নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিতৃঋণ -৯

২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১০


অনেকদিন ধরেই সকালে পত্রিকা পড়তে গেলে হঠাৎ হঠাৎ চশমাটা খুঁজে পাইনা!
সেদিন মা যেন নিশ্চিতভাবেই জানেন আজ আমি চশমা খুঁজে পাবোনা।
সাথে সাথে আলমারি খুলে অতি যত্ন করে মখমল কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা একটা চশমা বের করে দেন।
অনেক পুরোনো কালো ফ্রেমের একটি চশমা,
আমার বাবার চশমা।

আমি সেই চশমা দিয়ে চোখে প্রায় কিছুই দেখিনা,
সব কেমন যেন অস্পষ্ট ছায়ার মতো মনে হয়।
তবুও প্রায় আধাঘন্টা যাবত খুব মনোযোগ দিয়ে পত্রিকা পড়ি
-সব পাতা উল্টে পাল্টে।
আসলে পড়ি না,
পড়ার অভিনয় করি।
মা পাশে বসে থেকে আমার পত্রিকা পড়া দেখেন খুব মনোযোগ দিয়ে,
আর পাহারা দেন যাতে আমার ভুলে বাবার চশমার কোনো ক্ষতি না হয়।

আমি জানি সেই সময় মায়ের চোখ ছলছল থাকে।
পত্রিকা পড়ার পর চশমাটা ফিরিয়ে দিলে
-তখনই তা খুব যত্নে সেই মখমলের কাপড়ে জড়িয়ে আগের জায়গায় রেখে দেন।

বাবা মারা যাবার পর গত পনেরো বছর যাবত প্রায়ই মা আমার পড়ার চশমাটা সকালে কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে রাখেন,
মাঝে মাঝে আমিও ইচ্ছে করে মাকে ডেকে বলি,
-“মা, আমার চশমাটা খুঁজে পাচ্ছি না,
বাবার চশমটা একটু বের করে দাও।”

তখনই ছলছল চোখে এক অদ্ভুত উৎসাহে আমার মা তার মৃত স্বামীর চশমাটা বের করে দেন।
হয়তো, দেখতে চান সন্তানের চোখে সেই চশমাটা কেমন দেখায়!
বোধহয় বাবার ছায়া খোঁজে সেই চশমায়।

প্রতিবারই চশমাটা চোখ থেকে খুললে
আমার চোখ থেকে কেনো যে কয়েক ফোঁটা জল ঝরে পড়ে, বুঝিনা!
বুকটাও খালি খালি লাগে সে‌ই সময়!
আমি সেই জল মায়ের চোখ থেকে লুকিয়ে রাখি খুব স্মার্টভাবে,
শুধু বুকের ভিতরে চিৎকার করে নিঃশব্দে বলি,
-“বাবা আপনার চশমা আমাকে অভিনয় শিখিয়েছে!”
——————————
রশিদ হারুন
২৩/০৫/২০২০

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: কবিতা নাকি গল্প এটা?

২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০২

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: যা মনে করেন

২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২৮

মিরোরডডল বলেছেন:




তখনই ছলছল চোখে এক অদ্ভুত উৎসাহে আমার মা তার মৃত স্বামীর চশমাটা বের করে দেন।

man!!!!! you made me cry.

literally my eyes are teary now!

২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০২

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ভালো থাকবেন

৩| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫

বিজন রয় বলেছেন: অনেক ভাল একটি কবিতায় ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম।
শুভকামনা।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ২:৪৬

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ভালো থাকবেন

৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪৫

ফেনা বলেছেন: খনই ছলছল চোখে এক অদ্ভুত উৎসাহে আমার মা তার মৃত স্বামীর চশমাটা বের করে দেন।
হয়তো, দেখতে চান সন্তানের চোখে সেই চশমাটা কেমন দেখায়!
বোধহয় বাবার ছায়া খোঁজে সেই চশমায়।

---- এই অংশটা অসাধারণ লাগল।
ভাল লাগা নিরন্তর।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ২:৪৭

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ভালো থাকবেন

৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: সামু ব্লগে সবচেয়ে সুন্দর কবিতা লিখেন আপনি।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৮

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ভালোবাসা নিবেন। আপনার প্রতি রইলো শুভেচ্ছা আর কৃতজ্ঞতা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.