নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যকে জানুন

আমি একজন সাধারন মানুষ।

আমি জ্ঞানী

যেকোন ভিন্নমতকে আমি স্বাগত জানাই।কারন ভিন্ন মত ছাড়া সত্য প্রকাশিত হয়না।

আমি জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়াবীনি চাঁদ

০২ রা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪০


ডাঃ মতিন সাহেব একজন বিখ্যাত মনরোগ বিশেষজ্ঞ । তার হাত-যশ সারাদেশে সুপরিচিত । তিনি তার চেম্বারে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন । হঠাৎ তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তিনি দেখলেন দরজায় দাড়িয়ে একটি ছেলে বলছে,
“স্যার আসতে পারি”
“আসুন।”
ছেলেটি ধীরে ধীরে রুমে ঢুকে চেয়ারে বসল।ডাক্তার সাহেব লক্ষ্য করলেন কোথাও একটা গোলমাল আছে। প্রথমত,চেম্বারে তার ঘুমানোর কথা নয়। তার রোগীর লাইন থাকে দীর্ঘ। ছয় মাস আগেই তার সিরিয়াল দিতে হয়। কাজেই রোগী দেখার ফাঁকে ঘুমিয়ে পড়ার কোন সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত,তার এসিষ্টেন্ট ছেলেটাকে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা। এরকমও কখনও হয়না। তাকে না জানিয়ে সে কোথাও যায়না। ছেলেটি বল্ল,স্যার সমস্যার কথা বলব? ছেলেটি উৎকন্ঠা নিয়ে তার দিকে চেয়ে আছে যেন ডাক্তার সাহেব তার কথা না শুনলে সে মহা বিপদে পড়ে যাবে। তিনি খেয়াল করেছেন রুমে ঢুকার সময় ছেলেটি এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল। ডান হাতের মধ্যমা সামান্য কাঁপছিল । Dissimilar Hyperactivity of Left Cerebrum. সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে সাধারনত Focal Dissimilar Activity দেখা যায়না। সামান্য Congesion আছে ডান হাত,নাক ও কানের গোড়ায়। একে বলে Relative Transient Hypersympathitism Syndrome. তার প্রেসার পাওয়া যাবে 140/90mmHg with irregular pulse.এ অবস্থায় তার তীব্র মাথা ব্যথা ও চোখে একটু একটু অন্ধকার লাগার কথা। তিনি ছেলেটিকে বল্লেন,বলুন আপনার কী সমস্যা?”ছেলেটি বল্ল,
“স্যার,তীব্র মাথা ব্যথা হচ্ছে। আর চোখে অন্ধকার অন্ধকার লাগছে।”
ডাক্তার সাহেব দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থেকে রোগীকে দেখেই বুঝতে পারছেন, এটা তার প্রধান সমস্যা নয়। তার প্রধান সমস্যা হল অবশেসন(Obsession). এটি একটি মানসিক সমস্যা। এ ধরনের রোগীরা যেকোন একটি অদ্ভূত ধারণা মনের মধ্যে লালন করে যা তার দৈনন্দিন জীবনকে ব্যহত করে। তিনি প্রশ্ন করলেন,আর কী সমস্যা?
সে উত্তর দিল,“স্যার আমার নাম মোঃ মজিদ উদ্দিন। Mathmatics এ মাস্টার্স করেছি। সেজন্য লজিক নিয়ে কথা বলতে ভালবাসি। স্যার আপনাকে একটা প্রশ্ন করব?”
“করুন।”
“স্যার,এইযে আমি আপনার সাথে কথা বলছি –আপনার কি মনে হয় এটা বাস্তব?”
“মানে?”
“মানে স্যার এটা কি একটা স্বপ্ন হতে পারেনা?”
“এটা যে একটা স্বপ্ন ,এর পিছনে আপনার লজিক কী?”
“আপনি নিশ্চয় লহ্ম্য করেছেন দরজায় আপনার এসিস্টেন্ট নেই?”
“সে হয়তো বাইরে চা খেতে গিয়েছে।”
“No Sir.আপনার এসিস্টেন্ট নেই কারন আপনি এখন আপনার স্বপ্নের মধ্যে আছেন। আপনি হয়তো আমার কথা বিশ্বাস করছেননা কিন্তু আপনি দেখুনতো আপনার ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে আপনার এসিস্টেন্ট,বাবা-মা,ভাই-বোন,স্ত্রী সন্তানের কন্টাক্ট নম্বর আছে কিনা?”
তিনি কন্টাক্ট নম্বর দেখলেন। আশ্চর্য,তাদের কারো কন্টাক্ট নম্বর নেই। তিনি ঘামতে লাগলেন। এটা কি করে সম্ভব?
“দেখুন স্যার বাস্তবে আপনার শত শত রোগী অথচ এখানে আপনার কোন রোগী নেই”
তার একটু একটু মাথা ঘুরছে। কোথাও একটা গোলমাল আছে। নতুন করে ভাবতে হবে। তিনি বল্লেন,
“আপনার সমস্যার কথা বলুন।”
“স্যার,আমি আমার স্বপ্নের মধ্যে আটকে আছি। এখানে আমার বাবা-মা,ভাই-বোন কেউ নেই। আমি আমার আসল পৃথিবীতে যেতে চাই। আমাকে সাহায্য করুন স্যার।”
তিনি জানেন পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই কোন না কোন মানসিক সমস্যায় ভুগছে। কনসালটেন্সি ছাড়া মানসিক রোগের প্রকৃতপক্ষে কোন ওষুধ(Drug) নেই। সময়ের সাথে সাথে অনেক সমস্যাই ভাল হয়ে যায়। তিনি বল্লেন,
“দেখুন আপনার সমস্যা নিয়ে আমাকে একটু ভাবতে হবে। আমি নিজস্ব কিছু বিষয় নিয়েও কনফিউজড। আপনি আগামী সপ্তাহে একবার আসুন।”
“না ডাক্তার সাহেব,আমার সমস্যার সমাধান এক্ষুনি দিতে হবে ,কারন এটা স্বপ্ন। আগামী সপ্তাহে আপনাকে এখানে নাও পেতে পারি। আপনি হয়তো স্বপ্নের অন্য কোন ধাপে আটকে যাবেন। আপনার সাথে আমার আর দেখাই হবেনা”
“দেখুন এই মুহূর্তে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আমি আপনাকে কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি।”
হঠাৎ করে ছেলেটি ডাক্তার সাহেবের গলা চেপে ধরে বল্ল ,
“ডাক্তার সাহেব আমি ওষুধ চাইনা,আপনি আমাকে স্বপ্নের ফাঁদ থেকে মুক্তি দিন।” সে এমনভাবে গলা চেপে ধরল যে তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে...........।
*********
হঠাৎ করে ডাক্তার সাহেবের ঘুম ভেঙ্গে গেল। তিনি ঘড়ি দেখলেন। রাত তিনটা বাজে।তিনি মনে মনে স্বপ্নে দেখা ছেলেটার কথা ভাবতে লাগলেন। ছেলেটার কথায় কিছু যুক্তি আছে। পৃথিবী রহস্যময়। আমাদের চারপাশে যা ঘটছে তা সত্যি নাও হতে পারে। কারণ আমরা যেসবj মানদন্ডকে(বস্তু,সময়,ঘটনা) আদর্শ(Standard) হিসেবে ধরি সেগুলোকে কখনও প্রশ্নের মুখে ফেলিনা। হয়তো এই Standardগুলোও আপেক্ষিক(Relative)। কাজেই আমরা যা দেখি বা শুনি সেটা প্রকৃত সত্য নাও হতে পারে।
একটু একটু গরম লাগছে তার। ইলেকট্রিসিটি নেই। তাই তিনি উঠে গিয়ে জানালাটা খুলে দিলেন। বাইরে গোল চাঁদ উঠেছে। চাঁদের আলো অন্ধকার রুমে এক মায়াবী পরিবেশ তৈরী করেছে। চাঁদটাকেও লাগছে অদ্ভূত সুন্দর। তার মনে এক প্রকার আচ্ছন্ন ভাবের তৈরী হল। তিনি এক দৃষ্টিতে চাঁদের দিকে চেয়ে আছেন আর কে যেন তার কানে কানে বলছে,
“The moon is not the moon
Light is not the beam
We are not alive
We are in the dream.

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৮:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্প যথেষ্ট জ্ঞানী হৈসে :-B

২| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৮:১১

আমি জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.