নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীরব কথামালা

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে আসতেই হয়, ভাবনা প্রকাশে......!

এম এ হাসান মাহামুদ

লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।

এম এ হাসান মাহামুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রধানমন্ত্রী মদীনা সনদের কথা বলে কি সংবিধান লঙ্ঘন করলেন না! (পুরোপুরি ব্যক্তিগত মতামত)

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫





প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ মদিনা সনদ অনুযায়ী চলবে। মদিনা সনদে সব ধর্মীয় গোষ্ঠীর অধিকার যেভাবে সংরক্ষণ হয়েছিল তার আলোকে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া হবে। তাই নবীজীর(স.)দেখানো পথেই চলবে দেশ।প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শনিবার সকালে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। সরকার নাস্তিকদের মদদ দিচ্ছে, হেফাজতে ইসলামের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী এভাবে তার বক্তব্য ব্যক্ত করেন।



কিন্তু কথা হচ্ছে, একজন প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের অধীনে থেকে অন্য সনদের কথা বলতে পারেন? বিষয় দুটি সাংর্ঘষিক নয় যদিও, তবুও আমরা একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা, একটি সংবিধানের অধীনে রয়েছি।

পাঠকের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে পৃথিবীর প্রথম ‘লিখিত সংবিধান’ মদিনা সনদের বিবরন তুলে ধরা হল …



৬২২ খ্রীস্টাব্দের ২৪শে সেপ্টেম্বর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মদিনা নগরীতে হিজরত করেন এবং মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্রের প্রথম রাজধানী স্থাপন করেন। এ সময় সেখানে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে ছিল গোষ্ঠীগত হিংসা-বিদ্বেষ। তাই কলহে লিপ্ত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাতৃত্ব্য ও সম্প্রীতি স্থাপন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হযরত মুহাম্মদ (সা:) ৪৭ ধারার একটি সনদ বা সংবিধান প্রণয়ন করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে মদিনার সনদ নামে পরিচিত। এর প্রথম ১০ ধারায় বলা হয় যে, মুহাজিদ(দেশত্যাগী বা যারা মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেছিল), বনু আউফ, বনু সাইদা, বনু হারিস, বনু জুশাম, বনু নাজ্জার, বনু আমর, বনু নবীত ও বনু আউস পূর্বহারে মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত নিয়মনীতি এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পণের মাধ্যমে বন্দীদের মুক্ত করবে। ১১ থেকে ২০ ধারায় মুসলমানদের পারষ্পরিক সম্পর্ক সম্পর্কিত আইন বিধৃত হয়। ২১ থেকে ২৬ ধারায় হত্যাকারীর শাস্তি, কোনো মুসলমান কোনো অন্যায়কারীকে আশ্রয় দিলে তার শাস্তি, কোনো বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে তার মীমাংসা পদ্ধতি, ধর্মীয় স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ক আইন সন্নিবেশিত হয়। ২৭ থেকে ৩৬ ধারায় সন্নিবেশিত হয় বিভিন্ন গোত্রের স্বরুপ সম্পর্কিত বিধান। পরবর্তী ধারাসমূহে যুদ্ধনীতি, নাগরিকদের ক্ষতির ক্ষতিপূরণ, নিজ নিজ ব্যয় নির্বাহ, এ সনদে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কেউ যুদ্ধে লিপ্ত হলে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা, বন্ধুর দুষ্কর্ম, যুদ্ধের ব্যয় নির্বাহ, নাগরিকের অধিকার, আশ্রয়দানকারী ও আশ্রিতের সম্পর্ক, নারীর আশ্রয়, সনদের স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা দেখা দিলে করণীয়, কুরাইশদের ব্যাপারে ব্যবস্থা, মদীনার উপর অতর্কিত আক্রমণ হলে করণীয় ইত্যাদি সন্নিবেশিত হয়। বিশ্বের ইতিহাসে এটিই প্রথম লিখিত চুক্তি ও সংবিধান।



মদীনা সনদের মূল বিষয়বস্তু ছিল …

১. সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে একটি সাধারণ জাতি গঠন করবে।

২.হযরত মুহাম্মদ(স.) ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন।

৩. কোন সম্প্রদায় গোপনে কুরাইশদের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদীনা বা মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের কোনরুপ সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবে না।

৪. মুসলিম, খ্রীস্টান, ইহুদী, পৌত্তলিক ও অন্যান্য সম্প্রদায় ধর্মীয় ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মীয় কাজে কোন রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

৫. মদিনার উপর যে কোন বহিরাক্রমণ কে রাষ্ট্রের জন্য বিপদ বলে গণ্য করতে হবে। এবং সেই আক্রমণ কে প্রতিরোধ করার জন্য সকল সম্প্রদায়কে এক জোট হয়ে অগ্রসর হতে হবে।

৬. রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।

৭. অসহায় ও দূর্বলকে সর্বাবস্থায় সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।

৮. সকল প্রকার রক্তক্ষয়, হত্যা ও বলাৎকার নিষিদ্ধ করতে হবে এবং মদীনাকে পবিত্র নগরী বলে ঘোষণা করা হবে।

৯. কোন লোক ব্যক্তিগত অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই বিচার করা হবে। তজ্জন্য অপরাধীর সম্প্রদায় কে দায়ী করা যাবে না।

১০. মুসলমান, ইহুদী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা পরষ্পর বন্ধুসুলভ আচরণ করবে।

১১. রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের এবং তিনি হবেন সর্বোচ্চ বিচারালয়ের সর্বোচ্চ বিচারক।

১২. মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুমতি ব্যতীত মদীনাবাসীগণ কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।

১৩. মুসলমানদের কেউ যদি অন্যায় কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নিজ সন্তান বা আত্নীয় হলেও এ ব্যাপারে তাকে ক্ষমা করা যাবে না।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া



মদীনা সনদ মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ট রাষ্ট্রপরিচালনা পদ্ধতি। এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাদের দেশে এই ব্যবস্থা চালু করতে হলে তো, গণতন্ত্র বাদ দিতে হবে। আর হেফাজতের দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যদি প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন, তাহলে বুঝতে হবে আমাদের সামনে আরো কঠিন দিন অপেক্ষা করছে, হয়তো!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৮

বোকা_ছেলে বলেছেন: prodanmontri mone hoy desh take taleban afganistan banaite chay...
joy bangla

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:



ভাই

মদিনা সনদের ৫৭ টি ধারা রয়েছে
আপনি প্রধান প্রধান ১৩ ধারা উল্লেখ করেছেন
আমার ৫৭ টি ধারাই প্রয়োজন
কোথায় পেতে পারি জানা থাকলে দয়াকরে জানাবেন ।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬

এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: উইকিপিডিয়ায় পাবেন।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২

ইন্নো_৭১ বলেছেন: খারাপ কি! চায়ের দামে শরবতের মত সংবিধান পেলে তাতে ঐ শরবত পানকারী তো সংবিধান পানের ইচ্ছে ও পোষন করতে পারে।

যেখানে উনিই সব, সেখানে আমরা ছাপোষা মানুষ আর কি বা কইতে পারি?

আর সেটা নিজের বা অন্যের ব্যক্তিগত মত হয়ও যদি।

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

রং-নাম্বার বলেছেন: হাহাহা, আপনারা পারেনও, শেখ হাসিনাতো কত কথাই বলেন, সব ধরলে কি হবে? উনি বলেছিলেন বিরোধীদলে গেলেও হরতাল দিবে না, উনি বলেছিলেন ৮৬ এ যারা নির্বাচনে গেলে জাতীয় নির্বাচনে গেলে জাতীয় বেঈমান হবে!! উনি নিজে তত্বাবদায়ক সরকারের পক্ষে আন্দোলন করে এখন তত্বাবদায়কের বিরুদ্বে!!

এটা হেফাজতে ইসলামকে দেখানো সর্বশেষ মূলা!!! আপনারা সব বুঝেও এসব নিয়ে পেচান কেন বুঝিনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.