নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
আজ বই মেলায় গিয়েছিলাম,
প্রচন্ড ভীড় ছিলো সেই সব স্টলে
যেখানে শুধু আপনারই ছবিগুলো টানানো ছিলো,
আপনি থাকতে যে রকম, অনেকটা সেই রকমই,
সবার মুখেই আপনার জন্য হাহাকারের গল্প,
আপনি না থেকেও যেনো আরো বেশী করে আছেন,
আশ্চর্য, একটা মানুষ না থেকেও আরো বেশি করে থাকে কি ভাবে?
আমি আপনার ভালোবাসার গল্প গুলো খুব বিশ্বাস করতাম,
প্রতিটি গল্প, উপন্যাসই খুব প্রান দিয়ে পড়তাম,
হাসতাম, কাঁদতাম, ভাবতাম, ভাসতাম
আবেগে ভাসতাম, স্বপ্নে ভাসতাম, অভিমানে ভাসতাম প্রতিটি চরিত্রের সাথে।
আমি আপনার ব্যাক্তিগত ভালোবাসার গল্পগুলো খুবই পড়তাম,
আপনার বিয়ের পর, যখন আপনাকে কেউ চিনতো না,
আপনার সেই সময়ের নিজের সংসারের গল্পগুলো ছিলো
পৃথিবীর শ্রেষ্ট ভালোবাসর গল্প।
আপনার ভালোবাসা, সংসারের সুখ দু্খের কাহিনীগুলোতে নিজেকে ভাবতাম,
কিশোর বয়সে মনে মনে খুব চাইতাম,
আপনার বউ'য়ের মতো এই রকম একটা বউ যেনো পাই,
আহা কি মায়া মমতা মাখা ছিলো সেই জীবন,
ভালোবাসার চিঠির গল্প,
অভিমানের চিঠির গল্প,
কি ছিলোনা আপনার ব্যাক্তিগত জীবনের গল্পে!!
তারপর, আপনার নাম হতে হতে,
আপনি হয়ে গেলেন আকাশের সবচেয়ে জ্বলজ্বল করা তারাটা,
আপনার ভিতরে তখন কি খুব
অহংকার জমে ছিলো?
নাকি খুব হতাশা ?
আপনার লেখাতেও কেমন যেনো অস্হিরতা ছিলো,
অথবা, আমারই ভুল হতে পারে ,
পত্রিকার খবর পড়তে পড়তে হয়তো সে ভাবেই ভাবতাম,
তখন আপনাকে নিয়ে বিভিন্ন খবর ছাপাতো,
সবচেয়ে বেশী ছিলো আপনার নতুন প্রেমের খবর,
অনেক কম বয়সী একজন কে নিয়ে সেই খবর।
তারপর, একদিন পত্রিকায় দেখলাম আপনি আবার বিয়ে করেছেন,
আমি খুবই বিভ্রান্ত হয়ে পরেছিলাম তখন,
আবার আপনার দ্বিতীয় স্ত্রীর ভালোবাসার গল্পগুলো
আপনিই জানাতেন আমাদের,
আপনার বইয়ের ভুমিকাতে,
অথবা কোনো ইন্টারভিয়েতে,
খুবই ভালো লাগতো,
মনে হতো আহা কি ভালোবাসার সংসার।
প্রিয় লেখক,
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে কোন ভালোবাসাটি শুদ্ধ ছিলো,
প্রথমটি না দ্বিতীয়টি?
নাকি দুটিই?
একজন মানুষ কি ভাবে ভুলে যায় তার প্রথম ভালোবাসার মানুষটির কথা,
কি ভাবে আরেকজন ভুলিযে দেয় একজনের কথা,
তাহলে কি দ্বিতীয় ভালোবাসাটি খুবই শুদ্ধ ছিলো?
আমার তখন মনে হতো,
লেখক’রা কারো প্রেমিক অথবা স্বামী হতে পারে না,
তারা মুহূর্তে কল্পনায় বদলিয়ে ফেলে তাদের প্রেমিকা অথবা স্ত্রী,
প্রতিটি গল্পের মতো তারাও বদলায় ।
ভালোবাসাতো শরীর লাগেনা,
প্রেম শরীর ছাড়া হয়না,
আপনি কি নতুন শরীরে নতুন কোনো প্রেমের গল্পের প্লট খুঁজছিলেন?
আপনি যখন দ্বিতীয় স্ত্রী’কে প্রেমের কথা বলতেন,
তখন কি একবারও অনুতাপে ভুগতেন?
প্রথমজনের কোনো ছায়া কি আপনার বেডরুমে হাহাকার করতো?
প্রিয় লেখক,
আপনি হয়তো জীবন নিয়ে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন,
আপনি যাবেন না ,
আমার অধিকার আছে আপনার কাছে জানতে চাওয়ার,
কারন আমি আর আমরাই বানিয়েছি আপনাকে,
আপনার প্রকাশিত সব বই আমার কাছে আছে,
কি দোষ করেছিলো আপনার প্রথম স্ত্রী?
ভালোবাসেনি?
আপনি তাহলে পাঠককে ঠকিয়েছেন,
আমাকে ঠকিয়েছেন,
আমার কৈশরের কল্পনাকে ঠকিয়েছেন,
আপনার মৃত্যু আমাদের কাঁদিয়েছে,
হাহাকারে ফেলেছে,
শুধু দিশাহারা করে ফেলে আপনার জীবনের প্রেম আর ভালোবাসার ঘটনা,
মনে হয় সবই ভুল ছিলো,
ভুল ছিলো আমার কৈশরের কল্পনা,
আপনার মৃত্যুও কিন্ত্তু পারেনি আমার দিশেহারা কমাতে,
ভালোবেসে মানুষ বাঁচতে চায় জানি
আপনি কেনো চলে গেলেন সময়ের আগে
তাও বুঝিনি?
শুধু বুঝেছি,
কবি আর লেখক’রা পাঠকের হাহাকার নিয়ে খেলতে ভালোবাসে।
প্রিয় লেখক,
আপনার মৃত্যু বেঁচে থাকার চেয়েও বড় একটা অস্তিত্ব ।
----------------------------------------
রশিদ হারুন
কাব্যগ্রন্থ- সময় ভেসে যায় বৃষ্টির জলে
১৩/১০/২০১৮
১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৭:২৩
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৭
অধীতি বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ আর গুলকেতিনের মাঝে শাওনকে একদম বেমানান লাগে।
চাঁদের কলঙ্কের মত অবস্থান নিয়ে বসে থাকবে শাওন।
১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৭:২৪
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর একটি কবিতা।
১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৭:২৪
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬
মিরোরডডল বলেছেন:
প্রিয় লেখক হুমায়ূনকে নিয়ে প্রিয় কবি রশিদের লেখাটি অনবদ্য হয়েছে।
লেখায় উঠে আসা প্রশ্নগুলো করা সহজ কিনা জানিনা, কিন্তু উত্তর দেয়া যে ভীষণ কঠিন!
আদৌ উত্তর হয় কিনা সেটাও ভাবনার বিষয়। আই উইশ হুমায়ুনের উত্তরগুলো জানা যেতো!
প্রেম এবং সম্পর্ক, আসলে একইসাথে সরল ও জটিল অংক দুটোই।
তাই এগুলো ডিফাইন করা খুব কঠিন।
কাল যে আপন ছিলো আজ হলো পর
এ আশা খেলাঘর বালুচর
হৃদয়ে হৃদয় যে টান এতকাল
ছিলো নেই, কেন নেই মন আমার...