নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুদ্ধের মাঠে মায়া খেলা করা দুটি চোখ

১৫ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:২৩


তার সাথে আমার দেখা ইউক্রেনের বর্ডারে
চারিদিকে ভেসে আসা ভয়ার্ত মানুষের ঢলে।
এই ঢল আটকে দিচ্ছে কাঁটাতারের দেয়াল,
কাঁটাতারের ঐ পারে পোল্যান্ড।

হঠাৎ হঠাৎ বোমা পড়ছে আকাশ থেকে,
রাশিয়ার যুদ্ধ বিমানগুলো ক্ষুধার্ত চিলের মতো সারাদিনই আকাশে উড়ছে।
কয়েকদিন আগেও এই নীল সাদা আকাশে কবুতর উড়ত সারাদিন;
এখন চিলের ভয়ে তারাও শরণার্থী হয়ে হয়তো অন্য কোনো আকাশে উড়ছে।

আমার ঠিক সামনেই পঁচিশ-ত্রিশের একজন সাদা চামড়ার নারী,
বোমার ভয়ে অস্থির হয়ে বারবার উপরের দিকে তাকাচ্ছে।

খুব কাছে পড়া এক বোমার শব্দে আমরা এক পলক পরস্পরের দিকে তাকালাম আতঙ্কিত চোখে।
নারীটির চোখে আমি দেখলাম হারিয়ে যাওয়া পরিচিত সেই নীল সাদা আকাশটা।
মনে হলো ঐ আকাশেই যেনো ইউক্রেনের আকাশ থেকে হারিয়ে যাওয়া কবুতরগুলো নির্ভয়ে উড়ছে।

হঠাৎ করেই আমি তাকে বললাম,
“তোমার চোখ দুটি যেন নীল সাদা একটি আকাশ,
অসম্ভব রকম রঙিন মায়া উড়ে বেড়াচ্ছে সেখানে!”

ঠিক এই সময়েই
এই কথাটি কেন যে বললাম,
আমি জানিনা!
আতঙ্কিত নারীটির দুটি চোখ খুবই আশ্চর্য হয়ে আমার দিকে তাকাল।

তখনই
আশেপাশে সমস্ত জমিনের সাথে আমাদের বুক কাঁপিয়ে একটি বোমা পড়ল।
ভয়ার্ত পিঁপড়ের মতো চরম অস্থিরতায় মানুষের ছুটোছুটি বেড়ে গেলো।

ঘরহীন সাদা মানুষগুলো দ্রুত বর্ডার পার হয়ে পোল্যান্ডে ঢুকছে,
আর মুহূর্তেই মানুষ থেকে শরণার্থী হয়ে যাচ্ছে।

আমার মতো যাদের শরীরের রঙ কালো কিংবা বাদামি,
তাদের আটকে দিচ্ছে ইউক্রেনের বর্ডারে,
কাগজ পরীক্ষার নামে।
শরীরের রঙ বেশি কালো হলে
কাউকে কাউকে ফিরিয়েও দিচ্ছে পোল্যান্ডের বর্ডার বাহিনী।

সেই সাদা চামড়ার নারীটিও চলে যাচ্ছিল সীমান্ত পার হয়ে ঐপারে পোল্যান্ডে।
ঠিক সেই সময়েই আমি চিৎকার করে তাকে আবারো বললাম,
“তোমার চোখ দুটি সত্যিই খুব সুন্দর,
তুমি যদি আমার দিকে আর কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকো
আমি হয়তো এযাত্রা বেঁচে যাবো।”

নারীটি আমার জন্য সত্যি সত্যি দাঁড়িয়ে পড়লো!
আর চোখের পলক না ফেলেই তাকিয়ে থাকলো আমার দিকেই ।
আমিও তাকিয়ে থাকলাম
সেই মায়া ভরা চোখ দুটির দিকে।

বারবার ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে সেই চোখ দুটির দিকে তাকাতে তাকাতে
আমি হাঁটতে লাগলাম সামনে।
একসময় বর্ডার পার হয়ে পোল্যান্ডে ঢুকে পরলাম।

মরনের ভয়ে আমি ইউক্রেনের সেই কাঁটাতার পার হয়ে
শরণার্থী হয়ে বেঁচে আছি এখন পোল্যান্ডে।
অথচ নারীটি আমাকে বাঁচিয়ে রাখতেই
ইউক্রেনের বর্ডারে ঠায় দাঁড়িয়ে
পোল্যান্ডের দিকে তাকিয়ে আছে এখনো
-সেই একই মায়া ভরা চোখে।
————-
র শি দ হা রু ন
১৫/০৩/২০২২

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: কবিতা দারুন হয়েছে।

১৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১১:০৭

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.