নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজেকে ভালোবাসুন। আপনার কর্মস্থল কে ভালোবাসুন...

১০ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২৫

হাশেম ফুডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিক ভাইবোনদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। বিষয়টি অনেক মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। প্রতি বছর ই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকে। এতে শ্রমিক কর্মচারি কর্মকর্তাদের যেমন প্রাণ যায় তেমনি কারখানার মালিক পক্ষও সব কিছু হারিয়ে পথে বসে যান।

কারখানার অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে মূলত দায়ী অসতর্কতা। আমি শ্রমিক কর্মচরি ভাই-বোনদের বলবো আপনারা সবাই সাবধানতার সাথে কাজ করবেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করবেন না। হাশেম ফুডে আগুন লাগার ঠিক একদিন আগে আমার কারখানার একজন শ্রমিকের পা পুড়ে যায়। যার জন্য এককভাবে সে নিজে দায়ী। অনেক বড় দুর্ঘটনাও গঠতে পারতো। ট্যাংক এর নিচে বার্নারে আগুন লাগাবার আগে সে বাইরে থাকা গ্যাসের বোতলের চাবি ছেড়ে দিয়ে আসে। অনেক সময় ধরে গ্যাস নিচের চেম্বারে জমা হতে থাকে। তারপর সে কাঠির মাথায় আগুন লাগিয়ে বার্নারে দেয়ার সাথে সাথে আগুন ছড়িয়ে তার পায়ে তাপ লেগে চামড়া পুড়ে যায়। আমি দৌড়ে ছুটে গিয়ে ঢাকা এনে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করি। তার অসতর্কতার জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো। সেখানে একজন বোতলের চাবি খুলবে আরেকজন আগে থেকে বার্নারে আগুন লাগিয়ে ধরে থাকবে। যাতে গ্যাস জমা হতে না পারে। অথচ সে করলো কি!

সবসময় আমি সবাইকে সাবধনতার সাথে কাজ করতে বলি। আমাদের একটি ফ্যাক্টরিতে দুইটা ইমার্জেন্সি এক্সিট গেট রাখা আছে। মাঝে মধ্যে গিয়ে দেখি, দুইটা গেটের সামনেই অযথা বিভিন্ন জিনিস রেখে ব্লক করে রাখা হয়েছে। আমি গিয়ে নিজে থেকে সেগুলো ক্লিয়ার করি। এবং গেট খুলে রাখতে বলি। সাবস্টেশন, জেনারেটর রুম সবসময় ক্লিন ও ঝামেলা মুক্ত রাখতে বলি। অথচ তারা কথা শুনে না। সাবস্টেশন রুমের সামনে ব্লক করে রাখে। জেনারেটর রুমে জিনিসি পত্র রাখে।

আগুন নেবানোর বোতল গুলো ঠিকঠাক মতো রাখতে বলি। রিজার্ভ ট্যাংক এর সাথে লাগানো পাইপ মাঝে মধ্যে নিজে গিয়ে ছেড়ে চেক করি। এগুলো আসলে কারখানায় যারা থাকেন তাদের দায়িত্ব। কিন্তু এসব বিষয়ে তারা উদাসীন থাকে। একজন মালিক প্রতিদিন সব কটি কারখানায় যেতে পারে না। যদি তার একাধিক কারখানা থাকে। এ ছাড়াও তার আরো অনেক কাজ আছে।

ধুমপানমুক্ত কারখানা তারপরও যে যার মতো বিড়ি সিগারেট খেয়ে এদিক সেদিক গোড়া ফেলে রাখতো। পরে নির্দিষ্ট জায়গা করে দিয়েছি বালি ভর্তি বালতি দিয়েছি সিগারেটের গোড়া ফেলার জন্য।

মাস চারেক আগে কয়েকজন শ্রমিকের গাফিলতি তে আমার একটি কারখানার ৭০ ভাগ মাত্র ১০ মিনিটে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ অনেক। আল্লাহ রহম করছে কেউ আহত হয় নি। ডিপ টিউটওয়েলের সুইচ ছেড়ে দিয়ে রাখছে কিন্তু পানি ওঠে না। কেউ চেক করে নি। একসময় টিউবওয়েলের গোড়ার তার পুড়ে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন কিছু দিয়ে ই আর নিয়ন্ত্রন করতে পারে নি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিভিয়েছে।

আমি একটি গ্রুপ খুলে দিয়েছি যেখানে দিনে কয়েকবার আমাকে সেইফটি বিষয়ে ইনফরমেশন দিতে হয়। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বলবো আপনারাও এমনভাবে মনিটরিং এর ব্যবস্থা করুন। আপনার কারখানার নিরাপত্তার বিষয়টি তে সবচে বেশি জোর দিন। কারখানায় গেলে আমি ঘুরে ঘুরে আগে পুরো কারখানা পরিদর্শন করি। প্রতিটা ইলেকট্রিক বোর্ড চেক করি। তারপরও সবসময় আতঙ্কে থাকি।

শ্রমিক কর্মচারি কর্মকর্তা ভাই বোনদের বলবো। আপনার কারখানার নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্ব আপনার। নিরাপত্তা জনিত কোন বিষয় যদি আপনার নজরে আসে যেটা ঠিক করা প্রয়োজন। তাহলে তাৎক্ষণিক মালিক কে জানান। অনিরাপদ জায়গায় কাজ করবেন না। সবসময় সাবধানতার সাথে কাজ করুন। আপনি আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। পাশাপাশি কারখানা বা নিজ কর্মস্থল কে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করুন। নিজেকে ভালোবাসুন। আপনার কর্মস্থল কে ভালোবাসুন...।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.