![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইস্তেগফার আল্লাহর ইবাদত, মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ইস্তেগফার করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন :- আর আল্লাহ্ কাছেই মাগফেরাত কামনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাকারী, করুনাময়। (সূরা বাকারাহ-১৯৯) অন্যত্র আল্লাহ রাব্বুল ইয্যত ইরশাদ করেন :- এবং আল্লাহ্র কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা কর। (সূরা ফুস্সিলাত-৬)
আল্লাহ তা’আলা আরো ইরশাদ করেন :- জেনে রাখুন, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ক্রটির জন্যে এবং মু’মিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ্, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত। (সূরা মুহাম্মদ-১৯)
ইস্তেগফারের কারণে গুনাহ মাফ হয়, বৃষ্টি বর্ষণ হয়, সন্তান ও সম্পদ দ্বারা সাহায্য করা হয় এবং জান্নাতের অধিকারী করা হয়।
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, অতঃপর (নূহ (আঃ) বলেছি : তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-স¤পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন। (সূরা নূহ-১০/১২)
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে :- হে আমার পালনকর্তা ! আপনি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যারা মুমিন হয়ে আমার গৃহে প্রবেশ করে-তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করুন এবং যালেমদের কেবল ধ্বংসই বৃদ্ধি করুন। (সূরা নূহ-২৮)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা (আদম ও হাওয়া (আঃ)-এর তাওবা প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন :- তারা উভয়ে বলল: হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব। (সূরা আ’রাফ-২৩)
হযরত মূসা (আঃ) থেকে অনিচ্ছায় প্রকাশিত কিবতী-হত্যার ঘটনার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন :- তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর যুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা কাসাস-১৬)
আল-হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও ইস্তেগফার করার নির্দেশ দিয়েছেন, এবং প্রতি দিন তিনি নিজেও সত্তুরবারের চেয়েও অধিক আল্লাহর ইস্তিগফার করেছেন।
হযরত আনাস (রাঃ) বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি। আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে বনী আদম, তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকবে ও আমার আশা পোষণ করবে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, তোমার থেকে যা কিছুই প্রকাশ পাক, এতে আমি কোন পরোয়া করি না। হে বনী আদম, তোমার গুনাহ যদি ঊর্ধ্বগগন পর্যন্ত পৌছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি সামান্য পরোয়া করি না। হে বনী আদম, তুমি যদি আমার কাছে দুনিয়া ভরা গুনাহ নিয়ে আস, অতঃপর শিরকে লিপ্ত না হয়ে আমার সাথে সাক্ষাত কর, আমি তোমার নিকট যমীন ভরা ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব। (তিরমিযী)
সাদ্দাদ বিন আউস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন বন্দার জন্য সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার হচ্ছে :
اللهم أنت ربى ، لا إله إلا أنت ، خلقتني و أنا عبدك و أنا على عهدك ووعدك ما استطعت ، أعوذبك من شر ما صنعت ، أبوء لك بنعمتك علي ، وأبوء لك بذنبي ، فاغفرلي ، فإنه لا يغفر الذنوب إلا أنت .
যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাস রেখে দিনের বেলা এটা পাঠ করে, অতঃপর সে দিনেই সে সন্ধার পূর্বে মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তা পূর্ণ বিশ্বাস রেখে রাতের বেলা এটা পাঠ করে, অতঃপর সে রাতেই সে সকাল হওয়ার পূর্বে মারা যায়, সে জান্নাতবাসী। (বুখারী)
মুসলিম ভাইয়েরা !
আল্লাহর জন্যে সদকা এবং বেশী বেশী ইস্তেগফার জাহান্নাম থেকে নাযাতের কারণ। ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : হে নারীগণ, তোমরা সদকা কর এবং বেশী বেশী ইস্তেগফার কর। কারণ, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী দেখেছি। তাদের থেকে এক মহিলা বলল : কী কারণে আমরা অধিকাংশ জাহান্নামী ? তিনি বললেন : তোমরা বেশী বেশী লানত কর এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। আমি তোমাদের মত আকল ও দ্বীনে ত্রুটিপূর্ণ কাউকে দেখিনি, যে বিজ্ঞলোকদের উপর বিজয়ী হয়। সে বলল : আমাদের আকল ও দ্বীনে ত্রুটি কী ? তিনি বললেন, দুজন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান, এবং তোমরা কতক দিন অবস্থান কর, যাতে তোমরা নামায আদায় কর না। (মুসলিম)
ইস্তেগফার সবচেয়ে বড় যিকর, বান্দার উচিত এ যিকর বেশী বেশী করা। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি। ’আল্লাহর শপথ’ প্রতি দিন আমি সত্তুরবারের চেয়েও অধিক আল্লাহর ইস্তিগফার ও তাওবা করি। (বুখারী) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের পরও তিন বার ইস্তিগফার করতেন। (মুসলিম)
হে আল্লাহ তা’আলা ! আমাদেরকে বেশী বেশী করে ইস্তিগফার ও তাওবা করার তাওফীক দান করুন। আমীন ....
©somewhere in net ltd.