নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি সাধারন জন্মের গল্প

০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৪৩

আমি আজ আমার জন্মের গল্পটা বলবো--

সেইদিন সারাদিন অনেক টেনশন গেলো,
সকালেই অফিসে আজ সবাইকে
কেমন যেন অস্হির মনে হলো,
সবাই বলাবলি করছে
দেশ স্বাধীন হয়ে যাবে,
কেউ কাজ করে নাই ,
জি,এম স্যার ধমকিয়েছে কয়েকজনকে,
এরই মধ্যে পিয়ন রফিক হঠাৎ করেই বলে উঠেছে,
“স্যার আস্তে ধমকান ,
দেশ কিন্তু স্বাধীন হইয়া যাইতেছে
আর কয়েকদিন এর মধ্যেই
'পাকি'রা লেজ তুইল্লা পালাইবো,,
শেখ সাহেব ফিরলো বইলা”।

জি,এম স্যার এর পর থেকে একটা কথাও বলেননি,
খুব আনন্দ পেয়েছিলো তখন আমার বাবা,
হা আমার বাবা ,
তিনি তখনো আমার বাবা হয়ে উঠেনি,
জি,এম স্যার এর মুখটা
ভিঁজে ইঁদুরের মতো লাগছিলো তখন,
মুখটা মনে পরলেই তার আনন্দটা বাড়ছে।

আনন্দটা বেশীক্ষন টিকলো না,
গুলিস্তান হলের কাছে আসতেই দেখলো
পাকিস্তান আর্মি টহল দিচ্ছে,
যাকে খুশি তাকেই চেক করছে,
“ এই তুই কিদারছে আয়া”
শুনেই বাবা মনে মনে বিরক্ত হলো,
প্রায় প্রতিদিনই একই শব্দ শুনতে হয়,
অফিসের কথা বলতেই
“ডান্ডি কিদার?”
অফিসের আইডি কার্ড দেখার পর ও
অযথা লাঠি দিয়ে উনার পিঠে একটা আঘাত করলো,
প্রচন্ড ব্যাথায় কুকরে গেলেন তিনি।

বাসায় ফিরে অপমান আর ব্যাথার কথা
কাউকেই বলেননি তিনি,
তবুও উনার বউ মানে
আমার ভবিষ্যত মা ঠিকই বুঝলেন,
কিছু একটা ঘটেছে আজ।

রাতের বেলায় ঘুমোতে যাবেন তিনি,
বুকের ভিতর প্রচন্ড অপমানের গরম,
তার উপর ঘরে অন্ধকার,
বিদ্যুৎ নেই অনেকদিন,
ঘেমে যাচ্ছেন বারবার,
হাতপাখা দিয়ে বাতাস দিচ্ছেন উনার স্ত্রী,
তবুও গরম কমে না,
জানলা খুলে দিলেন,
পাশের বাসা থেকে কথা ভেসে আসছে,
একজন মহিলা কন্ঠে,
“ আইজ সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনী নাকি গুলিস্তানের সব
'পাকি'বাহিনী মাইরা শেষ করছে,
একটাও বাঁচে নাই”,
একজন পুরুষ কন্ঠ বললো,
“রেডিও তে তাই হুনলাম”।

কথা গুলো শুনার পর
উনার অপমানের আগুনটা নিভে গেলো মুহূর্তেই,
বাতাসের গরম’টা ও যেনো কমে গেলো,
জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখলেন
চারিদিকে আলো আর আলো,
আকাশ ভরা আলো নিয়ে পূর্নিমার চাঁদ হাসছে।

উনিও স্ত্রী’র দিকে তাকিয়ে
ভালোবাসার হাসি দিয়ে উঠলেন,
“আর বাতাস লাগবো না,
অনেক হইছে,
তোমার তো হাতে ব্যাথা করার কথা,
কাছে আসো হাতটা টিইপা দেই,
জানলা বন্ধ করে উনি স্ত্রী’র হাতটা বুকে নিয়ে ধরে রাখলেন।

তারপর পৃথীবির সকল জন্মের গল্পের মতো
আমার গল্প শুরু হলো,

সেই পুর্নিমার রাতেই আমার জন্মের শুরু।
-----------------------------
রশিদ হারুন
০৬/০৮/২০১৮

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২৯

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: একটি সাধারণ জন্মের গল্পের অসাধারণ উপস্থাপন ভীষণ ভালো লাগলো। অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.