নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার জন্য ভালোবাসা।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঋকবেদ: ১০ রাজার যুদ্ধ(ভারতে আর্যরা কি বহিরাগত? একটি পর্যালোোচনা)

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৪০

আমরা সবাই জানি যে ইতিহাস লেখা হয় বিজয়ী দের দ্বারা। যুগে যুগে সেটাই হয়ে এসেছে। যারা পরাজিত, তাদের ইতিহাস হারিয়ে যায় কালের পাতায়। কেউ কেউ অবশ্য সেই হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস খুঁজে বের করেন। । কিন্তু এই আপ্ত বাক্য টি তথাকথিত আর্য্যদের ক্ষেত্রে খাটলো না কেন?! আর্য্যরা যদি বাইরে থেকে এসে এই দেশের ভূমিপুত্র দের পরাজিত করেন, তাহলে তাদের রচিত গ্রন্থে (বেদ) কিছু উল্লেখ তো থাকবে। এতবড় একটা দেশ বিজয় হলো "বহিরাগতদের" দ্বারা, কিন্তু কোনো উল্লেখই নেই! উল্টে বেদ এ প্রথম যে মহা যুদ্ধের বর্ণনা আছে, তাতে আর্য রাজা এক ভারতীয়, এবং তিনি যুদ্ধ করেছিলেন তথাকথিত 10 আর্য্য রাজার সম্মিলিত বাহিনীর সাথে। এই 10 রাজার অনেকেই কিন্তু "বহিরাগত"! (অবশ্য এনারা কেউই সেই অর্থে বহিরাগত নন কারণ আজকের ভারত, তৎকালীন ভারতের একটি অংশমাত্র। পৌরাণিক এবং ঐতিহাসিক ভারতের বিস্তার ব্যাকট্রিয়া থেকে বর্মা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
প্রথম বৈদিক ১০ রাজার মহাযুদ্ধ (আমাদের দেশের নাম কেন ভারত হলো? পূর্ব নাম জম্বুদ্বীপ): ।।।।। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট : ঋকবেদ অনুযায়ী রাজা দিবােদাসের পুত্র, রাজা সুদাস ছিলেন ভরত গােষ্ঠীর রাজা। রাজা সুদাসের প্রধান রাজ পুরােহিত ছিলেন বিশ্বামিত্র। ঋষি বিশ্বামিত্রের কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে সুদাস বিশ্বামিত্রের পরিবর্তে ঋষি বশিষ্ঠ্যকে প্রধান পুরােহিত পদে নিয়ােগ করেন। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে ঋষি বিশ্বামিত্র দশটি গোষ্ঠীর দশ রাজার জোট গড়ে রাজা সুদাসকে আক্রমন করেন।। ঋক বেদের কিছু শ্লোকে আবার এটাও লেখা আছে যে ভরত গোষ্ঠীর গো (গরু) ধনের কব্জা পেতেই নাকি ওই ১০ রাজার সম্মিলিত বাহিনী যুদ্ধ করে। গরু দেখছি, চিরকালই ভারতের একটা মুখ্য বিষয়! ।।।।।।।।।।।।।। ঐতিহাসিক মাইকেল উইজেল মনে করেন এই যুদ্ধটি সম্ভবত দুই মহাঋষির আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। ঐতিহাসিক রণবীর চক্রবর্তীর মতে, এই যুদ্ধটি পঞ্চ নদীর ওপর আধিপত্য ও সেচ ব্যবস্থার অধিকারের জন্য হয়েছিল।। ।।।যুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ: এক দিকে ছিলেন রাজা সুদাস (তৎস্রু ও ভরত গোষ্ঠী) ও ঋষি বশিষ্ঠ্য। অন্য দিকে ছিলেন ঋষি বিশ্বামিত্রের গঠনে নিম্নলিখিত গোষ্ঠী সমূহ।
১) আলিনা -দক্ষিণ পূর্ব আফগানিস্তানের নূরিস্তান প্রদেশের গোষ্ঠী। (বহিরাগত কি?!)
২) অনু- কোন অঞ্চলের গোষ্ঠী সঠিক স্থান জানা যায়নি। তবে মহাভারতের সময়ে এই অনু গোষ্ঠীর এক চক্রবর্তী সম্রাট অঙ্গ এর কথা উল্লেখিত আছে।
৩) ভৃগু - এই গোষ্ঠীর সৃষ্টি কর্তা/অধিপতি মহাঋষি ভৃগু। স্থান গুজরাট ও নর্মদা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল সমূহ।। ৪) দাসা/দাহাই - এই গোষ্ঠী দের লোকজন অনার্য বলে অনেক গল্প লেখা হয়! দাসা এই শব্দ টি আসলে দাহাই শব্দের অপভ্রনশ্। দাহাই-দাহা-দাসা। স্থান - ইরান, মধ্য এশিয়া (এই রে "অনার্য" রা বহিরাগত?!)
৫) দ্রুযুশ (গান্ধার)- স্থান বর্তমান আফগানিস্থান, পারস্য, ব্যাকট্রিয়া যেটা পরবর্তী কালে মহাভারতের সময়ে বাহলিক প্রদেশ। ৬) মৎস্য- স্থান বর্তমান রাজস্থান। পরবর্তী তে ১৬ মহাজনপদের অন্যতম।।
৭) পারসু (পারস্য)-এটি 844 খ্রিস্টপূর্বাব্দ এর একটি অ্যাসিরিয়ান শিলালিপির পার্সিয়ানদের পার্সু হিসাবে উল্লেখ করে প্রমাণের উপর ভিত্তি করে, এবং পারস্যের দারিয়াউস 1 এর বেহিসতুন শিলালিপি পার্সিয়ানদের বাসস্থান হিসাবে উল্লেখ করে। ৮) পুরু- স্থান বর্তমান সিন্ধু প্রদেশ, পাকিস্তান, আংশিক আফগানিস্তান। ঋগ্বেদ অনুসারে, এই পুরু বংশের এক রাজা অশ্বমেধ যজ্ঞ করে আফগান প্রদেশ কে নিজ অধীনে আনেন।।
৯) বালানা - বর্তমানে কাবুল। মনে করা হয় বোলানা গিরিপথের নামকরণ এই গোষ্ঠীর নাম থেকেই এসেছে।
১০) পানি/পারনি/পান্নি - বর্তমান স্থান পাকিস্তান, আংশিক ইরান। মনে করা হয় এই পানি শব্দটি বানি শব্দের অপভ্রনশ। বণিক-বানি-পানি/বানিয়া। মনে করা হয় পাখতুন জাতি এই পান্নি গোষ্ঠীরই উত্তর পুরুষ।। ।।।। ঋগ্বেদ অনুযায়ী, এই সব কয়টি গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত ছিল যতদিন পর্যন্ত ঋষি বিশ্বামিত্র এদেরকে একত্রিত করেন। যুদ্ধের ফলাফল: এই মহাযুদ্ধ দুটি পর্যায়ে হয়েছিল। যদিও অসম যুদ্ধ, তা সত্ত্বেও ভরত গোষ্ঠীর রাজা সুদাস জয়ী হন। এই যুদ্ধেই আছে ইন্দ্র ও বৃত্রসুর+ বালার (ব্রাহ্মণ, এনাদের হত্যার কারণে ইন্দ্রের ব্রহ্ম হত্যার পাপ লাগে)। রূপকের আড়ালে লক্ষিত যে, সম্ভবত, বৃত্র বেশ কয়েকটি নদীর বাঁধ দিয়ে রেখেছিলেন। ইন্দ্র সেই বাঁধ গুলি ভেঙে জল আনেন। এই ভাবে জম্বুদ্বীপে ভরত গোষ্ঠীর আধিপত্য স্থাপিত হয় এবং জম্বুদ্বীপ নতুন নাম ভারত প্রকাশিত হয়। ( শকুন্তলা-দ্যূষমন্ত পুত্রের নামানুসারে ভরত থেকে ভারত গোষ্ঠী ও সেই থেকে ভারত খন্ড)। মহাভারতের কুরু বংশ এই ভরত গোষ্ঠীরই অংশ।
এবারে কিছু প্রশ্ন রাখছি। যাঁরা আর্য্য তত্ত্বের প্রচার করেন তাদের জন্য মূলত।।
১) বহিরাগত আর্য্য দের নিজেদের অঞ্চলের (মাতৃভূমি ইরাক ইরান যা গল্প বলিয়েরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন!) কোনো উল্লেখ কোথাও নেই কেন?
২) ভারতের নানা অঞ্চলের ভৌগোলিক বিবরণ আছে কিন্তু যে স্থান থেকে এলেন সেই অঞ্চলের কোনো ভৌগোলিক বিবরণ নেই কেন? ৩) ১০ রাজাদের যে বর্ণনা আছে তাঁরা জোটবদ্ধ হয়েছিলেন ঋষি বিশ্বামিত্রের নের্তৃত্বে। এদের মধ্যে কেউই অনার্য নন। তাহলে আর্য্য গণ যুদ্ধে হারালেন অনার্য দের এই গল্পের ভিত্তি কি?!
৪) যে সব রাজাদের, ঋষিদের উল্লেখ আছে, তাদের মধ্যে কারা ভারতীয় নন বলে মনে হলো?!
(কৃতজ্ঞতা আমার বন্ধু সাগর)

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:০১

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: Click This Link

ব্যাপার না, যতক্ষণ শিবসেনার শরীকদল ক্ষমতায় তখন ভাষাতত্ত্ব, জীনতত্ত্ব, ইতিহাস, বিজ্ঞান এসবের ফয়সালা হবে গায়ের জোরে।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:১৫

গেছো দাদা বলেছেন: সত্যি! আফনে কত্ত জানেন!!

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:২৩

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: লিংকটি যে দিলাম, পড়েনওনি মনে হয়। পড়লেও মাথায় ঢুকার কথা নয়, আপনার ভাষা তা প্রমাণ। শিবসেনার এজেন্ডা সবাই জানে।

The Hindu
New reports clearly confirm ‘Arya’ migration into India

The Arya were central Asian Steppe pastoralists who arrived in India between roughly 2000 BCE and 1500 BCE, and brought Indo-European languages to the subcontinent
The last time a paper titled ‘The Genomic Formation of South and Central Asia’ was released online, in March 2018, it created a sensation in India and around the world. Mostly because the paper, co-authored by 92 scientists, many of them doyens of different disciplines, said that between 2000 BCE and 1000 BCE, there were significant migrations from the Central Asian Steppe that most likely brought Indo-European languages into India — just as Steppe migrations into Europe a thousand years earlier, beginning around 3000 BCE, had spread Indo-European languages to that continent as well. In other words, the paper supported the long-held idea of an ‘Arya’ migration into India — or, to put it more accurately, a migration of Indo-European language speaking people who called themselves ‘Arya’.

There were many who did not like that finding, and the most important counter-argument they made was that the paper was not peer-reviewed and was merely released in a pre-print server and, therefore, one had to withhold judgement until the paper was published in a scientific journal with peer review. That the paper was co-authored by 92 scientists of high reputation, including many from India, did not matter in their opinion. The lead author of the paper was Vagheesh Narasimhan of Harvard Medical School, while Kumarasamy Thangaraj of the Centre for Cellular and Molecular Biology was a co-director, along with David Reich of Harvard Medical School. Other Indian co-authors included Niraj Rai of the Birbal Sahni Institute for Palaeosciences and Vasant Shinde, then Director of Deccan College.

Even more evidence

Well, that paper has now been peer-reviewed and published in the most reputed of journals, Science. It has 117 scientists as co-authors, significantly up from the 92 last year. The paper is now titled ‘The Formation of Human Populations in South and Central Asia’. And what does it say on the question of Steppe migrations? The same thing, but with even more evidence and detail. Here is a direct quote, and not just any quote, but the very essence of the paper:
.....

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৩২

গেছো দাদা বলেছেন: এত খাটনি করে কপি পেষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৫২

সোবুজ বলেছেন: আর্যরা বহিরাগত না হলে দ্রাবিড়রা বহিরাগত।দুইটার যে কোন একটা ঠিক।এখন সবাই স্থানীয়।
অনেক দিন পর এলেন।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৩৬

গেছো দাদা বলেছেন: এটা হলো আগে থেকে ধরে নেওয়া ধারনা।

৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কোন গোষ্ঠি বা কেউই নিজেকে আদীবাসিন্দা বা শ্রেষ্ঠ দাবী করতে পারে না
হোমোসেপিয়েন্স তথা মানবকুলের অরিজিন আফ্রিকার দক্ষীনাঞ্চলে। সেখান থেকে শিকারের পিছে হাটতে হাটতে বা মানুষ খেকো জানোয়ারের ধাওয়ায় লক্ষ বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়েছে। মাঝে মাঝে স্থায়ী হয়েছে।
কাউকে স্থায়ী বা বহিরাগত বলা যায় না।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৩৭

গেছো দাদা বলেছেন: এটা এক হিসাবে ঠিকই বলেছেন।

৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:১৬

বিটপি বলেছেন: ভারতবর্ষে কেবল সাদা চামড়ার ইংরেজরা বহিরাগত। যারা ১৯০ বছর রাজত্ব থেকে লুটপাট করে ভারতবর্ষকে ফকির বানিয়ে আবার নিজের দেশে ফিরে গেছে - এছাড়া পোল্যান্ড, ককেশাস, তুরস্ক, ইরান বা আরব থেকে যারাই এসেছে, যারাই প্রকৃতি ও মানুষের প্রেমে পড়ে থেকে গিয়েছে - সবাই ভারতের আদি অধিবাসী।

তবে আর্য আর দ্রাবিড়দের লড়াইয়ে আর্যরা হল ভিলেন পার্ট। এদের লড়াইকে অনেকটা কৃষ্ণাঙ্গ বনাম শ্বেতাঙ্গ লড়াইয়ে রূপ দেয়া যেতে পারে, যেখানে আর্যরা মূলত পরাজিত দ্রাবিড়দেরকে ঝাড়ে বংশে নির্মূল করার গ্র্যান্ড প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল। বর্ণভেদ প্রথা তাদের হাত ধরেই ভারতে এসেছে। এর আগে সবাই মিলে মিশেই বসবাস করত।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪১

গেছো দাদা বলেছেন: এটা হল ইংরেজদের রচনা করা ইতিহাস। যা অনেকটাই মিথ্যার উপর নির্মান করা হয়েছে।

৬| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:২৬

নতুন বলেছেন: আর্য বলতে কি ভারতের ফরসাদের বোঝায়।

আমাদের প্রকৃতগত অবস্থানের জন্য আদীবাসীরা শ্যামলা হবার কথা। তাই ফরসা রা উত্তর থেকেই এসেছে বলে মনে হয়।

আর উপরে হাসান ভাই যেমন বলেছেন। আদীবাসী বলতে আফ্রিকানদেরই বোঝায়। ঐ খান থেকেই সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। তাই চাইনিজ,আমেরিকা,সাইবেরিয়া, অসট্রেলিয়ার সবাই আফ্রিকা থেকে আসা হোমোসেপিয়েন্স এরই বংশধর।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪৩

গেছো দাদা বলেছেন: পোষ্টের যুক্তি গুলো কে কেউ খন্ডন করতে পারল না।এটাই আপসোস।

৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৫০

নিঃশব্দ অভিযাত্রী বলেছেন: কপি পেস্ট মেরে অন্যের জ্ঞান নিয়ে পস্ট দেয়াই যায় তাতে কারো কিছু যায় আসে না।
আর্যদের ভারতে আসা নিয়ে আপনার বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। আজগুবি কিছু লাইন পোস্ট দিয়েছেন।
নীচে লিংক দিলাম, পড়ুন ভবিষ্যতে এইসব হাস্যকর লেখা আর ব্লগে দেবেন নাঃ
আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

আপনার কাট কপি করা যুক্তিগুলির খন্ডন নীচেই ক রা হলোঃ
অনেক ঐতিহাসিক এই যুক্তিগুলোকে খণ্ডন করেছেন। তাঁদের যুক্তিগুলো নিচে বর্ণনা করা হলঃ

(১) বেদে যেসব গাছপালা ও পশুপাখির নাম উল্লেখ করা হয়েছে তা থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে সপ্তসিন্ধু অঞ্চলই ছিল আর্যদের আদি বাসস্থান বা আদি বাসভূমি। ভারতে যখন তাঁরা প্রবেশ প্রবেশ করেন প্রথমে তাঁরা ঐ অঞ্চলে বসতি স্থাপন শুরু করেন ফলে ঐ এলাকার গাছপালা ও পশুপাখির সঙ্গে তাদের প্রথম পরিচয় ঘটে। এ কারণেই উক্ত গাছপালা ও পশুপাখির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ এলাকাতেই বেদও রচনা করা হয়েছিল।
(২) নদী স্তোত্র দিয়ে আর্য জাতির উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে বাইরে চলে যাওয়া প্রমাণ করা যায় না। প্রাচীন বৈদিক সাহিত্যে ৩৯টি নদীর নাম উল্লিখিত রয়েছে। তার মধ্যে ঋগ্বেদের মধ্যেই ২৫টি নদীর নাম পাওয়া যায়, কিন্তু গঙ্গা নদীর নাম শুধুমাত্র একবার উল্লেখ করা হয়েছে। আর্যরা ভারতের মূল নিবাসী বা আদিবাসী হলে এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে চলে গেলে গঙ্গা নদীর সাথে তাদের নিবিড় সম্পর্ক থাকার কথা ছিল এবং সে ক্ষেত্রে গঙ্গা নদীর নাম বারবার উল্লেখিত হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু তা হয়নি।
(৩) ঋগ্বেদের মত উন্নত কোন গ্রন্থ অন্য কোন দেশে রচনা করা হয়নি বলেই একথা বলা যায় না যে ভারতই ছিল আর্য জাতির আদি নিবাস বা আদি বাসভূমি। এটাও হতে পারে যে ভারতে আগমনের আগে বেদের মত উন্নত গ্রন্থ রচনা করার মত প্রজ্ঞা ও সামাজিক উন্নয়ন তাঁদের ঘটেনি। তাছাড়া এও বলা যায় যে ভারতবর্ষ আর্যদের আদি বাসভূমি বা আদি নিবাসী হলে তাঁরা ভারত ছাড়ার আগেই গোটা ভারতবর্ষে আর্য বসতি ও সংস্কৃতি বিস্তার করে ফেলতেন। কিন্তু উত্তর ভারতের বহু এলাকা এবং দক্ষিণ ভারত ছিল আর্য সংস্কৃতির ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
(৪) এটাও হতে পারে যে সুদীর্ঘকাল ধরে সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে বসবাস করার ফলে আর্য জাতি তাঁদের আদি বাসভূমির সব স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিলেন বলেই বেদে তার কোন উল্লেখ পাওয়া যায় না।
(৫) সংস্কৃত ভাষার মধ্যে তালব্য বর্ণের (ন, ং, ৎ) প্রাধান্য দেখা যায় যা ইউরোপীয় অন্য কোন ইন্দো ইউরোপীয় ভাষার মধ্যে নেই। ঐতিহাসিকেরা মনে করেন যে, ইউরোপ থেকে ভারতে আগমনের পর দ্রাবিড় ভাষার প্রভাবে এমনটা হয়েছে। বৈদিক সাহিত্যের মধ্যে বন্য পশুদের মধ্যে সিংহের উল্লেখ করা থাকলেও বাঘ ও হাতির কোন উল্লেখ নেই। আর্যরা ভারতের আদিবাসী বা মূল নিবাসী হলে ভারতের এই দুটি প্রাণীর নামের উল্লেখ বৈদিক সাহিত্যের মধ্যে অবশ্যই থাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু নেই।
সায়ন দেবনাথ লিখেছেন, “আর্যরা ভারতীয় না অভারতীয় সেই বিতর্কে ঐতিহাসিক মহলে নানা মুনির নানা মত। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠই আর্যরা অভারতীয় এই মতে বিশ্বাসী। জ্যোতির্বিদ রাজেশ কোচাহার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ‘বেদাঙ্গ জ্যোতিষ’ গ্রন্থের বিশ্লেষণ করে দেখেছেন যে,এই গ্রন্থে সর্বদীর্ঘ দিন ও ক্ষুদ্রকালীন রাতের যে তথ্য রয়েছে, তার অনুপাত করলে হয় ৩ঃ২। এই প্রকার বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন অঞ্চলের সম্ভাব্য অবস্থান হতে পারে ৩৫ডিগ্রি উত্তর অক্ষরেখা। একমাত্র হরপ্পা সভ্যতার শোরটুগাই ছাড়া আর অন্য কোন অঞ্চল এত উচ্চ অক্ষরেখায় অবস্থিত নয়, সুতরাং সামগ্রিক ভাবে আর্যরা ভারতীয় হতে পারে না। আবার কলিন রেনফ্রিউ এর মতে, ঋগ্বেদে কোথাও বলা হয়নি যে আর্যরা বহিরাগত সুতরাং এটার সম্ভবনাই প্রবল যে আর্যরা বেদ রচনার বহু পূর্বেই ভারতে এসে বসতি স্থাপন করেছিল।” [এম ফিল, প্রথম বর্ষ প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, তথ্যসূত্রঃ মুক্তমনা]

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:২২

গেছো দাদা বলেছেন: কাউন্টার যুক্তি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
এরকম অ্যাকাডেমিক আলোচনাই চেয়েছিলাম।
তবে এই কমেন্টের প্রত্যেকটি পয়েন্ট কে রিকাউন্টার করা সম্ভব। অন্য আরেকটি পোষ্টে করার ইচ্ছে রইলো।

৮| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:০১

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: পোষ্টের যুক্তি গুলো কে কেউ খন্ডন করতে পারল না।এটাই আপসোস।


এই বিষয়ে আসলে তেমন পড়াশুনা নেই তাই বিশ্লেষনধর্মী মন্তব্য করতে পারলাম না।

তবে যেটা সাধারন ভাবে বুঝি সেটা হলো আমাদের এই সমতলে বাইরের থেকে মানুষ এসে বসতী গড়েছিলো।

যেহেতু এইখানে মানব জাতীর বির্বতন হয়নাই তাই এখানের আদিবাসি কে সেটা নিয়ে বিতর্ক আসলেই অপ্রয়োজনীয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.