নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সন্তানদের মানুষকে ভালোবাসতে শিখান..

০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫২

এক আজওয়াদের করুণ গল্প পড়ে চোখের জল আটকে রাখতে পারলাম না। স্কুলে গেলে সহপাঠীদের দ্বারা বুলিং এর শিকার হতো আজওয়াদ। মাঝে মধ্যে কয়েকজন শিক্ষকও হাসি-তামাশা করতেন তাকে নিয়ে। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৬ বছর বয়সী কিশোর আজওয়াদের সমস্যা ছিল সে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক "মোটা"। তাই সবাই তাকে নিয়ে মজা করতো। ঠাট্টা মশকারা করতো। তার কোন ভালো বন্ধু গড়ে ওঠেনি। কেউ তার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই তো না। এড়িয়ে চলতো।

আজওয়াদ স্কুলে যেতে চাই তো না। মিথ্যা অযুহাতে স্কুল কামাই করতো। গেলেও প্রাণভরে নি:শ্বাস নিতে পারতো না। মনে হতো এই বুঝি কোন সহপাঠি বা শিক্ষক তাকে নিয়ে ঠাট্টায় মেতে উঠবে!

স্কুলে আজওয়াদ স্বাভাবিক বিচরণ করতে পারতো না। দোষটা আজওয়াদের নয়। দোষটা আমাদের বাবা-মা'দের যারা তাদের সন্তানদের শেখাতে পারেন নি যে, মোটা মানে ই সে খারাপ নয়। অধিক হ্যাংলা মানেই সে খারাপ নয়। বেঁটে মানেই সে খারাপ নয়। কালো মানেই সে খারাপ নয়। কোন বাচ্চা চোখের সমস্যার দরুণ মোটা-কাঁচের চশমা পরলেই সে খারাপ নয়। কারো আঘাতে একটি-দুটি দাঁত পড়ে গেছে কিংবা দাঁত পোঁকা খেয়ে ফেলেছে তাই বলে সেই বাচ্চাটা খারাপ নয়। কেউ ঝকঝকে পোশাক পরে আসে নি বলে সে খারাপ নয়। অসুন্দর নয়। তাকে নিয়ে কোন ধরণের ঠাট্টা তামাশা করার কিছু নেই। সেও একই স্রষ্টার সৃষ্টি।

...শারীরিক ত্রুটির কারণে আজওয়াদ ক্রমশ মোটা হতে থাকে। সহপাঠীদের অত্যাচারও ক্রমশ বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে আজওয়াদের নিজের প্রতি নিজের ঘৃণার পরিমান। ইউটিউব দেখে সে কিভাবে কম খেয়ে শুকাতে হয় সেই পন্থা অবলম্বন করতে শুরু করে। অতিরিক্ত ব্যায়াম ও কম খাবারের কারণে তার ওজন ৯৩ কেজি থেকে কমে ৬০ কেজি তে চলে আসে। সবসময় মোটা হবার ভীতি কাজ করতো তার ভিতর। অধিক খেলে বমি করে ফেলে দিতো। বাবা-মাও ভেবেছেন ওজন কমেছে ভালো হচ্ছে। কিন্তু কেউ ওর ভিতরের কষ্টটা অনুভব করার চেষ্টা করে নি কখনো।

একসময় আজওয়াদের ওজন কমে ২৯ কেজি হয়ে যায়। শরীরে শুধু হাড় আর চামড়া দেখা যেত। শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয় তার। ২৫ জুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, আইসিউ তে ২৬ জুন আজওয়াদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এই খবরটি পড়ে আমি কিছুইতে ই চোখের জল আটকে রাখতে পারলাম ন।

প্রায় ই দেখি ছোট ছোট বাচ্চারা তাদের বাসার কাজের লোকদের নাম ধরে ও তুই তোকারি করে ডাকে। আমি বিস্মিত হই। বাচ্চারা আদব কায়দা, অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কোথা থেকে শিখবে যদি তার বাবা-মা ই বেয়াদ হন? বেয়াদব না হলে তাদের সামনে বড়দের কি করে ছোট্ট একটা বাচ্চা নাম ধরে ডাকে। আপু, আন্টি, চাচ্চু আংকেল ইত্যাদি ডাকতে দোষ কোথায়?

আমার বাচ্চারা কাউকে সালাম দিতে ভুলে গেলে তাৎক্ষণিক মনে করে দেই। আপনার সন্তানদের মাঝে সালাম প্রদানের প্রচলন করুন। এতে করে তাদের ভিতর সহমর্মিতা জাগ্রত হবে। তাদের ভিতরকার অহমিকা ক্রমশ লাগব হবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

মহানবী (সা) বলেন, ‘সন্তানের জন্য পিতা-মতার পক্ষ থেকে
ভালো আদব-শিষ্টাচার শিক্ষা দান অপেক্ষা উত্তম কোন
উপহার নেই’ (তিরমিযী)। ৪সন্তানকে ফুলের সাথে তুলনা করা যায়।
ফুলের মন মাতানো সৌন্দর্য ও হৃদয়গ্রাহী সুবাসের প্রতি আকর্ষণ চিরন্তন।
ফুল মৌমাছির ভীড় ও সুস্বাদু মধু আহরণের উৎস। সন্তান ভালোভাবে গড়ে
উঠলে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ এবং মধুর স্বাদ-আস্বাদন করা যায়। কিন্তু
সন্তান হয় ফুলের মতো সৌরভ বিলায়, না হয় বিভ্রান্তি ও বিপথগামিতার দুর্গন্ধ ছড়ায়।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫৬

কামাল১৮ বলেছেন: মনে হয় যেন ওদের ভাগের টা খেয়ে ও মোটা হইছে।এই সব কুলাঙ্গারদের নিন্দা করার ভাষা আমার জানা নাই।

৩| ১০ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:২৬

হাবিব বলেছেন: যারা এই রকম কথাবার্তা বলে তাদের ধরে এনে দুই গালে রুটিন মাফিক থাপরানো উচিত। বদের হাড্ডি। কেউ মোটা হলেও বলবে, চিকন হলেও বলবে। এদের জন্মই যেন হয়েছে মানুষের ক্ষুত ধরার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.