নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভিক্টর ফ্রাংকেনস্টাইন

ভিক্টর ফ্রাংকেনস্টাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধাক্কা এবং ক্রাশ (প্রথম পর্ব)

২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬

-'তাড়াতাড়ি রিকশা চালাও ভাই । ইফতারের সময় হয়ে যাচ্ছে তো '।
-'জি আপা, চালাইতাছি ' ।

রিকশাওয়ালা ড্রাইভার এখন প্রায় উড়ালপঙ্খী র মতো রিকশা চালাচ্ছে । এতক্ষন যেভাবে চালাচ্ছিলো তাতে সিনথিয়া আজকে উত্তরা পৌঁছুতে পারত না । এখন মনে হচ্ছে পারবে !
-আপা, আপনি জানি কই যাইবেন ??
-উত্তরা যাব । তাড়াতাড়ি....

কথা শেষ করার আগেই আরেকটা রিকশা এসে ধাক্কা দিলো সিনথিয়া দের রিকশায় । হাত থেকে মোবাইল আর ভ্যানিটি ব্যাগ টা পড়ে গেলো মাটিতে । সিনথিয়ার মাথার পেছনে একটু লেগেছে । সে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে রিকশা থেকে নেমে ব্যাগ আর মোবাইল খুজতে লাগলো ।
অন্য রিকশাটার প্যাসেঞ্জার শামীমের ও হাত থেকে মোবাইল পড়ে গেলো । সে ও মোবাইল খুজতে ব্যাস্ত ।
এদিকে দুই রিকশাওয়ালা ঝগড়ায় নেমেছে । তারা এমন ভাবে ঝগড়া করছে যেনো মনে হচ্ছে রিকশা নয় দুটো এরোপ্লেন ক্রাশ করেছে ! কিছুক্ষনের মধ্যেই টিভিতে নিউজ আসবে !
" দুজন যাত্রীবাহি (!) দুটো প্লেন এর মধ্যে সংঘটিত ধাক্কায় কেউই আহত হোন নি ! শুধুমাত্র দুটো মোবাইল আর কিছু খুচরা টাকাবাহি একটি ব্যাগ পড়ে গিয়েছে ! এতে মহিলা প্যাসেঞ্জার এর মাথায় হালকা একটু চোট লেগে থাকলেও ঈশ্বর এর অশেষ করুণায় উনি এখন সুস্থ আছেন ! "

সিনথিয়া আবারো রিকশা ওয়ালার কাছে জানতে চাইল যে আজকে ও ওর ফুপির বাসায় ফিরে ইফতার করতে পারবে কি না !
রিকশাওয়ালা তার প্রতিপক্ষকে ইংরেজিতে কিছু গালমন্দ করতে করতে সামনে এগুচ্ছে!
কাকতালীয় ভাবে সিনথিয়া আর শামীম একই সময়ে রিকশার পেছনের হুড তুলে পেছনে তাকালো । এবং দুর থেকে একজন আরেকজন কে প্রত্যক্ষ করলো !




সিনথিয়ার বাসা গাজীপুর । সে তার ফুপির বাসা উত্তরায় থাকে । সে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে । এখন রোজার মাস বলে ক্লাশ বিকেলে হয় । কয়েকটা ক্লাশ করে তাকে তাড়াহুড়ো করে বাসায় ফিরতে হয় । তার উপর আজকে আবার একটা রিকশার সাথে ধাক্কা! উফফ...এরা ঠিকমতো রিকশাও চালাতে পারে না ।
এসব ভাবতে ভাবতে ইফতার করছিলো সিনথিয়া । হঠাৎ তার মোবাইল বেজে উঠলো । কিন্তু তার রিংটোন তো এটা না । রিংটোন চেঞ্জ করলো কে ।
ফোন ধরতে গিয়ে দেখে সম্পুর্ণ অপরিচিত একটা মোবাইল তার টেবিলে বাজছে । না হয়তো এটা তার নয় । কিন্তু সারাটা বাসা খুজেও নিজের মোবাইল টা পেলো না সিনথিয়া । হঠাৎ রাতে ঘুমানোর পর মনে পড়লো যে, রিকশা দুটো যখন ধাক্কা লেগেছিলো তখনই অন্য রিকশার ছেলেটার সাথে হয়তো তার মোবাইল টা পাল্টে গিয়েছে ! আহা, ওই মোবাইলে তার কত দরকারী নাম্বার আর মেসেজ ছিলো !


ঈদের দুই সপ্তাহ আগে এক রাতে সিনথিয়া ফেসবুকে তার বন্ধুদের সাথে মেসেজিং করছিলো । তখন হঠাৎ দেখল অপরিচিত কেউ একজন তাকে মেসেজ পাঠিয়েছে ! মেসেজ টা ছিল এরকম -
'প্লিজ, আমাদের পেজে লাইক দিন । '
সিনথিয়া লাইক দিলো । ছেলেটা সিনথিয়া কে ধন্যবাদ জানালো ।

সিনথিয়ার ফ্রেন্ড সংখ্যা ৩,০০০ ছাড়িয়েছে । শুধুমাত্র ভালো কিছু পোস্ট দেয় বলেই অনেক কম সময়ে অনেক ফ্রেন্ড হয়েছে । সাধারণত সে অপরিচিত দের এক্সেপ্ট করে না কিন্তু কেউ মেসেজ দিয়ে তারপর রিকুয়েস্ট দিলে সে এক্সেপ্ট করে । ছেলেরা ও সাধারণত তাকে মেসেজ দিয়ে তারপর রিকুয়েস্ট দেয় । কিছুদিন পর একটা ছেলে তাকে ফলো করলো। কিন্তু ৩ দিন হয়ে গেলো ছেলেটা তাকে মেসেজও দেয় না রিকুয়েস্ট ও দেয় না ।
সিনথিয়া ভাবলো "এহহহহ, কে এই ছেলেটা । এত ভাব কেনো ! ফলো করে আছে রিকুয়েস্ট দিচ্ছে না কেনো...!"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.