নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাতে সময় খুব কম।

দারুণ অলস। একবার কর্মঠ হইলে খবর আছে।

গুডুবয় রুমন

নিজেকে এখনো চিনতে পারিনি।

গুডুবয় রুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কি ভালবেসে বিয়ে করতে পারব?

০৩ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৩

আমি কি ভালবেসে বিয়ে করতে পারব?

আমি কি বাবা মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারব?

আমি কি নিজের ইচ্ছামত পছন্দ অনুসারে বিয়ে করতে পারব?



উপরের সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হ্যা নারী এবং পুরুষের উভয় ক্ষেত্রেই।কেন এবং কিভাবে শরিয়তের দলিল ভিত্তিক আলোচনা করা হবে এই স্টাটসে।গতকাল রাতে এ বিষয়ে আমি স্টাডি করি।ইসলামে বিয়ে কতটা সহজ এবং অবৈধ প্রেমের পিছনে না ছুটে আমরা কেন বিয়ের পিছনে ছুটব এটা জানাতে বিয়ের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টি ভঙ্গি আপনাদের জানানোর প্রয়োজন অনুভব করছি।



১.আমি কি ভালবেসে বিয়ে করতে পারব?



ইসলামকে মেনে চলতে চাই কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ এমন অনেককে আমি দেখেছি ভালবাসাকে হারাম মনে করে।ভালবাসাকে চারিত্রিক ত্রুটি মনে করে।আবার ভালবেসে বিয়ে করাটাকে কটু দৃষ্টিতে দেখে।অনেকে নিজের পছন্দের ভালবাসাকে কুরবানি দেয় বাপ মার ইচ্ছার কাছে।আসলে ভালবাসা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টি ভঙ্গী সম্পূর্ণ বিপরীত।দেখুন আল্লাহ পাক কি বলছেন,



আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে হচ্ছে যে তিনি তোমাদের মধ্যে থেকে তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন যুগলদের,যেন তোমরা তাদের মধ্যে স্বস্তি পেতে পার, আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও করুণা সৃষ্টি করেছেন।(৩০:২১)



এই তামাম পৃথিবিটা আল্লাহ পাক ভালবাসার জালে আবদ্ধ করে রেখেছেন,তরুন তরুনীর মধ্যে যদি ভালবাসার এক শক্ত বন্ধন না থাকত তাহলে বিয়ের পর সংসার টিকত না,সামান্য মন মালিন্যতেই ভেঙ্গে যেত।অথবা শুধু মাত্র সন্তান জন্ম দানের উদ্দেশ্যেই মানুষ বিয়ে করত,এটা যেন না হয় এজন্য আল্লাহ পাক ভালবাসা নামোক এক মহা আকর্ষণের সৃষ্টি করেছেন।তরুণ তরুণীর একে অপরের কথা বাহ্যিক আচরণ চলা ফেরাতেও একে অপরের ভালবাসার সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ পাক।আমাদের কথা বার্তা আচরনের সমষ্টি এক একটি কোডের সমষ্টি যা বিপরীত লিঙ্গের ব্রেনে ফ্রেকুয়েঞ্ছি সৃষ্টি করে।ব্রেনে বার বার এধরনের ফ্রেকুএঞ্ছি হতে থাকলে আমরা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হতে থাকি।এ আকর্ষণের কথা আপনার ব্রেইন বিপরীত লিঙ্গের ব্রেনকে জানানোর চেষ্টা করে,অপর ব্রেইন থেকে সামন্যতম গ্রীন সিগনাল পেলে তৈরি হয়ে যাই ভালবাসা



ভালবাসাকে মহাকর্ষ আকর্ষণের সাথে তুলনা করলে মোটেও বারাবারি হবে না,মহাকর্ষ আকর্ষণের মতই শক্তিশালি ভালবাসা নামক আকর্ষণ শক্তি।মহাকর্ষ শক্তি যেমন গ্রহগুলির মধ্যে আকর্ষণ করে গ্রহগুলির ভারসাম্য বজায় রাখে যেন একে অপর থেকে ছিটকে না যাই ভালবাসাও তেমন সামী স্ত্রী বাবা মা সন্তান সন্তুতির মধ্যে আকর্ষণ তৈরি করে আমাদের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখে যেন আমরা দূরে সরে না যাই।এজন্য আমরা দেখতে পাই ভালবাসার ঘাটতি হলে আমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়।এজন্যই বহুত দিনের ভালবাসার সম্পর্ক (অবৈধ ) ভেঙ্গে গেলে পুলাপান ছেকা খেয়ে বেকা হয়ে যাই ভালবাসা নামোক শক্তির তীব্রতার কারনে।



সৃষ্টি জগতের ভারসাম্য বজায় রাখতে ভালবাসা আল্লাহ পদত্ত অপরাপর শক্তির মতই একটি শক্তি।তাই ভালবাসাকে মোটেও খাট করে বা ঘৃণার চোখে দেখার অবকাশ নেই।একজন ছেলে একজন মেয়েকে ভালবেসেছে এর অর্থ হল আল্লাহ পদত্ত মহাশক্তি ভালবাসা শক্তি বলে সে কোন মেয়ের প্রতি আকর্ষিত হয়েছে।



একে অপরের প্রতি আকর্ষিত হওয়াটা আল্লাহ পদত্ত ভালবাসা সৃষ্টি হওয়াটাও আল্লাহ পদত্ত।ইচ্ছায় বা অনিচ্চ্যায় হোক না কেন।

সমাধান কি?



একমাত্র সমাধান বিয়ে।কারন আল্লাহ বলেছেন আমাদের যাদের ভাল লাগে বা আমরা যাদের ভালবাসি তাদের বিয়ে করতে। বিয়ের উদ্দেশ্যে কাউকে ভালবাসা অন্যায় কিছু নয় বরং এটি আল্লাহ পদত্ত আপনার অধিকার।



'মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের

বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর

যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায়

সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে,

একটিই।’ (৪:৩)



এখন আপনি যদি বিয়ে করতে অক্ষম হন কিংবা বিয়ে করা সম্ভব না হয় তাহলে আপনার জন্য সমাধান হচ্ছে তরুনী থেকে আপনাকে দূরে থাকতে হবে যেহেতু কাছে থাকলেই আপনি আকর্ষিত হবেন এবং একসময় আল্লাহর সৃষ্টির নিয়মানুসারেই ভালবাসা তৈরি হবে।আর ইচ্ছে করলেই এই মহা শক্তি ভালবাসাকে আপনি ইগনোর করতে পারবেন না,তাই দূরে থাকায় একমাত্র সমাধান।



আমাদের ভুলটা কোথায়?



আমাদের ভুল হচ্ছে আমরা কাউকে ভালবেসে ফেললে বিয়ে না করে প্রেম করি অর্থাৎ সমাজকে ফাকি দিয়ে একে অপরের সাথে মেলা মেশা করি।এটা সমাজের দৃষ্টিতে অপরাধ না হলেও ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্তক অপরাধ।আল্লাহ যা হারাম করেছেন তাতে কোন কল্যান নেই তার বাস্তব প্রমান হল বিবাহ বহির্ভূত প্রেম।প্রেম করে সুখি হয়েছে এমন কাউকে দেখিনি।৯৯.৯% প্রেমের পরিনতি ব্রেক আপ।ব্রেক আপ মানেই মানুষিক আযাব।



আমরা বিয়ে না করে প্রেমকেবেছে নেই কেন?



অনেকে হইত ভোগের উদ্দ্যেশ্যে।আবার অনেকে বিয়ে করতে চাই কিন্তু বিভিন্য প্রতিবন্ধকতার কারনে না পেরে প্রেমকে বেছে নেই।তাদের উদ্দ্যেশ্যেই মুলত আমার লেখা।



অনেকে বিয়ে করে না বাবা মা মেনে নেবে না আবার অনেকে বউকে খাওয়াতে পারবে না এই ভয়ে।এখন কথা হচ্ছে বাবা মায়ের অনুমতি ছাড়াই যদি ইসলাম আমাদের বিয়ের অনুমতি দেয় তাহলে কেমন হয়?

তাহলে তো আর কারো প্রেম করার প্রোয়জন হচ্ছে না যদি বিয়েটা এত সহজ বিষয় হয়।এটা অনেকের জানা নেই বিধায় বিয়ে না করে প্রেম করে



আমি কি বাবা মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারব?



ছেলেদের বিয়ে করতে বাবা মায়ের অনুমতি বাধ্যতামুলক নই,অনুমতি নেয়া ভাল এটা সর্ব মহলে স্বীকৃত।মেয়েদের ব্যাপারে কোন কোন ইমাম বলেছেন অভিবাবকের অনুমতি লাগবে ইমাম আবু হানিফা বলেছেন অভিভাবকের অনুমতিন লাগবে তবে অভিভাবক যে পিতা মাতায় হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই,বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন যে কেউ হলেই হবে।আপনার বন্ধু বান্ধবও হতে পারে।ইমাম আবু হানিফার ব্যাখাটি আমার কাছে অধিক ভ্যালিড মনে হয়েছে।কারন তার যুক্তির সপক্ষে তিনি ১০ টি সহিহ হাদিস পেশ করেছেন অপর দিকে বীপরিত মতের পক্ষে আছে একটি মাত্র জয়িফ হাদিস (দুর্বল)



চলুন দেখা যাক ইমাম আবু হানিফার বাখ্যাটি,



যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক। তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রকে বিবাহ করে, যার কারণে মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।



সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।



عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.



হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}



عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ»



হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}



2469 – حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: ” أَنَّ جَارِيَةً بِكْرًا أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَتْ أَنَّ أَبَاهَا زَوَّجَهَا وَهِيَ كَارِهَةٌ فَخَيَّرَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ”



إسناده صحيح على شرط البخاري.



وأخرجه أبو داود (2096) ، وابن ماجه (1875) ، والنسائي في “الكبرى” (5387) ، وأبو يعلى (2526) ، والطحاوي 4/365، والدارقطني 3/234-235، والبيهقي 7/117 من طريق حسين بن محمد المروذي، بهذا الإسناد.



وأخرجه ابن ماجه (1875) ، والنسائي (5389) ، والدارقطني 3/235 من طريق مُعمر بن سليمان، عن زيد بن حبان، والدارقطني 3/235 من طريق أيوب بن سويد، عن سفيان الثوري، كلاهما عن أيوب السختياني، به.



হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। কুমারী মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রাসূল সাঃ সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, [যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে]। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬}



عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: ” إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ، لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ، قَالَ: فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ: قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ “



হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের [চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫}



উল্লেখিত হাদীস ছাড়াও আরো এমন অনেক হাদীস রয়েছে, যা স্পষ্ট ভাষায় প্রমাণ করে যে, বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবক নয়, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে পিতা বা অভিভাবকের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই।



সুতরাং প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে নিলে তা সম্পন্ন হয়ে যাবে।



বিপরীতমুখী হাদীসের জবাব কি?



যে সকল হাদীস দ্বারা একথা বুঝা যায় যে, অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন হয় না, সেগুলোর অনেকগুলো জবাব মুহাদ্দিসীনে কেরাম ও ফুক্বাহায়ে কেরাম দিয়েছেন।



প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি আমরা দেখে নেই, তাহলে উত্তর দিতে সুবিধা হবে



عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهَا، فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ»، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ «فَإِنْ دَخَلَ بِهَا فَالْمَهْرُ لَهَا بِمَا أَصَابَ مِنْهَا، فَإِنْ تَشَاجَرُوا فَالسُّلْطَانُ وَلِيُّ مَنْ لَا وَلِيَّ لَهُ»



হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে মহিলাকে তার অভিভাবক বিয়ে দেয়নি, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল। এরপর স্বামী যদি তার তার সাথে মিলামিশা করে তবে সে মহরের অধিকারী হবে স্বামী তার সাথে [হালাল পদ্ধতিতে] মেলামেশা করার কারণে। আর যদি তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার অভিভাবক নেই, বাদশাই তার অভিভাবক বলে বিবেচিত হবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৮৭৯, সুনানে তিরামিজী, হাদীস নং-১১০২, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৯}



হাদীসটির বিষয়ে মন্তব্য



ইমাম বুখারী রহঃ বলেন, হাদীসটি মুনকার। {আলইলালুল কাবীর-২৫৭}



ইমাম তিরমিজী রহঃ বলেন, হাসান। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০২}



ইমাম তাহাবী রহঃ বলেন, হাদীসটি ফাসিদ। {শরহু মাআনিল আসার-৩/৭}



ইবনে কাত্তান রহঃ বলেন, হাদীসটি হাসান। {আলওয়াহমু ওয়ালইহামু-৪/৫৭৭}



জবাব নং ১



আমরা শক্তিশালিত্বের দিক থেকে আমাদের বর্ণিত হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ থেকে বর্ণিত হাদীসটির বিষয়ে ইমাম বুখারী রহঃ থেকে মুনকার হওয়ার এবং ইমাম তাহাবী রহঃ থেকে ফাসিদ হওয়ার কালাম রয়েছে। তাই আমরা এর উপর আমল করি না। পক্ষান্তরে আমাদের উপরে বর্ণিত সহীহ মুসলিম ও মুয়াত্তা মালিকের বর্ণনাটি সহীহ।



জবাব নং ২



أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، زَوَّجَتْ حَفْصَةَ بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمنِ، الْمُنْذِرَ بْنَ الزُّبَيْرِ. وَعَبْدُ الرَّحْمنِ غَائِبٌ بِالشَّأْمِ.



যেমন প্রশ্নে উল্লেখিত অভিভাবক ছাড়া মহিলা কর্তৃক বিয়ে সম্পন্ন না হওয়ার হাদীসটি হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ এর। অথচ খোদ আয়শা রাঃ তার ভাই আব্দুর রহমানের মেয়ে হাফসাকে তার অভিভাবক আব্দুর রহমানকে ছাড়াই নিজে বিয়ে দিয়েছিলেন মুনজির বিন যুবায়েরের সাথে। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-২০৪০, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৪২৫৫, সুনানুস সাগীর লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৩৭৪, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৩৫২২, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৩৬৫৩, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৫}



সুতরাং বুঝা গেল যে, উক্ত হাদীস দ্বারা খোদ বর্ণনাকারী হযরত আয়শা রাঃ নিজেই বিবাহ শুদ্ধ হয় না একথা বুঝেন নি। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বিয়ে অসম্পূর্ণ হয় অভিভাবক ছাড়া।



তাহলে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি কেউ যদি ভালবেসে ফেলে এবং বাবা মা যদি মেনে না তাহলে অন্য কাউকে অভিভাবক বানিয়ে আময়ার বিয়ে করা সম্পূর্ণ জায়েজ।বাবা মা আমাদের খাসী বানিয়ে রাখবে এটা ইসলাম কখনই এলাও করে না।সুতরাং প্রিয় ভাই বোনদের প্রতি আমার আহভান বাবা মায়ের ভয়ে কিংবা রিজিকের ভয়ে লিকিয়ে লিকিয়ে প্রেম না করে বিয়ে করে ফেলুন,এটা বিয়ে করা আপনার অধকার।



আর আল্লাহ রিজিকের মালিক তিনি বলেছন অসচ্ছলদের সচ্ছল করে দিবেন,"তারা যদি নিঃস্বহয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।(২৪:৩২)"



এরপর আর আমাদের বিয়ের পথে আর কোন বাধা থাকল না।রাসুল (সঃ) বলেছেন বিয়ে দ্বীনের অর্ধেক ।বিয়ে করলে দ্বীন পরিপূর্ণ হয়।আল্লাহ আমাদের সকলকে বিয়ে করে পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার তোউফিক দিন আমিন।





: সোহাগ আহমেদ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.