নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যাংকিং খাতে নজর দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩০

সমস্যাটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম তখনই যখন নিয়মিত ঋণ সুবিধাটিকে বৃদ্ধি করতে গেলে ব্যাংক গড়িমসি করতে শুরু করে দেয়।

একজন পুরনো গ্রাহক যার কিনা পাাঁচ বছরে একিট ডিল ও ওভারডিও (টাকা জমা দেবার নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়া) নেই। ইনভেস্টমেন্ট এবং সাধারণ একাউন্ট উভয়টিতে ট্রানজাকশান প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কয়েকগুন বেশি।

রপ্তানীও পূর্বের বছরের তুলনায় দ্বিগুন। বর্ধিত ঋণের জন্য দেয়া সিকিউরিটির ভ্যালু দাবিকৃত অর্থের তিনগুন। তারপরও ব্যাংক তার ঋণ সুবিধা বর্ধিত করে দিতে তালবাহানা করছে!

একসময় জানতে পারা গেল ব্যাংকের লিমিট প্রায় শেষ। অতিরিক্ত ঋন দেবার মতো তাদের তেমন কোন টাকা নেই।

ব্যাংক ম্যানেজারসহ ব্যাংকের উপর লেভেল এর কর্তারা বিষয়টি স্বীকার গেলেন অনেক শেষে।

যে ব্যাংকে কয়েক মাস আগেও এত অলস টাকা ছিল যে, দেখা হলেই ব্যাংক ম্যানেজার বিনিয়োগ বাড়িয়ে নেবার জন্য কান ঝালাপালা করে ফেলতেন। নতুন কোন বিনিয়োগ গ্রহীতা এনে দেবার জন্য অনুরোধ করতেন। এত দ্রুত সেই ব্যাংকের সব টাকা শেষ!

বিষয়টা অবাক হবার মতোই বটে।

ব্যাংক ছেড়ে যাবার কথা বলে ব্যাংকের উপর মহলকে চাপ দিতে লাগলাম। ব্যাংকের ডিমডি সহ সবাই ধৈর্য ধারণ করতে বললেও ভেতর ভেতর অন্য ব্যাংকে যাবার জন্য আলাপ আলোচনা করতে লাগলাম। কিন্তু কোন ব্যাংকই আগের মতো নতুন বিনিয়োগ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

মাত্র কয়েক মাসে ব্যাংকগুলোর এই হাল কী করে হলো ভেবে পেলাম না।

যা হোক প্রায় তিন মাস পর ঋণ সুবিধাটি চাহিদার তুলনায় অর্ধেক দিয়ে বর্ধিত করা হলো। বলা হলো, আপাতত এদিয়ে চলুন।

এর পর শুরু হলো আরেক সমস্যা.....

নতুন প্রজেক্ট এর জন্য মেশিনারি লাগবে। ক্যাপিটাল মেশিনারির জন্য একটি এল সি খুলতে গিয়ে ব্যাংক ড্রাফট এলসি দেবার পর অরিজিনাল এলসি দিতে পারছে না।

মেশিন সাপ্লায়ারকে ড্রাফট দেবার পর অরিজিনাল এলসি দিতে না পারায় বিরক্ত হয়ে সে বলেই বসলো, "তোমাদের ওখানে হচ্ছেটা কি! এ সামান্য অর্থের (দেড় লাখ ডলার) এল সি খুলতে পারছে না তোমাদের ব্যাংক।"

একই প্রশ্ন আমার নিজেরও, আসলে হচ্ছেটা কি!

চার থেকে পাঁচ কার্য দিবস লাগার কথা হলেও সেখানে লাগলো এক মাস! ইনভেস্টমেন্ট লিমিট হোল্ডার একজন গ্রাহককে ৩০% ক্যাশ মার্জিন দেবার পর লিখিত দিতে হলো যে বাকি টাকা যে কোন ভাবে ক্যাশ দিয়ে মেশিন ছাড়াতে হবে।

ব্যাংক ভয়ে আছে এলসি পেমেন্ট করার সময় না আবার ঋণ সুবিধা চেয়ে বসে থাকি! অথচ কয়েক মাস আগেও ব্যাংকগুলো ঘুরে ঘুরে মেশিন লাগবে কিনা জিজ্ঞেস করতো।

সব চে বড় ঘটনা ঘটলো যখন ডিসম্বরের মাঝামাঝি এসে ব্যাংক থেকে অসহায় গলায় বলা হলো তারা কোন ধরণের ডিসবার্সমেন্ট(মাল কেনার জন্য লোন একাউন্ট থেকে টাকা ছাড় দেয়া) দিতে পারবে না। তাদের দেবার মতো টাকা নেই। দারুণ বিপদে পড়া গেল। কেন না কারেন্ট একাউন্ট এ মালামাল কেনার মতো টাকা নেই।

হাতে একটি এক্সপোর্ট এলসি ডকুমেন্ট ছিল সেটি পার্সেজ (৯০% নগদ অর্থের বিনিময়ে কিছুটা কম রেটে ব্যাংকের কাছে ডকুমেন্ট বেচে দেয়া) করতে গেলে ফরেন এক্সেঞ্জ ইনচার্জ অসহায় ও কাঁপা গলায় বললেন ডকুমেন্ট পার্সেজ করতে নিষেধ করা হয়েছে হেড অফিস থেকে। পার্সেজ করার মতো টাকা নেই তাদের।

বড় ধরণের ধাক্কা খেলাম এবার।

হাতে অনেকগুলো এক্সপোর্ট অর্ডার। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর মাল ডেলিভারি করতে হবে। অপর দিকে দেশি সাপ্লায়ারদের চাপ তাদেরকে টাকা দিয়ে মাল কিনতে হবে। কারখানার জন্য কাঁচামাল কিনতে হবে।

পুরো কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে।

গতকাল একজন ইন্ডিয়ান বায়ার এসে গেছে নির্দিষ্ট সময়ে মাল ডেলিভারি দেবার চাপ রয়েছে। আজ আরেকজন আসবে তারও একই চাপ। আরো কয়েকটি অর্ডার আছে। তাদেরও একই চাপ দ্রুত মাল ডেলিভারি দিতে হবে। কেন না তাদের বাজারে প্রতিদিন প্রাইস ডাউন হচ্ছে।

কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। আমাদের ব্যাংকিং বিপর্যয়ের কথা তারা বুঝতে চাইবে না। তাদের নির্দিষ্ট সময়ে মাল দরকার।

অর্থের হিসেবে কতো লস হবে সে কথা ভাবছি না এখন। শুধু ভাবছি, বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নিজেদের ইমেজ ও ইজ্জত বাঁচানোর কথা...।

মাত্র কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ বেসরকারী ব্যাংকটি যেখানে বিনিয়োগ গ্রাহক খুঁজতো রাতারাতি সেই ব্যাংকের টাকাগুলো কাদের বিনিয়োগ দেয়া হলো কিংবা কোথায় গেল সেই খোঁজ নেয়া দরকার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব হস্তক্ষেপ ব্যতীত এই সেক্টরকে টেনে তোলা আর সম্ভব নয়। ব্যাংকগুলোর দিকে নজর দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনার নিজস্ব নজরদারি ছাড়া এই খাতের আর রক্ষা নেই....। এই অসহায় জাতির জন্য বর্তমানে আপনিই যে আমাদের শেষ ও একমাত্র ভরসা....

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৯

ভিটামিন সি বলেছেন: ব্যাংকে চাকুরির অভিজ্ঞতা মাত্র দুই বছর হতে চললো। আপনার পুরো পোষ্টটি পড়লাম। আপনার এ অভিজ্ঞতা কোন কোন ব্যাংকের ক্ষেত্রে হয়েছে জানি না, তবে আমাদের ব্যাংকে এতটা না। আমরা এখনো ভালো কাষ্টমার খুঁজছি, কোটি টাকা লোন প্রদানের জন্য। আমাদের প্রফিট এ বছরে ১০ কোটি + (এক শাখায়)।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০০

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: আপনার ব্যাংক কোনটি, কোন শাখায় আছেন আপনি

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ব্যাংকিং সেক্টর ইতিমধ্যেই ধংস হয়ে গেছে। ব্যাংকের আমানতকারীরা তাদের টাকা ফেরত পাবেন না এটা অবধারিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.