নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গন্তব্যহীন সোশিওপ্যাথের পরিচয় দিয়ে কি হবে?

মিস্টার ব্যাকবেঞ্চার

আইম ব্যাড এন্ড দ্যাটস গুড

মিস্টার ব্যাকবেঞ্চার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোশ্যাল মিডিয়া সার্কাস ও অন্যান্য গুবলেট

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫৫

আমি বলতে গেল মিমসের এর জন্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকি। শুধুমাত্র "I am here just for the memes!" কে ইউনেস্কো থেকে ঘোষণাকৃত বেস্ট মিম এপ্রিসিয়েশন কমেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার কারনে নয়, বরং সোশ্যাল মিডিয়ার টক্সিক পরিবেশ থেকে হালকা দুরে থাকতেও।
সোশ্যাল মিডিয়া একটা আবর্জনার জঙ্গল। সব কিছু দেখাও উচিত না, আবার গেলাও উচিত না। এই জায়গাটায় সবার অপিনয়ন আছে। ইচ্ছা করলে অনেক অপিনিয়ন শেয়ার করা যায়। কিন্তু অপিনিয়ন শেয়ার করা যায় বলে যে শেয়ার করতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা আসলে নাই। আমার মতে নিজের ইচ্ছা মতো মত বা অপিনিয়ন দেয়ার অধিকারটা সবার থাকার দরকার ছিলো না। অফেন্সিভ মনে হতে পারে বাট আমাকেও সব বিষয়ে মতামত-অভিমত ব্যক্ত করার অধিকার কেউ দেয় নাই। এখন দিচ্ছি কারন আপনিও থামছেন না তাই। একটা কথা শুনসিলাম অনেক আগে "অপিনিয়ন আর গু নাকি একই জিনিস। সবার কাছেই অল্প-সল্প থাকে।" অপিনিয়ন কে গু বলা একদিক দিয়ে জায়েজ অবশ্য, বেশির ভাগ মানুষই আমরা স্টুপিড। আমাদের হাইয়েস্ট পোটেনশিয়ালই তো প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ইকো-ফ্রেন্ডলি গু পরিবেশন করা। এই স্টুপিডের কাতারে আমার নিজেরও ভালোই অবদান আছে। আমি নিজে অতি উচ্চমানের গু প্রোডিউস করি। না হলে এত অথর্বের মত এত গ্যাজাতাম না।
যাইহোক, যেটা বলতে চাচ্ছিলাম সেটা হচ্ছে সবার মতামত দেয়ার অধিকার থাকার দরকার নাই। মত, মতাদর্শ ও মতের স্বাধীনতা চর্চা করতে করতে কখন মত কে গু-তে আর স্বাধীনতাকে "৫৭ ধারায়" ফেলে দিলাম টেরই পাইনি। যারা "৫৭ ধারা" চিনেন না, গুগল করে নেন। নিজের জেলে যাওয়া নিজেই ঠেকাতে পারবেন৷ পড়ে নিলে বুঝতে পারবেন কিছু জায়গায় গু ছড়ানো যাবে না। আর বাকি যেকোনো বিষয়ে হেগে গন্ধ ছড়িয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা উদযাপন করতে পারবেন।
এই জন্যই আমার মিমস ভালো লাগে। কমিক রিলিফ ঢের ভালো এই বিষাক্ততা থেকে। এট লিস্ট এদেশের মিমাররা শিটপোস্টিং করলেও দেশের মেজরিটি থেকে কম হাগে। অনেকেই বলতে পারে দেশের সেন্স অফ হিউমার মোটেও কম না। আমিও মানি, কারন তা না হলে এদেশের ঘরে ঘরে চলা টিভিতে নিউজের নামে সবাই স্ট্যান্ড-আপ কমেডি গিলতো না। ভাই, একটু আমরা নিজেদের দিকে তাকাই, দুই দিন পর পর এক একটা লাইফলেসকে নিয়ে লাফালাফি করে নিজেরাই গালি দেই আমরা... এইটা কেমন সেন্স অফ হিউমার!
এখন একটু জ্ঞান দেই। এই রোস্টিং, পোস্টিং, সার্ক্যাজম, স্যাটায়ারের জন্য যে বেসিক কমেডির কন্সেপ্ট আছে সেটা মুলত দুই ধরনের। প্রথমটা হচ্ছে, পাঞ্চিং ডাউন। এর মানে হচ্ছে আপনার সামাজিক সচ্ছলতার নিচের স্তরের মানুষদের নিয়ে মজা করা। আর আরেকটা হচ্ছে পাঞ্চিং আপ। এর মানে হচ্ছে আপনার সামাজিক সচ্ছলতা যাদের কাছে বা যেই শক্তির কাছে তুচ্ছ তাদের নিয়ে মজা করা।
যারা বুঝেন নাই তাদের জন্য বলা, দেশের একটা বিশাল অংশ গরীবি সীমানার নিচে বাস করে। তাদের জীবনের ছিটেফোঁটা স্ট্রাগল আপনি দেখেন নাই। তারপর আপনি ভুলে যান দেশে ইন্টারনেট শুধু আপনার জন্য বিকশিত হয় নাই। হুট করে আপনি দেখলেন, আপনি ছাড়াও অনেকে নেট ইউজ করে। আপনার মত হয়তো প্লেডেট বা নোরাশ চ্যালেঞ্জ করে না, বড়জোর নিজের চিন্তার গন্ডি অনুযায়ী কয়েকটা ভিডিও, ছবি বা পোস্ট বানায়। আপনিও আপনার নিউজফিডে ক্রিঞ্জ কনটেন্ট পেয়ে শেয়ার দিয়ে কুল ডুড সেজে নিলেন। আমি তো আগেই বলসিলাম, আমার মতে এদেশের মেজরিটি পাব্লিক স্টুপিড। আমরা সেই লোয়ার ক্লাসের নন-পশ বা আপনাদের ভাষায় ক্রিঞ্জি কাজ গুলো ভাইরাল করি যাতে আমরা সবাই মিলে তাদের স্টুপিড আচরণের জন্য গালি দিয়ে "আমি নিজে কত ভালো" টাইপ ফিল করতে পারি। এটাই পাঞ্চিং ডাউন।
আর পাঞ্চিং আপ হচ্ছে সেই কমেডি ফর্ম যা চ্যাপলিনরা করতো৷ ক্ষমতাশালীদের দেবতার আসন থেকে সরিয়ে তাদের মানুষের কাতারে ফেলতো। যাদেরকে নিয়ে মজা নিতে বুক কাঁপে তাদের ভুল ধরে তাদেরকেই স্টুপিড বলা পাঞ্চিং আপ। লেখক জান হোকেনসন তার বই "দ্য আইডিয়া অফ কমেডি" তে বলেছিলেন যে পাঞ্চিং ডাউন আর হ্যারেসমেন্টে আসলে কোন পার্থক্য নাই। একজন সুস্থ মানুষের একজন অন্ধ মানুষকে নিয়ে মজা নেয়ার কোন অধিকার নেই। কিন্তু রাজার নির্বুদ্ধিতায় প্রজার অন্ধত্ব নিয়ে মজা নিতে পারাটা একটা শিল্প। এ কারনেই পাঞ্চিং আপকে উত্তম কমেডি টাইপো বলা হয়। আমিও মোটামুটি একমত এই বিষয়ে। কিন্তু এটা আপনি করতে যান না, দোষ নাই আপনার অবশ্য...করতে সাহস পান না মুলত। সরকার নিয়ে, অথরিটি নিয়ে, প্রিভিলেজড ক্লাস নিয়ে মজা নিবেন এত বুকের পাটা আপনার নাই। তার উপরে পুলিশের ভয়, গনতন্ত্রে থাকার সুফল আর সর্বোপরি ক্লাসিজমের চেইনে ভালোই এডজাস্ট করে নেয়াতে আসলে এত সাহস হয়ে উঠে না। দিনশেষে লোয়ার টিয়ারের স্টুপিডিটিকে গালি দিয়েই আপনি প্রশান্তি খুঁজে নেন। আর হাজারটা পাঞ্চিং ডাউন টাইপোর আড়ালে ক্লাসিজম আর হ্যারেসমেন্টের বিষাক্ততায় হারিয়ে যায় আমাদের ভারচুয়াল জগৎ।
এই জন্য আমি মিমস প্রিফার করি। অপিনিয়নের বালাই নাই। না হাসি আসলে, পরেরটাতে চলে যাই। হাসি পেলে "হা হা রিয়্যাক্ট" দেই।এইভাবেই চলে যায় আমার সোশ্যাল মিডিয়ার দিনগুলি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: সমস্যা হলো সহজ কথা আপনি সহজ ভাবে বলতে পারেন না।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:১৪

মিস্টার ব্যাকবেঞ্চার বলেছেন: এই সমস্যাটা আমার হয় আমি জানি। কিভাবে সহজ কথা সহজে লেখা যায় কোন সাজেশন থাকলে দিবেন। উপকৃত হবো।

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:২৮

আমি সাজিদ বলেছেন: এক সপ্তাহে পড়া ভালো পোস্টগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলো দিলাম ব্লগার। আপনার লিখা কথাগুলো আমি যা ভাবছি তার সাথে অনেকটাই মিলে।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৩২

আমি সাজিদ বলেছেন: পাঞ্চিং আপের ফল জেল জরিমানা থেকে শুরু করে নগদে মেরিনড্রাইভে স্বর্গ দেখাও হতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.