নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যকে জানুন

আমি একজন সাধারন মানুষ।

আমি জ্ঞানী

যেকোন ভিন্নমতকে আমি স্বাগত জানাই।কারন ভিন্ন মত ছাড়া সত্য প্রকাশিত হয়না।

আমি জ্ঞানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

যদি আমি বৃক্ষ হতাম

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩২

সময়টা বিকেল।

পার্কে একা বসে আছি। মৃদু বাতাস বইছে।ভাল লাগছে। এটা আমার অনেক দিনের অভ্যাস। বিকেলে অল্প হাটার পর এই বেন্চিতে এসে বসি। চারদিকের প্রকৃতি আর মানুষ দেখি।

"লাইট হবে?"

একটা পচিশ ত্রিশ বছরের যুবক সিগারেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আমি বল্লাম,"না নেই"

"একটু বসতে পারি?"
"নিশ্চয়।"

ছেলেটি বসার পর পকেট থেকে লাইটার বের করে সিগারেট ধরাল।তার মানে ছেলেটি মিথ্যে বলেছে। সিগারেটের ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে সে বল্ল,

"আপনি ভাবছেন আমি আপনাকে মিথ্যে বলেছি। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন আমি কোন মিথ্যা বলিনি। আপনার কাছে লাইট চেয়েছি তারমানে এই নয়যে আমার কাছে লাইট নেই।এটা হল ভাষার সীমাবদ্ধতা। ভাষা কখনওই সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেনা। আইনের যেমন ফাক ফোকর আছে তেমনি ভাষারও ফাক ফোকর আছে। But that harms more than good. So language is not so necessary"

কিছু সময় চুপ থাকার পর বল্ল,"আপনার সাথে অামার কিছু কথা ছিল।"
"তুমি আমাকে চিন? "
"অবশ্যই। আপনি শুধু এই দেশের নয়,আপনি পৃথিবী বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানী। You are highly genius but I am more than you"
"মানে?"
"আপনাকে সবাই চেনে। সবাই কত সম্মান করে আপনাকে, অথচ আমাকে কেউ চিনেইনা। অবশ্য চিনার কোন কারনও নেই। ছোট বেলায় বাবা মাকে হারিয়েছি, তাই আত্মীয় স্বজন কেউ আমাকে চিনেনা। ক্লাসে এমন কেউ ছিলামনা। স্যাররাও কেউ মনে রাখেনি। ফেল করা ছাত্রকে কেই বা মনে রাখবে? Society system does not reflect all the truth all the time. Truth is I am more genious than you."

"তোমার কি বিখ্যাত হওয়ার খুব ইচ্ছা? "
"আসলে তা নয়। আমি একাকী থাকতেই ভালবাসি। যদি সম্ভব হত তবে আমি বৃক্ষ হতাম।
যদি আমি হারিয়ে যেতাম
অচিন দেশের অচিন টানে,
দুঃখগুলো হারিয়ে যেত
আমার সাথে আমার সনে।
যদি আমি বৃক্ষ হতাম
অচিন বনের অচিন কোণে। "

"কার কবিতা?"
"আমার। "
"ভাল। কখন লিখলে?"
"এইমাত্র। "

ছেলেটি কতটুকু প্রতিভাবান তা জানিনা তবে মনে মনে তার কাব্য প্রতিভার একটু হলেও প্রশংসা করলাম। ছেলেটাকে কেন জানিনা একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে। আমি প্রশ্ন করলাম,

"তুমি নিজেকে এত জিনিয়াস মনে কর কেন?"

সে আমার প্রশ্নের কোন উত্তর দিলনা।কিছু সময় চুপ থাকার পর সে বল্ল,
"আপনি প্রতিদিন বিকালে এখানে বসে থাকেন কেন?"
"চারদিকের প্রকৃতি আর মানুষ দেখি"
"তারমানে আপনি একজন Observer. জ্ঞানের তিনটা স্তর আছে। Observation, Thinking and Examination. You are in observation stage. I am two stage ahead of you"

আমি মনে মনে হাসলাম। ভালো পাগলের পাল্লায় পড়লাম দেখি। সে আনমনে বলে চল্ল,

"অবশ্য Experiment stage এর অনেক বিপদ আছে। আমি অনেক বিপদে পড়েছি। কাউকে সে কথা বলতে পারিনি। অনেকে হয়তো সে কথা বিশ্বাস ও করবেনা।"

"মানে? "

সে এই প্রশ্নেরও উত্তর দিলনা। বল্ল,
"আপনি আপনার গবেষণায় বলেছেন মানুষের পক্ষে অতীত কিংবা ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব নয়। একথা কি সত্যি? "

"অবশ্যই, এখন পর্যন্ত ফিজিক্সের যত সূত্র আছে সেগুলো কোনটাই Dimension of time change কে সমর্থন করেনা।"
"সত্যিও তো হতে পারে স্যার।"

"হা হা, সেটা সত্যি হলে আইনাস্টাইন থেকে নিউটন সবার সূত্রই ভুল প্রমানিত হবে।"
"ওদের সূত্রগুলো যে ধ্রুব সত্য, এটা ধরে নিচ্ছন কেন? ওদেরও ভুল হতে পারে।"
"হতে পারে। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া বিজ্ঞান কোন কথাকে সত্য বলে মেনে নেয়না।"
"আপনাদের বিজ্ঞান এখনও চতুর্থ ডাইমেনসনের সমাধান করতে পারলনা অথচ আমি অষ্টম ডাইমেনশনে পৌঁছে গেছি।"

আমি একটু অবাক হলাম। যতটা পাগল ভেবেছিলাম ততটা পাগল সে নয়। বোঝা যাচ্ছে বিজ্ঞান সম্পর্কে কিছুটা হলেও তার জ্ঞান আছে। তবে সে কথাগুলো এমনভাবে বলছে যে মনে হয় তার কথাই সত্যি। আমি বল্লাম,"অষ্টম ডাইমেনসনের কোন প্রমাণ দিতে পারবে?"

"অবশ্যই।"

ছেলেটি অদ্ভূত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল যেন বলতে চাইছে এ আর এমন কী? তার দৃষ্টিতে একটা ঘোর লাগা ভাব আছে।সে আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে আস্তে করে উঠে সামনের দিকে হাটতে লাগল। যখন দিগন্তের কাছে পৌছাল তখন তার মাথার উপর গোল পূর্নিমার চাদ জ্বল জ্বল করছে। এ এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য!

একসময় দিগন্তের সাথে মিশে গেল সে।

ও চলে যাওয়ার পর আমার মনে হল কোথাও একটা
সূক্ষ্ম পরিবর্তন হয়েছে।

হাত ঘড়িতে তাকালাম। রাত দশটা বাজে। চারদিকে রাত নেমে এসেছে। চারপাশটা নির্জন।অথচ এত দ্রুত রাত নামার কথা নয়। ছেলেটার সাথে বড়জোর আধা ঘন্টা কথা হয়েছে। এখন খুব বেশি হলে সন্ধা সাতটা বাজার কথা। কোথাও একটা সমস্যা আছে।

নাকি ছেলেটার কথাই সত্যি। এই মুহূর্তে হয়তো সময়ের ডাইমেনসনের পরিবর্তন ঘটে গেছে। সত্যিই কি সময়ের পরিবর্তন সম্ভব?

"কি এত ভাবছ?"

পাশে চেয়ে দেখি আমার মমতাময়ী স্ত্রী উদ্বিগ্ন চোখে আমার দিকে চেয়ে আছে। কিন্তু এটা সম্ভব নয় কারন আমার স্ত্রী পাচ বছর আগেই মারা গেছে। এটা একটা ইলিউশন বা ভ্রম। হয়তো আমাদের পুরো জীবনটাই একটা ইলিউশন। ছেলেটার সাথে এ বিষয়ে কথা বলা দরকার। সে হয়তো এ বিষয়ে কিছু জানতে পারে। কিন্তু তার নামটাইতো জানা হলোনা। কোথায় খুজে পাব তাকে?

আমি চাঁদের দিকে তাকালাম। কি সুন্দর উজ্জ্বল চাদ! কে জানে কোনটা সত্য।চাদ নাকি তার আলো? নাকি দুটোই ইলিউশন?

Who knows who is right
It is the moon or the light?
Or the illusion of the night?
-------------------(The End)---------------------

**ভালো লাগলে পড়ে দেখতে পারেন:-মায়াবীনি চাঁদ


মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩৭

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমাদের জীবন বাস্তব হলেও অলীক।

২| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

আমি জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
চমৎকার।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৮

আমি জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ বৃক্ষ হতে পারবে না। সে ক্ষমতা মানুষকে দেওয়া হয় নি।
যদি সে উপায় থাকতো তাহলে বহু লোক বৃক্ষ হতে চাইতো।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

আমি জ্ঞানী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এক রাশ ভালো লাগা ।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৮

আমি জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০২

মীনক্ষোভাকুল কুবলয় বলেছেন: ভাল লাগলো পড়ে খুব ।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৫

আমি জ্ঞানী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


ম্যাঁওপ্যাঁও

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৯

আমি জ্ঞানী বলেছেন: B-) :-P

৮| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২২

স্বচ্ছ দর্পন বলেছেন: ভালো লাগলো।

৯| ০১ লা মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
একটু অন্যরকম ভাবনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.