নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাসান ইকবাল-এর লেখালেখির অন্তর্জাল।

হাসান ইকবাল

.... ছেলেবেলার দুরন্ত শৈশব কেটেছে নেত্রকোনায়। আর সবচেয়ে মধুর সময় ছিল সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দিনগুলি। আর এখন কাজ করছি সুবিধাবন্চিত শিশুদের জন্য একটি স্পানিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায়।

হাসান ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাগলা ছত্তার: জীবন ও গান -১

২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:০৪

চারণ কবি পাগলা ছত্তার নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা উপজেলার নুরুল্লাচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার সমস্ত জীবন কেটেছে কংশ নদীর তীরে মোহনগঞ্জের আশেপাশে।

তিনি এক স্বতন্ত্র ধারার স্বভাব কবি, একান্ত নিজস্ব উচ্চারন ও শব্দে কঠিন বিষয়কে তাঁর মত করে তুলে ধরতেন। অনেক গবেষকের মতে তিনি দেশের লোকজ ধারার অনন্যা প্রতিভা যেটির আর দ্বিতীয়টি কেউ নেই। তার গানে একটা নিজস্ব ভঙ্গিমা আছে, যা অন্য কারো গানে নাই। হতদরিদ্র, নিরক্ষর ছত্তার পাগলা মুখে মুখেই তাৎক্ষণিক রচনা করতেন এবং গানে সুর বাঁধতেন। সেই গান মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা ও নেত্রকোণা শহরের পথেঘাটে গেয়ে বেড়াতেন। তার গানে ও কথায় নেত্রকোণা অঞ্চলের লোকভাষা ধরা পড়ে। সে ভাষার একটা মায়া ও মুগ্ধতা আছে।


গান গাওয়ার সময় তার কন্যার হাতে থাকতো ডুগডুগি আর তার হাতে থাকতো নিজের হাতে বানানো বিশেষ এক ধরনের বাঁশি। বাস্তবিক জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সহজ সরল একজন মানুষ। বাউলশিল্পী অন্ধ ওলিদ মিয়া বলছিলেন যে, ছত্তার পাগলার গানের রীতি এখানকার বাউলগানের রীতির চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি গান করছেন খঞ্জরী বাজিয়ে। কিন্তু যারা বাউল গান করেন তাদের যন্ত্রপাতি আলাদা, রীতিও আলাদা।



ছত্তার পাগলা গান করতেন হাটে বাজারে মাঠে ঘাটে। স্থানীয় শিল্পীরা তাকে অনেকসময় গ্রহণ করতে পারতেন না। এজন্য তিনি কম অবহেলার শিকার হননি। অথচ ছত্তার পাগলার মূল বৈশিষ্ট্য জীবনঅভিজ্ঞতাকে আঞ্চলিক ভাষায় গানে তুলে ধরা। যেমন : ‘কাঙাল মাইরা জাঙ্গাল দিলে গুনা অইব তর’, ‘কে দিল পীরিতের বেড়া লিচুর বাগানে’, ‘হারবেইজা তুই ফুটবল খেলাডা তওবা কইরা ছাড়’ উলে¬খযোগ্য। ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুয়ার বাগানে’। এটি একটি বিখ্যাত গান, তবে এই গানটি সংগৃহীত। কিন্তু শিল্পী ছত্তার এটিকে মহিমা দিয়েছেন। এই গানের শেষের কয়েকটি লাইনও ছত্তার বাউলের। এমন আরো অনেক বিখ্যাত গান রয়েছে।

তার এই রীতি ও বয়ান বাংলা গানে কিছুমাত্রায় হলেও নতুনতার স্বাদ যোগ করেছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে ফুটবল খেলার প্রতি পাগলা সাত্তারের দারুন ক্ষোভ। তাই তিনি এই ফুটবল খেলা নিয়ে একটি অ্যান্টি ফুটবল থিম সং তৈরি করেছিলেন। তবে যে পারভেজকে নিয়ে গান লিখেছিলেন ছত্তার পাগলা সে পারভেজ একজন স্বচ্ছল ব্যবসায়ী। সে গানটি এখানে তুলে দিলাম।

(গান)

পারভেইচ্যারে
বল খেলাডা তত্তবা কইরা ছাড়
আমি তরে না করতাছি পাগল ছত্তার
২২ জনে একটা বল লয়া
বড় একটা মাঠে গিয়া
দৌড়া দৌড়ি ক্যার লাগিয়া
এইডা কী ব্যাপার?
পারভেইছ্যারে
বল খেলাডা তওবা কইরা ছাড়
বল লয়া দৌড়া দৌড়ি
গোলের হুমনে পাড়া পাড়ি
বেডি বেড়ায় কয় লাথি মারি।।
পারভেইচ্যারে
বল খেলাডা তওবা কইরা ছাড়।।

তার গান নিয়ে বিস্তারিত পোস্ট দিব পরবর্তী পর্বে।



তথ্যসূত্র: নেত্রকোণার বাউল কবি, হামিদুর রহমান, ২০১৮, অয়ন প্রকাশন, ঢাকা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: বাউল ছত্তারের সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো।

২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:২৯

হাসান ইকবাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.