নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাই জাপানি পার্টস....

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪২

"এই যে জাপানি পার্টসের সাথে চাইনিজ পার্টস ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে এই দুই রকম পার্টসের সমন্বয়ে একটি ইঞ্জিন কিভাবে ভালো সার্ভিস দিবে বলেন তো ভাই?"

বছর কতেক আগে দারুণ হাতাশাভরা কণ্ঠে ছোট ভাই ফারুক প্রশ্নটি করলো আমায়। সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে নিম গাছ তলায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম দুজন।

প্রচণ্ড মেধাবী একটা ছেলে। ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর এফ রহমান হলে ওদের রুমে গিয়ে প্রায়ই আড্ডা দিতাম আমি।

শুরুতে প্রশ্নটি বেশ ধাক্কার মতো লাগলো আমার কাছে। বললামম, "ইঞ্জিনের দফা শেষ হতে বেশি দিন লাগবে না।"

হাড় কাঁপানো গভীর এক দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো ফারুকের বুকের গহীন থেকে। তার কাঁধে হাত রাখলাম আমি। বললাম, "হতাশ হইও না। ধৈর্য ধরো।"

"ধৈর্য কী করে ধরবো ভাই? এক সাথে পড়ছি। পড়তে পড়তে জীবন শেষ করে দিচ্ছি। একের পর এক পরীক্ষা দিচ্ছি, ভাইবা দিচ্ছি। কিছুই হচ্ছে না। অথচ ওদের একের পর এক চাকরি হচ্ছে। আমরা চেয়ে চেয়ে দেখছি।"

বললাম, "ওরা কারা?"

"কারা আবার, ঐ যে চাইনিজ পার্টস- কোটাধারী!" ওর কণ্ঠজুড়ে ক্ষোভ।

জবাব শুনে থ হয়ে রইলাম। দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো নিজের বুক থেকেও।

ফারুকের চোখ দুটো টলমল করে উঠলো। বেচারা তখন তিনিটা বিসিএস ভাইবাসহ কয়েকটি চাকরির ভাইবা শেষ করে এসেছে। হতাশ হবার মতো বিষয়ই বটে।

"মাঝে মাঝে মন চায়, মরে যাই ভাই।"

আমি আবারও কাঁধে হাত রাখলাম ফারুকের।

শুধু ফারুক নয় লাখো তরুণ তরুণির ভেতরটা প্রতিনিয়ত কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে কোটা বৈষম্যের এই যন্ত্রনা।

অসংখ্য তরুণ তরুনির ভাষ্য হচ্ছে, সরকার তাদের বেতনের অর্ধেক কেটে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণার্থে ব্যয় করুক তবুও বৈষম্য দূর করে তাদের সমান সুযোগ দেয়া হওক।

আমি বলবো মেধাবী এই তরুণ তরুণিদের সেবা থেকে জাতি বঞ্চিত হচ্ছে..।

কোটা বিরোধী কোন আন্দোলন হলেই সেটিকে স্বাধীনতা বিরোধীদের আন্দোলন বলা হয়ে থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে এ দেশে ক'জন স্বাধীনতা বিরোধী রয়েছে? মোট জন সংখ্যার তুলনায় সেই কীটদের সংখ্যা একেবারেই নগন্য।

কোটার মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত অনেককেই আজকাল নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার পুত্র-কণ্য কিংবা নাতি-নাতনির পরিচয় চেপে যেতে দেখা যায়। তারা নিজেরাও অস্বস্তি বোধ করেন বিষয়টি নিয়ে। এটিও খারাপ দিক যে, তারা সুবিধা নিচ্ছেন ঠিকই কিন্তু তাদের গর্বিত পিতা-দাদার পরিচয় গর্বের সাথে দিতে সংকোচ বোধ করছেন।

শুধু প্রতিবন্ধী কোটা ব্যতীত বর্তমানে বাংলাদেশে আর কোন কোটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। বর্তমানে আমাদের "দেশ" নামক ইঞ্জিনটি যে অবস্থানে আছে তাতে দরকার জাপানি পার্টস এর। দরকার ঝাঁকে ঝাঁকে মেধাবী কর্মকর্তা কর্মচারির....। তবেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলা এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে...।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.