নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরিষার তেলের যত গুন

২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৮

ছোটবেলায় দেখতাম খাবার তেল হিসেবে একমাত্র সরিষার তেল ই ব্যবহার করা হতো। গ্রাম গঞ্জে সরিষার তেল কে বলা হতো "ভালো তেল বা গুড অয়েল।

মাঠে ঘাটে সরিষার আবাদ হতো খুব। ৮০'র দশকের পর থেকে ক্রমশ সেই সরিষার তেলের জায়গা করে নিলে বিদেশি আমদানিকৃত তেল। কমতে শুরু করলো সরিষার আবাদ। একে একে ঘানি ও এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মজীবী মানুষগুলো কর্মহারা হতে লাগলেন।

ওষুধি গুণাগুণের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই তেল। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। ভারতীয় উপমহাদেশে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ থেকে সরিষার ব্যবহার হয়ে আসছে। সরিষার তেল উদ্দীপক হিসেবে পরিচিত। অন্ত্রে পাচকরস উৎপাদনে সাহায্য করায় হজমপ্রক্রিয়া দ্রুত হয়। এ ছাড়া একই প্রক্রিয়ায় ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এতে রয়েছে ওমেগা আলফা ৩ ও ওমেগা আলফা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। ভিটামিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায় সরিষার তেলকে স্বাস্থ্যকর তেল বলা হয়। বিভিন্ন ভোজ্য তেলের ওপর করা একটি তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা যায়, সরিষার তেল ৭০ শতাংশ হৃৎপিণ্ড–সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল ব্যবহারে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়, যা হৃদ্​রোগের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।

এ ছাড়া সরিষা তেল ঠান্ডা ও কাশি উপশমে সহায়ক। যখন বুকে প্রয়োগ বা তার দৃঢ় সুবাস নিশ্বাসের মাধ্যমে নেওয়া হয়, এটা শ্বাসযন্ত্রের নালির থেকে কফ অপসারণেও সাহায্য করে। শুধু খাওয়ার জন্যই নয়, সরিষার তেল চুল ও ত্বকের যত্নেও কাজে লাগে।

ত্বকের যত্নে ব্যবহার:
সরিষার তেল ত্বকের তামাটে ভাব ও দাগ দূর করে এবং ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করতে পারে। এ জন্য বেসন, দই, সরিষার তেল ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি আপনার ত্বকে লাগান। ১০-১৫ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন।

এই তেল ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে ত্বককে সুরক্ষা করে। তাই এটি ত্বকের ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে। ভিটামিন ই বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই সানস্ক্রিন লোশনের মতোই ব্যবহার করতে পারেন এই সরিষার তেল।

চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক:
সরিষার তেল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অকালে চুল সাদা হওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমায়। সরিষার তেলে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ থাকে। বিশেষ করে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে এতে। বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন-এতে রূপান্তরিত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। এ ছাড়া প্রতি রাতে চুলে সরিষার তেল মালিশ করে লাগালে চুল কালো হয়।

উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে:
সরিষার তেল পরিপাক, রক্ত সংবহন ও রেচনতন্ত্রের শক্তিশালী উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া খাওয়ার পাশাপাশি বাহ্যিকভাবে শরীরে মালিশ করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন এবং ঘর্মগ্রন্থি উদ্দীপিত হয় এবং শরীরের তাপমাত্রা কমে।

ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়:
সরিষার তেলে গ্লুকোসিনোলেট নামক উপাদান থাকে, যা অ্যান্টিকারসিনোজেনিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। তাই এটি ক্যানসারজনিত টিউমারের গঠন প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট কোলোরেক্টাল ও গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ক্যানসার থেকে সুরক্ষাও প্রদান করে।

চুল পাকা রোধ করতে
সরিষা তেলের পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন, মিনারেল চুলের অকালপক্বতা রোধ করে থাকে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই তেল মালিশ করুন চুল এবং মাথার তালুতে যা আপনার চুল পাকা রোধ করবে।

কার্ডিওভাসকুলার উপকারিতা:
সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ বলে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এর ফলে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে।
(সরিষার তেলের উপকারী দিকগুলো ১২-০৫-২০১৯ সালে প্রথম আলোতে প্রকাশিত পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহানের লেখা থেকে সংগৃহীত)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রামে দেখতাম, নদী বা পুকুরে গোছলের আগে মামা চাচারা শরীরে ইচ্ছা মতোন সরিষার তেল মাখতেন।

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমাদের গ্রামে সরিষার তেলকে বলা হতো কটৃ তেল।
আমি ১্টাকা চার আনা দিয়ে ১ পোয়া কটু তেল কিনেছি।
এই তেল গায়ে মাখতাম, রান্নাও হতো এই তেলে। তবে
তিলের তেলও রান্নায় ব্যবহার হতো।

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫০

শাহ আজিজ বলেছেন: আমরা সরিষার তেল খেতাম । পাকিস্তানে রেশন চালু হল ৬৬ কি ৬৭ সালে । গম , সয়াবিন তেল পাওয়া যেত । আমি বাবার নির্দেশে গম আনতাম তেল নয় । সরকার সরিষার তেলে স্বল্পতা দেখিয়ে বাজারে ক্রাইসিস তৈরি করল । আমরা মজুদ নারকেল তেল খেতে শুরু করলাম । পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হল । বাংলাদেশ স্বাধীন হলে রেশন নির্ভরশীলতা বেড়ে গেল । আমি সয়াবিন তেল আনা শুরু করলাম সাথে অল্প গম । সয়াবিন ভোজ্য তেল এবং স্বাস্থ্যকর । এখন ঘানিতে ভাঙ্গা সরিষার তেলের রমরমা ব্যাবসা । ঢাকাতে দোকানের ভিতরে মেশিন বসিয়ে সর্ষে ক্রাশ করে তেল বের করছে । আমরা ভর্তায় সর্ষের তেল ব্যাবহার করি । ঝিনুকে সর্ষের তেল আর রসুন ছেচে মোমের আলোয় পুড়িয়ে মালিশ গাঁটের ব্যাথায় প্রচণ্ড কাজে দেয় । সর্ষের তেল ঠাণ্ডা নিরোধক ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.