![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আিম খুব পিজিটভ মানুষ। ইেচছ কের খারাপ সব িকছু বদেল িদই, তেব পারতপেক্ষ লড়াই কের নয়, ভালবাসা িদেয়।অািম হাত বািড়েয়ই রািখ-িপিছেয় পেড়েছ েয, আসুক না েস জীবেনর পেথ। কারন, জীবন েতা একটাই।
মনটা গভীর বেদনায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে.........।ভুলতেই পারছিনা, দু-চোখের পাতা এক করাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে-আমার সন্তান, হাসি-খুশী এমন প্রাণচঞ্চল আমার অন্যতম প্রিয় ছাত্রের দেহটি প্রাণবিহীন হয়ে পরে আছে.........।আমার বাচ্চার, আমার ছাত্রের অমন আদর আদর শরীরটার যে অংশটুকু দেখা যাচ্ছে ততটুকু বেদনার কালশিটেতে ছেয়ে আছে। কতটা ব্যথা দিলে ওভাবে রক্ত জমাট বেঁধে যায় কারো শরীরে! একজন মানুষের শরীরে যখন অমন আঘাত করা হয় সে তখন কতটা কষ্ট পায়! আঘাত, ঐ রকম কষ্ট না দেবার জন্য আমার ছাত্র, আমার বাচ্চাটা নিশ্চয়ই অনেক অনুনয়, আবেদন করেছিল – যারা ওকে কষ্ট দিচ্ছিল ওদের মনে কি একটিবারের জন্যও মনে হয় নি- থাক, অনেক হল, এবার ছেড়ে দেয়া যাক! কি এমন অপরাধ (!) করেছিল আমার বাচ্চা, আমার ছাত্র? যদি কখনো কোন অপরাধ (!) সে করেও থাকে তাকে এমন শাস্তি (!) দেবার অধিকার ওরা কেউ কি রাখে? কিছু লেখার চেষ্টা করছি ক-দিন থেকেই কিন্তু লিখতে গেলেই হাত কাঁপতে থাকে, চোখ ঝাপসা হয়ে আসে বারে বারে......।মুছে ফেলি লেখা, সেইভ করা হয় না......। পারি না, কিছুতেই পারছি না.........।
সাদ চলে যাবার ঠিক দুইদিন আগে বেলা ১২ টার কিছু পরে হবে হয়তো আমি একটি ক্লাশ নিয়ে আমার অফিসকক্ষে ফিরছিলাম আর ঠিক তখনই সাদরাও ওদের ক্লাশ শেষ করে যার যার রুমে ফিরে যাচ্ছিল। কি মনে করে আমাকে দেখে সাদ নীচ থেকে ওপরে মানে তিনতলায় (আমার অফিসকক্ষ যেহেতু তিনতলায়) “ম্যাডাম, ম্যাডাম” বলে ছুটে আসে। আমিও ওর ডাক শুনে থামি। ও ওপরে এসেই বলল-“ম্যাডাম ইন্ডিয়া থেকে বেড়িয়ে এলেন আমাকে তো চকোলেট খাওয়ালেন না!” মিষ্টি এই অনুযোগ করে ও হাসছিলো......।আমি বললাম-“রুমে এসো তবে, অনেকেই এসে খেয়ে গেছে, এখনো মনে হয় কিছু অবশিষ্ট আছে।“ হাসতে হাসতেই সাদ বললো-“ম্যাডাম দুষ্টুমী করছিলাম। আমি এর মধ্যেই আপনার আনা চকোলেট খেয়েছি।“ আমি ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকাতেই হাসতে হাসতে বলল-“ম্যাডাম, রায়হান এর কাছ থেকে খেয়েছি......।রায়হান মাসুমা ম্যাডাম এর বাসা থেকে নিয়ে এসেছিলো।“ বুঝতে পেরে আমি ওকে বললাম-“এসো, আরো আছে অফিসে।“ ও বলল- “না ম্যডাম, থাক।“ তখন এমনিতেই কথা প্রসঙ্গে জানতে চাইলাম-ভবিষ্যত নিয়ে কি ওর পরিকল্পনা যেহেতু ওরা লেভেল ফোর এর মাঝামাঝি চলে এসেছে? কিছুটা দ্বিধান্বিত স্বরে সাদ বলছিল- “ম্যাডাম দেশের বাইরে এম এস, পি এইচ ডি করলে কেমন হয়?” আমি বললাম- “ খুবই ভালো হয়। আমরাও বাইরে পড়তে গেছি, ফিরে এসে দেশে কাজ করছি। যদি সুযোগ পাও অবশ্যই যাবে। সে অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। পড়তে পড়তে যদি বিদেশে ভালো কোন কাজের সুযোগ পাও তো সেটাও করতে পারো। এমন তো নয় যে দেশকে ভালবাসলে শুধু দেশে থেকেই দেশের জন্য কাজ করা যায়, করতে হয় কিংবা হবে।পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে থেকে তুমি দেশের জন্য কিছু করতে পারো। তুমি যদি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হও, নিষ্ঠাবান হও, তোমার মধ্যে যদি সততা থাকে তো বাংলাদেশ তো সব জায়গায়ই যাবে, থাকবে তোমারই সাথে। সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। তোমার কাজের মাধ্যমে অনেক মানুষ জানতে পারবে তোমার দেশকে। তুমি নিজে যখন অনেক উপরে যাবে তোমার সাথে সাথে উপরে যাবে বাংলাদেশও। কাজেই আস্তে আস্তে নিজেকে সেদিকেই ধবিত করো। অন্যদিক থেকে আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে আনো। মনে রেখো অন্যদের কাছে তুমি অনেকের মধ্যে একজন কিন্তু তোমার পরিবারের কাছে তুমি এক, অনন্য আর অনেক মূল্যবান“। মৃদু হেসে সে মাথা নেড়েছিল। আমার ইংগিত সে ধরতে পেরেছিলো, যেহেতু আগেও ওর পড়াশুনার বাইরে অন্য সংশ্লিষ্টতার ব্যপারে আমি ওকে বিভিন্ন সময় বলেছি। সাদ তখন বলেছিল-“ম্যাডাম, দেখি অনার্সটা শেষ করেই আমেরিকাতে চেষ্টা করবো। ওখানে আমার এক খালা থাকেন। “ আমি খুশি হয়ে বলেছিলাম-“খুবই ভালো, অবশ্যই তুমি সে চেষ্টা করবে। বেস্ট অব লাক”। তারপর মুখে মিষ্টি হাসিটা নিয়েই সে চলে গিয়েছিল......। আমারও মন ভাল হয়ে গিয়েছিলো আমার ছাত্র, আমার সন্তানের ভবিষ্যত এর স্বপ্ন বুননের অংশীদার হতে পেরে......। একজন শিক্ষকের কাজই তো ছাত্রের চোখে স্বপ্নের বীজ বপন করা, ছাত্রের-সন্তানের সুন্দর স্বপ্নের সারথী হওয়া।
দুদিন, মাত্র দুদিনও গেলো না সেই স্বপ্নবোনার দুপুর রাত হয়ে গেলো, গভীর অন্ধকারে হারিয়ে গেলো সব আলো। সোনালী স্বপ্নের আয়না ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো.........। আর আর আমাদের সবার বুক ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেলো......মিশে গেলো ধুলায়.........।
বিস্ময় নিয়ে ভাবি- দিন দিনই জীবন কত জটিল হয়ে যাচ্ছে; কিভাবে বদলে যাচ্ছি আমারা। আমাদের লোভ, হিংসা, সীমাহীন উচ্চাকাঙ্ক্ষার সামনে কিভাবে ম্রিয়মাণ হয়ে যাচ্ছে মানবিকতার আবেদন। আমার নিজের দুটি সন্তান আছে, অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে বড় করে তোলার চেষ্টা করছি ওদের........যেভাবে আমার, আমাদের বাবা-মা আমাকে, আমাদেরকে বড় করে তুলেছেন.........।সন্তান আছে তাই নিজের মন-প্রান দিয়ে বুঝি সন্তান স্নেহ কি আর কতটা গভীর.........আর সেই সন্তান যখন নিজের আর বাবা-মার স্বপ্ন পূরণের জন্য ঘরের বাইরে আসে, বাইরে এসে পরে যায় নিজের ক্যরিযার গঠনের পাশপাশি জীবন বাঁচানো, নিজের অস্তিত্ব রক্ষার এই গোলক ধাঁধায়.........একা মোকাবেলা করে ঘরের বাইরের কঠিন এই বাস্তবতাকে.........কেউ কেউ টিকে যায় আর কারো কারো পরিণতি হয় সাদের মতো.........তখন ভীষণ, ভীষণভাবে নড়ে উঠে অন্তরাত্মা। ভয়ংকর ঝর বয়ে যায় মনের, মননের চরাচর জুড়ে। কেন এমন হচ্ছে? কেন হয় এমন? কতো কোমল চেহারা, কোমল মন নিয়ে ঘর ছেড়ে বাচ্চাগুলো এত দূরে আসে, কত সুন্দর করে একই সাথে শুরু করে পথচলা.......একসাথে শুরু করা এই পথচলা কেন একইভাবে, একইসাথে শেষ হয় না? কাউকে কাউকে মাঝপথেই কেন বরণ করে নিতে হয়, হবে এমন পরিণতি? সেই কোমল, সেই সুন্দর কিশোর-কিশোরীদেরকে যেভাবে আমরা প্রথম বর্ষে বরণ করে নিই ফুল দিয়ে কেন মাঝে মাঝেই আমরা ব্যর্থ হই তাদের সবাইকে আরও সুন্দর, আরো শক্তিশালী, পরিণত আর যোগ্যতম করে জীবনের রাজপথে তুলে দিতে?
আবার ঝাপসা হয়ে আসছে চোখ.........। আর, আর লিখতে পারছি না.....................।
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯
মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: বেশ লিখেছেন... শেষটায় আপনার চোখ ঝাপসা হয়ে আসার সাথে সাথে পাঠকেরও মন খারাপ হয়ে গেল কিছুটা...
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯
মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: বেশ লিখেছেন... শেষটায় আপনার চোখ ঝাপসা হয়ে আসায় পাঠকেরও মন খারাপ হয়ে গেল কিছুটা...