নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
হঠাৎ হঠাৎ দেখা হয় লিফটে,
এই বিল্ডিং এ সবাই নতুন উঠেছি,
সবাই ফ্লাটের মালিক না,
ভাড়াটিয়া ও আছে কয়েকজন,
কখনো কথা হয়নি,
হয়তো শূভেচ্ছা হাসি বিনিময় হয়েছে।
আজ লিফটের জন্য অপেক্ষার সময়
পার্কিং এ দেখা,
হঠাৎ করেই উনি বলে উঠলেন,
“আচ্ছা আপনি কি কখনো
উত্তর যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন?”
আমি খুবই আশ্চর্য্য হয়ে বললাম,
“জি, ছিলাম ,সে তো প্রায় “
বলেই একটু হাতে গুনে বললাম
“একুশ বছর হবে,
কলেজে পড়তাম তখন,
দু’বছর ছিলাম, ওয়াশা গলিতে ছিলাম,
বাসার নাম্বারটা মনে নেই,
কেনো বলুনতো ?”
“ঠিক পাশের দোতলা বাড়ীটা ছিলো আমাদের,
আমাদেরটা ছিলো আশি
আর আপনি ছিলেন উনাশিতে,
সিজারদের বাসায় ”
আমি খুবই আশচর্য্য হয়ে কিছুক্ষন
ভদ্র মহিলার দিকে তাকিয়ে থাকলাম,
কোনো ভাবেই পরিচত মনে হচ্ছে না,
তবুও হাসি মুখে বললাম,
“আমার স্মৃতিশক্তি খুবই দূর্বল,
ক্ষমা করবেন,
আপনার দেখি সব মনে আছে,
বাবার বদলি চাকুরী ছিলো,
তারপর আমরা সিলেটে চলে গিয়েছিলাম,
আর আপনাদের তো নিজেদেরই বাড়ী।”
এইটুকু বলতেই লিফটা চলে আসলো।
ভদ্র মহিলার লিফটে উঠার
কোনো লক্ষনই দেখলাম না,
অগ্যতা আমার ও দাড়িয়ে পড়তে হলো।
“আমি থাকি 7/A তে , আপনি?”
“আমি 5/D তে থাকি” বলেই লিফটের দিকে তাকালাম
লিফট আবার নিচেই নামছে।
“আপনি প্রায়ই হলুদ শার্ট পড়তেন,
হলুদ আপনার প্রিয় রং, তাই না?”
আমি এতোই আশ্চর্য্য হলাম যে
আবারও লিফট এসে কখন যে চলে গেলো
বলতেই পারবো না।
মনে পরে গেলো হলুদ শার্টের কথা,
বাবাকে কে যেনো হলুদ কাপড় এর
একটা থান দিয়েছিলো,
আমার ধারনা কোন কাজের
ঘুষ হিসাবে দিয়েছিলো কেউ আমার কেরানী বাবা’কে,
বাবা বিনে পয়সার কাপড় পেয়ে
আমাকে একসাথে তিনটা হলুদ
শার্ট বানিয়ে দিয়েছিলো।
কলেজের দু’বছর আমাকে
হলুদ শার্ট পড়েই কাটাতে হয়েছিলো,
মা’র সাথে তখন অনেক ঝগড়া করেছিলাম হলুদ শার্ট নিয়ে,
বাবা’কে কিছু বলার সাহসই ছিলোনা আমার কখনো ।
আমি বললাম,
“আপনার স্মৃতিশক্তি সত্যিই বলার মতো।”
“ আমার এক ছেলে ,
কলেজে পড়ে,
আর স্বামী ব্যাবসায়ী,
আমি গৃহিনী, আপনার?”
বলেই আমার দিকে প্রশ্ন চিহ্ন করে তাকালো,
“ আমার এক ছেলে, এক মেয়ে, বউ ডাক্তার,
আমি ও ব্যাবসা করি”
বলেই সাথে সাথেই বললাম
“আজ আসি”
ভদ্র মহিলা বললো,
“নামটা ও জানতে চাইলেন না?,
আমার নাম ‘রুমা”
আমি খুবই অপ্রস্তুত হয়ে বললাম,
“ আমার নাম..”
উনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
“থাক আর বলতে হবে না,
আমি জানি আপনার নাম।”
বলেই উনি লিফটের বদলে
সিড়ি ভেংগে উঠতে লাগলেন,
আমি খুবই আশ্চর্য্য হয়ে তাকিয়ে থাকলাম শুধু।
অনেকদিন আর দেখা হয়নি উনার সাথে,
একদিন আবার লিফটেই দেখা,
সাথে কিশোর বয়সের একটি ছেলে,
আমি পরিচিত মানুষের মতো সৌজন্য হাসি দিলাম,
উনি আমার দিকে তাকালোই না,
কিশোরের পড়নে হলুদ রং এর একটি শার্ট
ছেলেটি একটু বিরক্ত প্রকাশ করে নীচু স্বরে বললো,
“ মা’ হলুদ রং আমার একটুও পচ্ছন্দ না,
তুমি সব সময় আমাকে জোর করে
হলুদ রং এর কাপড় পড়াও,
আমি এখন বড় হয়েছি,
কলেজে পড়ি, মা,
নিজের পচ্ছন্দ বলে আমারওতো কিছু আছে।”
উনি কিছুই বললেন না,
লিফট থেকে নামার সময় শুধু আমার দিকে
নির্লিপ্ত ভাবে তাকালো,
কিশোরটিকে বললো,
যেনো আমি ও শুনতে পাই,
“ হলুদ রং আমারও পচ্ছন্দ না,
তুমি বাসায় গিয়ে শার্টটা বদলিয়ে আসো,
রঙ’টা কেমন যেনো চোখে লাগছে,
হলুদ রং দেখলেই শরীর গুলিয়ে উঠছে।”
————————————
রশিদ হারুন
২৭/০৭/২০১৮
২৭ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪৩
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। উৎসাহ পেলাম
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪৬
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: ব্লগিং এ আমি নতুন। সময় করে আমার ব্লগে ঘুরে আসলে খুব আনন্দিত হতাম। দাওয়াত রইলো।
৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৫২
রেজওয়ানুল ইসলাম পাপ্পু বলেছেন: গদ্য ঢংটা বেশ ভালোই, বেশ ভালো লেগেছে।
৪| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:১৩
এ.এস বাশার বলেছেন: কবিতা নয় নিশ্চয়..... ! ছোট গল্প হলে অসাধারন হয়েছে....
শুভ ব্লগিং.......
৫| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: এই কবিতা দিয়ে একটা টিভি প্যাকেজ নাটক বানানো যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৩৮
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: পড়ে গেলাম, ভাল লাগলো। মনে হল কবিতার আকারে কোন সহজ গদ্য সাবলিল ভাবেই পড়েছি।