নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুশীলের নাম শুনলে ঘেন্যা হয়!!

যখন পেয়েছি পথের দেখা তখন আবার দিকভ্রান্ত হয়ে হারিয়েছি পথ.........

পথহারা নাবিক

পেয়েছি পথের দেখা !! শেষ জানিনা তার!!

পথহারা নাবিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

রঙে ভরা বঙ্গের বাঙ্গিফাটা আর্তনাদ!!-গোলাম মাওলা রনি

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৫৪









আজ বহুদিন পর মনে পড়লো ফাঁটা বাঙ্গির কথা- আরো মনে পড়লো আমার শৈশবকালে বহুবার শোনা - ফাঁটা বাঁশ, করে ঠাস ঠাস। ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানায় আমার জন্ম। ঐ অঞ্চলে ৭০ এর দশকে ব্যাপক বাঙ্গির চাষ হতো-চৈত্রের দুপুরে গ্রামের দুরন্ত কিশোরেরা যেতো বাঙ্গী চুরি করার জন্য এবং তাদের সবারই পছন্দ ছিলো ফাঁটা বাঙ্গি। চুরি করা বাঙ্গী নিয়ে কিশোররা বড় বড় বাঁশ বাগানে চলে যেতো গোপনে ফুর্তি করার জন্য। তারা যখন মহা আনন্দে বাঙ্গী খেতো তখন হঠাৎ করেই প্রচন্ড ঠাস শব্দে বাঁশ ফেটে যেতো- আর দুরন্ত চোরের দলেরা হিহি রবে হেসে উঠতো।

এতো দিন পর হঠাৎ করেই শৈশবের কাহিনী মনে পড়লো বদু কাকার নাম শুনে। বদু কাকা মানে আমাদের দেশের প্রথিতযশা চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ এবং জেষ্ঠ নাগরিক জনাব এ,কিউ, এম, বদরুদ্দোজা চৌধুরী। আমাদের প্রধান মন্ত্রী বড় আদর করে তাকে বদু কাকা বলে মসকরা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এর আগে ব্যরিস্টার রফিকুল হককে আমি কার খালুরে বলেও ব্যঙ্গ করেছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময় উচিত কথা বলেন এবং যা মুখে আসে তাই বলে দেন কোন লুকোচুরি না করে। কাজেই তাকে সব দোষ দেয়া যায়না। কারন এই বঙ্গে এসব বিষয় তিনি চালু করেননি। করেছিলেন জনাব সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভারী রাগ ছিলো ডেইলী স্টারের সম্পাদক জনাব মাহফুজ আনাম এবং প্রথম আলো সম্পদক জনাব মতিউর রহমানের প্রতি। একবার সাংবাদিকগন জিজ্ঞাসা করলেন ঐ দুইটি পত্রিকায় আপনার সম্পর্কেতো অনেক কিছু লিখা হয়েছে। তিনি মুখ ভেংচিয়ে উত্তর করলেন- ২/৪ টা মইত্যা আর মাফুইজ্যা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কি লিখলো তাতে কিছু আসে যায় না! সেই যে শুরু হলো- তারপর কত কথা! কুকুরে লেজ নাড়ায়- আর এখন লেজে কুকুর নাড়ায়, ধর্ষন যখন অবশ্যম্ভাবী তখন উপভোগ করাই শ্রেয়। মাননীয় স্পীকার আমিতো চোদনা হয়ে গেলাম, মাননীয় স্পীকার আমি কি বলেছি যে কেরানীগঞ্জের টাকু কামরুল আসলে একটা প্রমোদ বালক ছিলো- ইত্যাদি আরো কতো কি?

তাকে সবাই ব্যঙ্গ করে বলে সাকা, আর তার বাবাকে বলে ফকা- এ নিয়ে জনাব চৌধুরীর রাগের সীমা পরিসীমা ছিলো না। তিনি একদিন রাগ করে বলেই ফেললেন- আচ্ছা আমাকে যদি সংক্ষেপে ফকা বলো তাহলে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে ও তো সংক্ষেপে বলা যায় বাল। আর যায় কোথায়- আওয়ামী বিরোধীরা সঙ্গে সঙ্গে শব্দটি লুফে নেয়। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দলটিকে তার বিরোধীরা এখন ঠাট্রা করে ’বাল’ বলে সম্বোধন করে। সাকারও মনে হয় তেমন দোষ নেই- কারণ তাকে উত্তেজিত করেছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী, শিক্ষক মুনতাসির মামুন এবং সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। রসিক বাঙালী এখন একজনকে ডাকে- আগাচৌ, অন্যজনকে মুতা মামুন এবং আরেকজনকে মুরগী কবির।

সমাজের নীচু পর্যায়ে যথা মুচি, চাড়াল, মেথর, নাপিত থেকে শুরু করে উচুঁ পর্যায় অবধি বাঙ্গালীর এই যে ব্যাঙ্গ করার অভ্যাস তা অনাদী কাল থেকেই চলে আসছে। সাম্প্রতিক কালে সেগুলো মহামারী আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। ন্যায়ের দন্ড যার হাতে তিনি যদি অনৈতিক কাজ করেন তবে লোকজন যাবে কোথায়- এসব নিয়ে ভাববার সময় অবশ্য বাঙ্গালীর নেই। বরং তারা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে নিজেদের রসিক মনের বাঙ্গি ফাঁটা রঙ্গ সমাজের সর্বস্তরের আনাচে কানাচে পৌঁছে দিচ্ছে।

আগে দেখা যেতো দেশের পত্র পত্রিকা, সুধী সমাজ- গুনী মানুষজনকে খুঁজে বের করে বহুবিধ উপাধী দান করতেন। কিন্তু ইদানিংকালে পত্র পত্রিকা মানুষকে হেয় করার জন্য যতো নিকৃষ্ট ভাষা প্রয়োগ করা দরকার তাই করছে। যেমন ফরিদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যবসায়ী ডঃ মুসা বিন সমসের সম্পর্কে একটি পত্রিকা খবর প্রকাশ করলো বললো-ওর নাম নুলা মুসা! ও রাজাকার ছিলো। আরো একটি পত্রিকা যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজা প্রাপ্ত মাওলানা আবুল কালাম আজাদের নাম বের করলো বাচ্চু রাজাকার। একইভাবে দেলোয়ার হোসেন সাইদী এখন দেউল্যা রাজাকার, কাদের মোল্লার নাম কসাই কাদের।

পত্র পত্রিকার মালিক সম্পদকগন এখন বলতে গেলে নিজেদের মাংশ নিজেরা খাচ্ছেন। তারা এখন পাল্লা দিয়ে একে অপরের সঙ্গে রং তামাসার ব্যাঙ্গ করছেন। প্রথম আলো যদি বসুন্ধরা গ্র“পের মালিক জনাব আহম্মেদ আকবর সোবাহান সম্পর্কে কোন খবর ছাপে সে ক্ষেত্রে তার পারিবারিক নাম ব্যবহার করে। যেমন বসুন্ধরার শাহ আলম। অন্যদিকে বসুন্ধরার মালিকানাধীন পত্র পত্রিকাগুলো যদি প্রথম আলোর সম্পাদক জনাব মতিউর রহমানকে নিয়ে কোন খবর প্রকাশ করেন তবে তারা তার পারিবারিক নাম ব্যবহার করে লিখেন- প্রথম আলোর বাচ্চু তার সন্তানকে মানুষ করতে পারলো না। অন্যদিকে যমুনা গ্র“পের কর্ণধার এবং যুগান্তর পত্রিকার মালিক জনাব নুরুল ইসলাম সম্পর্কে কেউ কিছু লিখতে গেলেই বলবে-যমুনার বাবুল!

কাজেই বাঙ্গালীর রং তামাসা নিয়ে ব্যক্তি বিশেষকে দায়ী না করে বরং বাঙ্গীফাটার কাহিনীতে ফিরে যাই। এখনকার ক্ষেত খামারে আগের মতো বাঙ্গি ফাঁটে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমার শৈশবকালে অর্থাৎ ৭০ এর দশকে প্রচুর বাঙ্গী ফাঁটতো। লোকজন একদিকে যেমন ফাঁটা বাঙ্গি পছন্দ করতো অন্যদিকে তেমনি ফাঁটা বাঙ্গীকে নিয়ে কথায় কথায় ব্যঙ্গ করতো। সবচেয়ে বেশী ব্যঙ্গ করতো মানুষের শরীর নিয়ে। বলতো- ইস! তোর ঐটাতো বাঙ্গী ফাঁটার মতো ফাঁটছে। ঐটা মানে অন্ডকোষ। গ্রাম বাংলায় আগেকার দিনে ভয়ানক খুজলী পাচড়া হতো- ছেলে বুড়া গুড়া সকলের। ছেলেদের শরীরের স্পর্শ কাতর যায়গায় এগুলো বেশি হতো-অনেকটা গুটি বসন্ত বা জল বসন্তের মতো। শিশু থেকে ১৩/১৪ বছরের ছেলেরা প্রায়ই নেংটা থাকতো এবং দলবেঁধে একত্রে বসে খাজুরের কাঁটা দিয়ে একে অপরের খুজলী পাচড়ার পুঁজ গেলে দিতো।

যাদের বয়স একটু বেশি তারাও লুঙ্গি এমন ভাবে উপরে তুলে রাখতো যে- অন্যরা অনায়াসে তার ক্ষত স্থানটি দেখতে পেতো। এ নিয়ে গ্রাম বাংলার মানুষের কোন লজ্জা শরম বা দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছিলোনা। অনেকে ডাক্তারের কাছে যেতো। ডাক্তার মানে গ্রাম্য ডাক্তার। তাও আবার দেখা মিলতো কেবল হাটবারের দিন। আমাদের এলাকার চৌদ্দরশি বাজার মিলতো শনিবার এবং মঙ্গলবার দিন। হাতুড়ে ডাক্তাররা পসরা সাজিয়ে বসতো। এসব ডাক্তাররা দাঁত তোলা, সাপের বিষ নামানো থেকে শুরু করে গুড়া কৃমি নিধন- সব কাজই করতো। কিছু গাছ গাছালি, কিছু তেল এবং রং বেরঙ্গের পাউডার দিয়ে তারা চিকিৎসা করতো অদ্ভুত উপায়ে। শত শত মানুষ জড়ো হয়ে এসব চিকিৎসা দেখতো আর লোকজন এত্তোসব ভিড়ের মধ্যেই চিকিৎসা নিতো।

খুজলী ওয়ালা কোন যুবক, কিশোর, বুড়া কিংবা পুলাপান সেই সব ডাক্তারের কাছে এলে ডাক্তার সব লোকজনের সামনেই বলতো- এই লুঙ্গি উঠা; রুগী ভরা মজমার মধ্যেই লুঙ্গী উঠাতো। ডাক্তার চিৎকার করে বলতো- ঐ-তোর ওলতো বাঙ্গী ফাঁটা ফাঁটছে। তারপর টেটমোছল মিশ্রিত রঙ্গিন পানি ফিচকারী দিয়ে ক্ষত স্থানে লাগাতো। যন্ত্রনায় রোগী তিড়িং বিড়িং করে লাফাতে থাকতো- আর উপস্থিত জনতা বহুত মজা পেতো। এখন ভাবুনতো- দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ কিন্তু ৭০ এর দশকের ঐ অবস্থার শিকার হয়েছিলো কিংবা ঐ অবস্থার নিয়মিত দর্শক ছিলো। তাহলে আপনি আমার কাছ থেকে কিইবা আশা করতে পারেন- কিংবা আমি আপনার কাছ থেকে কি আশা করবো-





রনি ফেবু থেকে!!





মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ২:০৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আসলে এসব করে প্রকারান্তরে নিজেকে নিজেই ছোট করছি না?? কিছুদিন আগের উদাহরন--খালেদা জিয়া আর শেখ মুজিবকে নিয়ে কি কিচ্ছা-কেত্তন।। নিউটনের সুত্র every action, there is a reaction এটা আমরা ভুলতে বসেছি বা ভুলেই গেছি হয়তো।।ধন্যবাদ ভাল কথার জন্য।

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:২৭

পথহারা নাবিক বলেছেন: হুম

২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৩৫

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন: ভাইরে বাঁশের বহুবিদ ব্যবহার শুধু আমরাই জানি।

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:১৪

পথহারা নাবিক বলেছেন: হুম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.