নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীরব কথামালা

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে আসতেই হয়, ভাবনা প্রকাশে......!

এম এ হাসান মাহামুদ

লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।

এম এ হাসান মাহামুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবেক অপারেশন- উপলদ্ধি থেকে লেখা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৯





খুব দ্রুত একটি বাস ধেয়ে আসলো। শব্দ করে ব্রেক কষে দাঁড়ানোর আগে বিকট একটি শব্দ হলো। তারপর ছোটাছুটি।

-কি হলো? কী হলো?

-এই মাত্র দূর্ঘটনায় ছোট সোনিয়া (রুপক অর্থে) মারাÍক আহত হলো। মেয়েটি খুব সুন্দর ছিল, উস্ কি ভয়াবহ, আসলে জীবনের কোনো গ্যারান্টি নাই, ড্রাইভার শালারে র্ধ, ট্রাফিক পুলিশ সবগুলো হারামি, ইত্যাদি ইত্যাদি হাজারো সহানুভূতিশীল শব্দ উচ্চারিত হতে লাগলো। এরপর একে একে যে যার মতো চলে গেল। গাড়ি তো আগেই পালিয়ে গেছে। সোনিয়ার মাকে একটি রিকসায় উঠিয়ে দিয়ে অতি উৎসাহী দুয়েক জনও দায়িত্ব শেষ করলো। পরদিন পত্রিকা ভেতরের পাতায় এক কলামের সংবাদ ‘রাজধানীতে সড়ক দূর্ঘটনায় এক শিশু আহত’। কিংবা সড়ক দূর্ঘটনার কমপাইল নিউজের একটি অংশে ঘটণাটি তিন লাইনে স্থান পেল। কিন্তু তিনদিন পর আবারো সংবাদ হলো সোনিয়া। এবার সংবাদের শব্দ সংখ্যা একটু বাড়লো, তবে এক কলামেই। তবে শেষ পাতায় ‘দূর্ঘটনার তিনদিন পর মারা গেল শিশু সোনিয়া’।

সোনিয়া পরিবারের একমাত্র কন্যা ছিল, মায়ের বুক খালি করে দিল ঘাতক বাস, সোনিয়ার মতো অসংখ্য শিশু প্রতিদিন এভাবেই অকালে ঝরে যাচ্ছে সড়ক দূর্ঘটনায়। এরকম অসংখ্য বাক্য লেখা যেত। এভাবেই শেষ হতে পারতো গল্পটা। কিন্তু তা নয়........



দু’বছর যে কোনো কারণে হোক ঠিক সেই স্থানে একটি ওভারব্রিজ হলো। উদ্দেশ্য সবই নিরাপদে রাস্তা পার হবে। সবাই খুব বাহ্বা দিল সরকার এবং উদ্বোধনকারী ঐ নেতাকে।

তার ১৭ দিন পর সেই স্থানে দেখা গেল একজন সার্জেন্ট খুব ঝারি দিচ্ছে এক বয়স্ক লোককে। কাছে গীয়ে অপরাধ জানা গেল। চলন্ত গাড়ির ফাঁক-ফোকর দিয়ে লোকটি রাস্তা পার হয়ে এপারে এসেছে। অল্পের জন্য এ্যাক্সিডেন্ট হয়নি। দেখে সার্জেণ্ট খুব চটেছেন। তখন পাশে দাঁড়ানো এক রিকসাওয়ালা নিজে থেকেই বলল, ‘এখানে একটা ছোট মাইয়া মইরা যাওনের পর এই ব্রিজ হইছে’। মুহুর্তেই লোকটির চোখ ছলছল করে উঠলো। কারণ জিজ্ঞেস করে জানা গেল, তিনি সেই ছোট্ট সোনিয়ার বাবা।



আমরা আওয়ামী লীগকে গালি দেই। বিএনপিকে গালি দেই। জামায়াত, জাতীয় পার্টিকে গালি দেই। সেনাবাহিনীর ক্ষমতাও চাই না। কিন্তু পাঠক আপনাদের কি মনে আছে? ২০০৯ সালের নির্বাচনে ‘না ভোট’-এর সিস্টেম ছিল। কয়জন দিয়েছে?

আমরা আইন চাই, কিন্তু নিজেরা মানি না। আমরা সরকার পরিবর্তন চাই, কিন্তু নিজেরা সঠিক ভোট দেই না। আমরা রাজনীতি ঘৃণা করি, কিন্তু নেতাদের ধরে তদবির করি। আমরা ‘কোনো সুযোগ না পেলে পরিস্কার ব্যক্তি’ পেলে ‘আরে ভাই এটা সবাই নেয়’। নিজের বোনকে কেউ টিজ করলে রক্ত গরম করি, আর অন্য মেয়ে দেখলে রোমিও হয়ে যাই। উপযাজক হয়ে মেয়েদের সাহায্য করি, আর ছেলের বেলায় ‘আরে ভাই মগের মুল্লুক পাইছেন?’।

প্রশ্ন: কেন?

উত্তর: আমরা তো ভাই বাঙ্গালী!

বিশ্বাস করেন ভাই এই কথাটা না আর শুনতে ভাল্লাগে না।



মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৩১

দুরন্ত সাহসী বলেছেন: একদিন গুলশান২ মোড়ে দাড়িয়ে আছি রাস্তা পার হবো বলে, জন পারাপার সিগনাল পড়েনি তবুও মানুষ পার হচ্ছে তাই দেখে এক বিদেশি তার ৫ বছরের ছেলের হাত ধরে আমাদের অনুকরণ করতে গিয়ে ছেলের বাধার মুখে পড়ে।কিছুতেই ঐ বিদেশি ছেলেটিকে সিগনাল পার করতে পারলোনা,ছেলেটি বাবাকে দেখিয়ে দিচ্ছে এখনো রেড সিগনাল পড়ে আছে।অবশেষে বিদেশি বাধ্য হলো দাড়িয়ে থাকতে।

মানুষের বিবেক তৈরী হয় মায়ের কোল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে,আর সেখানেই আমাদের যত দুর্বলতা।

বিবেক জাগ্রত হোল সবার তারপর আমরা অন্যের সমালোচনা করার অধিকার অথবা যোগ্যতা পাবো।

ভালো বলেছেন
ধন্যবাদ

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০

স্পাইসিস্পাই001 বলেছেন: ঠিক বলেছেন ..... সহমত

উপস্থাপনা প্রশংসনীয় .....+++

ধন্যবাদ ... ভাল থাকবেন....

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২

ফার্ুক পারভেজ বলেছেন: '''পৃথিবীর সবথেকে বড় আদালত মানুষের বিবেক'''

কিন্তু মানুষ এই আদালতকে সহজেই অগ্রাহ্য করতে পারে।

৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৬

তন্ময় চক্রবর্তী বলেছেন: একি ঘটনা চোখে পড়বে এয়ারপোর্টের এখানে। ট্রাফিক পুলিশ যেখানে ইশারায় গাড়ি গুলোকে তখনও চালিয়ে যাবার নির্দেশনা দিচ্ছেন, তারই মধ্যে ১০-১৫ জনের একটি দল ট্রাফিক পুলিশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এক পা দু পা করে এগিয়ে যায়। বাস-কার এর ড্রাইভারগুলো কি ভয়ানক ভাবেই না ব্রেক কষে। এমতাবস্থায় কেউ যদি চাপা পড়ে তবু "যত দোষ নন্দ ঘোষ", অর্থাত দোষ হতো ড্রাইভারের। আমি ঠায় দাড়িয়ে থাকি ট্রাফিক এর সিগন্যাল এর আশায় আর ভাবি, আমি বোধ হয় চালাক-চতুর হতে পারবো না কোনদিন।

তবে বেশ ভালো একটি শিক্ষা সেদিন এক আর্মির ট্রাক দিয়েছিলো। যথারীতি কিছু মানুষ রাস্তায় নেমে গেলে আর্মির ট্রাকটি ২ জন লোকের ঠিক ১ হাত দূরে গাড়িটি থামায়। লোক দুটি হতভম্ব হয়ে যায়। তারা আবার এগুতে চেষ্টা করলে ট্রাকটাও তাদের ধাক্কা দিবো দিবো করেও না দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এরকম ৩-৪ বার করে তারপর লোক দুইটাকে যেতে দেয়। ভালো লাগছিলো সেদিন মজা দেখে। আর পাবলিকও কোন উচ্চবাচ্চ্য করে নাই। অসাম ছিলো সেদিন সন্ধ্যেটা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.