাল দশা কে আমলে নিতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পুজিবাজার কোন সময়ই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। তাই পুজিবাজারের বিনিয়োগ দিয়ে অভ্যন্তরিন বিনিয়োগ কোন কালেই মাপা হয় নাই।
আর পুজিবাজারে লেণদেন দেশের অর্থনীতিতে তেমন কোন অবদানই রাখে না। লেনদেন বাড়লেই অর্থনীতি অবস্থা চাঙ্গা হবে এটা ভাবাও বোকামী। বাংলাদেশের অর্থনীতির সংগে উন্নত দেশের অর্থনীতির এখানে একটা বিশাল পার্থক্য।

ছোট সময়ের মুদ্রানীতি হলে সমস্যা কোথায়। সমস্যা হোল দুরব্রিত্তায়িত রাজনৈতিক ইচ্ছা প্রাধান্য পায়। নির্বাচন কালীন সময়ে, নিরবাচনের অব্যহতি পরে, সরকারের রাজনৈতিক সংকটে মুদ্রানীতি প্রভাবিত হয়। সরকারগুলো এর সরবচ্চ সুবিধা নেয়।

রাজনীতির ইচ্ছা সব সময়ই প্রাথান্য পায় এবং সব দেশেই তা পায়। কেবল বাংলাদেশে নয় বিশ্বের সব দেশেই যখন যে দল ক্ষমতায় বা রাষ্ট্র পরিচালনায় আসে , সে তার মত করে অর্থনীতি সাজাই। বলতে পারেন, বাংলাদেশের রাজনীতি ভাল না। বা বাংলাদেশের রাজনীতি এখনও সেই অবস্থায় পৌছায় নাই, যে মুদ্রা নীীতর সঠিক ব্যবহার করবে।

ব্যাংকিং আইনেও বলা আছে, ব্যাংকের কোনো পরিচালক তাঁর নিজের পরিচালনাধীন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন না।
অর্থাৎ আইন আসলে কাজ করছে না।


কেবল ব্যাংকিং খাত নয়, অনেক জায়গাতেই আইন কাজ করছে না। এই যে আপনি জানার পরও আইনের আশ্রয় না নিয়ে বসে আছেন, সেটাও কিন্তু বেআইনি। আপনি বা আমরা যদি আইনের কাছে যেতাম, সমস্যার প্রতিকার চেয়ে তাহলে কিন্তু অবস্থা পালটাতেও পারে। সব সরকার করবে, এটা ভাবা কি ঠিক? সাধারন জনগন হিসেবে আমাদের মামলা করার অধিকার আছে। আমরা কেন তা করছি না।

সেই সাথে দলীয় খেলাফিদের ও চাপ দিতে হবে। এর বিকল্প নাই
খেলাফি সে খেলাফিই , তাকে দলীয় রং দিয়ে বরং আমরাই সমাজকে কুলশীষ করছি। সরকার তো সবার, তার মানে সবাই তো দলীয়।।।।
তবে চিহ্নিত কিছু ব্যাক্তির প্রতি বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তা কারও কাম্য নয়।

তাই কম সুদে বিদেশী ঋণ কাঙ্ক্ষিত থেকেই যাচ্ছে।

বিদেশী ঋণ নেওয়াটা ভাল। কারণ তার সুদের হার কম। তবে সেই সুদ নিতে গিয়ে যে সমস্ত শর্ত মানতে হয়, তা দেশের জন্য সব সময় ভাল হয় না।
সেই দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
ভাই ধন্যবাদ....!!!


৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:০২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১ নং প্রশ্নের ব্যাপারে অন্য ফোরামে আলোচনা করা কিছু অংশ আপডেট দিচ্ছি-

১। সরকার জাতীয় বাজেটের মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ করার একটি স্বতঃ সিদ্ধ ধারা তৈরি করেছে যার ফলে ব্যাংকিং সেক্টর এবং অর্থনীতিবিদরা ব্যাপক অসন্তুষ্ট এবং সমালোচনা মূখর ছিল। সরাসরি ঋণ নেবার ফলে ব্যাংক বেসরকারি খাতে ঋণ দিতে হিম সীম খেয়েছে, বাণিজ্যিক ব্যাংক এর ব্যবসা সংকুচিত করার দায় সরাসরি সরকারের উপর গিয়েছে। জাতীয় বাজেটের মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ করার লক্ষ্যমাত্রা আসলেই অতিমাত্রার ( গত বাজেটেও ছিল, বর্তমানেও আছে, কিন্তু নির্বাচনী বছরে ফান্ড নিশ্চিত করতে ব্যাংক থেকে না নিয়ে সঞ্চয় পত্র/বন্ডের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে সেইফ সাইড খেলেছে)। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। কিন্তু ঋণ করেছে সাত হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে সরকার গত বছর ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ করায় ব্যাংকঋণের প্রয়োজন হয়নি। সুতরাং সরকারকে এবার বাণিজ্যিক ব্যাংক সরাসরি দোষারোপ করতে পারছে না, সমস্যা হয়ে গেসে বাজারে তো ইনফাইনাইট আমানত বা পুঁজি নাই। তাই যে টাকা ব্যাংক এ আমানত হসেবে আসতো , সঞ্চয় পত্রে সুদের হার বেশি, ব্যাংক এ সুদের হার কমেছে, সেই কারনে টাকা সঞ্চয় পত্রে চলে গেসে। অর্থাৎ বেসরকারি খাত আগেও ধরা ছিল এখনও ধরা, সরকার একটু ভিন্ন ভাবে খেলেছে। এখানে সরকারে উদেশ্য যেন তেন ভাবে বাজেট ব্যয় নির্বাহ। ২। এখন আসি সরকারের এত ঋণ করতে হচ্ছে কেন? কারন হতে পারে- উচ্চাভিলাসী বাজেট, রাজস্ব আয় এবং বাজেট ব্যয় এর চরম অসামাঞ্জস্য। বিশাল ঘাটতি রয়েই যায়। ৩। এর পর আসে বাজেট উচ্চাভিলাসী কেন? ক। চাঁদাবাজি ঘুষ আর দুর্নীতির কারনে খরচ এর অতি বৃদ্ধি হচ্ছে, তাই একই কর্ম পরিকম্পনা সম্পাদন করতে অনেক গুন বেশি টাকা লাগছে। এইসব অতিরিক্ত খরচের চাপ আসলে ব্যাংক ঋনের/সঞ্চয় পত্রের উপর আসছে, খ। রাজস্ব সীমিত এবং দুর্নীতির কারনে রাজস্ব উপার্জন অনেক কম হয়। গ। বাজেট এর আনুমানিক ৪০-৫০% প্রকল্প অবাস্তবায়িত , আধা বাস্তবায়িত থাকে, কিন্তু টাকা ঠিকাদার হাতিয়ে নিয়ে যায় রাজনৈতিক প্রভাবে। ফলে লেগেসি টানতে হয় নতুন বাজেটকে। ফলে অতিরঞ্জিত বাজেট আবশ্যক হয়ে যায়। রাজস্ব সেহেতু সীমিত, এই চাপ যায় ব্যাংক ঋণ এবং বন্ডের উপর। এখন সুদ বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে গত বছর সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ করেছে, কিন্তু সামনের দিনে এই গতি থাকবে না। ফলে আবার ব্যাংক ঋণ নিতে হবে, বাইরে থেকে ঋণ আনতে হবে। আল্টিমেট সমাধান, চাঁদাবাজি ঘুষ দুর্নীতি নির্মূল করে রাষ্ট্রের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো। একই কাজের প্রকৃত ব্যয় এবং ঠিকাদার কে সর্বমোট দেয় এই দুইটার মধ্যে তফাত কমান, প্রজেক্ট বাস্তবায়ন সময় কমানো, ইন ইফিসিয়েন্ট প্রসেস, দুর্নীতি কমানো। সর্বোপরি অপ্রয়োজনীয় প্রজেক্ট, রাজনৈতিক প্রজেক্ট বাদ দেয়া।

৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৪১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: Click This Link

খেলাপি ঋণ আবার বেড়েছে

মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ১৭২ কোটি টাকা বেড়েছে। সর্বশেষ জুন ২০১৪ অনুসারে ব্যাংক খাতে বর্তমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫১ হাজার ৩৪৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এর আগে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বা সেই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
প্রধানত রাষ্ট্র খাতের বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ তিন মাসে প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংক খাতের সার্বিক খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তিন মাসে বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে দুই হাজার ৩৩ কোটি টাকা। জুন শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ হয়েছে চার হাজার ৫৯০ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মার্চ শেষে যা ছিল দুই হাজার ৫৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসে বেড়েছে প্রায় ৬৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তুতকৃত সর্বশেষ জুন (২০১৩) ও মার্চভিত্তিক (২০১৪) ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে।
গত বছরের শেষভাগে দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ সময় পুরোনো-নতুন মিলিয়ে বিপুলসংখ্যক খেলাপি তাঁদের ঋণ নিয়মিত করেন। এতে ডিসেম্বর ২০১৩-এ খেলাপি ঋণ কমে হয়েছিল ৪০ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
তবে ব্যাংক খাতের সূত্রগুলো বলছে, পুনঃতফসিল করা সেই সব ঋণের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই কিস্তি খেলাপি হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যেগুলো আগামী প্রান্তিকের পরিসংখ্যানে চলে আসবে।
যোগাযোগ করা হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক বছরের ঋণ শ্রেণিকরণ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কিন্তু বছর শেষে ব্যাংকগুলো নিজেদের তাগিদেই আদায়ে তৎপর হয়। তখন খেলাপি ঋণ কমে আসে।
সূত্রগুলো বলছে, বছর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দুভাবে কমে। ব্যাংকাররা মুনাফা বৃদ্ধি করতে আদায়ের বিষয়ে অধিক তৎপরতা চালান। একইভাবে ব্যবসায়ীরাও বছর শেষে তাঁর হিসাবটি সন্তোষজনক রাখতে চান। এ পর্যায়ে অবশ্য খারাপ ঋণকে ভালো দেখানোরও প্রবণতা ব্যাংকগুলোতে থাকে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত পরিদর্শনকাজের আওতায় সেগুলোকে নজরদারিতে আনা হয়। এ পর্যায়ে কোনো খেলাপি ঋণকে ভালো মানে দেখালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেগুলো গুণগত বিবেচনায় খেলাপি হিসাবে শ্রেণিকরণ করে থাকে বলে সূত্রগুলো উল্লেখ করেছে।
জুনভিত্তিক খেলাপি ঋণের প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে দেশের ৪৭টি (নয়টি নতুন ব্যাংক বাদে) তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ২৩ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে। কমেছে ২৪টির।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ছিল। এখনো প্রায় সেই অবস্থাতে আছে, যদিও তিন মাসে ব্যাংকটির কিছু খেলাপি ঋণ কমেছে। ব্যাংকটিতে এখন ৭৩ দশমিক ২১ শতাংশ ঋণ খেলাপি। মার্চের হিসাবে যা ছিল ৭৫ দশমিক ১১ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শতকরা হিসাবে দুই অঙ্কের ঘরে খেলাপি ঋণ রয়েছে আর তিনটি ব্যাংকের, এই তিনটিই বিদেশি ব্যাংক। এগুলো হলো পাকিস্তানের হাবিব ও ন্যাশনাল ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এদের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১১ দশমিক ৫৯, ২৮ দশমিক ৭৩ ও ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
জুন শেষে রাষ্ট্র খাতের সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই হাজার ৩০ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা বা ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ৬২২ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার ১৫১ কোটি বা ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। বিদেশি নয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে প্রায় এক হাজার ৪২৩ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর বিশেষায়িত চার ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রায় এক হাজার ৩২৫ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৫২ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৩৩ দশমিক ১২ শতাংশ।

৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: চলমান প্রকল্পগুলোতে চাহিদামতো বরাদ্দ দিতে না পারলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নতুন এবং অগুরুত্বপূর্ণ প্রকলগু অনুমোদন ঠেকানো যাচ্ছে না। স্বয়ং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সড়কের নতুন প্রকল্পসহ কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আর অনুমোদন না দিতে পরিকল্পনা কমিশনকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অনুমোদন প্রক্রিয়া থেমে নেই। বতর্মান সরকার ক্ষমতায় আসর পর গত জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) মাধ্যমে মোট ১৭৭টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭১ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা জোগান দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ৪ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে বার বার সর্তক করেও গুরুত্বহীন প্রকল্প নেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারছে না অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত এক বছরে অনুমোদন পাওয়া ১৭৭ প্রকল্পের মধ্যে ১২২টি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে সড়ক উন্নয়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন স্থাপনের মতো দৃশ্যমান নির্বাচনমুখী প্রকল্প গুরুত্ব পেয়েছে। আর এত বেশি প্রকল্প অনুমোদন প্রবণতার কারণে আগামী বছরগুলোতে অগ্রাধিকার প্রকল্প পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এডিপিতে প্রকল্পের তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম। নতুন নতুন প্রকল্প এডিপিতে যোগ হলে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সম্পদের তুলনায় প্রকল্প সংখ্যা বেশি হওয়ায় বরাদ্দও ছড়িয়ে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় অনেক প্রকল্প বছরের পর বছর ধরে শেষ করা সম্ভব হয় না। এতে সরকারের অপচয় বাড়ছে।


http://shokalerkhobor24.com/?p=3149

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.