নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।
অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বিচারপতিদের মর্যাদা বাড়িয়ে রায় দিয়েছে। মর্যাদা বাড়ানোর মাত্রা অনৈতিক তো বটেই কিছু ক্ষেত্রে দৃষ্টিকটু পর্যায়েও ঠেকেছে। ঠিক কি ধরনের ক্ষমতার চর্চা করতে আদালত বাধা গ্রস্ত হচ্ছে, কারা বাধা গ্রস্ত করছে, কি কি ক্ষমতার চর্চা নির্বাহী বিভাগ নিরুৎসাহিত করছে বা কোথায় কোথায় নির্বাহী বিভাগ অন্তরায় হয়ে উঠছে অথবা দেশে আইনের শাসন প্রবর্তনে, অব্যবস্থাপনা, অনৈতিকতা, বেপারোয়া দুর্নীতি, অগণতান্ত্রিক (পড়ুন অনিয়ম তান্ত্রিক) রীতি নীতি, ঘুষ, তদবির ইত্যাদি দূরীকরণে কোন কোন জনকল্যাণ মূলক পদক্ষেপ নেয়ার ইচ্ছার বশবর্তী হয়ে আদালত নিজের বিচারকদের প্রশাসনিক মর্যাদা বাড়িয়েছে সেটা উনারা ব্যাখ্যা করেননি একেবারেই।
যখন রাষ্ট্রের স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়া নিজেদের এক্সিকিউটিভ নিয়োগ দিবার ক্ষমতা রাখে না, একে একে সংবিধান সংশোধন করে প্রতিষ্ঠান সমূহের ক্ষমতা কে রাজনৈতিক ক্ষমতা বানিয়ে ফেলা হচ্ছে কিংবা যে আদালত সম্পুর্ন নিজেদের মানদণ্ডে বিচারকও নিয়োগ দিতে অক্ষম (যাঁদের নিজেদের নির্বাহী প্রভাব মুক্ত নিয়োগ পদ্ধতি এবং বেতন কাঠামো নেই), তখন আদালত এই বর্ধিত মর্যাদা (পড়ুন ক্ষমতা) দিয়ে রাষ্ট্রের কল্যাণের তরে কি করবে? আদালতের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, কারগরি সহায়তায় দুর্নীতি মুক্ত আধুনিক ই ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন, নিজেদের প্রতিষ্ঠানিক নিয়মতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, সঠিক মেধা ব্যবস্থাপনা এবং বিচারের উচ্চ মানদণ্ড প্রতিষ্ঠার মত মৌলিক বিষয় গুলো নিয়ে কাজ না করে ব্যক্তি বিচারকের মর্যাদা বৃদ্ধি নাগরিকের , নাগরিক প্রতিষ্ঠান সমূহের এবং রাষ্ট্রের স্বাধিন প্রতিষ্ঠান সমূহের আইনি সুরক্ষা দিতে কি কাজে আসবে?
বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানিক দুর্নীতিতে যে দুটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সর্বে সর্বা তারা হচ্ছে পুলিশ এবং নিন্ম আদালত। নাগরিক স্বার্থ রক্ষা জনিত কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট এ যেখানে নির্বাহি এবং বিচার বিভাগের মধ্যে যেখানে আইনের শাসন বাস্তবায়ন জনিত স্নায়ুর প্রতিযোগিতা থাকার কথা সেখানে তাদের মধ্যে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হবার প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়। এখানে পরস্পর পরস্পরের দৃশ্যমান সহযোগী! তাই রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন আদালতের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হওয়া বাংলাদেশে সব সরকারের আমলেই নিয়মিত হয়ে উঠেছে। বিবাদমান রাজনৈতিক পরিবেশে অনেক কাঁদা ছোঁড়া ছুঁড়ি এবং রক্তপাতের পর অর্জিত অতীতের রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান সমূহ আদালত আন্তরিকতার সাথে বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর স্বার্থের পক্ষে করে গেসে। এর নিকৃষ্ট বলি হয়েছে আমাদের মৌলিক অধিকারের বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সকল প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিকের জন্য নির্মিত সেবা খাত। জদিও এই অপূরণীয় ক্ষতি নাগরিকের নজরে আসে সামান্যই। যা সচরাচর নজরে আসে তা হোল নির্বাচন পদ্ধতি, নির্বাচন কমিশন এর ক্ষমতা হারানো এবং ক্ষমতা হস্তান্তর এর শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া সমূহ। ক্ষমতা হস্তান্তর এর শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া সমূহকে আরো সুসংহত না করে আমাদের আদালতই হাস্যকর ওজুহাত দিয়ে একেবারেই বাতিল করে দিল। যা অর্জিত হয়েছিল রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি এবং নাগরিকের জান মালের ক্ষতির বিপরীতে, আদালতই এই মতৈক্যে পৌঁছানো প্রক্রিয়া সমূহকে নস্ট করে আবার দেশে নৈরাজ্যকে নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশে আজ ব্যাক্তিগত পারিবারিক এবং সামাজিক সমস্যাকে রাজনৈতিক সমস্যায় রুপ দেয়া হচ্ছে, রাজনৈতিক সমস্যাকে আইনী সমস্যায় রুপ দেয়া হচ্ছে! ফলে আদালত নাগরিকের দেওয়ানী ও ফৌজদারি অধিকার সমূহ সুরক্ষা দেবার বদলে ব্যস্ত রাজনৈতিক মামলা নিয়ে। হোল এই সব মামলার দ্রুত নিস্পত্তি কাল লক্ষণীয়!
যেহেতু আদালত রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলনে নির্বাহী বিভাগের সম্পূরক হয়ে উঠেছে তাই ক্ষমতার ভাগাভাগিও সম্পূরক চাই। এটাই সরল সমীকরণ! এর মধ্যে রয়েছে ক্ষমতা এবং আর্থিক আধিপত্য বিস্তারের কৌশল! এই পর্যায়ে তাই দেশের এবং রাষ্ট্রের (!) প্রধান নির্বাহীও (যদিও হবার কথা ছিল শুধু মাত্র নির্বাহী বিভাগের প্রধান নির্বাহী) এই নিয়ে মন্তব্য করেছেন, কারন সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ইন্টারেস্ট বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখে আদালত এখন নিজেদের হিস্যা চাইছে! অথচ এই দুয়ের মধ্যে থাকার কথা ছিল নাগরিক স্বার্থ রক্ষা জনিত কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট!
আদালতের বিচারকদের ক্ষমতা বর্ধনে নির্বাহী বিভাগের আসল এবং নকল (রাজনৈতিক ভাবে অধিষ্ঠিত) নির্বাহীগন কিঞ্ছিত নাখোশ বলে প্রকাশ পেয়েছে! এই ক্ষমতা বর্ধন কে অনৈতিক আখ্যা দেয়া হয়েছে। কথা হচ্ছে, উনারা রাষ্ট্রের সকল কেন্দ্রীয় তো বটেই, অন্যান্য রাষ্ট্রীয় স্বায়ত্বশাসিত, আধা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সমূহের এবং আঞ্চলিক ক্ষমতা সমূহ (স্তানীয় সরকার- বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং এদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান সমূহের) একটি কার্যালয়ে কুক্ষিগত করেছেন সেটা খুবই নৈতিক! লূটেরাদের কাছে আজ শুনি নীতির কথা!
কি তাজ্জব ব্যাপার! একটি দেশের মাত্র নবম সংসদকে ষোড়শ সংশোধনী পাশ করতে হয়েছে! তার মানে একটি সংসদ একাধিক সংশোধনী এনেছে! কেন??? তারা নিজেরাও গুছিয়ে লিখতে পারেনি কি কি ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে বাকি? তাই যখন মনে পড়েছে যে , ওহ! ওইটা তো বাকি আছে! তখনই আরেকটি সংশোধনী এনেছে! ব্যক্তি রাষ্ট্রপতিকে এবং ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতার সর্বে সর্বা করতে আইনি কাঠামোয় কি না করা হয়েছে আজ অবধি!
এখন যা হয়েছে, সব তার এক জায়গায় জড় হয়েছে! তাই কারনে অকারণে শর্ট সার্কিটেড হয়ে যাচ্ছে আইনের শাসনের প্রক্রিয়া সমূহ, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রচেষ্টা সমূহ! আর প্রতিবারই বিদ্যুৎ পৃষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশ, তার গরীব কৃষক -শ্রমিক এবং সম্ভাবনাময় এক তরুন জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক নিরাপত্তা।
দুর্নীতি গ্রস্ত আদালত এবং সর্বোচ্চ দুর্নীতি গ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ক্ষমতাকে চূড়ান্ত ভাবে বিকেন্ধীভূত না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের মুক্তি নাই।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অল্প কথায় কিছু গুরুত্ব পূর্ণ কথা বলে ফেলেছেন।
সরকারের ইচ্ছা থাকলে পরিকিল্পিত ভাবে ঢাকাকে ভারমুক্ত করা সম্ভভ। সাধারন নিয়মে সিটি কর্পোরেশন কিংবা জেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা পরিষদ সমূহের রাজধানী থেকে অপেক্ষাক্রীত কম ট্যাক্স, অফিস আর আবাসের জন্য উপুজুক্ত জমি (অবশ্যই ফসলি জমি নয়) এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন প্রণোদনা (এনট্রান্স ফেসিলিটি) দিয়ে সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠান , কর্পোরেট হাউজ ইত্যাদি কে ঢাকার বাইরে আকৃষ্ট করার কথা ছিল। কিন্তু এই কাজটি আমাদের কোন সরকার উৎসাহিত করে নি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন শিথিল হবে বলে? কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও কিন্তু নিজে থেকে উৎসাহী হয়ে এই কাজ গুলান করতে পারতো এতে স্থানীয় প্রশাসন পরিষদ গুলো আর্থিক ভাবে সক্ষম হোত। কারন কর্পোরেট ট্যাক্স এর একটি মোটা অংশ স্থানীয় পৌরসভা কিংবা সিটি কর্পোরেশন পাবার কথা।
পরের কথায় আসি, এরশাদ ফেডারেল সিস্টেমের কথা বলেন। প্রয়োজন মাফিক আঞ্চলিক বরাদ্দ, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, জেলা ভিত্তিক প্রবিদ্ধির জন্য এটা আসলেই গুরুত্ব পূর্ণ। সমস্যা হোল উনার সততা, ৯ বছর ক্ষমতায় থেকেও উনি এটা বাস্তবায়ন করেননি, উপজেলা করেছেন কিন্তু উপজেলা গুলোকে কাজের টার্গেট, বাজেট বরাদ্দের গাইডলাইন দেননি। পরের সরকার গুলো উপজেলাকে আরো দুর্বল করে কেন্দ্রে ক্ষমতা এনেছেন।
দেরিতে হলেও এখন জেলা উপজেলা আর ইউনিয়ন কে দায়বদ্ধতার মাপকাঠি সহ বাজেট এবং ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া দরকার, তবে তার সাথে দরকার সেবা খাতের প্রতিটি বিভাগ কে স্বায়ত্বশাসন দেয়া।
আসলে আদালত যদি প্রতিষ্ঠান (নাগরিক, রাষ্ট্রীয় ও রাজনোইতিক) গুলোকে রাজনৈতিক দুরবিত্তায়নের বিপরীতে সুরক্ষা দেয়ার পন করে, এবং সত্যি সত্যিই প্রশাসনের সৎ অংশকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য কাজ করে তাহলে আমরা দেখব বহু সৎ আমলা জনস্বার্থে কাজ করছে, এই শ্রোতে যোগ দিবেন তরুণরা, অনুপ্রাণিত হবে অনেক রাজনীতিবিদও। আদালতের তাই দুরবিত্তায়নের শিকল থেকে বেরুনো দরকার সবার আগে!
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২
নিলু বলেছেন: ইদানিং তো , আমরা সকলেই সকল স্তরে স্বাধীনতা চাচ্ছি যে , সুতারাং কেউ নিজেকে ক্ষমতা বান বলবে না কেনও ? সেই সাথে দেশে , ক্ষমতার বিকেন্দিকরনের লড়াই তো চলছেই , ঢাকা শহরের যানজট , মুক্ত করতে কি ঢাকা বাসী কি রাজী আছে ? তাহলে হাইকোর্ট সকল বিভাগে , হেড অফিসগুলি বিভিন্ন জেলা শহরে স্থানান্তর করলে , কর্মস্থলে পরিবার পরিজন সহ বসবাস বাধ্যতামূলক করলে , আদালতগুলি জেলাশহর থেকে উপজেলায় স্থানান্তর করলে , কেমন হতো বলে মনে করেন । এরশাদ সরকার তো ৩০ বসর আগেই শুরু করেছিলেন কিন্তু আমরা তো তাকে স্বৈরাচার বলেছি , ধন্যবাদ