নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অধৃষ্য /অধৃশ্‌শো/ [স. ন+√ধৃষ্+য] বিণ. পরাজিত করা যায় না এমন, অজেয়। বি. ~তা /-তা/।

অধৃষ্য

আমিই আমি।

অধৃষ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাধারণ যে ভুলগুলো সবসময় আমার চোখে পড়ে

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

ইন্টারনেটে আমরা প্রতিদিনই অনেক কিছু লিখি। ফেসবুক এবং ব্লগ লেখার প্রধান দুটি মাধ্যম। প্রতিদিন লিখতে গিয়ে আমরা প্রায়ই ছোটখাটো কিছু ভুল করি। আমরা যদি কিছুটা সতর্ক হয়ে লিখি বা লেখার পরে আরেকবার কী লিখলাম তা সতর্ক হয়ে পড়ি তাহলে অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুল বের হয়ে আসে। এখানে আমি কয়েকটি অতি সাধারণ ভুলের ব্যাপারে লেখার চেষ্টা করেছি যা সচরাচর আমার চোখে পড়ে।

প্রথমেই যেটা বলতে হয় সেটা হলো কিছু অতিপরিচিত বাংলা বানান। স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, স্টোর, ফার্নিচার, সেমিস্টার (শুদ্ধ উচ্চারণ আসলে সিমেস্টার) ইত্যাদি শব্দগুলো ষ্টেশন, বাসষ্ট্যান্ড, ষ্টোর, ফার্ণিচার, সেমিষ্টার এভাবে লেখা হয়। আমার জেলার নামটা প্রায় সকল সরকারি কাগজপত্রে, জেলা পরিষদের সিল, নামফলক ইত্যাদি সব জায়গায়ই লেখা নেত্রকোণা। অথচ বাংলায় কোনা শব্দটি কোণা হওয়ার জো নেই। তবে সংস্কৃত বানানরীতি অনুসারে কোণ (Angle) শব্দটি কোণই হবে। শূন্য বানানটিও বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

আরেকটা অতি সাধারণ ভুল লক্ষ্য করা যায় বাংলা পদাশ্রিত নির্দেশক (Article) ব্যবহারের ক্ষেত্রে। নাম দেখেই বোঝা যায় যে এটা (বাক্যের) পদাশ্রিত (পদ আশ্রিত)। অর্থাৎ টা, টি, খানা, খানি, গুলো, গুলি, গুচ্ছ ইত্যাদি শব্দাংশ মূল শব্দের সাথে কোনো ফাঁক ছাড়াই যুক্ত হবে। যেমন- ঘরটা, একটা, দুটি, কলাগুচ্ছ, টাকাগুলো। ঘর টা, এক টা, দুই টি, টাকা গুলো এভাবে হবে না। সংখ্যার সাথেও এগুলো ফাঁক ছাড়া যুক্ত হবে। যেমন- ১টি, ৬টা ইত্যাদি।

পদাশ্রিত নির্দেশকের মতো বাংলা কিছু বিভক্তি এবং প্রত্যয়ও ফাঁক ছাড়া যুক্ত হয়। যেসব ক্ষেত্রে সরাসরি বিভক্তি যোগ করা যায় না সেসব ক্ষেত্রে হাইফেন (-) চিহ্ন দিয়ে যুক্ত করতে হয়। কে, রে, এ, র, এর ইত্যাদি বহুল প্রচলিত। যেমন- উইন্ডোজ ১০-এ অনেক নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। Windows-এর পুরোনো সংস্করণগুলোর মধ্যে এক্সপি অনেক জনপ্রিয় ছিলো। রহিমকে আগেই বলেছিলাম (রহিম কে নয়)। এর এবং কে স্বতন্ত্র শব্দ হিসেবেও বাক্যে ব্যবহৃত হয়। এর নাম কী? সে কে?

শেষে অনুস্বার (ং) থাকলে এবং তাতে স্বরচিহ্ন যোগ করার প্রয়োজন হলে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়। এক. অনুস্বারের বদলে উঁয়ো (ঙ) ব্যবহার করা, দুই. য় যোগ করে তার সাথে স্বরচিহ্ন বসানো। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- শিলঙের (বা শিলংয়ের) চারপাশেই পাহাড়। রঙের (রংয়ের) ব্যবহার যথাযথ হওয়া চাই। এসব শব্দ যখন কোনো প্রত্যয় বা পদাশ্রিত নির্দেশক ছাড়া বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন শেষে ঙ-র পরিবর্তে ং ব্যবহার করাই প্রমিত প্রথা। যেমন- রং, প্রোগ্রামিং, ইনকামিং ইত্যাদি। ব্যাঙ শব্দটি ব্যতিক্রম হিসেবে ব্যাঙই লেখা হয়, ব্যাং নয়। ইংরেজি Bang শব্দটি বাংলায় ব্যাং লিখতে হবে। ং-যুক্ত ইংরেজি শব্দগুলোর মধ্যে যেগুলোর মাঝে ং আছে সেগুলো ঙ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে পরের বর্ণটির সাথে যুক্তবর্ণ হিসেবে লিখতে হবে। যেমন- লিংক → লিঙ্ক, সিংক → সিঙ্ক, ট্যাংক → ট্যাঙ্ক, র‌্যাংক → র‌্যাঙ্ক ইত্যাদি। শেষের ং বহাল তবিয়তে থাকবে; র‌্যাঙ্কিং, লিঙ্কিং ইত্যাদি।

সংস্কৃত ছাড়া দেশি, বিদেশি সকল শব্দ এবং নাম হ্রস-ই-কার এবং হ্রস-উ-কার দিয়ে হবে। ইংরেজি, জার্মানি, হিন্দি (যদিও হিন্দিতে বানানটি হিন্দী), শ্রেণি, অঞ্জলিচীন একটি ব্যতিক্রম। কারণ? চীন শব্দটি সরাসরি সংস্কৃত থেকে এসেছে। অবিকৃত সংস্কৃত শব্দের বানান সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুসারে হবে।

প্রাণী, মন্ত্রী ইত্যাদি শব্দগুলো এককভাবে এমনই হবে। তবে প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রিপরিষদ, প্রাণিকূল ইত্যাদি। দেয়া ও নেয়া শব্দদুটি হবে যথাক্রমে দেওয়া ও নেওয়া

লিখা, উপর দুটি বহুল প্রচলিত শব্দ। সাধু হওয়ায় শব্দদুটি বাক্যে ব্যবহার করা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। লেখা, ওপর শব্দদুটির চলিত রূপ। আবার লিখছি, লিখি, লেখ (আদেশ), লিখছিলাম, লিখছিলে ইত্যাদি এরকমই হবে। পিটানো, কিলানো হবে পেটানো, কেলানো। আবার পিটিয়ে, কিলিয়ে

নয়, নই এবং চায়, চাই নিয়ে অনেকে গণ্ডগোল করে ফেলেন। উত্তম পুরুষের সাথে সব সময় নই/চাই; মধ্যম পুরুষের সাথে নও/চাও; নাম পুরুষের ক্ষেত্রে নয়/চায়। আমি/আমরা নই, চাই; তুমি/তোমরা নও/চাও; সে/রহিম/করিম/তারা নয়, চায়আমি নয়/চায়; তুমি নয়/চায় ভুল। পশ্চিমবঙ্গের লোকেরা নয়, নই ভুলটি বেশি করেন।

আরো অনেক কিছু লিখবো ভেবে লিখতে বসেছিলাম। অর্ধেক লেখার পরে আর কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। টেনেটুনে এই পর্যন্ত এনেছি। অন্য হিসেবে এসব পোস্ট বড় না হওয়াই ভালো। অপরকে যথেষ্ট জ্ঞান বিতরণ করলেও আমি নিজে অনেক ভুল করি। যখন যা চোখে পড়ে সংশোধনের সুযোগ থাকলে সংশোধন করে নেই।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৮

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: চাই, চায় ও অনেকে গুলিয়ে ফেলেন....
ভালো পোস্ট :)

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৭

অধৃষ্য বলেছেন: হ্যাঁ, হ্যাঁ। নয়, নইয়ের সাথে এটাও যোগ করতে চেয়েছিলাম, ভুলে গেছি।

মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এডিট করছি।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৮

তার ছিড়া আমি বলেছেন: জ্ঞানের পোষ্ট। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪

অধৃষ্য বলেছেন: :#)

কষ্ট করে পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩২

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: অনেক কিছু পেলাম। ভালো লেখা ।।। সুন্দর

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৫

অধৃষ্য বলেছেন: কিছু পেয়েছেন জেনে খুশি হলাম। শুভেচ্ছা নেবেন।

৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২১

বনসাই বলেছেন: তার ছিড়া আমির পোষ্ট ঠিক হলো না। ওটা পোস্ট হতো।

খুব গুছিয়ে লিখেছেন। আসলে সচেতনতাই মুখ্য, আর এখন তো অনলাইনে অভিধানে বানান দেখা নেওয়া বেশ সহজ।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৬

অধৃষ্য বলেছেন: B:-)

আপনার চোখের জোর বেশ ভালো। অন্যভাবে বলা যায় আপনি বেশ মনযোগী।

একবার মন্তব্য করে বসলে আর মুছে ফেলা যায় না বা সম্পাদনা করা যায় না। সম্পাদনা করার সুবিধাটুকু সামু কর্তৃপক্ষের দেওয়া উচিত। সাথে সম্পাদনার ইতিহাসও থাকবে।

৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। ধন্যবাদ আপনাকে। তবে অনেক বিস্তারিত একটা বিষয়ের বিপরীতে একটু বেশি সংক্ষেপিত হয়ে গেছে। আপনার পোস্টের সম্পুরক হিসেবে প্রথম আলোর ভাষারীতি নামে প্রথমা প্রকাশনীর একটা বই পড়া যেতে পারে; যেখানে এই বিষয়গুলো খুব সুন্দর এবং যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলায় কখন শব্দযুগল একসাথে হবে আর কখন আলাদা হবে, নিরেট-অনিরেট শব্দ ইত্যাদি।

ভালো থাকবেন।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১৭

অধৃষ্য বলেছেন: প্রথম আলোর একটা নিজস্ব ভাষারীতি আছে সেটা জানি, বইটির ব্যাপারে জানতাম না। কোনো শব্দের বানান নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে আমি প্রথম আলোতে সার্চ করে নিশ্চিন্ত হই। অনলাইন বাংলা অভিধানগুলো ভুল শুদ্ধ সব বানান ইনডেক্স করে রেখেছে এবং কোনটা সঠিক সে সম্পর্কে কোনো ধারণা দেয় না। গুগল ট্রান্সলেটরেও সঠিক বানান পাওয়া যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে ভুল থাকে, কারণ যে-সে ব্যক্তি গুগলে কনট্রিবিউট করতে পারে।

বিশাল একটা বিষয়ে খুব সংক্ষিপ্তভাবে লিখেছি সেটা বুঝতে পারছিলাম যখন ব্লগগুলোতে একটু চোখ বুলাচ্ছিলাম। আসলে পোস্টটা আরেকটু গবেষণা ও সময় নিয়ে লিখলে ভালো হতো, কিন্তু এতো ধৈর্য আমার নেই।

সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকবেন।

৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১২

পদ্মপুকুর বলেছেন: আরেকটা ব্যাপার, যদিও আপনার নিক এর নিচে ব্যাখ্যা দিয়ে দিয়েছেন, তবুও সামুর নাম নেয়ার ক্ষেত্রে ভুলভাল হওয়ার রেকর্ডের কথা মাথায় রেখে প্রথমেই মনে হয় যে আপনার নামটা অদৃশ্য হওয়ার কথা ছিলো।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৫

অধৃষ্য বলেছেন: হা হা হা। উচ্চারণগত মিলের কারণে এমনটা মনে হয়। নামটা আমি রীতিমতো গবেষণা করে বের করেছিলাম অভিধান থেকে। শব্দটি মোটামুটি অপ্রচলিত। একটা ফেসবুক পেজ এবং ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ দেখলাম একই নামে, আগে খেয়াল করলে নিক এটা রাখতাম না, আরো প্রাচীনযুগের কোনো শব্দ বেছে তুলতাম।

৭| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৫

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



আসলেই আমরা লিখতে যেয়ে অনেক কিছু ই গুলিয়ে ফেলে । এটা প্রতিনিয়ত ই হচ্ছে ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৫

অধৃষ্য বলেছেন: [এখানে আপনি যা গুলিয়েছেন- কিছু ই → কিছুই, ফেলে → ফেলি, প্রতিনিয়ত ই → প্রতিনিয়তই। /:) ;) ]

আসলেই মাঝে মাঝে গুলিয়ে যায়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

[প্রথম লাইনটি পোস্টের বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শিক্ষণীয়, তাই দিলাম। আপনি বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখবেন আশা করি।]

৮| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। বাংলা ভাষায় বানানের ক্ষেত্রে আজকাল পরিবর্তন ও ভুলের যে ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে, তা এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। একেক জায়গায় একেক ধরনের বানান লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলা একাডেমির বানান অভিধান থাকলেও পরিস্থিতি উন্নতির কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই ছোটবেলা থেকে স্কুল-কলেজের পাঠ্যপুস্তকে যে বানানে বাংলা লেখা শিখে এসেছে, বাংলা একাডেমির প্রমিত বানানরীতিতে তার কিছু পরিবর্তন এসেছে। অথচ এর সঙ্গে পরিচিত নয় অনেকেই, ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বিভ্রান্তি।

বাংলা একাডেমি এবং বিশেষজ্ঞরাও একমত, বাংলা বানান নিয়ে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হচ্ছে সেটিকে ঠেকাতে উপযুক্ত শিক্ষা এবং সরকারি উদ্যোগের কোনও বিকল্প নেই। ‘ঈদ’ বানান কী? ‘ঈদ’ না-কি ‘ইদ’- তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি তুমুল কথার লড়াই হয়ে গেল। বাংলা একাডেমির ‘আধুনিক বাংলা অভিধানে’ ‘ঈদ’ শব্দটির ভুক্তি রয়েছে দুটি। এর মধ্যে একটি লেখা হয়েছে ‘ঈ’ ব্যবহার করে, অন্যটি ‘ই’ ব্যবহার করে।

তবে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘আধুনিক বাংলা অভিধানে’ ঈদের বিকল্প বানান ‘ইদ’ প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে এক সময় হয়তো ‘ইদ’ বানানটিই সবাই মেনে নেবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ঈদের ‘ঈ’-কে ‘ই’ করার কী দরকার ছিল? আবহমানকাল থেকেই ঈদকে ‘ঈ’ দিয়ে লেখা হচ্ছে। তাছাড়া ঈদ তো একটা উৎসবের নাম। নাম ও ট্রেডমার্ক কি ইচ্ছামতো বদলানো ঠিক?

প্রশ্ন হলো, ‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’ বাংলা একাডেমিকে অনুসরণ করবে না-কি বাংলা একাডেমি ‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’-কে অনুসরণ করবে? নিয়ম যদি ‘খ্রিষ্ট’ হয় তবে অভিধানে ‘খ্রিস্ট’ লেখার আদৌ দরকার আছে কি? ব্যবহারিক অভিধানে নামায, আযান, রমযান, ওযু, যোহর শব্দগুলো লেখা হয়েছে নামাজ, আজান, রমজান, অজু, জোহর।

বাংলা ভাষার এই বিকৃতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শিক্ষক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে মনে করি। বলতে চাচ্ছি, একেবারে শুরু থেকেই আসতে হবে সব। বাচ্চাদের ইংরেজি বানান ভুল লিখলে যেমন শাসন করে শেখানো হয়, ঠিক তেমনি বাংলা বানান ভুল হলেও শাসন করে শেখানো উচিত। তাদের সুন্দর বাংলা বলা, লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করা উচিত। এ ব্যাপারে লেখকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। লেখকদের সুন্দর ভাষায়, সুন্দর বর্ণনায় লেখা বাঞ্ছনীয়।

ভাল থাকুন, আর এভাবে লিখুন। (শুভ রাত্রি)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৩৩

অধৃষ্য বলেছেন: থমেই সুচিন্তিত ও সুদীর্ঘ মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ জানাই।

বাংলা বানানের বেহাল দশা তো অনেক নামিদামি প্রকাশনী (শব্দটি ভুল, অথচ কত বিস্তৃতভাবে ব্যবহৃত, সঠিক হচ্ছে প্রকাশন) থেকে শুরু করে খোদ সরকারি বিভিন্ন লেখায় প্রচুর বানান ভুল থাকে। রাস্তাঘাটে চলতে গেলে যত্রতত্র চোখে পড়ে। বাংলা একাডেমি তো মেরুদণ্ডহীন। ভাষার জন্য কোনো কঠোর পদক্ষেপ তারা নিতে পারেনি। ২১শে ফেব্রুয়ারি এলে সরকারসহ সবার ভাষাপ্রেম বন্যা নয়, সুনামি তৈরি করে ফেলে। ২২শে ফেব্রুয়ারি থেকে কারো আর খবর থাকে না। লক্ষ লক্ষ তরুণ, তরুণী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়
Vondora shohid minara tola akta pic.....
kamon hlo???
এই দশায় বাংলার উন্নতি কীভাবে হবে বলে আপনি মনে করেন? আমি ১০০০০% গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, ৯৯.৯৯৯৯% ফেসবুক ব্যবহারকারী বাংলিশ (উপরের "ভণ্ড"-র মতো ভাষা) ব্যবহার করে চ্যাট করে। বাংলায় কেন লিখছো না? এই প্রশ্ন করা হলে বলে দ্রুত টাইপ করতে গিয়েই তারা বাংলিশ লেখে।

বাংলা একাডেমির আধুনিক প্রমিত বানানরীতিকে আমি সমর্থন করি। এই রীতির আগে বিদেশি শব্দকে যথেচ্ছভাবে ই-কার, ঈ-কার, উ-কার ও ঊ-কার দিয়ে লেখা হতো। এখন সোজা নিয়ম, সংস্কৃত ব্যতিত সকল শব্দে হ্রস-কার বসবে।

ঈদ এবং ইদ প্রসঙ্গে আসি। ইদ একটি পবিত্র উৎসব। একজন মুসলিম হিসেবে আমার কাছে এর গুরুত্ব অনেক। নামের বানানের সাথে কিন্তু উৎসবের কোনো সম্পর্ক নেই। ভাষা যেহেতু পরিবর্তনশীল, সেহেতু একে খুশি মনে গ্রহণ করা উচিত। প্রত্যেক ভাষাকেই কিছুটা নিয়মের মধ্যে ধরে রাখতে হয়। সেজন্য বাংলা একাডেমির মতো ভাষার সর্বোচ্চ রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের দরকার আছে। না হলে সবার যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে ভাষাটি বিকৃত হতে হতে এক সময় হারিয়ে যাবে। ঈদ এবং ইদ নিয়ে লাফলাফি আমার কাছে অর্থহীন বা স্রোতে গা ভাসানো ভাষাপ্রেমিক ও ইসলামপ্রেমিকদের "খাইয়া কাম নাই তাই আজাইরা ইস্যু তুলি" ধরণের মনে হয়েছে।

য, ষ, ণ, ঞ বর্ণগুলো সংস্কৃত ভাষার নিজস্ব বর্ণ। খাঁটি বাংলা এবং বিদেশি শব্দে এদের কোনো ব্যবহার নেই। নামাজ, রোজা, আজান ইত্যাদি শব্দগুলোতে তাই য ব্যবহার অযৌক্তিক। য বর্ণটি শুধু সংস্কৃত শব্দে সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুসারে ব্যবহৃত হতে পারে।

নাম ও ট্রেডমার্ক বিষয়ে আপনার সাথে একটু দ্বিমত আছে। কোনো ব্যক্তির নাম তার পছন্দ অনুযায়ী লিখতে পারে। স্থান, উৎসব ইত্যাদির নাম ব্যক্তিগত না হওয়ায় তা ব্যাকরণ ও বানানরীতি অনুসারে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। না হলে একেকজন একেক রীতিতে লিখে খিচুড়ি পাকিয়ে ফেলবে।

বলতে খারাপ শোনালেও বলতেই হয়, শিক্ষকরা বানান বিষয়ে প্রচণ্ড উদাসীন। অনেক শিক্ষক সরাসরি বলেন, "পদার্থবিজ্ঞানের ক্যালকুলেশন ঠিক থাকলেই হলো, বানান নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।" শিক্ষকদের বিশাল একটা অংশ বহুল প্রচলিত ভুলগুলোর ব্যাপারে কিছু জানে না বা উদাসিন।

আপনার শেষ প্রশ্নের জবাব দেই। পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অবশ্যই বাংলা একাডেমিকে অনুসরণ করবে। কারণ, বাংলা একাডেমির কাজ বাংলা ভাষার রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করা। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কাজ পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও উন্নয়ন করা, ভাষার দেখাশোনা করা না। খ্রিস্ট শব্দটি বিদেশি শব্দের পরিবর্তিত রূপ। হাসপাতাল, ডাক্তার, ইংরেজি ইত্যাদি যে রকম। ষ বর্ণটি সংস্কৃতের নিজস্ব। সুতরাং বানানটি খ্রিষ্ট বা খ্রীষ্ট বা খৃষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।

আধুনিক বাংলা অভিধানের প্রথম পুনর্মুদ্রণে (জুন ২০১৬) একটা সমস্যাই আমার চোখে পড়েছে, সেটা হলো কুষ্মাণ্ড শব্দটির ভুল উচ্চারণ। সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী উচ্চারণটি হবে /কুশ্‌মান্‌ডো/, কিন্তু সেখানে দেওয়া আছে /কুশ্‌শাঁন্‌ডো/

৯| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৪৬

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: নতুন কিছু বিষয় শিখলাম। ধন্যবাদ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩২

অধৃষ্য বলেছেন: জেনে খুশি হলাম।

১০| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:০৭

রাফা বলেছেন: এমনিতেই অনেক ভুল হয়।আপনার পোষ্ট পড়ার পর মনে হয় আরো বেশি ভুল করবো।পড়তে গিয়ে মাথা এলোমেলো হয়ে গেছে।

ভালো পোষ্ট,ধন্যবাদ- অধৃষ্য।
অ.ট.পুকুরের , মত আমারো মনে হইছিলো আপনি নিক নিতে গিয়ে হয়তো ভুল করেছেন।কিন্তু আপনার ব্যাখ্যা পড়ে কিছু না বুঝলেও ,বুঝলাম ভুল করে নয়।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:২৮

অধৃষ্য বলেছেন: চাপ নেবেন না। বিষয়টা হালকাভাবে নেবেন। কোনো কারণে মানসিক চাপ দেওয়ার জন্য মামলা করে দিলে আমি বিপদে পড়বো। B-)) :P

এলোমেলো মাথা শিঘ্রই সরল সোজা হয়ে যাবে, সেই শুভ কামনা।

১১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৬

অধৃষ্য বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.