নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময় ভেসে যায় বৃষ্টির জলে

১৩ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭


লোকটির বয়স পঁচাত্তর এর মতো হবে,
বৃষ্টি শুরু হলেই
অস্হিরতা শুরু হয় মাথার ভিতর,
শরীর জ্বলে,প্রান জ্বলে,
শুধুই বৃষ্টির জলেই ভিঁজতে ইচ্ছে করে তার,
দু’হাত আকাশের দিকে বাড়িয়ে
বৃষ্টিকে ঝাপটে ধরে বুকে,
বৃষ্টির জলে প্রতিবারই
তার বুকের মধ্যে ধোয়া উড়ে ,
অক্ষমতার ধোয়া,ভুলতে না পারার ধোয়া।

এইতো সে’দিন,
পনের ষোল বছরের কিশোর ছিলো সে,
পড়ার টেবিলের জানালা থেকে পাশের বাসার ছাদটা ছিলো হাতের দূরত্বে,
বৃষ্টি শুরু হলেই একটি ‘মেয়ে’
তার বয়সের আশেপাশে হবে,
বৃষ্টিতে ভিঁজতে ছাদে চলে আসতো মুহূর্তেই,
যেন অপেক্ষায় বসে ছিলো
কখন ঝড়বে বৃষ্টি,
আর সে ভিঁজবে সেই জলে।

মেয়েটি ছাদের প্রতিটি কোনায়
ছুটোছুটি করে ভিঁজতো,
তার প্রচন্ড ইচ্ছে করতো মেয়েটির সাথে বৃষ্টির জলে ভিঁজতে,
আবার খুবই ভয় লাগতো তার
ছাদটায় কোনো রেলিং ছিল না,
মেয়েটি যদি পা পিছলে মাটিতে পড়ে যায়,
ভাবলেই দমবন্ধ হয়ে যেতো তার।

সে অনেকবার ভেবেছে,
মেয়েটিকে ডেকে সাবধান করবে,
ভয়ে করেনি, লোভে করেনি,
যদি মেয়েটি আর না আসে
ছাদে বৃষ্টির জলে ভিঁজতে,
বৃষ্টি শুরু হলেই,
তার বুকেই ধড়ফড় শুরু হতো
‘আজ যদি না আসে,
এতো দেরী হচ্ছে কেনো আজ?
লোভী চোখ শুধু
ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো,
একদিন তুমুল বৃষ্টিতে ‘মেয়ে’টি
তার লোভী চোখের সামনেই
ছাদ থেকে পড়ে গেলো,
তার জীবন থেকে পড়ে গেলো
শেষ বারের মতো।

তারপর থেকে বৃষ্টি শুরু হলেই কে যেনো তাকেই ডেকে ছাদে নিয়ে যায়,
কেউ ঘরে আটকে রাখতে পারেনা তাকে,
প্রতিবার বৃষ্টির জলে ভিঁজে,
আর মাথার ভিতর চিৎকার করে বলে,
“আমি কেনো ডেকে সাবধান করিনি?”

শুধু সময় গেছে ষাট বছর,
বিয়েও করা হলো না তার
সময়টা কি ভাবে চলে গেলো
ভিঁজতে ভিঁজতে,
মাথা আর বুকের ভিতরে এখনো ষোল বছরের কিশোরটিই বেঁচে আছে।

মেয়ে মানুষটির বয়সও এখন পঁচাত্তর এর গা ঘেসে প্রায়,
বৃষ্টি শুরু হলেই শুধু জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখে,
হাতে ছুয়ে দেখতেও ভয় পায় বৃষ্টির জল
আর নাতনীদের গল্প করে -
“আমি একবার বৃষ্টির জলে ভিঁজতে গিয়ে
ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলাম,
তারপর আর কখনো বৃষ্টিতে ভিজা হয়নি”
মেয়েটির সময় চলে গেলো
বৃষ্টির জলে না ভিঁজতে ভিঁজতে,
মেয়ে মানুষটির বুক আর মাথার ভিতরে ষোল বছরের কিশোরী মেয়েটি মরে গেছে অনেক কাল আগে
বেঁচে আছে শুধু পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা।

লোকটি শুধুই বেঁচে আছে ষোল বছরের
সেই মেয়েটিকে ভালোবেসে,
অথচ কেউই জানলো না,
সেই ষোল বছরের মেয়েটি জানেনি,
এমনকি পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা মহিলা ও জানলো না।
——————————————-
রশিদ হারুন
১৩/০৬/১৮

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:০২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: বেদনাবিধুর বৃষ্টিস্নাত কবিতায়+

১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: তারপর অবসর একদিন তার আয়ত্তে আসে বটে, সেদিন সে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে টের পায়, সে কাজ শিখেছে, শেখেনি অবসরের গায়ে দাঁত বসানো। অবসর এসে কাঁধে বসে বোঝার মতো, সে সময় কাটানোর জন্য অস্থির হয়ে ওঠে।

১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন

৩| ১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২

প্রথমকথা বলেছেন: অনেক বেদনার কবিতা। আমাদের ব্লগে ঘুরে আসবেন।

১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

কাইকর বলেছেন: বাহ......

১৩ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.