নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেগা সিটি ম্যানেজমেন্টঃ নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৯


উৎস অনুসারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে ক্লাসিফাই করে এর ব্যবস্থাপনার পৃথক এবং সমন্বিত মডেল সাজাতে হবে।

-গ্রিহস্থলীর পচনশীল বর্জ্য
-গ্রিহস্থলীর অপচনশীল বর্জ্য
-সুয়েজ বর্জ্য
-পলিমার বর্জ্য (রিসাইকেল করতে হবে)
-প্লাস্টিক ওয়েস্ট
ওয়েস্ট বেইজড রিনিউএবল এনার্জি প্ল্যান্ট এন্ড প্রসেসিং
-কাগজ এবং সমজাতীয় বর্জ্য (রিসাইকেল করতে হবে)
-রিসাইকেল এবল ইলেকট্রিক বর্জ্য এবং ব্যাটারী (রিসাইকেল করতে হবে)
-নন রিসাইকেল এবল ইলেকট্রিক বর্জ্য
-রিসাইকেল এবল ম্যাকানিকেল এবং অটোমোবাইল বর্জ্য
-শিল্প বর্জ্য (ইন্ডাস্ট্রিয়াল হ্যাজার্ড)
-কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির বর্জ্য (কেমিক্যাল হ্যাজার্ড)
-গার্মেন্টস বর্জ্য (গার্মেন্টস হ্যাজার্ড)
-হাট বাজার এর বর্জ্য এবং মিট প্রসেসিং হ্যাজার্ড
-রাস্তার ধূলি বালি এবং ভাসমান বর্জ্য
-নির্মান শিল্পের বর্জ্য ( কন্সট্রাকশন হ্যাজার্ড)

উৎস থেকেই পৃথকীকরণ করে পচনশীল বর্জ্য, রিসাইকেল এবল বর্জ্য প্রসেস করতে হবে। সরকারি এবং বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় রিনিউএবল এনার্জি প্ল্যান্ট চালু করে রি সাইকেল এবল বর্জ্য প্রসেস নিশ্চিত করতে হবে।

বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান পাট, বাজার এবং সকল অফিস আদালতের নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকতে হবে যা সিটির কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সমন্বিত থাকবে। সত্যিকার অর্থে সিটি কর্পরেশন এর সহযোগী হিসেবে একটি আলাদা স্বাধীন "ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট" প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাই ভবিষ্যৎ ওরিয়েন্টেড। বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান পাট, বাজার, সকল অফিস আদালত, শিল্প কারখানা, ম্যানুফেকচারিং প্ল্যান্ট, ওয়াশিং প্ল্যান্ট, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, গার্মেন্টস, কনস্ট্রাকশন সাইট ইত্যাদির জন্য বর্জ্যের প্রকার অনুযায়ী পৃথক পৃথক মডেলের ডাস্টবিন বা ময়লার ব্যাগ ডিজাইন করতে হবে, ব্যবহার বাধ্য করতে হবে। এতে রিসাইক্লিং সহজতর হবে।


ময়লার ব্যাগ সংগ্রহ কারী প্রতিষ্ঠান ময়লা ক্লাসিফাই না করে ময়লা প্যাকেট করলে তা আর্থিক পেনাল্টির আওতায় আনবে। খোলা ময়লা সংগ্রহের প্রশ্নই আসে না।

সরকারকে রিনিউএবল এনার্জি প্ল্যান্ট এ ইনভেস্ট করতে হবে। বেসরকারি ইনভেস্ট কে প্রোনদনা দিয়ে উৎসাহিত করতে হবে।


ইন্ডাস্ট্রিয়াল বর্জ্য এর জন্য দুটি মডেল প্রযোজ্য।
এক। শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজেই বর্জ্য শোধন করে নীতিমালা মেনে বাকী বর্জ্য রিসাইকেল বা ভূগর্ভস্ত কিংবা ড্রেনেজ করবে।

দুই। সরকার বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নগরীর সকল শিল্প বর্জ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় প্ল্যান্টে শোধন করবে। একাজে তারা সরকার এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোর কাছ থেকে খরচ এর অর্থ পাবে। নাগরিকের দূষণ ট্যাক্স ও এখানে ন্যায্য ভাবে ব্যয়িত হবে।

দুটি মডেল এর সমন্বয় সাথন করে এদের যৌথ উপস্থিতিই কার্জকর।
মোট কথা একটি শহর থেকে কোন ভাবেই নদী দূষিত হয় এমন বর্জ্য ড্রেইন্ড আউট করা যাবে না। প্রতিটি প্রধান এবং অপ্রধান ড্রেন এর শেষ প্রান্তে পিওউরিফিকেশন প্ল্যান্ট, পানি শোধনাগার, বর্জ্য রিসাইকেল প্ল্যান্ট থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

ইলেকট্রনিক ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা খুবই চেলেঞ্জিং। একাজে সিট কমিশন, স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে অনেক অনেক মাথা ঘামাতে হবে। প্রতিটি ইলেকট্রনিক পন্য উৎপাদন কারী অথবা আমদানী কারী - বাজারজাত কারী প্রতিষ্ঠানকে ইলেকট্রনিক পন্যের লাইফ সাইকেল শেষে কিভাবে সেই পন্যের ওয়েস্ট ম্যানেজ করবে (রি কল) তা ডিফাইন করবে। হয় ঐ প্রতিষ্ঠান নিজে তা রিসাইকেল করবে অথবা সরকার তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে তা প্রসেস করবে। এর জন্য অতি দক্ষ নীতিমালা এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এডমিনেস্ট্রশন লাগবে। এলেক্ট্রনিক এবং ক্যামিক্যেল হ্যাজার্ড আমাদের জল স্থল সব বিষিয়ে তুলেছে।

সবশেষে বলতে হবে, ময়লা উৎস থেকেই প্যাকেটাইজ করে ট্রান্সপোরটেশন করতে হবে। এখানে সেখানে আবাসিক এলাকা, রাস্তার পাশ কিংবা শিল্প কারখানা, প্ল্যান্ট, নির্মান সাইট, দোকানের পাশে ময়লা ডাম্পিং করা যাবে না কোন ভাবেই।

ট্রান্সপোরটেশন ব্যবস্থা ঠিক হলে রাস্তার পাশে ময়লা রাখার উন্মুক্ত ডাম্পিং ডাস্টবিন এর প্রয়োজন থাকবে না।


তবে আবাসিক এলাকার ভিতরে ময়লার প্রকারভেদ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন ট্রান্সপোর্টএবল বা মোবাইল ডাম্পিং স্টেশন থাকতে পারে যেগুলো উন্মুক্ত হবে না। এই ধরনের ডাম্পিং স্টেশন ভূগর্ভস্ত হতে পারে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ট্রেইলার ভ্যান এসে পুরো ডাম্পিং উনিট্টিকে নিয়ে গিয়ে আরেকটি খালি ডাম্পিং বক্স বসিয়ে যাবে। এগুলো সিসি ক্যামেরার কভারেজ এ রাখা যেতে পারে, যাতে উন্মুক্ত ময়লা ফেলা লোক কে কঠোর আর্থিক পেনাল্টির আওতায় আনা যায়।

নগরীর সুয়ারেজ ড্রেনেজ কে বৃষ্টির পানির ড্রেনেজ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে। বৃষ্টির পানি বিনা বাধায় নদীতে উন্মুক্ত হবে। সুয়ারেজ এবং শিল্প বর্জ্য বহন কারী বদ্ধ ড্রেন গুলো অবশ্যই একটি শোধনাগারে ট্রামিনেট করেই এবং দূষণ পরিশোধিত করেই শুধু মাত্র নদীতে উন্মুক্ত করা যাবে।
নগরীর পাখ পাখলীকে ময়লা খাবারের জন্য ময়লার ভাগাড় উন্মুক্ত করে না দিয়ে বরং তাদের নিয়মিত আহার সিটি কর্পোরেশন কেই জোগাতে হবে। এই কাজের সাথে নগরীর পার্ক এবং উদ্যান ব্যবস্থাপনা কে সমন্বিত করতে হবে।

বলা হয়ে থাকে ঢাকার কাক ন্যাচারাল সুইপার, কিন্তু প্রানী হিসেবে কাকের শুধু এই ময়লাই খাবার কথা নয়। এর মাধ্যমে জীবাণু সংক্রমণ ভয়াবহ আকারে বাড়তে পারে, অন্য একটি নির্দেশক হচ্ছে কাক ছাড়া বাকি প্রায় সব পাখিই বিলুপ্ত হচ্ছে। সুতরাং উন্মুক্ত ময়লায় ভাগাড় সব বন্ধ করতে হবে, প্রান কূলের বেঁচে থাকার পরিবেশ থাকার পরিবেশ স্বাভাবিক ভাবে রিস্টোর করতে পদখেপ নিতে হবে।

নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবেশ বান্ধব হোক, রিসাইকেল বেইজড হোক, নগর নান্দনিক হোক!
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.