|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
 
 
আমার শ্বশুরবাড়িতে একটা কিম্ভুতকিমাকার আজিব টাইপের প্রথা ছিল। বিয়ের দিন বরকে গাড়ি থেকে নামার পর না হাঁটিয়ে পিঁড়িতে চড়িয়ে বসার জায়গায় নিয়ে যাওয়া হত। 
আমার শ্বশুরমশাই সব কাজ বেশ গুছিয়ে করেন। যেহেতু বরের বসার জায়গা দোতলায় হয়েছিল, গাড়ি থেকে অনেকখানি দূরত্ব। তাই তিনি আগে থেকেই পাড়ার ক্লাবের চারজন ওয়েটলিফটারকে বুক করে রেখেছিলেন। দুপুরে তাদের এলাহি খাওয়ানো হয়েছিল। মাঝে মাঝেই তারা নাকি পুশ-আপ টুশ-আপ মানে ওই ডন-বৈঠক করে নিচ্ছিল। সন্ধ্যেবেলায় আমি যখন পৌঁছলাম, চার পালোয়ান আমাকে নিতে এল। আমার তখন ক্যাডাভেরাস পরিস্থিতি, মানে ধুতি 'এই খুলে গেল এই খুলে গেল' অবস্থা। তো পৌঁছানো মাত্রই চার পালোয়ান এসে আমায় তুলতে গিয়ে হতবাক হয়ে গেল। এতো কম ওজন! ছিঃ এই রোগাপটকাকে বওয়ার জন্য তাদের ডাকা হয়েছে! দৌড়ে আমায় নিয়ে দোতলায় বর আসনে বসিয়ে দিয়েই ওরা শ্বশুর মশাইকে বলেছিল, "এত বড় অপমান আমাদের চারজন দেহশ্রীকে না করলেই পারতেন। এমন চিমসে ডিগডিগে একজনকে বওয়ার জন্য আমাদের ডাকতে হল? আর বলিহারি মশাই, কোটি কোটি মানুষের মধ্যে জামাই করার জন্য হেলদি কাউকে পেলেন না? ।"
.
আরও ছোটবেলার ঘটনা। আমাদের পাড়ার একজন কাকু দারিদ্র্য-টারিদ্র্যের ওপর একটা ডকুমেন্টারি ফিল্ম করছিল। একদিন আমার হাতে একটা বাটি ধরিয়ে দিয়ে বলেছিল, তুই শুধু ক্যামেরার সামনে বলবি, 'একটু ভাতের ফেন দিন মা... কতদিন খাইনি...' 
পরে বলেছিলেন, তোকে দারুণ মানিয়েছে। তোর চেহারার মধ্যে একটা 'অনাহার-অনাহার' ব্যাপার আছে। গায়ে দু পোঁচ আলকাতরা মেরে দিলে তোকে অনায়াসে মোজাম্বিক বা উগান্ডার অপুষ্ট বালক বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে।
.
আমার চেহারা দেখে সবচেয়ে খুশি হয়েছিলেন শাশুড়ি। মেয়েকে বলেছিলেন, "ওরে তুই খুব ভাগ্যবতী। এমন শুঁটকো বর পাওয়া কত ভাগ্যের কথা তুই জানিস? কোনও মেয়ে অমন শুঁটকো হাড়জিরজিরে ছেলের দিকে ঘুরেও তাকাবে না। ও শুধু তোরই থাকবে। তুই খুব সুখী হবি।"
কথাটা বউই আমাকে পরে বলেছিল। আমিও শ্বশুরবাড়ি গেলে খুব অল্প খেতাম( অল্পই খাই) আর শাশুড়ি জোরাজুরি করলেই বলতাম, "ভেবে দেখুন, বেশি যদি খাই আর শুঁটকো থাকব না কিন্তু। তখন আবার আপনার মেয়েই সমস্যায় পড়ে যাবে।"
শাশুড়ি ভেবলে যেতেন আর বউ মুখ টিপে হাসত।
শাশুড়িকে আমি যাই বলে থাকি, আসল সত্যিটা অবিশ্যি হল আমি যতই খাই, ওজন বাড়ে না। 
আমাদের পাড়ার তিলুকাকু চাকরি থেকে অবসর নিয়ে একটা দোকান করলেন। এসটিডি বুথ অবধি ঠিক ছিল কিন্তু তার সঙ্গে তিনি আবার একটা ওজন নেওয়ার যন্ত্রও বসিয়ে দিলেন। যন্ত্রে উঠে এক টাকার কয়েন ফেললেই ডিসপ্লে বোর্ডে ওজন ভেসে ওঠে। সর্বনাশ হল সেখানেই। তিলুকাকু ওত পেতে বসে থাকতেন। চেনা কেউ দোকানের পাশ দিয়ে গেলেই আর রেহাই নেই, একবার ওজন নিতে হতই। আমিও যখন দোকানের পাশ দিয়ে যেতাম তিলুকাকু হাঁকতেন, "ওজনটা নিয়ে যা।" 
প্রথম প্রথম খুচরো নেই বলে পালাতাম। কিন্তু তারপরে তিনি খুচরোও রাখা শুরু করলেন। আর পালানোর কোনও উপায়ই থাকত না।
ওজন যন্ত্রে উঠলেই, আমি ঘামতে শুরু করি, আমার নিজেকে দ্রৌপদী মনে হয়। এই বস্ত্রহরণ শুরু হল। যেই ডিসপ্লেতে ক-টি দুর্বল সংখ্যা ভেসে উঠবে, অমনি প্রতিবার, তিলুকাকু চোখ কপালে তুলে বলবেন, "এ কী! এত কম! দুটো পা'ই মেশিনে রেখেছিস তো! হ্যাঁ ঠিকই তো আছে দেখছি। কিরে? কোনও খারাপ রোগ-টোগ বাধিয়ে বসিসনি তো?"
এই 'খারাপ রোগ-টোগ' কথাটা এমন কেটে কেটে বলেন, এই সেদিন যেমন, দোকানে উপস্থিত এক সুগঠনা রূপবতী, যিনি ওজন নেবেন বলে দাঁড়িয়ে আছেন, ভয় পেয়ে আমার থেকে ছিটকে দূরে সরে গিয়ে নাকে রুমাল চাপা দিলেন। 'খারাপ রোগ-টোগ' ছোঁয়াচেই হয় যে!
আমি বিষণ্ণচিত্তে দোকানের বাইরে পা ফেলি...
 ১৪ টি
    	১৪ টি    	 +১/-০
    	+১/-০  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৩
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৩
গেছো দাদা বলেছেন: কতখানি ভালো দাদা ? হা হা হা । আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
২|  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:০৭
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:০৭
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: হা হা হা................. ++
  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৫
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৫
গেছো দাদা বলেছেন: আপনাকেও ++ জানাই।
৩|  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:০৯
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: 
দাদা ফাটিয়ে দিয়েছেন,
রোগা পটকা স্বামীর কদর
বউদের কাছে বেশী হবার 
গুঢ় রহস্য ফাস করে দেবো নাকি ?
  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৬
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৬
গেছো দাদা বলেছেন: হ্যাঁ, রহস্য ফাস করে দিন দাদা । আমরাও আরেকটু জানি !!
৪|  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:১০
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:১০
প্রামানিক বলেছেন: কাহিনী মন্দ নয়। ফাটাফাটি।
  ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৭
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:৩৭
গেছো দাদা বলেছেন: পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই দাদা।
৫|  ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১:০৩
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১:০৩
কাতিআশা বলেছেন: আপনি খুব মজা করে লেখেন..বেশ লাগল!
  ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১:১৭
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১:১৭
গেছো দাদা বলেছেন: হা হা হা । আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
৬|  ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১:৩৫
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১:৩৫
ফাহিম দেওয়ান বলেছেন: আমাকেও আপনার দলে রাখুন দাদা...সখি যাতনা কাহারে কয়
  ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১০:৪০
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১০:৪০
গেছো দাদা বলেছেন: অবশ্যই আপনি আমার দলে । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৭|  ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  সকাল ৯:১৭
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  সকাল ৯:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার অনেক রসবোধ আছে।
  ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১০:৪২
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১০:৪২
গেছো দাদা বলেছেন: আপনার ভালোবাসা যেন সবসময় পাই দাদা।ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:০৩
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮  রাত ১১:০৩
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভাল...