নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
অনেক দিন নিজের কোনো গল্প না থাকলে
তখন অন্য মানুষের গল্প উড়ে উড়ে আপনার শরীরে পড়বে
সেদিন পার্কে হাঁটতে গিয়ে একটি একটি পকেট ডায়েরি কুড়িয়ে পেলাম,
কোনো নাম ঠিকানা নেই
প্রথম পৃষ্ঠায় বড় করে লেখা
'এ কেমন আমার জীবন?'
কৌতূহলে দ্বিতীয় পাতায় যেতেই লেখা
-বহু দিন দেখা হয় না আমাদের
তোমার কথা ভাবতেই চাঁদপুরের বড় স্টেশনের হোটেলের দুপুরের টাটকা ইলিশ ভাজার গন্ধ নাকে ঢুকে গেলো!
তৃতীয় পাতা কাটাকুটি করা
নিচে এক লাইনে লেখা
আগের ঠিকানায় কি আছ?
তারপর কয়েক পৃষ্টা শুধু সাদা আর সাদা
তারপর আবার লেখা
ইলিশের যা দাম বেড়েছে এই বেতনে ইলিশ কেনা আর হাতি কেনা সমান
তোমার ঠিকানা না হলেও একজীবন চলে যাবে আমার।
তারপরের পৃষ্ঠাগুলোতে কিছু লেখা তারচেয়ে বেশি কাটাছেঁড়া
-কাল রাতে স্বপ্নে কে যেন জানতে চেয়েছিল,
কেন বেঁচে আছি এখনো?
আমি না বুঝেই বলেছিলাম - আরেকজনের কাঁমড়ানো আপেল আমি খাই না
ফ্রেস আপেল হলে খেয়ে দেখতে পারি
একটা ফ্রেস আপেলের জন্য বাঁচতে পারি কিছু দিন।
আবার একপাতা ছেঁড়া
পরের পাতায়
সিগারেটের দাম অযথাই বাড়ল
এখন আরো বেশি খেতে মন চায়
সমস্যা হলো শেষ দেখাতে কী যেন একটা ঝামেলা হয়েছিল তোমার সাথে
তুমি রাগ করো লাইটারটা পা দিয়ে মাড়িয়ে ভেঙে দিয়েছিল
আগুনের অভাবে এখন আর সিগারেট খেতে পারছি না,
বল তো আসলে কী হয়েছিল আমাদের?
তারপরে পাতায় আবার কাটাকুটি
পরের কয়েক পাতায় অল্প অল্প করে লেখা,
তোমার একটা চোখে আমি একদিন চোখ পেতেছিলাম
আরেকটা চোখে এখন কে বিছানা পেতে ঘুমায়?
তোমার জন্য কেনা কাজলটা এখনো বুক পকেটে নিয়ে ঘুরি।
-শরীরের উপরে কেটে রক্ত বেরুলেই সবই বলে
আহা কত লাল কত গরম!
অথচ বুকের ভিতরে রক্ত বেরুলে কেউ দেখা না!
আর সেই রক্ত আগুনের চেয়ে গরম
অদৃশ্য লাল
এই অদৃশ্য লাল আগুন রক্তই আমাদের একদিন ভালোবাসতে শিখিয়েছিল
তাই তো গত শুক্রবার বৃষ্টির দিনে নতুন একটা হলুদ পাঞ্জাবি পরে রক্ত লাল এগারোটি গোলাপ হাতে নিয়ে তোমাকে খুঁজেছি সারা শহর
হলুদ পাঞ্জাবিটা ভিজে কেন যে রঙ উঠল বুঝতেই পারিনি এখনো
সেদিনের পর থেকে লাল গোলাপে হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগ
আর মুখ ছাড়া আমার পুরো শরীরই হলুদ হয়ে আছে।
তারপর আর কয়েক পাতা অর্ধেক ছেঁড়া আর কাটাকাটি
কোনো শব্দই পড়া যায় না
শেষ পাতায় হঠাৎ করেই লেখা
একট ভালো চাকরি পেয়েছি
এখন নিজেকে চাকরের সর্দার মনে হয়
তুমি মানে জীবন
তুমি মানে মরণ
ঠিকানা দিও তাহলে এবারের মতো বেঁচে যাব
দেখা হলেই চাঁদপুরের বড় স্টেশনের সেই হোটেলে দুপুরের টাটকা ইলিশ ভাজা খেতে যাব একদিন।
তারপর আর কিছুই লেখা নেই সেই পকেট ডাইরিতে।
সেদিন পার্কে যাকেই পেয়েছিলাম সবাইকে ডেকে ডেকে জানতে চাইছিলাম-
দেখুন তো এই ডায়েরিটা কি আপনার?
একটা অসম্পূর্ণ গল্প আছে এখানে
গল্পটা কি আপনার?
আমার নিজের কোন গল্প না থাকায়
অচেনা একজন মানুষের গল্প
উড়ে উড়ে আমার শরীরে এসে পড়ল।
সেই অসম্পূর্ণ গল্পের দাবিদার এক সপ্তাহেও খুঁজে না পেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম
'গল্পটা কি আপনার।'
———————-
র শি দ হা রু ন
২৬/০২/২০২৩
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪০
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন
২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: এমন একটা গল্প হতে পারতো আমারই......
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪০
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: নিয়ে নেন
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে মানূষ বড় হয়ে গেলে তার দুঃখ পাওয়াটাও সাথে সাথে বড় হয়ে যায় ।