নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টুসি গলিতে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকক্ষণ পরে মাধব এল।
যেন হীরো হীরালাল। বুকে "ওয়াশিংটন" লেখা টি শার্ট। চোখে সানগ্লাস হাতে ইয়া বড় একখানা মোবাইল ফোন।
.
মাধব সবসময় এইরকম টিপটপ ঝক্কাস্ হয়ে থাকে। ওর কাছে অনেক টাকা থাকে। বিজনেস করে ভাল কামাই করে। কিন্তু কিসের বিজনেস করে কখনও বলেনি টুসিকে।
এসেই একটা বড় ক্যাডবেরি চকলেট টুসির হাতে ধরিয়ে দিল। অমনি টুসির সব রাগ জল হয়ে গেল।
.
মাধব বলল, "বিজনেসের কাজে আটকে গিয়েছিলাম। টাকা পেতাম, নিয়ে এলাম।"
বলে একটা মানিব্যাগ বের করল মাধব। দেখতে একেবারে অবিকল দাদাবাবুর মানিব্যাগের মতো, মানে যার বাড়িতে টুসি কাজ করে, তার মানিব্যাগের মতো।
টুসি মানিব্যাগটা ছিনিয়ে নিয়ে দেখল। হ্যাঁ দাদাবাবুরই। বৌদির ছবি আছে।
টুসি বলল, "এই মানিব্যাগ তুমি কোথায় পেলে? এটা তো দাদাবাবুর!"
মাধব জিব কেটে বলল, "যাহ শালা তাহলে সেমসাইড হয়ে গেছে! ভুল পকেট.."
-- "পকেট? কী? তুমি পকেটমার?"
-- "আমি হাত সাফাই করি। পকেটমার কথাটা ফালতু। আমার হাতে এমন জাদু আছে, কেউ জানতেই পারেনা, তার পার্স হাওয়া হয়ে গেছে।"
-- "পকেটমারের সঙ্গে আমি.. আমি..."
মানিব্যাগটা ছুঁড়ে দিয়ে টুসি হাঁটা শুরু করল। পকেটমারের সঙ্গে সে প্রেম করতে পারবে না। মাধব হাত ধরে টেনে আটকানোর চেষ্টা করল, কিন্তু হাত ছাড়িয়ে টুসি বলল, "পকেটমারের সঙ্গে প্রেম করার চেয়ে গলায় দড়ি দেওয়া ভাল।"
মাধব তবু পিছু ছাড়েনি, টুসি বলল, "দাদাবাবুকে মানিব্যাগ ফেরত দিয়ে ক্ষমা চাইবে। আর কোনদিন পকেটমারি করবে না। তাহলে..."
কথা শেষ না করেই প্রায় দৌড়ে চলে গেল টুসি।
.
চারদিন পর।
দাদাবাবু অফিস থেকে ফিরে বলল, "আজ একটা অদ্ভুত কাণ্ড হয়েছে। রাস্তায় একটা ছেলে এসে বলল, এই নিন আপনার মানিব্যাগ। আমি বললাম এটা তো হারিয়ে গিয়েছিল তুমি কী করে পেলে? বলল, আমি মেরে ছিলাম কিন্তু তারপর থেকে পকেটমারি ছেড়ে দিয়ে বাজারে মাছ ব্যবসা করছি।"
বৌদি অবাক হয়ে বলল, "তাই? এরকম হয়? তারপর?"
-- "তারপর আর কী, আমি পকেটমার-পকেটমার করে চেঁচিয়ে লোক জড়ো করে দিলাম। শালা পকেটমার নাকি আবার সাধু হয়ে গেল। নিশ্চই অন্য কোনও মতলব আছে এর পেছনে। তারপর সবাই মিলে বেধড়ক ক্যালালাম। একজন আবার লাঠি দিয়ে ওর হাঁটুর মালাই চাকিতে ধাঁই করে মারল। আর ব্যাটাকে সোজা হয়ে হাঁটতে হবে না। তারপর পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে গেল।"
.
ছাদে উঠে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলল টুসি।
-- "আমার জন্যই তোমার এই অবস্থা হলো.. কী নিষ্ঠুর এই মানুষগুলো..তুমি ভাল হতে চাইলে তাও..."
.
আরও পাঁচদিন পর।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে মাধব। সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ। পাশে টুলে একজন পুলিশ বসে আছে।
মাধবকে ওই অবস্থায় দেখে টুসির বুকটা হু হু করে উঠল।
মাধব পুলিশ কনস্টেবলকে বলল, "কী গুরু বলেছিলাম না আমার একজন লাভার আছে? এই সেই। নাম টুসি।"
.
টুসি বলল, "আমার জন্যই তোমার এই অবস্থা। অমন ভালমানুষ দাদাবাবু যে এমন নিষ্ঠুর আমি ভাবতেই পারিনি।"
মাধব বলল, "আরে, ছোড়ো কাল কি বাতেঁ, কাল কি বাত পুরানি... এই যে তুমি এসেছ আমার দিল একদম খুশ হয়ে গেছে। সব ব্যথা হাপিশ হয়ে গেছে। জানো, আমি জেল থেকে ছাড়া পেলে মাছের বিজনেস করব। বাজারে মাছ নিয়ে বসব।"
টুসি কিছু বলল না। তার চোখে জল।
মাধব ফিসফিস করে টুসিকে বলল, "টুসি একটা কথা বলো না মাইরি, জেলখাটা ল্যাংড়া মাছওয়ালাকে বিয়ে করবে তো?"
টুসি মাধবের হাতটা খুব শক্ত করে ধরল...
২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৫
গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ ।
২| ২৪ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:৫০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পারিপার্শ্বিক অব্যাবস্থার কারনে
ভালো হতে চাইলেই ভালো হওয়া যায়না।
এটাই বাস্তবতা
২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৬
গেছো দাদা বলেছেন: একদম ঠিক ।
৩| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: কি স্যার, নিজের বৃত্ত ভাংতে চাইছেন, না কি নতুন বৃত্ত গড়তে চাইছেন?
২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৭
গেছো দাদা বলেছেন: ভাঙ্গাগড়া নিয়েই তো আমাদের সবার জীবন। তাই না ?
৪| ২৪ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: টুসি মাধব ভালো থাকুক।
২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৯
গেছো দাদা বলেছেন: ওরা ভালো থাকবে। আপনারাও সবাই খুব ভালো থাকুন।
৫| ২৫ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:০৮
মা.হাসান বলেছেন: মানুষ গুলো সব শালা হয়েই রইলো, মানুষ আর হলো না।
অন সেকেন্ড থট, ঠ্যাঙের বদলে বউ পেলো মাধব, এমন আর খারপ কি!
২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:১২
গেছো দাদা বলেছেন: এক হিসাবে দেখলে আপনার কথাও ঠিক।
৬| ২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:৩৯
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনি খুবই সুন্দর লেখেন, বিশেষ করে রম্য। যে একবার আপনার রম্য পড়েছে, সে আপনার ব্লগে আসতে বাধ্য। তারপরও আপনার পোস্টে ভিউ খুব একটা বেশি হয় না, মন্তব্যও কম। আমার মতে, এর একটা কারণ হলো আপনি ইন্টােরেকটিভ না। অন্যদের পোস্ট খুব একটা পড়েন না, মন্তব্যও করেন না। আপনার ব্লগের মন্তব্যের জবাবও দিতে দেরি করেন।
ব্লগের মত সীমাবদ্ধ একটা স্পেসে পোস্টে বেশি ভিউ হলো কি হলো না, সেটা হয়তো একজন মানোত্তীর্ণ লেখকের কাছে গৌণ বিষয়। কিন্তু যেহেতু আপনি এই স্পেস ব্যবহার করছেন, সেহেতু অন্যের সাথে ইন্টারেক্ট করাটা একটা নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলেই আমি মনে করি। অন্যদিকে আপনার সুন্দর লেখাগুলোও তখন পাঠকের চোখ এড়িয়ে যাবে না। কম ভিউ হতে থাকলে অথবা কম মন্তব্যপ্রাপ্ত হতে থাকলে এক সময় লেখক আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন, সে রকমটা হলে আমরা একজন ভালো গল্পকারকে হারিয়ে ফেলবো। সামহোয়্যারইন ব্লগ সেটা চাইবে বলে মনে হয় না।
বিষয়টা ভেবে দেখবেন আশা করি।
ভালো থাকবেন, শুভ ব্লগিং।
২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:১০
গেছো দাদা বলেছেন: আপনার পরামর্শমূলক এই মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার প্রত্যেকটি কথা সত্যি। আমি আসলেই খুব কম সময় অনলাইন থাকতে পারি। নিজের রুজি রোজগারের জন্য বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। সংসার সামলে বাকি সময় লেখালেখির পেছনে দেই। এছাড়া অনলাইন লেখাতে আমি খুব স্লো। ফলে আপনার কথামত সত্যিই আমি ইন্টারেকটিভ হতে চাইলেও সবসময় হতে পারছি না। এজন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুুঃখিত। আপনাদের মতোন পাঠকের ভরসা ও নিজে লিখে তৃপ্তি পাই বলেই এখনো আমার লেখা জারী আছে। ভবিষ্যতেও আপনাদের ভালোবাসা কামনা করছি।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:০২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর অনুভূতির প্রকাশ ।