![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তিনটি প্রশ্ন এমন আছে যার সঠিক উত্তর ও সমাধান বের করতে পারলে এবং সেই সমাধানকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনুধাবন করে সে অনুযায়ী নিজেকে পরিচালিত করে তাহলে এই পৃথিবীর মানচিত্র বদলে যেতে বাধ্য। সকল অন্যায় ও হানাহানি বন্ধ হয়ে বিশ্বময় একটি শান্তির আবাস তৈরী হওয়া এবং সর্বত্র প্রশান্তি বিরাজমান হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
জীবন সম্পর্কিত প্রশ্ন তিনটি হচ্ছে:
১. মানুষ কোথা থেকে এসেছে?
২. এই দুনিয়াতে তার কাজ কি?
৩. এই দুনিয়ার পর সে কোথায় ফিরে যাবে?
এই একজন মানুষের জন্য এই দুনিয়ার জীবনে এই প্রশ্ন তিনটি হচ্ছে অপরিহার্য্য মৌলিক বিষয়। এই প্রশ্ন গুলোর সঠিক সমাধান না করে কিংবা এর থেকে এড়িয়ে গিয়ে অনেক মানুষ আজ নিজ বিবেকের কাছ থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ আবার এর ভুল ব্যখ্যা করে সাময়িকের জন্য মিথ্যার উপর কল্পনার ফানুস ওড়াচ্ছে।
ইসলাম বলে মানুষ এক সময় ছিলো না। মহান আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন। এই পৃথিবীতে সাময়িক সময়ের জন্য তাকে পাঠিয়েছেন। তাকে এই পৃথিবীতে প্রতিনিধি করে প্রেরণ করেছেন। মানুষ এই ভূ-পৃষ্ঠে মহান আল্লাহর দেয়া বিধি-বিধান অনুযায়ী নিজেকে এবং সমাজকে পরিচালিত করবে। এই হলো এই পৃথিবীতে তার দায়িত্ব। এরপর মানুষ আবার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ফিরে যাবে পরকালীন জীবনে। যেখানে তার প্রতিপালক তাকে এই দুনিয়াবী জীবনের কৃতকর্মের উপর প্রতিদান দিবেন।
কম্যুনিজম জোর করে ক্ষমতার দাপটে মানুষ এবং তার স্রষ্টা মহান আল্লাহর সম্পর্ককে ছিন্ন করতে চেয়েছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তারা নিজেরাই ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেছে।
জড়বাদী পশ্চিমা সভ্যতা এবং তাদের পুঁজিবাদ যখন দেখলো যে, মানুষের সাথে তার স্রষ্ঠার যেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই এবং এটাকে অস্বীকার করার কারণে সমাজতন্ত্রের পতন ত্বরান্বিত হয়েছে তখন তারা এটাকে সরাসরি অস্বীকার না করে বরং একে সীমাবদ্ধ করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলো। তাদের ভাষায় ধর্মের আগমন এবং চাওয়া-পাওয়াকে মানুষের ব্যক্তি জীবনের মধ্যে বেধে দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে এর অনুপ্রবেশকে নিষিদ্ধ করা হলো।
খৃষ্টানজগত একে স্বাগত জানালো। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও মন্দের ভালো হিসেবে একে লুফে নিলো, যেহেতু তাদের কারো ধর্মেই এই দুনিয়ার নেজাম তথা সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনার পূর্ণাঙ্গ কোন মূলনীতি ছিলো না। তাই এটা তাদের জন্য 'সাপে বর' হলো। তারা তাদের ব্যক্তিজীবনে নিজ ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানও পালন করছে, আবার সমাজ ও রাষ্ট্রে গণতন্ত্র দিয়ে শাসনও করছে। উপরন্তু খৃষ্টানদের জন্য আরো মজাদার বিষয় হলো, যেহেতু তাদের ধর্ম বিশ্বাস হচ্ছে যিশু খৃষ্ট সকল মানুষের গুনাহ নিয়ে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ) তাই তারা সবাই এই দুনিয়ায় যতই অন্যায় করুক না কেন পরকালে মুক্তি পেয়ে যাবে। আর ছোট-খাট গুনাহ মাফের জন্য সপ্তাহে একদিন চার্চে গিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেই হলো।
কিন্তু ইসলামের অনুসারীদের জন্য ইসলাম যেহেতু নিছক কোন ধর্ম নয়, এটি আস্ত এক জীবন ব্যবস্থা। ধর্মীয়-আচার অনুষ্ঠানের মতো এতে যেহেতু রাষ্ট্রের সকল বিধানাবলীরও সুস্পষ্ট বর্ণনা দেয়া হয়েছে, তাই তাদের জন্য ইসলামের বাইরে অন্য কোন ব্যবস্থা ও মতাদর্শ গ্রহণের কোন সুযোগ নেই।
জীবন সম্পর্কে তাদের সকলের এই ভুল ধারণার কারণেই তারা এই দুনিয়ার জীবনে যাচ্ছে-তাই করার স্বাধীনতা পেয়ে গেছে। পরকালে তাদের কোন জবাবদিহিতার ভয় ও ধারণা নেই। আর যারা স্রষ্টাকেই স্বীকার করে না, তারা তো আরো একধাপ এগিয়ে আছে! তাই তাদের থিম সং 'জীবন তো একটাই, আনন্দ-স্ফুর্তি করে যেতে চাই'
অথচ মানুষ ও বিশ্ব সৃষ্টিকারী মহান প্রতিপালক যেদিন বিচারকের আসনে সমাসীন হবেন এবং সকলের কাছ থেকে উপরোক্ত তিনটি প্রশ্নের আলোকে এই পার্থিব হায়াতের কৃত-কর্মের হিসাব নিবেন তখন অবিশ্বাসী ও ভ্রান্ত বিশ্বাসীদের অবস্থা হবে 'সদ্য ঘুম থেকে জাগ্রত স্কুল ফাকি দেয়া পরীক্ষার্থীর' মতো। সারা জীবনের সব ফাকিবাজির সাজা এবার কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেবার সময় যে এসে গেছে।
মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে উপরোক্ত তিনটি বিষয় সদা-সর্বদা খেয়াল করে চলার তাওফীক দিন। পরকালের সেই কঠিন হিসাবের দিন যেন আমরা বলতে পারি, হে মহান প্রতিপালক! আমরা তোমার দেয়া জীবন ব্যবস্থার আলোকেই দুনিয়াতে চলেছিলাম অথবা তোমার দেয়া জীবন ব্যবস্থা ছিলো না, আমরা তা বাস্তবায়ন ও পুন:প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের সারা জীবন ব্যয় করেছি। আমীন।
২| ১৫ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ৯:৫৮
জোবায়ে০২ বলেছেন: ভাই..খুব ভালো লিখেছেন (মাশাল্লাহ)
আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক পথ দেখান।
প্রশ্ন তিনটি খুবই IMPOTENT.
We should realize it...
৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:১২
মুহাম্মাদ শায়েস্তা খান বলেছেন: << ‘মানুষ ও মহাবিশ্বের সকল ঘটনা-দুর্ঘটনা আল্লাহর নিকট থাকা কিতাবের লেখা অনুযায়ী হয়’ কথাটির থাকা কুরআন ও হাদীসের প্রচলিত ব্যাখ্যা : কুরআন -তথ্য-১
مَا اَصَابَ مِنْ مُصِيْبَةٍ فِى الْاَرْضِ وَلاَ فِىْ اَنْفُسِكُمْ اِلاَّ فِىْ كِتَابٍ مِّنْ قَبْلِ اَنْ نَبْرَاَهَاط
সরল অর্থ: পৃথিবীতে বা তোমাদের উপর আসা কোনো বিপদ এমন নাই যা সৃষ্টির পূর্বে একটি কিতাবে লিখা নাই। (হাদীদ/৫৭ : ২২)
প্রচলিত ব্যাখ্যা: পৃথিবীতে বা মানুষের উপর যতো বিপদ আসে তা পূর্বনির্ধারীত এবং তা আল্লাহর নিকটে থাকা একটি কিতাবে লেখা আছে।
<< প্রচলিত ব্যাখ্যা : কুরআন -তথ্য-২
وَمَا يُعَمِّرُ مِنْ مُعَمِّرٍ وَّلاَ يُنْقَصُ مِنْ عُمْرِه اِلاَّ فِىْ كِتبٍ ط اِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ .
সরল অর্থ: আর কোনো বয়স্ক ব্যক্তি আয়ু পায় না এবং তার আয়ু হতে কমে না (উম্মুল) কিতাবে থাকা লেখা ব্যতীত; নিশ্চয় এটা আল্লাহর জন্য সহজ। (ফাতের/৩৫ : ১১)
প্রচলিত ব্যাখ্যা: মানুষের আয়ু কতো হবে তা আল্লাহর নিকটে থাকা একটি কিতাবে লেখা আছে। আয়ুর ঐ অবস্থান পরিবর্তন হবে না
<< প্রচলিত ব্যাখ্যা : কুরআন -তথ্য-৩
قُلْ لَنْ يُصِيبَنَا إِلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ.
অর্থ: (তাদের) বলো- (ভালো-মন্দ) কিছুই আমাদের হয় না শুধু সেগুলো ব্যতীত যা আল্লাহ আমাদের জন্যে লিখে রেখেছেন। তিনি আমাদের সহায়। আর মুমিনদের কেবল আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত। (তওবা/৯ : ৫১)
<< প্রচলিত ব্যাখ্যা : কুরআন -তথ্য-৪
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تَمُوْتَ إِلاَّ بِاِذْنِ اللهِ كِتَابًا مُؤَجَّلاً.
অর্থ: কোনো প্রাণী আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মৃত্যুবরণ করে না। (ঐ অনুমতি) নির্দিষ্ট কিতাবে লিখা রয়েছে।
(আলে-ইমরান/৩ : ১৪৫)
<<প্রচলিত ব্যাখ্যা : হাদীস : হাদীস-১
আনাস ইবনে মালিক (রা.) নবী করীম (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন- আল্লাহ তায়ালা একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। গর্ভে বাচ্চা আসার পর তিনি বলেন- হে রব! এখন এটি ফোঁটা; হে রব! এখন এটি আলাক; হে রব! এখন এটি মুদগাহ। আল্লাহর সৃষ্টি যখন পরিপূর্ণ হতে চলে তখন ফেরেশতা বলেন- হে রব! এটি নর হবে, না নারী হবে? হতভাগ্য হবে, না সৌভাগ্যবান হবে? তার রিযিক ও হায়াত কী হবে? তখন (আল্লাহর নির্দেশ মতো) মাতৃগর্ভে থাকা অবস্হায় ঐ সকল বিষয় লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। (আল মাকতাবাতুশ শামেলাহ: বুখারী/৩০৭)
<<প্রচলিত ব্যাখ্যা :হাদীস-২
আলী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- একদা আমরা নবী (সা.) এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলো একটি লাঠি- যা দিয়ে তিনি মাটি খুঁড়ছিলেন। তিনি তখন বললেন- তোমাদের মাঝে এমন কোন ব্যক্তি নেই যার ঠিকানা জাহান্নামে বা জান্নাতে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যক্তি বললো- হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তা হলে (এর উপর) নির্ভর করব না? তিনি বললেন- না, বরং আমল করো। কেনোনা, প্রচেষ্টাকৃত কাজে সফল হওয়া সকলের জন্যে সহজ করা হয়েছে। (এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন)-
فَأَمَّا مَنْ أَعْطَىٰ وَاتَّقَىٰ . وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَىٰ . فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَىٰ . وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ وَاسْتَغْنَىٰ . وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَىٰ . فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَىٰ .
(আল মাকতাবাতুশ শামেলাহ: বুখারী/৪৫৬৫)
♣♣ এ ধরনের আরো আয়াত ও হাদীস কুরআন ও হাদীস গ্রন্থে উপস্থিত আছে
<< আর এর প্রচলিত ব্যাখ্যা থেকে মুসলিম সমাজে চালু হয়েছে-
১. মহান আল্লাহর নিকট থাকা একটি কিতাবে মানুষের করা সকল কাজ, জীবন-মৃত্যু এবং বেহেশত বা দোযখ পাওয়ার একটি মাত্র পরিণতি বা অবস্হান লেখা আছে
২. মানুষ যতোই চেষ্টা করুক কিতাবে লেখা থাকা ঐ পরিণতি বা অবস্হানের কোন পরিবর্তন হবে না।
<< যে কারণে এ ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য হবে না
যে সকল কারণে ‘তাকদীর পূর্বনির্ধারীত’ কথাটির ব্যাখ্যা হিসেবে ‘ভাগ্য, পরিনতি বা বিধিলিপি পূর্বনির্ধারিত’ গ্রহণযোগ্য হয় নাই বলে আমরা জেনেছি সে একই কারণে আলোচ্য বিষয়টির এ ব্যাখ্যাও গ্রহণযোগ্য হবে না।
=================================================
‘মানুষ ও মহাবিশ্বের সকল ঘটনা-দুর্ঘটনা আল্লাহর নিকট থাকা কিতাবের লেখা অনুযায়ী হয়’ কথাটি থাকা কুরআন ও হাদীসের প্রকৃত ব্যাখ্যা
<< তথ্যটির প্রকৃত ব্যাখ্যা বুঝার জন্যে যে বিষয়গুলো জানতে হবে-
১. কুরআনের আয়াতে কোথাও বলা হয়নি যে, আল্লাহর নিকটে থাকা কিতাবে প্রতিটি বিষয়ের একটিমাত্র পরিণতি বা অবস্থান লেখা আছে
২. আল্লাহর নিকট প্রতিটি মানুষের সনাক্তকারী নাম (DNA CODE) ভিন্ন
৩. প্রতিটি মানুষের জন্মসূত্রে পাওয়া (Hereditary) গুণাগুণ ভিন্ন
৪. একটি কাজের ফলাফল বা পরিণতির সাথে অসংখ্য অনুঘটক (Factor) জড়িত থাকে
সে অনুঘটকের কায়েকটি হলো-
জন্মসূত্রে পাওয়া (Hereditary) গুণাগুণ
মানুষের ইচ্ছা ও কর্মপ্রচেষ্টার বিভিন্ন ধরন
ধৈর্য, নিষ্ঠা, ত্যাগ, সাহসিকতা ইত্যাদি
মানুষের অজানা বা জানা কিন্তু আল্লাহর জানা অসংখ্য বিষয়
৫. ঐ অনুঘটকের একটি পরিবর্তন হলে কাজের ফল পরিবর্তন হয়ে যায়
এ বিষয়গুলোর আলোকে ‘মানুষ ও মহাবিশ্বের সকল ঘটনা-দুর্ঘটনা আল্লাহর নিকট থাকা কিতাবের লেখা অনুযায়ী হয়’ কুরআন ও হাদীসের এ ধরনের বক্তব্যের প্রকৃত ব্যাখ্যা- DNA CODE এর ভিত্তিতে প্রত্যক মানুষের নাম নির্দিষ্ট করে আল্লাহর নিকটে থাকা একটি কিতাবে লেখা আছে-
১. জীবনের সকল কাজে যতো পরিবর্তনশীল বিষয় (অনুঘটক/Factor) আছে তার সবগুলো ব্যবহার করে একটি কাজের যতো ধরনের ভালো বা মন্দ ফল হওয়া সম্ভব তার সবক’টি
২. জীবন-মৃত্যুর ব্যাপারে সকল পরিবর্তনশীল বিষয় (রোগের ধরন, চিকিৎসার ধরন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি) ব্যবহৃত হয়ে মৃত্যুর কারণ, সময় ও স্হানের যতো ধরনের অবস্হান হওয়া সম্ভব তার সবক’টি
৩. আমলের ধরন, ওজর, অনুশোচন, উদ্ধার পাওয়ার চেষ্টা, তাওবা ইত্যাদির ভিত্তিতে একজন মানুষের বেহেশত ও দোযখ পাওয়া না পাওয়া এবং তার মানের যতো ধরনের অবস্থান হতে পারে তার সবক’টি। মানুষ যে পদ্ধতিতেই একটি কাজ বা জীবন পরিচালনা করুক তার ফলাফল বা পরিণতি ঐ কিতাবে উপস্হিত পাওয়া যাবে।
<<< যে কারণে এ ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য হবে -কারণ-১
যে সকল কারণে ‘তাকদীর পূর্বনির্ধারীত’ কথাটির ব্যাখ্যা হিসেবে ‘বিধি-বিধান, প্রাকৃতিক আইন বা প্রোগ্রাম পূর্বনির্ধারিত’ কথাটি গ্রহণযোগ্য হবে, সে একই কারণে এ ব্যাখ্যাটিও গ্রহণযোগ্য হবে। <<< কারণ-২
আল্লাহর নিকট থাকা কিতাবে একটি কাজের সর্বোত্তম যে ফলাফলটি লেখা আছে মানুষ কখনও সে ফলাফল অর্জন করতে পারবে না। কারণ- আল্লাহর তৈরী করে রাখা প্রাকৃতিক আইনে একটি কাজের সর্বোত্তম ফলাফল পাওয়ার জন্য বড়ো, ছোটো (Macroscopic & Microscopic) যতো অনুঘটক (Factor) আছে তার সবক’টি মানুষের পক্ষে জানা এবং যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব নয়। মানুষের মধ্যে যে যতো সঠিকভাবে চেষ্টা করবে সে ঐ সর্বোত্তম ফলের ততো কাছাকাছি যেতে পারবে কিন্তু কখনও সে ১০০% সঠিকভাবে কোন কাজ করতে পারবে না।
<< এ তথ্যটি কুরআন ও হাদীস জানিয়ে দিয়েছেন এভাবে- কুরআন
وَلاَ تَقُوْلَنَّ لِشَئٍ اِنِّىْ فَاعِلٌ ذَالِكَ غَدًا . اِلاَّ اَنْ يَّشاَءَ اللهُ ز وَاذْكُرْ رَّبَّكَ اِذَا نَسِيْتَ وَقُلْ عَسى اَنْ يَهْدِيَنِ رَبِّىْ لِاَقْرَبَ مِنْ هَذَا رَشَدًا .
(কাহাফ/১৮ : ২৩, ২৪)
অর্থ: কোনো বিষয় সম্পর্কে কখনও এরকম বলো না যে, আগামীকাল আমি কাজটি করবো। আল্লাহর (অতাৎক্ষণিক) ইচ্ছা ছাড়া; ভুলবশত কখনও এরকম বলে ফেললে তোমার রবকে স্মরণ করবে এবং বলবে- আশা আছে আমার রব কাজটির সঠিক পথের কাছাকাছি অবস্থানের দিকে আমাকে পথ দেখাবেন।
ব্যাখ্যা: আয়াতখানির মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা রাসূল (সা.)সহ সকল মানুষকে কোন কাজের ব্যাপারে কি কথা বলা যাবে না, কেন তা বলা যাবে না এবং কি দোয়া করতে হবে তা জানিয়ে দিয়েছেন। আয়াতখানির প্রথম বক্তব্য হলো ‘কোন বিষয় সম্পর্কে কখনও এরকম বলো না যে, আগামীকাল আমি কাজটি করবো’। এ কথার মাধ্যমে কোন কাজ সম্বন্ধে ‘আমি কাজটি ১০০% নির্ভুলভাবে করবো’ এ ধরনের কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। এর পর আয়াতখানির বক্তব্য হলো- ‘আল্লাহর (অতাৎক্ষণিক) ইচ্ছা ছাড়া’। এ কথার মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে- ১০০% নির্ভুলভাবে কোন কাজ করতে হলে ঐ কাজের আল্লাহর তৈরী সফলতার প্রাকৃতিক আইনকে ১০০% নিখুঁতভাবে অনুসরণ করতে হবে। যা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আয়াতখানির শেষ বক্তব্য হলো- ‘ভুলবশত কখনও ঐরকম বলা হয়ে গেলে তোমার রবকে স্মরণ করবে এবং বলবে, আশা আছে আমার রব কাজটির সঠিক পথের কাছাকাছি অবস্থানের দিকে আমাকে পথ দেখাবেন’। এ বক্তব্যের মাধ্যমে ভুল বশতো ঐ ধরনের কথা বলা হয়ে গেলে কি কাজটি করতে হবে তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সে কাজটি হলো, আল্লাহর নিকট এ ভাবে দোয়া করা- ‘হে আল্লাহ, এ কাজটির সফলতার ১০০% সঠিক অবস্থানের কাছাকাছি অবস্থানের দিকে আমাকে পথ দেখান’।
হাদীস
قَالَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِعْمَلُوْ وَ سَدِّدُوْا وَقَاربُوْا وَاعْلَمُوْا اَنَّ أَحَدًا لَنْ يُّدْخِلَهُ عَمَلَهُ الْجَنَّةِ.
অর্থ: রাসূল (সা.) বলেন, আমল করো এবং সর্বাধিক সংখ্যক সঠিক কাজ করার চেষ্টা করো এবং (সত্যের) কাছাকাছি থেক। জেনে রেখো, কোন ব্যক্তিকে শুধু তার আমল জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরামগণ রাসূল (সা.) এর বক্তব্য শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনার আমলও কি পারবে না? তিনি উত্তর দিলেন-
وَلاَ أَنَا إِلاَّ اَنْ يَّتَغَمَّدَنِىَ اللهُ بِرَحْمَتِهِ.
অর্থ: না, আমিও না, যদি না আমার রব তাঁর রহমত দ্বারা আমাকে আচ্ছাদিত করেন।
(আল মাকতাবাতুশ শামেলাহ- মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৫৯৮৩)
ব্যাখ্যা: হাদীসখানিতে রাসূল (সা.) প্রথমে সর্বাধিক সংখ্যক নেক আমল করতে এবং সকল কাজে সত্যের কাছাকাছি থাকতে মুসলিমদের বলেছেন। কাজে ‘সত্যের কাছাকাছি’ থাকার অর্থ হলো- কাজটির ব্যাপারে আল্লাহর তৈরী সফলতার প্রাকৃতিক আইনের ১০০% সঠিক অবস্থানের কাছাকাছি থাকা। এরপর রাসূল (সা.) বলেছেন- ‘জেনে রেখো, কোন ব্যক্তিকে শুধু তার আমল জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে না’। একথার মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে- আল্লাহর তৈরী প্রাকৃতিক আইনে থাকা ১০০% সঠিক অবস্থান পূরণ করে মানুষের পক্ষে কোন কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আল্লাহ মাফ না করলে শুধু আমল করার ভিত্তিতে কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। হাদীসখানির শেষে সাহাবায়েকিরামদের প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (সা.) জানিয়ে দিয়েছেন- শুধু আমলের ভিত্তিতে তিনিও জান্নাতে যেতে পারবেন না। আর এর কারণ হলো- আল্লাহর তৈরী প্রাকৃতিক আইনে থাকা ১০০% সঠিক অবস্থান পূরণ করে তাঁর পক্ষেও কোন আমল করা সম্ভব নয়।
আশা করি আপনার এই বিষয়ে একটি সমাধান পেয়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ৯:৩৪
রাজ মো, আশরাফুল হক বারামদী বলেছেন: জীবন সম্পর্কিত প্রশ্ন তিনটি হচ্ছে:
১. মানুষ কোথা থেকে এসেছে?
২. এই দুনিয়াতে তার কাজ কি?
৩. এই দুনিয়ার পর সে কোথায় ফিরে যাবে?
এই একজন মানুষের জন্য এই দুনিয়ার জীবনে এই প্রশ্ন তিনটি হচ্ছে অপরিহার্য্য মৌলিক বিষয়। এই প্রশ্ন গুলোর সঠিক সমাধান না করে কিংবা এর থেকে এড়িয়ে গিয়ে অনেক মানুষ আজ নিজ বিবেকের কাছ থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ আবার এর ভুল ব্যখ্যা করে সাময়িকের জন্য মিথ্যার উপর কল্পনার ফানুস ওড়াচ্ছে।
১. মানুষ কোথা থেকে এসেছে?
শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারব না, তবে বর্তমানের তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে বলতে পারি বিবর্তনের মাধ্যমে প্রাণের আদিরুপ থেকে মানুষ আজকের এই অবস্থায় এসেছে। এইখানে কল্পনার ফানুষের কিছু নাই। চোখের সামনে হাতের কাছে যন্ত্রপাতির ছাকনিতে ফালাইয়া যাচাই করে সব দেখা হচ্ছে।
২. এই দুনিয়াতে তার কাজ কি?
মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি, পারিপার্শ্বিকতা ও প্রবৃত্তি অনুয়ায়ী সে যা করতে প্রলুব্ধ হয় তাই তার কাজ। আপাতত মানুষ মূলত সভ্যতার সম্প্রসারণ ও বংশবৃদ্ধি করছে।
৩. এই দুনিয়ার পর সে কোথায় ফিরে যাবে?
বর্তমান ঘটনার ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করলে ধর্ম বা ঐতিহ্য অনুযায়ী তার মৃতদেহের সতকার হবে, ব্যাকটেরিয়ায় খাবে বা আগুনে পুড়ে ছাই হবে অথবা কেউ চাইলে ফন হাগেন্সের মিউজিয়ামে তার শরীর প্রদর্শনের জন্য দিতে পারে। বিভিন্ন ধর্ম অনুযায়ী মৃত্যুর পরবর্তী জগত যেখানে আত্মার বিচরণ থাকবে সে সম্পর্কে কোন তথ্যপ্রমাণ আপাতত নাই। আর জীবন কী সে সম্পর্কে ষ্পষ্ট ধারণা না থাকার কারনে মৃত্যু পরবর্তী জীবনের অবলোপন অথবা জন্ম পূর্ববর্তী জীবনের অবলোকন সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না।