নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি চিন্তা করি....সুতরাং আমি অস্তিত্বশীল

সাজ্জাতুল ইমরান ফয়সাল

একজন সাধারণ মানুষ

সাজ্জাতুল ইমরান ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আব্বুকে অনেক মিস করছি

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৭

আই সি ইউ তে শুয়ে ডাক্তার ও নার্স দের অনেক অবহেলা , অবজ্ঞার বিষয়ে আব্বু আমাদের কাছে অভিযোগ করতেন। বলতেন - তিনি ডাকলেও নার্স রা নাকি কথা শুনত না , ব্যাবহার ও তেমন ভালো করত না, এক পর্যায়ে ক্ষুধায় খাবার চাইলেও খাবার দেয়া হত না।
আমরা এইসব কথা শুনে ডাক্তার দের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তেমন কোনো আশানুরূপ ফল পেতাম না। তারা বলত যে নিয়মের বাইরে কিছু করা যাবে না।

আব্বুর যখন শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল - ঠিক মত কথা বলতে পারছিলেন না। অনেক অনুরোধ করেছিলেন একটু কাগজ -কলম চেয়েছিলেন। আমরা নার্স দের বলতেই , তারা এক ই কথা বলত - "দেয়া যাবে না "
আব্বুর ভেতরে অসহ্য যন্ত্রণা আমাদের সাথে শেয়ার করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পুরোটা পারলেন না।

হার্ট বাইপাস অপারেশন এর পর নিউমোনিয়া হলে রুগী বাঁচার সম্ভাবনা কম, সেটা জানার পর ও ডাক্তারদের যখন ই জিজ্ঞাসা করা হত - তারা বলত "রোগী ভালো আছেন".

২/৩ দিন আই সি ইউ তে থাকলেই যেখানে রোগীর প্রান ওষ্ঠাগত, সেখানে আমার আব্বু ছিলেন দশ দিন। তাঁর বার বার আকুতি ছিল - আমাকে এইখান থেকে নিয়ে যা , ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু আব্বুর সুস্থতার কথা চিন্তা করে আমরা আব্বুকে শুধু বোঝাতাম।

যেদিন আব্বু মারা যান , তার আগের দিন আম্মা আব্বুর সাথে দেখা করতে গিয়ে কথা বলতে পারেন নাই। দেখেন আব্বুকে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে এবং হাত বেড এর সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসা করলে ডিউটি ডাক্তার বলল- উনি অক্সিজেন মাস্ক বার বার খুলে ফেলছেন তাই হাত আটকে রাখা হয়েছে। আব্বু এদিক-সেদিক মাথা নাড়াচ্ছিলেন। ডাক্তার বললেন - ওনাকে ঘুমের ঔষধ দেয়া হয়েছে। এই বলে আম্মাকে বের করে দিলেন।

তার পর দিন ই আব্বু মারা যান। ডাক্তার রা নির্দিষ্ট কোনো কারণ দর্শাতে পারেনি।এক এক বার এক এক কারণ দেখাতে লাগলো, কখনো বলল ব্রেন ডেমেজ, কখনো কিডনি ফেইলুর, ইত্যাদি ইত্যাদি। সেই মুহুর্তে ডাক্তারদের অব্যবস্থাপনার বিষয় নিয়ে ঝামেলা করা যেত - কিন্তু কিচ্ছু বলিনি। কারণ - ঝামেলা করলে তো আর আব্বুকে ফেরত পাবনা, আর যদি ঝামেলায় যেতাম ও তাদের মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সাথে হয়ত পেরে উঠতামনা , মধ্যিখানে হয়ত ময়না তদন্তের নাম আব্বুর লাশ টার কাঁটা ছেঁড়া হত। অসহায়ের মত হাসপাতালের পাহাড় সম বিল পরিশোধ করে আব্বুর লাশ নিয়ে আসলাম।

হাসপাতালে যারা রোগীর আত্মীয় , তারা আসলেই অনেক অসহায়। তাদের চেয়ে থাকতে হয়ে ডাক্তার , নার্সদের মর্জির উপরে। আমার চোখের সামনেই দেখলাম - এক রোগীর আত্মীয় অব্যবস্থাপনার অভিযোগে কিছু কথা বলতেই তাকে পেতে হয়েছে আরো দ্বিগুন অবহেলা। পারলে তো তারা হাসপাতাল থেকেই বের করে দেয়।

আমার এই অসহায়ত্ব , কষ্ট, শেয়ার করলাম। খুব কষ্ট লাগছে। আব্বুকে অনেক মিস করছি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৯

সজিব হাওলাদার বলেছেন: আপনার এই অসহায়ত্ব , কষ্টে আমরা ও ব্যথিত ।আর আপনার বাবার বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি।

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

বাংগালীরা ডাক্তারী পেশার জাতি নন। আসলে, বাংগালীরা হাসপাতালে কাজ করার মতো জাতি নন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.