নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীরব কথামালা

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে আসতেই হয়, ভাবনা প্রকাশে......!

এম এ হাসান মাহামুদ

লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।

এম এ হাসান মাহামুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মানবতা বিরোধী বিচারের গ্রহনযোগ্যতা..

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১৭





জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই রায় দেন।

এটি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার দ্বিতীয় ও জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে করা মামলায় প্রথম রায়।

এটি ১৩২ পৃষ্ঠার রায়। এতে ৪২৯টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। তবে সংক্ষিপ্ত রায় পড়ে শোনানো হয়।





তিন অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদণ্ড

ট্রাইব্যুনালে আনা কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ, তিনি একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন।

দ্বিতীয় অভিযোগ, একাত্তরের ২৭ মার্চ তিনি সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন।

তৃতীয় অভিযোগ, একাত্তরের ২৯ মার্চ বিকেলে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে আরামবাগ থেকে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জল্লাদখানা পাম্পহাউসে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন।

এই তিন অভিযোগের ব্যাপারে কাদের মোল্লাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।



এক অভিযোগ থেকে অব্যাহতি

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগ অনুসারে, ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি ও ঘাটারচরে (শহীদনগর) শতাধিক নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে হত্যা করেন।

এই অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তা থেকে কাদের মোল্লাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।



দুই অভিযোগে যাবজ্জীবন

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে পঞ্চম অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালান। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত হন।

ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা, তাঁর সহযোগী ও পাকিস্তানি সেনারা মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় যায়। কাদের মোল্লার নির্দেশে হযরত, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণের শিকার হন এক মেয়ে।

এই দুই অভিযোগে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।



কাদের মোল্লার উপস্থিতিতে রায়

রায় ঘোষণার সময় জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক (কারা) আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, কাদের মোল্লা এত দিন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকে গতকাল রাতে তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। ঢাকার কারাগার থেকে তাঁকে আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হবে।



নিরাপত্তাব্যবস্থা

পুলিশের রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার ইমানুল হক প্রথম আলো ডটকমকে জানান, ট্রাইব্যুনাল ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় ১০ প্লাটুন পুলিশ, র‌্যাব ও আর্মড ফোর্স রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ও সোয়াত দলও আছে। ট্রাইব্যুনালের ভেতর ও বাইরে ৫০টির বেশি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।



ফিরে দেখা

মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা ২০১০ সালের ২১ জুলাই কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আবদুর রাজ্জাক খান ও মনোয়ারা বেগম। ওই বছরের ২ আগস্ট কাদের মোল্লাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১-এ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বছরের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হলে মামলাটি এই ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন ট্রাইব্যুনাল-১। ওই বছরের ২৮ মে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-২।

৩ জুলাই থেকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয়। দুই তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ১২ জন। পরে আসামিপক্ষে প্রথম সাক্ষী কাদের মোল্লাসহ ছয়জন সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিন যুক্তি উপস্থাপন করে। ৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে আট দিন চলে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন। ১৭ জানুয়ারি যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় অপেক্ষমাণ বা সিএভি (কেস অ্যায়োইটস ভারডিক্ট) রাখেন।





একাত্তরে রাজাকার-আলবদররো যে নৃশংস গণহত্যা, র্ধষণ, লুটপাট ও অগ্নসিংযোগরে মতো জঘন্য অপরাধ করছে, তার র্সবোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আবুল কালাম আযাদরে বিরুদ্ধে তুলনামূলক কম অভিযোগ ছিল। তাঁর মৃত্যুদণ্ড হলেও কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষের উচতি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপলি করা। এটি রায় ঘোষণার পর প্রেসক্লাব এলাকায় একজন সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া।



এত দিন সরকারি দলের নেতারা দাবি করে আসছিলেন, তাঁরা যুদ্ধাপরাধের বিচার করে জাতিকে দায়মুক্ত করবেন। কিন্তু কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছেন, তাতে দায়মুক্ত হয়নি, বরং দায় যুক্ত হলো।

আদালত থেকে গাড়িতে ওঠার মুর্হূতে যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লা হাতে ভি চিহ্ন দেখিয়েছেন। আর র্সবশেষ খবর, জামায়াতে ইসলামী আগামীকাল আরেকটি হরতাল ডেকেছ। তাহলে কি জামায়াতে ইসলামী রায়ে খুশি হয়েই দেশবাসীর ওপর আরেকটি হরতাল চাপিয়ে দিল?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.