নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলেটের চিঠি

২৪ শে মে, ২০২২ রাত ১২:৩৯


বন্ধু শ্যামলের রুমে তোমাকে দেখলাম বিশ বছর পর।
প্রচণ্ড বৃষ্টির সকালে কফি খেতে খেতে
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে
অর্থনীতিরই কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছ দু’জন।
আমাকে লক্ষ্য করনি তোমরা একবারের জন্যও।

কবে এসেছ এই বৃষ্টির শহর-সিলেটে?
থেকে যাবে নাকি পাকাপাকি?
কবিতা কি পড়ো এখনো?

সময় খুব ফাঁকিবাজ
আমাকে একবারের জন্যও বলে কয়ে যায়নি।
এই ক্যাম্পাসের ‘এক কিলোর’
দু’পাশের চারা গাছগুলো দেখতে দেখতে
আমার মাথা ছাড়িয়ে ‌অনেক অনেক উপরে উঠে গেলো,
অথচ আমি ঠিক ততটুকুনই রয়ে গেলাম।

গাছগুলো প্রতিদিন বড় হতে হতে বছর বছর পাতা ঝরায় মাটিতে,
অথচ আমার স্মৃতির পাতা কখনই ঝরলো না।

চার বছর ধরে ‘এক কিলোর’ প্রতিটি ইঞ্চিতে আমি তুমি এক সাথে বৃষ্টিতে ভিজেছি,
রোদে পুড়েছি।
সেই দিনগুলোতে তোমার কন্ঠে কত যে কবিতা শুনেছি।
দুষ্টামির ছলে মনস্তাপ ভরা বুকে আমাকে প্রায়ই বলতে
-যদি আমি কবিতা লিখতে পারতাম,
তাহলে তুমি আমাকে ‘কবি’ বলে ডাকতে পারতে।

সেই তুমি এখন বড়ো অর্থনীতিবিদ।
শুনেছি বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়াও।
স্বামী সংসারে খুব ভালোই আছো,
অথচ আমি ঢাকা থেকে এসে এই সিলেট শহরেই আটকে গেলাম তোমার জন্য!
এখনো থাকি সেই একই ব্যাচেলারদের মেসে।

কবিতা কি পড় এখনো?
ফাঁকিবাজ সময় আমার বয়স বাড়িয়ে দিল বিশ বছর,
সিলেট শহরের বছরের পর বছর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে,
রোদে পুড়তে পুড়তে
আমি এখন বৃষ্টির জল আর রোদের তাপ বুকে লুকাতে শিখেছি।

গোপন এক তীব্র আশা পালছি বিশ বছর ধরে এই বুকের মধ্যে।
তাইতো সব কাজ থেকে পালিয়ে প্রায় প্রতিদিনই একবার হলেও ঢু মারি অর্থনীতি বিভাগে,
যদি কোন একদিন দেখা হয়ে যায় তোমার সাথে।

মাঝখানে বিশ বছর পার হয়ে গেলো চোখের নিমিষে,
অর্থনীতি বিভাগেই বন্ধু শ্যামলের রুমে তোমাকে দেখলাম।
তীব্র বৃষ্টির আহ্বান উপেক্ষা করে
কবিতার বদলে সেই তুমি অনায়াসে অর্থনীতির কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছ!

তুমি কবে এসেছো এই শহরে?
থেকে যাবে নাকি পাকাপাকি?
কবিতা কি পড়ো এখনো?

তোমাকে খুব বলতে ইচ্ছে করেছিলো চিৎকার করে,
সিলেট শহরে আমার এই শরীর মন-
বৃষ্টি, বিরহ আর অভিমানে ভিজতে ভিজতে,
একই সাথে এই বুকের মাঝে বিষাদের তীব্র রোদ পালতে পালতে ,
আমি এতোদিনে কবিতা লিখতেও শিখেছি।

তুমি এখন অনায়াসে আমাকে ‘কবি’ বলতে পারো।
————
র শি দ হা রু ন
২৩/০৫/২০২২

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: এটা শুধু কবিতা নয় একটা গল্প। জীবনের গল্প।

২৪ শে মে, ২০২২ রাত ৮:৪১

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ভাই এটা কবিদের গল্প

২| ২৭ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:০১

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার কবিতা ভালো লেগেছে। সাথে এটা শেয়ার করলাম-

তুমি: বিশ বছর আগে ও পরে // রফিক আজাদ

তুমি যে-সব ভুল করতে সেগুলো খুবই মারাত্মক ছিল। তোমার
কথায় ছিল গেঁয়ো টান, অনেকগুলো শব্দের করতে ভুল উচ্চারণ:
‘প্রমথ চৌধুরী’কে তুমি বলতে ‘প্রথম চৌধুরী’; ‘জনৈক’ উচ্চারণ
করতে গিয়ে সর্বদাই ‘জৈনিক’ বলে ফেলতে। এমনি বহুতর ভয়াবহ
ভুলে-ভরা ছিল তোমার ব্যক্তিগত অভিধান। কিন্তু সে-সময়, সেই
সুদূর কৈশোরে ঐ মারাত্মক ভুলগুলো তোমার বড়-বেশি
ভালোবেসে ফেলেছিলুম।

তোমার পরীক্ষার খাতায় সর্বদাই সাধু ও চলতির দূষণীয় মিশ্রণ
ঘটাতে। ভাষা-ব্যবহারে তুমি বরাবরই খুব অমনোযোগী ছিলে। বেশ
হাবাগোবা গোছের লাজুক ও অবনতমুখী মেয়ে ছিলে তুমি।
‘শোকাভিভূত’ বলতে গিয়ে ব’লে ফেলতে ‘শোকভূত’। তোমার
উচ্চারণের ত্র্রুটি, বাক্যমধ্যস্থিত শব্দের ভুল ব্যবহারে আমি তখন
এক ধরনের মজাই পেতুম।

২০-বছর পর আজ তোমার বক্ততা শুনলুম। বিষয়: ‘নারী-
স্বাধীনতা’! এত সুন্দর, স্পষ্ট ও নির্ভুল উচ্চারণে তোমার বক্তব্য
রাখলে যে, দেখে অবাক ও ব্যথিত হলুম।

আমার বুকের মধ্যে জেঁকে-বসা একটি পাথর বিশ বছর পর
নিঃশব্দে নেমে গেল।

২৯ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৩৩

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.