নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তনু ও কিছু অ-পুরুষ

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:৩৫


প্রিয় পাঠক,
আজ আর কবিতা নয়,
যাদু দেখবেন সবাই, সত্যিকারের যাদু।

আপনাদের সবার চোখের সামনে থেকেই আজ আস্ত একজন মানুষ গায়েব করে দিবো,
এই দেখুন আমার সামনে একজন মানুষের লাশ।
মানুষটি একজন নারী ছিলো,
ছিলো বলছি এই জন্য যে,
মানুষটির শরীরের বিভিন্ন অংশের মাংস নেই।
লাশ হওয়ার কিছুক্ষন আগেও নারী ছিলো ,
এখন দেখলে আর চেনার উপায় নেই
মানুষটি একজন নারী ছিলো,
কিছু পুরুষ মানুষ তার মাংস ভাগাভাগি করে খেয়েছে।

পুরুষ বলা ঠিক হচ্ছে না,ভুল হয়েছে।
কিছু ‘অ-পুরুষ’ যখন সন্ধ্যার অন্ধকারে শিকারে বেড়িয়েছিলো,
নারীটি জানতো না যে এই মানুষ গুলো অ-পুরুষ।
অ-পুরুষ দেখলে চেনা যায় না,
তারা সাধারন পুরুষের মতোই থাকে,
শুধু নারীর শরীরের মাংসের ঘ্রানে গোপনে তাদের অ-পুরুষত্ব বের হয়ে আসে।
অ-পুরুষগুলো অনেকদিন যাবৎই তার শরীরের মাংসের দিকে গোপন জিভ বের করে রেখে ছিলো।

একদিন রাতের অন্ধকারে নারীটি যখন কাজ শেষে বাড়ী ফিরছিলো,
সুযোগ পেয়েই অ-পুরুষগুলো মুখ চেপে তাকে টেনে হেঁচড়ে ঝোপের আড়ালে নিয়ে গিযেছিলো।
তারপর ভাগাভাগি করে অ-পুরুষগুলো তার মাংস খেয়েছিলো,
সবশেষে হাড্ডিগুলো চুষেও স্বাদ নিয়েছিলো,
উল্লাস করেছিলো অ-পুরুষগুলো
নরম চাঁদের আলোতে।
বিশ্বাস করুন চাঁদটা খুব কেঁদেছিলো সেদিন।

লাশটির একটি নাম ছিলো ‘তনু’,
আসলে তনু নিজেই নিজেকে মেরে ফেলেছিলো।
তনু মরতে চেয়েছিলো জন্মের পরেই,
মেয়ে হয়ে জন্মানোর কি দরকার ছিলো তার,
আর মেয়ে হয়ে যদি জন্মেই ছিলো,
তবে খুঁজে নিলোনা কেনো রাজা বাদশার ঘর!
ঈশ্বরের উচিত মেয়েদের কোন ঘরে জন্ম নিবে,
তাদেরই বেছে নেবার অধিকার দেওয়া।

তনু শখ করে গান শিখেছিলো,
তনু শখ করে নাটকে অভিনয় করতো,
তনু বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিলো,
তনু একদিন নারী হয়েছিলো,
তনু একদিন অ-পুরুষদের খাবার হয়ে গেলো ,
তনু একদিন লাশ হয়ে গেলো।

কেউই জানলো না অ- পুরুষদের নাম পরিচয়।
চারিদিকে এতো হাহাকার তনুর জন্য,
পত্রিকার পাতায়, রাজপথে, রাজনীতিতে, টকশোতে, সবখানেই।
আহারে! আহারে! চি্ৎকার চারিদিকে,
মোমবাতি জ্বললো অনেকগুলো,
মোমবাতির ব্যাপারিদের ভালো মুনাফা হলো কয়েকদিন।

তারপর তনুর পর মিতু মরলো,
সবাই ভুলে গেলো তনু’র কথা,
চারিদিকে শুধু মিতু, আর মিতু।
মিতুর পর আরেকজন মরলো,
মিতু আর নেই কোনো খবরে!
খবরের ফেরিওয়ালাদের আর কি দোষ,
নতুন নতুন খবর না হলে যে খবর বেচা হয়না।
আপনাদের বুঝতে হবে এটা ওদের ব্যবসা,
নতুন খবর না হলে টকশোওয়ালারা কি নিয়ে টক করবে?
আর মোমবাতির কারিগররা বেকার হয়ে যাবে।

শুধু অপেক্ষায় থাকে তনুর বাবা মা
অ-পুরুষদের একবার বলতে,
“তোদের মা কিন্ত্তু একজন নারী ছিলো,
বাবা বোধ হয় ছিলো অ-পুরুষ,
তোরা তনুর মাংস খাসনি,
খেয়েছিস তোদের মা’য়ের মাংস,
-থু”।

প্রিয় পাঠক,
তনু নামের কোনো মেয়ে মানুষ কখনো ছিলোই না,
যেই মোমবাতিটি পুড়ে গেলো মাত্রই ঠিক তার মতোই,
কোথায় মোমবাতি !!
ছিলো নাকি কখনো?
শুধু জ্বলন্ত কিছু ছাই অনন্তকাল বাতাসে ঘৃনা, হাহাকার, আর করুনা নিয়ে উড়বে আমাদের জন্য।
এতোবড় রাষ্ট্রযন্ত্র, তবুও
অ-পুরুষদের কেউই খুঁজে পেলাম না।
————————
(পুনঃরায় পোস্ট ২য়বার)
কাব্যগ্রন্থ-সময় ভেসে যায় বৃষ্টির জলে
-রশিদ হারুন
১২/১২/১৮

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৩২

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: মানুষটি একজন নারী ছিলো,
কিছু পুরুষ মানুষ তার মাংস ভাগাভাগি করে খেয়েছে।

...........................................................................
ইতিহাস বলে যুগে যুগে এমনটা অনেক বার ঘটেছে,
সভ্যতার আলোক যেখানে , সেখানে ও ঘটছে !
কোথাও কম , কোথাও বা বেশী ।

.................................................................................................................
বিবেক আর জ্ঞান যেখানে বন্দী, সেখানে সূর্যর আলোক বর্তিকা কে বহন করবে ???

১১ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪১

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
শুভকামনা রইল

২| ১১ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৫:১৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর লেখনী । ভালো লাগলো।

১১ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪১

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
শুভকামনা রইল

৩| ১১ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: চমতকার কবিতা।

১১ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৩৪

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
শুভকামনা রইল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.