নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘটনার অন্তরালেঃ সড়ক দুর্ঘটনা, প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এবং আদালতের রায়

০১ লা মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৫০

বাংলাদেশের সড়ক চূড়ান্ত পর্যায়ে অনিরাপদ। এখানে অধিক চূরি নিশ্চিত করতে সড়কের লেইন চুরি হয়েছে সর্ব কালেই। বড় বড় এবং স্পেইসিয়াস আধুনিক যাত্রী বা পণ্যবাহী বাস ট্রাকের সাথে স্পেইস এবং ভার বহন সক্ষমতার সমন্বয় করে রাস্তা লেইন, বাঁক, সারফেইস নির্মান করা হয়নি। রাস্তার বাঁক টেকনিক্যালি বাস্তবায়িত হয়নি, নেই সঠিক ও পর্যাপ্ত রোড সাইন। কিংবা নির্মান সামগ্রী নিন্ম মানের, পীচ আনুপাতিক হারে দেয়া হয় না, অতি নিন্ম মানের ইটা ব্যবহৃত হয়। রাস্তায় গর্ত থাকে প্রচুর, রাস্তার সারফেইস বেশ উঁচু নিচু। রাস্তায় সার্ভিস লেইন নাই, নেই বাস বা ট্রাকের স্ট্যান্ড, একেবারে সাইডের লেইন উঠা নামার জন্য প্রসস্ত নয়, নেই নিন্ম গতির বাহনের জন্য আলাদা রাস্তা, চুরি করতে গিয়ে হাঁটার যায়গা খানাও পীচ ঢালা পথে দখল হয়ে পড়ে।

আন্তঃ জেলা, আন্তঃ বিভাগ সহও থানা গুলোকে কানেক্টেড প্রায় সব সড়কই ডিভাইডারহীন, বহু জেলা এবং থানা সড়ক মাত্র ১ লেইনের। রাস্তার ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যান থাকায় ওভার টেকিং এ চালক খুবই কম সময় এবং স্পেইস পেয়ে থাকে। ডিভাইডারহীন সংকীর্ণ সড়কে ওভারটেকিং বিপদজনক সত্ত্বেও সময়কে বীট করতে গিয়ে বহু মুখোমুখি সংঘর্ষে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে লেইনের প্রস্থ কম হবার কারনে আধুনিক বড় বড় বাস ট্রাকের বেলায় দেখা যায় বিপরীতমূখী ২টি বাস ট্রাককে ডিভাইডারহীন সড়কে অতি নিন্ম সেইফটি মার্জিনে ওভার টেইক করতে হয়, এতে একই রাস্তায় চলা কম গতির বাহন (নসিমন-করিমন-টেম্পু, মটর বাইক) আঘাত প্রাপ্ত হয়।

রাস্তার পাশে সড়ক বনায়ন হয়েছে এমন গাছে যার প্রধান মূল ছিল না, ফলে ঝড়ে এইসব গাছ উপড়ে পড়ে। উপরন্তু বন বিভাগ সড়ক গাছের পুরানো বা আধা ভাঙা ঢাল কাটিয়ে সরানোর কাজ করে না। ঠিক রাস্তার উপরেই বসে হাট-বাজার-দোকান-টেম্পু ও স্থানীয় পরিবহনের স্ট্যান্ড। রাস্তা পারাপারে কোন নিয়ম প্রতিষ্ঠা পায়নি দেশে (ফুট ওভারব্রীজ অপর্যাপ্ত, থাকলেও সেটা ব্যবহার না করে হুট করে সড়ক পার হবার প্রবনতা প্রবল)।
স্বল্প কিংবা দূরপাল্লার কোন যাত্রী বা পণ্য বাহী বাস ট্রাকেই এখনও সীট বেল্ট বাঁধার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়নি। চালক মোবাইল ফোনে কথা বলেন অবিরত!
ফলে সব মিলিয়ে রাস্তা মরণ ফাঁদ।

এর বাইরে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের কোন অনলাইন-অফলাইন কোর্স, কারিকুলাম, শিক্ষণ পদ্ধতি, সরকারি-বেসরকারি এজেন্ট ভিত্তিক প্রসেস ডেভেলপ করা হয়নি, করা হয়নি স্টান্ডার্ড পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন (শুধু তথাকথিত ডিজিটাল প্লেইট করতে বেশুমার টাকা ঢালা হয়েছে যা না করা হলেও কোন ক্ষতি হোত না কেননা এখনও ঘুষ দিয়ে ডিজিটাল লাইসেন্স এবং প্লেইট ২টাই পাওয়া যায়)। শিক্ষাহীন, কর্মহীন কিশোর যুবক দীর্ঘদীন হেল্পারি করে পেটে ভাতে ঠেলা গুতা খেয়ে ড্রাইভিং শিখে, কিন্তু রাস্তার সাইন বুঝার বাধ্যবাধকতা তার থাকে না।
অর্থাৎ অতি নিন্ম মানের রাস্তায় অ প্রতিষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষা নেয়া লোকে বড্ড নিরাপত্তা ঝুঁকিতে গাড়ি চালায়।

তবে এর বাইরেও কিছু ব্যাপার আছে যা একেবারেই অনালোচিত। এরকম ৩ টি ব্যাপার হোল-

১। প্রতিটি যাত্রী এবং পণ্য বাহী ট্রান্সপোর্টে ব্যাপক চাঁদাবাজি।
"জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সহাসচিব রবিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘সীমান্ত থেকে গরুর হাট পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা গরু প্রতি চাঁদাবাজি হচ্ছে। এর বাইরে আছে গাবতলি গরু হাটের ইজাদারদের অত্যাচার।"

২৭ জুলাই ২০১৩'র একটি ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্ট বলছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে ৪৩৯ কিমি চলতে একটি ১০টনের পণ্যবাহী ট্রাকে ২২ হাজার টাকা শুধু চাঁদাবাজি হয়।

পরিবহনে চাঁদার হার ঠিক করা

২। যানজটে ব্যয়িত শ্রম ঘন্টা এবং পণ্য নষ্ট।
ফলে একই পরিবহন (বাস, ট্রাক) দিয়ে চাঁদাবাজি এবং যানজটে ব্যয়িত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নির্দিস্ট সময়ে বেশি ট্রিপ দিতে বাধ্য হন চালক। এতে করে এমনিতেই অনিরাপদ সড়কে যেন তেন ভাবে চালিয়ে, একটানা অতি সময় ঘুম হীন শ্রান্ত ভ্রান্ত চালককে গন্তব্যে পৌঁছার অর্থিক, মানসিক এবং স্বাস্থ্যগত তাড়নাগুলো তাড়িয়ে বেড়ায়।

৩। যানবাহনের ক্রমাগত ব্যবহার ও ফিটনেস হীনতা। মানহীন রাস্তায় নিরন্তর ভাবে চলা ভালো কিংবা নিন্মমানের গাড়ির ইঞ্জিন, চাকা, টায়ার এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশের ফিটনেস চেক করা হয় না। নির্দিস্ট মাইলেজ সাপেক্ষে বাধ্যবাধকতা মূলক ও রুটিন ফিটনেস চেকের সিস্টেমও (MOT/APK) ডেভেলপ করা হয়নি। গাড়ীর স্পীড গভর্ণর টেম্পারিং করে স্পীড লিমিট বাড়ানো হয় যা সাধারণত টেস্টে কভারই করা হয়না। কালেভদ্রে মেট্রো এলাকায় যেসব ফিটনেস টেস্ট হয় তাতে ফেইল করা যানবাহন ঘুষের বিনিময়ে হয় সেই মেট্রোরই রাস্তায় নামে না হয় সেগুলো মফঃস্বল শহরে নিয়ে নামানো হয়।।



সেন্টার ফর ইনজ্যুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)-এর জরিপ ‘বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)' জরিপে দেখা যায়, প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ১৬৬ জন নিহত হন৷ আর তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহতের সংখ্যা ৬৪ জন৷''
বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৪ জন নিহত হয়৷

সড়ক আইনে চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি কয়েক বছরের সাজা এবং কিছু অর্থদন্ড। এই পরিস্থিতিতে একজন বিশিষ্ট নাগরিকের সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাবার বিপরীতে এসে আদালত দৃষ্টান্ত মূলক ভাবেও যদি চালককে মিরত্যু দন্ড দেন (যা নাগরিকভেদে আইনের শাসনকে অসম ভাবে প্রমোট করছে), তা অনিরাপদ সড়কে লাশের মিছিল কমাতে আদৌ ভূমিকা রাখবেনা। কারণ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দক্ষ-অদক্ষ চালকই একমাত্র দায়ী নন। তাই আমরা বলছি চাঞ্চল্যকর কিছু করার চাইতে আদালত প্রকৃত কারণ খুঁজে তার সমাধান বের করতে নির্বাহী বিভাগকে টেকসই পর্যবেক্ষন সহ সুনির্দিস্ট নির্দেশনা দিক।

​ঠিক যারা অপরাধ করছে (ঘুষ, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ, আর্থিক প্রতারণা, জমি ভাগাভাগি, ক্রয়-বিক্রয়ে অপরাধ ও অনিয়ম, দেনা-পাওনা পরিশোধে অস্বীকৃতি), ঠিক যেসব মৌলিক কারণে বাংলাদেশে মূল অপরাধগুলো ঘটছে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, ঠিক যেভাবে দুর্নীতি হচ্ছে- তার মূল কারণ ও প্রকৃতি নির্ণয় এবং প্রতিষ্ঠান গত স্থায়ী সমাধান না বাতলে দিয়ে আদালত যদি শুধু দন্ড দিতেই থাকে তা ফলহীন হচ্ছে এবং হবে।

আমাদের বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ, নির্বাহী বিভাগের কঠোর নির্দেশনা না থাকলে পুলিশী তদন্ত আটকে পড়ে থাকে বছরের পর বছর, অন্যদিকে বিচারিক রায় ঘুষ আদান প্রদানে উবে যায়। ফলে এই ধরনের তদন্ত নির্ভর বিচারব্যবস্থা এবং বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে অকার্যকর।

অপরাধ সংগঠনের বিপরীতে আদালতকে সুস্পষ্ট পর্যবেক্ষণ দিতে হবে। মানে চাঁদাবাজি, জালিয়াতি, দুর্নীতি প্রতিরোধী সিস্টেম অটোমেশন বাস্তবায়ন, আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনয়নকারী আর্থিক ব্যবস্থা প্রণয়ন, প্রশাসনের বিশেষ বিশেষ স্তরে কার্যকর সংস্কারের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিতে হবে, ইনফাস্ট্রাকচার তৈরিতে অনিয়মের ও দুর্নীতির ব্যাপার সামনে আনতে হবে, উচ্চমান ও নিরাপদ রাস্তা তৈরির বাধ্যবাধতা সম্পন্ন নির্দেশনা দিতে হবে, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির ফিটনেস ব্যবস্থা প্রবর্তনের সঠিক এবং মানসম্পন্ন প্রসেস ডেভেলপে নির্দেশনা দিতে হবে এবং সেগুলো ফলোআপ করতে হবে, নির্বাহী বিভাগকে বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। এই সব নলেজ ড্রিভেন অব্জার্ভেশন না করলে বুঝতে হবে, আদালত নিজেই অক্ষম,অযোগ্য এবং অদুরদর্শী।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আবুল হোসেন, ওবায়দুল কাদেরেরা আজীবন বেকুবের দলে থাকবেন।

২| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৩১

অগ্নি সারথি বলেছেন: সহমত আপনার প্রতিটা পয়েন্টের সাথে! এবং নতুন করে আমাকে ভাবনায় ফেলে দিলেন। কারন আপনার ২ নম্বর পয়েন্ট (যানজটে ব্যয়িত শ্রম ঘন্টা) নিয়ে আমার একটা গবেষনা করবার দারুন ইচ্ছা। গানিতিক সূত্রটাও দাঁড় করিয়ে ফেলেছি (TCC=TTC+DWL+Ed+VOC+Ee)

যেখানে, TCC = Traffic congestion cost
TTC = Travel time cost
DWL = Dead-weight loss (Avoidable Social Cost)
Ed = Travel delay externality cost
VOC = Vehicle operating cost (excess fuel cost due to congestion)
Ee = Environmental externality cost (air/noise pollution)
এই মডেলের মাধ্যমে আমি ট্র্যাফিক জ্যামের কারনে দেশের নগর অর্থনীতির ইস্টিমেট ক্ষয়-ক্ষতির পরিমানটা বোঝার চেষ্টা করব। আপনার কোন পরামর্শ থাকলে জানাবেন দয়া করে।

০১ লা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:০৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: দারুণ ব্যাপার হবে। আমি একটু স্ট্যাডী করে নিয়ে ফিরবো ইনশাল্লাহ!
খুব ভালো লাগছে।

০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১:৫৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অগ্নি সারথি,

সেন্টার ফর ইনজ্যুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)-এর ‘বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)' জরিপের সার সংক্ষেপ দিলাম। জরিপ

প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৬৪ জন, বছরে ক্ষতি ৩৪ হাজার কোটি টাকা, সড়ক দুর্ঘনায় প্রতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি'র ২ শতাংশ ক্ষতি হয়।

বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৪ জন নিহত হয়৷ আর এই সংখ্যা বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতদের সংখ্যার মধ্যে সর্বোচ্চ৷ সেন্টার ফর ইনজ্যুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)-এর জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে৷২০১৬ সালের তথ্য নিয়ে জরিপটি করেছে তারা৷ ‘বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)' শিরোনামে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়৷ প্রকল্পের পরিচালক ফারুক আহমেদ ভুইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা দুর্ঘটনায় এবং আঘাতে মৃত্যু নিয়ে এই জরিপ চালিয়েছি৷ তাতে দেখা যায়, প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ১৬৬ জন নিহত হন৷ আর তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহতের সংখ্যা ৬৪ জন৷''
২০১৬ সালের তথ্য নিয়ে করা জরিপে দেখা যায়, প্রতি বছর আত্মহত্যা কারেন ২৩ হাজার ৮৬৮ জন, পানিতে ডুবে মারা যায় ১৯ হাজার ২৪৭ জন, উচু স্থান থেকে পড়ে মারা যায় ১৫ হজার ৪৫ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯ হাজার ২১০ জন এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৬ হাজার ৪৭৫ জন৷এর আগে ২০০৩ সালে একটা জরিপ করা হয়েছিল৷ তাতে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু (১৮ বছরের নীচে) শিশু মারা যায় ৯ জন৷ কিন্তু এবারের জরিপে সেই সংখ্যা ১৪ জন৷প্রতিদিন ১৪ টি শিশু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলেও প্রাপ্ত বয়স্ক নিহত হন ৫০ জন৷ নিহতের হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাপ্ত বয়স্ক নিহতের সংখ্যা সর্বোচ্চ৷

সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপঘাতে প্রতিদিন বাংলাদেশে ৩০০ মানুষ নিহত হন৷ পঙ্গু হন ৬৬০ জন৷
ফারুক আহমেদ ভুইয়া জানান, সড়ক দূর্ঘটনার চিত্রই সবচেয়ে ভয়াবহ, কারণ, ‘‘এতে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে৷''
এর কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এর জন্য যে শুধু চালকদের বেপরোয়া ড্রাইভিংই দায়ী, তা নয়৷ এর পিছনে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়ক, যাত্রী ও পথচারীদের অসচেতনতা অনেকাংশে দায়ী৷''

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, সড়ক দুর্ঘনায় প্রতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি'র ২ শতাংশ ক্ষতি হয়৷ বাংলাদেশের জিডিপি ১৭ লাখ কোটি টাকা৷ তার ২ শতাংশের পরিমান ৩৪ হাজার কোটি টাকা৷ তবে এই ক্ষতি বাস্তবে আরো বেশি৷

তিনি আরো বলেন, ‘‘সড়ক দুর্ঘটনায় দীর্ঘ মেয়াদে যে আর্থিক ক্ষতি হয় তা আমরা এই হিসেবের মধ্যে ধরি না৷ একে বিনিয়োগে ভাটা পড়ে৷ আতঙ্কের কারণে পর্যটনসহ নানা শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে৷ বছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মধ্যে এর হিসাব নেই৷ আমরা এই ক্ষতির কথা বলছি আহত বা নিহত ব্যক্তির সম্ভাব্য আয়, চিকিৎসা খরচ ও সম্পদের ক্ষতি হিসাব করে৷''
অন্যদিকে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্তরা পেশাগত কারণেই সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হন বেশি৷ কিন্তু তা নিয়ে আলাদা কোনো গবেষণা নেই৷ তাঁদের জন্য আলাদাভাবে কোনো চিকিৎসা বা ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থাও নেই৷

আপনার কাজের আউটকাম দেখার জন্য মূখিয়ে আছি।

৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:২১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থাটা একটা প্যারাডক্স বক্স যেন। একটা সমস্যা আরেকটা সমস্যার সাথে ইন্টারকানেক্টেড। মূলে একদম কুঠারাঘাত না করলে কিছুই হবে না একজন দুজনের বিচার দিয়ে।
সরকার রাস্তারউন্নয়ন করছে না। করলেও তা গা বাচানো। এখানে অ্যাকসিডেন্ট হরহামেশাই হয়।
তাই বিচারের চাইতে প্রতিরোধ জরুরী বেশি

৪| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

বিজন রয় বলেছেন: ঢাকা শহরে সময় যায় জ্যামে আর টাকা যায় বাড়িভাড়ায়।

আপনি কেমন আছেন?

বরাবরের মতোই আপনার তথ্যবহুল পোস্ট।
++++

১৯ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: দাদা, আমি ভালই আছি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৫২

আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক ,




কাজের লেখা । কিন্তু শেষের বোল্ড করা অংশটুকু যেন এক নিরুদ্দেশ ঠিকানাই বলে গেলো ।

অগ্নি সারথি যেন তাঁর কাজটি করে উঠতে পারেন , সে প্রত্যাশা রইলো ।

৬| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:২৯

অগ্নি সারথি বলেছেন: পরিমান ভিত্তিক তথ্যগুলোর জন্য অশেষ ধন্যবাদ ভাই।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন গবেষনা কর্ম বেশ দূরুহ বিশেষত যদি আপনি সেকেন্ডারী উপাত্ত্বের উপর নির্ভর করেন। আমি বিগত দিনের এ সংক্রান্ত গবেষনা কর্ম গুলোর কোনটাকেই ভূল বলে দাবি করছি না কিন্তু একেকটা রিসার্চ একেক রকম তথ্য দিচ্ছে। সরকারী গবেষনা বলছে এক কথা আর অ-সরকারী বলছে অন্য কথা। এজন্য মূল উপাত্ত্ব হিসেবে আমি প্রাথমিক উপাত্ত্বকেই বেছে নিয়ে একটা যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ করে ফাইনাল রেজাল্টটা দেখাতে চাই। আপাতত গবেষনা কর্মটি একটি আন্তর্জাতিক জার্নালকে টার্গেট করে সাজাচ্ছি। পরে সেটি সংক্ষিপ্তাকারে, অনুবাদ করে ব্লগে পাবলিশ করবার ইচ্ছা রাখি।
আপনার সহযোগীতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। প্রয়োজনে আপনাকে আরো বিরক্ত করবার ইচ্ছা পোষন করি।

৭| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৪৪

সুমন রহমান বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন । ধন্যবাদ

৮| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬

বেচারা বলেছেন: কী করার আছে হা ও হুতাশ করা ছাড়া। কে শুনতে বসে আছে এই সুবচন? এই মরার দেশে? এই অধুনা সর্বগ্রাসি ক্ষুধার দেশে?

৯| ০৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন।

১০| ১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:০১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তাই আমরা বলছি চাঞ্চল্যকর কিছু করার চাইতে আদালত প্রকৃত কারণ খুঁজে তার সমাধান বের করতে নির্বাহী বিভাগকে টেকসই পর্যবেক্ষন সহ সুনির্দিস্ট নির্দেশনা দিক।

শতভাগ সহমত।

সাথে চাই সবার সামগ্রীক অংশগ্রহন। মিডিয়া ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে এই সামাজিক সচেতনতা বিকাশে।
প্রতিটি চ্যানেল প্রতিদিন কিছু সময় নিয়ে এই বিষয়গুলোকে হাইলাইটস করতে পারে। সামাজিক, নাগরিক দায়
অংশগ্রহণ, সচেতনতা বিষয়গুলো যখন বেশিরভাগ নাগরিকের বোধ জায়গা করে নেবে তখনই ভাল কিছু আশা করা যায়।

++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.